নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বইমেলার ডায়েরি (৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫) !!! রেজা ঘটক

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫২

৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ছিল বৃহস্পতিবার। বইমেলায় ঢোকার পথে যথারীতি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢু মারলাম। মাধবদার সঙ্গে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে চলে যাই প্রিয় লিটল ম্যাগ চত্বর বহেড়াতলায়। তখন সময় পৌনে পাঁচটা। মনে পড়ল আমিন ভাইয়ের (কবি সরকার আমিন) 'দশটি ঘোড়া হারিয়ে গেছে' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ঠিক পাঁচটায়। বাংলা একাডেমির নতুন ভবনের উত্তরাধীকার কার্যালয়ে আমিন ভাইয়ের রুমে গিয়ে দেখি, ফেসবুক বন্ধুদের উপচে ভরা ভিড়। আমিন ভাইকে বললাম, এই রুমে তো ধরবে না। এখনো পাঁচটা বাজে নাই, বরং আমরা সবাই ছাদে চলে যাই। তারপর আমরা সবাই ছাদে যাই। 'দশটি ঘোড়া হারিয়ে গেছে' বইটির মোড়ক উন্মোচন হল আমিন ভাইয়ের ফেসবুক বন্ধুদের নিয়ে। অনু ভাই (ডক্টর অনু হোসেন) ছবি তুললেন। যাদের সঙ্গে ট্যাব বা ক্যামেরা ছিল তারাও ছবি তুলল। বাকরখানি আর গজাই খেয়ে ।আমরা খুব হৈ চৈ করলাম। 'দশটি ঘোড়া হারিয়ে গেছে' বইটি বের করেছে প্রকাশনী সংস্থা মূর্ধন্য।
লিটল ম্যাগ চত্বরে এসে দেখা হল অনেকের সঙ্গে। দীর্ঘ সময় আড্ডা হল অমিতাভদার সঙ্গে। কবি অমিতাভ পালের সঙ্গে সাম্প্রতিক পেট্রোলময় পোড়া রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘ আড্ডা হল। শিল্পী চারু পিন্টু, আমি আর অমিতাভদা মিলে চা খেতে বাইরে আসলাম। সেখানে দেখা হল কবি বদরুল হায়দারের সঙ্গে। বদরুল ভাই বাংলা ৭১ পত্রিকা দিলেন। তার লেখা বইমেলার প্রতিবেদন এখানে নিয়মিত প্রকাশ পাচ্ছে। ব্যাক পেইজে কভার বক্সে। অমিতাভ দা চলে যাবার পর আমরা আবার লিটল ম্যাগ চত্বরে ফিরলাম।
দেখা হল কমরেড লেখক ঋষি এস্তেবান ও কবি সাফি সমুদ্র মানিকজোড়ের সঙ্গে। তাদের গ্যাং মিলে আড্ডা হচ্ছিল, পিন্টু আর আমি সেখানে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম। তারপর দেখা হল, আড্ডা হল কবি শামীমুল হক শামীম, কবি কবির হুমায়ুন, কবি সাখাওয়াত টিপু, কবি মামুন খানদের সঙ্গে। লিটল ম্যাগ থেকে নন্দনের দোকান গুটিয়ে বের হব ঠিক তখন বরিশালের উজিরপুর থেকে জনৈক ভদ্রলোক আরজ আলী মাতুব্বরের বই খুঁজতে এসে কিনে নিলেন আমার গল্পের বই 'পঞ্চভূতেষু'। এবারের বইমেলায় দোকানদারি করতে এসে পঞ্চম দিনে এটাই প্রথম বই বিক্রি করার অভিজ্ঞতা।
