নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
শুরু হল বাংলা একাডেমিতে মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা ২০১৫। এবারো বইমেলাকে দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে থাকছে মেলার প্রধান অংশ। আর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে থাকছে শিশু কর্নার, কিছু সরকারি প্রকাশনা সংস্থা, বিভিন্ন মিডিয়া এবং যথারীতি বহেড়াতলায় থাকছে লিটলম্যাগাজিন। এবারের অমর একুশে বইমেলায় মোট ৩৫১টি প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহন করছে। এছাড়া ৮০টি লিটল ম্যাগাজিন বইমেলায় অংশ নিচ্ছে। এবার প্রথম বইমেলায় বাংলা একাডেমিসহ মোট ১১টি প্রকাশনা সংস্থা প্যাভেলিয়ন পেয়েছে। বিকাল তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে গ্রন্থমেলার শুভ উদ্ধোধন করেন। এছাড়া তিনি বাংলা একাডেমি'র ৬০ বছর পুর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত চারদিনের আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মলেনেরও উদ্ধোধন করেন। সাহিত্য সম্মেলনে প্রতিদিন থাকবে দুটি করে অধিবেশন। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত প্রথম অধিবেশন এবং বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত দ্বিতীয় অধিবেশন। প্রতিটি অধিবেশনই অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে। এছাড়া আজ বইমেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৪-এর পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হাতে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন। বিদেশে অবস্থানের কারণে ভ্রমণসাহিত্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক মঈনুস সুলতান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার চত্বরে শুরু হয়েছে দুইদিন ব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব। আজ আর কবিতা উৎসবে যাওয়া হয়নি। কারণ প্রথম দিনের বইমেলায় গেছি সন্ধ্যায়। বইমেলায় গিয়ে আমার ছয়জন প্রকাশকের মধ্যে চারজনের সঙ্গেই আজ দেখা হয়েছে। মাজহারুল ইসলাম (মাজহার ভাই), আল-আমিন ভাই, জাহাঙ্গীর আলম সূজন ভাই, ও মাকসুদ হোসেন ভাইয়ের সঙ্গে। আমার অন্য দুজন প্রকাশক রাজীব নূর (রাজীবদা) ও পায়েল হাওলাদারের সঙ্গে আজ দেখা হয়নি। অমর একুশে বইমেলায় এবার নতুন এসেছে প্রকাশনা সংস্থা চন্দ্রদীপ। সেখানে দেখা হল কবি অসিম সাহা'র সঙ্গে। অসিম দা জানালেন, এবার তার মেলায় আসছে গল্পের বই 'শ্বশানঘাটের মাটি'। কিন্তু প্রকাশক দুঃখপ্রকাশ করলেন, বইটি মেলায় আসতে আরো দু-একদিন লাগবে। নতুন প্রকাশনা চন্দ্রদীপের প্রডাকশান এবার অনেক ভালো হয়েছে। অন্যপ্রকাশের সামনে পেলাম আমার প্রকাশক মাজহারুল ইসলামকে। কিছুক্ষণ আড্ডা দিচ্ছিলাম মাজহার ভাইয়ের সঙ্গে। মাজহার ভাই কথাপ্রসঙ্গে বললেন, এটা ঠিক প্যাভেলিয়ন না, বলতে পারেন চারদিক খোলা বইয়ের স্টল। আসলেই এবার বইমেলায় জায়গা অনেক বেড়েছে। কিন্তু বাংলা একাডেমি জায়গাটা ঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সাজাতে পারেনি। অনেকটা কেমন খাপছাড়া। এলোমেলো স্টলের সারি। প্যাভেলিয়নগুলো গোটা মেলার মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিলেই ভালো হতো। