নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বইমেলার ডায়েরি (১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫) !!!

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৩:১৭

আজ ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বৃহস্পতিবার। অমর একুশে বইমেলার দ্বাদশতম দিন। আজ বইমেলায় গতকালের চেয়ে ভিড় বেশি ছিল। সকালে গিয়েছিলাম বাংলাবাজার। সেখান থেকে সরাসরি বাংলা একাডেমির বহেড়াতলায় লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে। নন্দনের স্টল খুলেই পেলাম মার্কিন প্রবাসী কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ, কবি সৌমেত্র দেব ও কবি ড. তপন বাগচীকে। কিছুক্ষণ পর আমাদের আড্ডায় যোগ দিলেন কবি সরসিজ আলীম ও শিল্পী চারু পিন্টু। হাসান ভাই এক সপ্তাহের জন্য সুদূর আটলান্টিকের ওপার থেকে অমর একুশে বইমেলার টানে ছুটে এসেছেন। হাসান ভাই আমাদের নিয়ে গেলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। পথে বর্ধমান হাউসের সামনে দেখা হল কবি নির্লিপ্ত নয়নের সঙ্গে। নয়ন আজ বইমেলায় মফস্বলের কবিদের সন্ধানে বের হয়েছে।
উদ্যানে গিয়ে হাসান ভাই তার সাহিত্য পত্রিকা 'শব্দগুচ্ছ' (জুলাই-ডিসেম্বর সংখ্যা), গল্প সংকলন 'শয়তানের পাঁচ পা' (অন্যানা) ও উপন্যাস 'ডহর' (হাতেখড়ি) আমাদের গিফট করলেন। মাওলাতে গিয়ে পেলাম ফরিদ ভাইকে। কবি ফরিদ কবির। তারপর বলতে গেলে পুরো মেলায় আজ ফরিদ ভাইয়ের সঙ্গে আঠার মত লেগেছিলাম। মাঝখানে আমার আনু ভাবী'র ফোন পেয়ে আবার একাডেমি প্রাঙ্গনে চলে আসি। আনু ভাবী উত্তরা থেকে পুরো ব্যাটালিয়ন নিয়ে আজ মেলায় এসেছেন। কারণ আজ আনু ভাবী'র বড় কন্যা মুন্নী'র (জেসমিন মুননী) ভ্রমণ বিষয়ক বই ‘ইস্তাম্বুল উপাখ্যান’ মেলায় এসেছে। বইটি প্রকাশ করেছে শ্রেষ্ঠ প্রকাশনী। প্রকাশক কবি সৌমেত্র দেব। বইটি পাওয়া যাবে ‘জয়তী পাবলিকেশানে' ( স্টল নং:২২০-২২১)। বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে আজ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রফেসর আনিসুজ্জামান স্যার। এর আগে মুননী'র আরো চারটি বই বের হয়েছে। 'শামুক রাজা ঝিনুক রানি', 'মানুষ ও মানুষের গল্প' , 'কুয়াশা ও দীর্ঘশ্বাসের দিন' , 'লেখক ও নায়িকার দ্বিতীয় পর্ব'। মুননী মূলত গল্প লেখে। এবার প্রথম ভ্রমণ কাহিনী লিখেছে। মুননী'কে অভিনন্দন।
মাঝখানে আনু ভাবী'র ব্যাটালিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দেখা হল কমরেড শাহেদ ভাইয়ের সঙ্গে। শিল্পী শেইখ শাহেদ। মাঝখানে কবি দিলদার হোসেন একবার যোগ দিয়েছিলেন। শাহেদ ভাই আর আমি চা খেতে বাইরে গেলাম। ২০১৩ সালে অমর একুশে বইমেলায় আগুন লাগার পর থেকে বইমেলায় যে রহস্যময় ছন্দপতন হয়েছে, শাহেদ ভাই সেই স্মৃতিচারণ করছিলেন। এবার উন্মাদ এর স্টল দেয়নি মেলায়, সেই ক্ষোভও আমাদের কণ্ঠে ছিল। শাহেদ ভাইকে মিরপুর যেতে হবে, তাই বিদায় নিলেন। আবার একাডেমিতে ঢুকতেই পেলাম কাব্য কামরুল আর রানা ভাইকে ভাবী সহ। রানা তসলিম উদ্দিন, পর্তুগালে প্রথম বাংলাদেশী কাউন্সিলর। আজ ভাবীকে সহ মেলায় এসেছেন।