রাত আটটার দিকে লিটল ম্যাগ থেকে আবার উদ্যানে গেলাম বইমেলার প্রধান অংশে। সেখানে গিয়ে পেলাম প্রজাপতি লেখক দম্পতি বিজ্ঞান লেখক ডক্টর ফারসীম মান্নান মোহাম্মেদী ও লেখিকা ফারহানা মান্নানকে। কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন প্রকাশক ও কবি আহমেদুর রশীদ টুটুল ও কবি মারুফ রায়হান। আমাদের আড্ডা ফুরানোর আগেই বইমেলার ছুটির ঘণ্টা বেজে গেল। টিএসসি পর্যন্ত আমরা একসঙ্গে ফিরলাম। ফারসীম পথে বাদাম কিনলেন। আমরা বাদাম খেতে খেতে টিএসসি পর্যন্ত এসে ভাগ হলাম।
টিএসসি থেকে চারুকলা পর্যন্ত পাইরেসি, চোরাই ও পুরাতন বইয়ের বিশাল পসরা বসেছে ফুটপথে। এদের ক্রেতা কিন্তু আসল বইমেলার চেয়ে বেশি। কারণ, এরা ঘোষণা দিচ্ছিল- যেটা ধরবেন পঞ্চাশ, যেটা ধরবেন বিশ, ছোটদের বই দশ টাকা। ওদের ওই ঘোষণায় দেখলাম বইমেলা থেকে খালি হাতে ফেরত বইপ্রেমীরা এবার দলে দলে বই কিনছেন।
প্রতিবছর অমর একুশে বইমেলা শুরু হলেই পুরাতন, পাইরেসি করা ও চোরাই বই নিয়ে এসব বই বিত্রেতারা টিএসসি থেকে চারুকলা পর্যন্ত ফুটপথ দখল করে। ফুটপথ দখল করার জন্য এরা পুলিশকে টাকা দেয়। বইমেলা যত পুরান হতে থাকে এদের দৌরাত্ম তত বাড়তে থাকে। এক সময় এরা টিএসসি থেকে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত ফুটপথেও পুলিশের সহায়তায় দখল নিয়ে নেয়। তখন ভেতরে আসল বইমেলা থাকলেও বাইরে থাকে আরেকটি প‌্যারালাল বইমেলা ও বারোয়ারি মেলা।
বাংলা একাডেমি যদি সরকারের সহায়তা নিয়ে অমর একুশে বইমেলার সময় ফুটপথের এই পাইরেসি করা, চোরাই ও পুরাতন বইয়ের দৌরাত্ব বন্ধ করতে না পারে, তাহলে প্রতিবছর এরাই অমর একুশে বইমেলার সৌন্দর্য ধ্বংস করার জন্য প্রধান শক্তি হিসেবে বেড়ে ওঠে। পুলিশ এদের থেকে টাকা খেয়ে প্রতি বছর এই অপকর্মটি করে যাচ্ছে। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টি নিয়ে প্রতিবারের মত এবারো অনেকটা কানাচক্ষুর আচরণ করছে।
সরকার এসব প্রতিবছরের মত এবারো দেখে না দেখার ভান করছে। অমর একুশে বইমেলা শুরু হলেই পুলিশের সহায়তায় এসব পাইরেসি বইয়ের বিক্রতা, বারোয়ারি মেলার বিক্রেতাদের দৌরাত্ম দিনদিন বৃদ্ধি পায়। প্রতিবছর এসব নিয়ে আমরা কথা বলি। মাগার কর্তৃপক্ষের সেই কথায় কোনো টনক নড়ে না। অমর একুশে বইমেলা যত পুরাতন হতে থাকে, এসব শযতানি ততই যেন চারপাশ থেকে জেকে বসে।
..............................
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: বিশেষ করে বইমেলার সময় ফুটপাতের ঐ পাইরেটেড বই বিক্রি বন্ধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত যথাযথ কর্তৃপক্ষের।

গত বছর মেলার গেট থেকে টি এস সি পর্যন্ত মিনিমাম ২০ জনেকে দেখেছি নিষিদ্ধ বই "দাজ্জাল" বিক্রি করতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.