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূল মেলার মাঠে বইয়ের স্টলগুলো যেনো বিক্ষিপ্তভাবে ছড়ানো। এবারো বইমেলার মাঠে অস্থায়ী টয়লেট করা হয়েছে শুধুমাত্র পূর্বদিকে। অনেকে আক্ষেপ করলেন, প্যাভেলিয়নগুলো মেলার মাঠে গেটের দিকে থাকায় পেছনের দিকে বইপ্রেমীদের ভিড় একটু কম হতে পারে। অন্যপ্রকাশের স্টলের সামনেই দেখা হল লেখক জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত আর লেখিকা পূরবী বসু'র সঙ্গে। খানিক আড্ডা হল। ওই সময় পূরবী দি'র ইন্টারভিউ করছিল সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর সাহেবের টিভি চ্যানেল দেশটিভি। একটা বিষয় আমার কাছে খুব খটকা লাগলো, অন্তত বইমেলা কভার করার জন্য আমাদের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বা সংবাদ মিডিয়ার উচিত শিক্ষিত রিপোর্টার দিয়ে বইমেলা কভার করানো। ইন্টারভিউ শেষে পূরবী দি যখন আমাদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন, তখন দেশ টিভি'র রিপোর্টার দিদি'র কাছে নাম জানতে চাইলেন। দিদি নাম বললেন। ছেলেটি আবার নামের বানান জিজ্ঞেস করলেন। দিদি তখন কিছুটা বিরক্তই হচ্ছিলেন হয়তো! আমি বললাম, অন্যপ্রকাশ থেকে দিদি'র কোনো একটা বই হাতে নিয়ে বানানটা দেখে নিন। পূরবী দি জানালেন, কলকাতা বইমেলায় অংশ নিতে ৫ তারিখ কলকাতা চলে যাবেন। সেখানেও দিদি'র কয়েকটা বই প্রকাশ পেয়েছে এবার।
আমাদের সেই আড্ডা আর জমেনি। ঠিক তখনই পেয়ে গেলাম লেখক মাহবুব লীলেনকে। লীলেন ভাই জানালেন, এবার মহাভারত নিয়ে তাঁর একটি ব্যতিক্রমী বই আসবে মেলায়। খুব খুশির খবর এটা। বাংলাদেশে এখনো গুটি কয়েক যাদের মহাভারত রামায়ন নিয়ে চর্চা আছে, লীলেন ভাই সেই গোত্রের অন্যতম তুর্যপাঠক। প্রায় কুঁড়ি বছর লীলেন বাই মহাভারত রামায়ন চর্চা করছেন। লীলেন ভাই রামায়ন ও মহাভারতের বিভিন্ন পর্বের অনেক ইতিহাসের সুলুক সন্ধানী বিষয়াদি নিয়ে কথা বলছিলেন। আমি লীলেন ভাইয়ের বইটার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
তারপর লীলেন ভাই আর আমি মেলায় ঘুরতে ঘুরতে শুদ্ধস্বর এর স্টলের সামনে এসে পাই প্রকাশক কবি আহমেদুর রশীদ টুটুল ভাইকে। সেখানে আরেক পশলা আড্ডা। টুটুল ভাই আক্ষেপ করে বললেন, এবারো মেলায় একটা গেট থাকায় ছুটির দিনগুলোতে বইপ্রেমীদের অনেক ঝামেলা হবে। মেলার মাঠে (উদ্যানে) একেবারে উত্তর পশ্চিম কোনায় একটা অস্থায়ী গেট অবশ্য দেখা গেছে। ওটা আদৌ চালু হবে কিনা এখনো জানা যায়নি। মেলার মাঠে অন্তত ভীড় এড়াতে উদ্যানের উত্তর-পশ্চিম কোনের গেট এবং উত্তর-পূর্ব কোনে আরেকটি বিকল্প গেট চালু করা উচিত। নইলে ছুটির দিনে বিশেষ করে ১লা ফাল্গুন, ১৪ ফেব্রুয়ারি আর ২১ শে ফেব্রুয়ারি মেলায় যে পরিমাণ ভীড় হয়, তা থেকে এবারো বইপ্রেমীদের মুক্তি নেই। আড্ডার ওই পর্যায়ে দেখা পাই আমার প্রকাশক মাকসুদ ভাইয়ের। মাকসুদ ভাইয়ের সাথে গল্প করতে করতে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে আসি। তখন ফোন পাই কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা টোকন ঠাকুরের। বাংলা একাডেমি'র লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের বহেড়াতলায় গিয়ে দেখা হল শিল্পী চারু পিন্টু, লেখক ঋষি এস্তেবান, কবি সাফি সমুদ্র, কবি মারুফ রায়হানসহ অনেকের সাথে। ওই সময় ফোন করল বন্ধু শিল্পী মোবাশ্বির আলম মজুমদার। মোবাশ্বির বলল, উদ্যানে আছে। আবার উদ্যানে ঢুকতে গিয়ে পেলাম টোকন ঠাকুরকে। তখন দেখা হল কবি জুয়েল মোস্তাফিজের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত মোবাশ্বিরের সাথে আর দেখা হয়নি। মেলা দুইভাগে ভাগ হওয়ায় এই সমস্যা এবারো বইপ্রেমীরা মোকাবেলা করবে।
গত বছর অমর একুশে বইমেলা উদ্ধোধন করার সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মেলার সময় একাডেমি থেকে উদ্যানে আন্ডারগ্রাউন্ড বাইপাস করার। তা শেষ পর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে খুশির খবর হল আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের বইমেলায় এগারোটি বই প্রকাশ পাচ্ছে। বইগুলো প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। যার মধ্যে একটি আত্মজীবনীমূলক স্মৃতিচারণ।