লিটল ম্যাগ প্রাঙ্গনে আনু ভাবী'র ব্যাটালিয়ন সামলাতেই আবার ফরিদ ভাই লিটল ম্যাগ চত্বরে হাজির। আবারো ফরিদ ভাইয়ের সঙ্গে আড্ডায় জমে গেলাম। সঙ্গে যোগ দিলেন লেখক স্বকৃত নোমান, কবি সেঁজুতি বড়ুয়া, কবি খলিল মজিদ প্রমুখ। কিছুক্ষণ রাজ্জাক ভাইও (লেখক মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক) ছিলেন আড্ডায়। এবার রাজ্জাক ভাইয়ের আরো দুইটি বই এসেছে মেলায়। অক্ষর প্রকাশনী থেকে ভ্রমণ বিষয়ক 'এবং ব্রিটেনের রাজতন্ত্র' এবং নালন্দা প্রকাশনী থেকে অনুবাদ 'কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র'। এক ফাঁকে বন্ধু তারেককেও পেলাম। কবি, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা তারেক মাহমুদ। তারেক চলে গেলে আমি আবার ফরিদ ভাইয়ের সঙ্গে যোগ দেই।
ফরিদ ভাই'র সঙ্গে আড্ডা মানে সেই আশির দশক, নব্বইয়ের দশক, শূন্য দশক, ত্রিশ-ষাট বাদ যায় না কিছুই। প্রশ্ন করি আর জেনেনি এ টু জেড। আড্ডার সেই কথা এখানে লিখে আর সময় নষ্ট করব না। কারণ সেকথায় অনেকের মনের চিড়া ভিজতেও পারে অথবা কারো কারো মনের ভেতরে ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমির বইমেলায় ফরিদ ভাই যে বিড়ম্বনায় পড়েছিলেন, তেমন ক্ষোভ দানা বাধতে পারে। অতএব সাধু সাবধান।
ফরিদ ভাইকে একটা মজার জিনিস দেখালাম। এখানে লেখা যাবে না সেকথাও। কারো পুরস্কার লাগলে গোপনে যোগাযোগ করতে পারেন। শর্ত সাপেক্ষে ঠিকানা দেওয়া যাবে।
একাডেমির ক্যান্টিনে ফরিদ ভাই আমাদের কফি খাওয়ালেন। আর ফরিদ ভাই'র সিগারেটের প‌্যাকেট যতক্ষণ খালি না হয়, ততক্ষণ তো আর আড্ডা ভাঙ্গার কথা না, তাই না!!! তরুণ নাট্যকার, নাট্যনির্মাতা ও অভিনেতা ফরহাদ লিমন আজ মেলায় এসেছিল। কিছুক্ষণ নন্দনে বসে দোকানদারি করল। লিমনের এবার মেলায় এসেছে 'নিরীক্ষাধর্মী মঞ্চনাট্য সমগ্র-১'। পাওয়া যাচ্ছে নন্দনে। ফরিদ ভাই চলে যেতেই মেলায় এসেছে বন্ধু নাসরুল্লাহ নাহিদ। ততক্ষণে মেলায় ছুটির ঘণ্টা বেজে গেল। দোকান গুটিয়ে নাহিদ আর আমি মেলা থেকে বের হলাম। শাহবাগে আবার এক পশলা আড্ডা হল। আজ আর সেই আড্ডার নামপ্রকাশ করছি না। কারণ, আমাদের এক কবি বন্ধু'র নাম প্রকাশে একটু দ্বিধা আছে। গণআদালতে মামলা হতে পারে আমার নামে, যদি তার নাম বলি। আমি সেই রিক্স নেব না। তবে আড্ডায় টাকলা-মোবাই ছাড়া, মহাত্মা সুধীরদা সহ যারা থাকার কথা সবাই ছিলেন।
আগামীকাল অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় শুক্রবার। সেই সঙ্গে পহেলা ফাল্গুন। সবাইকে ফাল্গুনের শিমুল-পলাশ-কৃষ্ণচূড়ার শুভেচ্ছা। কবি সুভাস মুখোপাধ্যায় জীবিত থাকলে বলতেন, ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত। তো বসন্ত উৎসবে সবাইকে বইমেলায় আসার আমন্ত্রণ। কাল কিন্তু বইমেলা শুরু হবে সকাল এগারোটায়। চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। সো, আর দেরি নয়। কাল হবে তারুণ্যের জয়।

......................................
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:১৬

এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.