বইমেলা থেকে টোকন ঠাকুর আর আমি বেরোনোর পথে বকুল ভাই আমাদের চা খাওয়ালেন। তারপর টোকন ঠাকুর আর আমি যথারীতি ধ্রুবদা'র (শিল্পী ধ্রুব এষ) বাসায় গেলাম। সেখানে গিয়ে আড্ডা হল। পেলাম শিল্পী মামুন হোসাইন আর বাপ্পাকে। কিছুক্ষণ পর উত্তমদা (শিল্পী উত্তম সেন) আসলেন। ধ্রুবদা'র ইন্টারভিউ নিতে এসেছিলেন কবি চন্দন চৌধুরী। চন্দনের সঙ্গে আরেকজন ছিল। নাম ভুলে গেছি। ওরা ধ্রুবদা'র ম্যারাথন ইন্টারভিউ নিল।
আড্ডা শেষে আবার শাহবাগ আসলাম। তারপর বাসায়। এবারের অমর একুশে বইমেলার সময় সূচি হল- প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি সকাল আটটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে।
.................................
২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৭
এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: আরেকটা তথ্য দেই এবার দ্বীতিয় বারের মত মাওলা ব্রাদার্স এবং বাংলাদেশ ভিজুয়েল্লি ইম্পেয়ার্ড পিপল সোসাইটি এর যৌথ প্রকাশনা়য় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের জন্য জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার "সবুজ মাঠ পেরিয়ে" বইটির ব্রেইল ভার্শন প্রকাশিত হয়েছে। প্রথম বার হয়েছিল ২০১৩ সালের বই মেলাতে। আর বইটি ছিল ড। জাফর স্যারের "গাব্বু" বইটি। আমি আশা করি প্রতিটি প্রকাশনা যেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মানুষের বই পড়ার অধিকারের কথা মাথায় রেখে একটি বইয়ের অডিও কিংবা ব্রেইল ভার্শন বের করেন।
৩| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:০০
এনামুল রেজা বলেছেন: অনেক দরকারি তথ্য জানা গেলো।
৪| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
//গত বছর অমর একুশে বইমেলা উদ্ধোধন করার সময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মেলার সময় একাডেমি থেকে উদ্যানে আন্ডারগ্রাউন্ড বাইপাস করার। তা শেষ পর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। তবে খুশির খবর হল আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের বইমেলায় এগারোটি বই প্রকাশ পাচ্ছে।//
বেশ কয়েক বছর ঢাকার আগারগাঁওয়ে 'ঢাকা বইমেলা' হয়েছে.....
তখন দু'টি উপলক্ষ্য থাকতো বইকেনার....
৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৭
শায়মা বলেছেন: বই এর নামটা খুবই সুন্দর। বইটাও অনেক ভালো হবে নিশ্চয়ই।
৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:৫৫
মহান অতন্দ্র বলেছেন: মেলায় যেতে পারছিনা। আপনার লেখায় যেন ঘুরে আসছি। ভাল লাগছে।
৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৫৬
রেজা ঘটক বলেছেন: সবাইকে ধন্যবাদ
৮| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:৪৪
আরজু পনি বলেছেন: পাঠকের সুবিধার্থে আপনার এই পোস্টটি আমার ♣ শততম পোস্ট ! অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৫'তে সামহোয়্যার ইন ব্লগারদের বই ♣ পোস্টে যুক্ত করে দিলাম।
অনেক শুভেচ্ছা রইল ।।
৯| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ২:২৫
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ আরজুপনিকে...
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৮:১১
জাফরুল মবীন বলেছেন: তথ্যগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ অাপনাকে।
সাহিত্য জগতের মানুষদের সাথে আপনার আলাপচারিতাও মুগ্ধতা নিয়ে পড়লাম।
শুভকামনা জানবেন।