নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, বুধবার। অমর একুশে বইমেলার অষ্টাদশ তম দিন।
আজ বইমেলায় যাই সাড়ে চারটায়। প্রথমে যথারীতি সোহারাওয়ার্দী উদ্যানে ঢু মারি। আজ মেলায় এসেছে বন্ধু কবি আলফ্রেড খোকন-এর কবিতার বই 'দুর্লভার দিন'। বইটি প্রকাশ করেছে শুদ্ধস্বর। ত্রয়ী প্রকাশনে উকি দিতেই প্রকাশক মাধব'দা আমার নতুন বইয়ের কভার দেখালেন। 'বঙ্গবন্ধুর সংক্ষিপ্ত জীবনী: মুজিব দ্য গ্রেট'। মাধব'দা জানালেন, ছাপা চলছে। আগামীকাল বা পরসু হয়তো মেলায় আসবে বইটি। (বন্ধুদের জন্য এই সুযোগে জানিয়ে রাখি, রাত সাড়ে এগারোটায় মাধব'দা ফোন করে আবার জানালেন, আগামীকাল বিকালে বইটি মেলায় আসবে। 'মুজিব দ্য গ্রেট' প্রকাশ করেছে ত্রয়ী প্রকাশন। পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ত্রয়ী প্রকাশনের স্টলে)।
এরপর বাংলা একাডেমির লিটলম্যাগ চত্বর বহেড়াতলায় গিয়ে নন্দনের স্টল খুলে বসি। আজ মেলায় উপস্থিতি ছিল খুব কম। বইপ্রেমীরা যারা মেলায় এসেছেন, সবাই দলবেধে ঘুরছেন। পছন্দের বই দেখছেন। কিনছেন কেউ কেউ দু'একটা। ফুলের বিক্রি আজও চোখে পড়ার মত।
একাডেমির মূল মঞ্চে আশ্চার্যজনকভাবে আজ আলোচকও ছিল সীমিত। আর দর্শক আসন তো বরাবরের মত ফাঁকা গড়ের মাঠ। তবু জ্ঞানগর্ভ আলোচনা চলেছে। সন্ধ্যায় একই মঞ্চে ছিল গানের অনুষ্ঠান। গান চলেছে রাত আটটা পর্যন্ত।
আজ মেলায় এসেছে তরুণ কবি ইয়ন-এর কবিতার বই 'ভাবনাংশ'। প্রকাশ করেছে কাদাখোঁচা। বইটির নামাঙ্কনঃ সাইদ র’মান। বইটি পাওয়া যাবে লিটলম্যাগ চত্বরের প্রান্তস্বর -এর স্টলে। চার ফর্মার বইটির দাম একশ ত্রিশ টাকা। বইমেলায় ২৫ শতাংশ ছাড়ে পাওয়া যাবে মাত্র একশ টাকায়। ইযনের সঙ্গে দেখা হওয়া মাত্র ইয়ন বলল, রেজা ভাই, বই একটা বিক্রি হইছে, চলেন চা খাই। মামার হাতে আমার বই। বাংলা একাডেমি ক্যান্টিনের তালিকায় চা থাকলেও সেখানে আসলে চায়ের বদলে পাওয়া যায় কেবল কফি। আমরা কফি খেয়ে ক্ষাণিক আড্ডা দিলাম মেলার একেবারে শুরুতেই। ইয়ন ছবি বানায়। বইটি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইয়ন বলল, বইটি প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিলো ২০১১’র ফেব্রুয়ারিতে। পাণ্ডূলিপির প্রথম খসড়া দাঁড়িয়েছিল আগের বছর, মানে ২০১০’র জুলাইয়ে। অবশেষে ২০১৫’তে এসে চূড়ান্ত হলো তা। অতএব এবার কাটলো অপেক্ষা। এবারই অমর একুশে বইমেলার আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ পেল। ইয়নকে অভিনন্দন। ইমেজ জাদু থেকে শব্দ জাদু নিয়ে খেলার জন্য।
আজ বইমেলায় যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, আড্ডা হয়েছে, তারা হলেন- শিল্পী চারু পিন্টু, কবি কাজী টিটো, লেখক ঋষি এস্তেবান, আসমা সৈয়দ, কথাসাহিত্যিক পারভেজ হোসেন, কথাসাহিত্যিক রাখাল রাহা, ডক্টর অনু হোসেন, কবি ও গবেষক গোলাম শফিক, কবি ও গবেষক মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক, কবি মাসুদুজ্জামান মাসুদ, কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান, জাগৃতি'র প্রকাশক দীপন ভাই, শ্রাবণের প্রকাশক রবীন আহসান, রম্য লেখক আহসান হাবিব, বিজ্ঞান লেখক ডক্টর ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, লেখক ফারহানা মান্নান, বিজ্ঞান লেখক ইমতিয়াজ আহমেদ, প্রকাশক জাহাঙ্গীর আলম সূজন, লেখক ও সাংবাদিক দীপংকর গৌতম, প্রকাশক মাধব চন্দ্র দাস, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও কবি টোকন ঠাকুর, নির্মাতা অন্তু আজাদ, নির্মাতা সন্দীপ বিশ্বাসও লক্ষী দম্পতি প্রমুখ।
আজ ছায়াবীথি প্রকাশন থেকে প্রকাশ পেয়েছে দুইটি বিজ্ঞানের বই। আইজ্যাক অ্যাসিমভের ‘পরমাণুর গহীন নিসর্গে’, অনুবাদ করেছেন তরুণ লেখক ইমতিয়াজ আহমেদ। এবং আব্দুল গাফফার রনি'র 'মহাকর্ষ তরঙ্গ-কণার সন্ধানে: নিউটন বনাম আইনস্টাইন'। দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হল ছায়াবীথি'র স্টলের সামনে। মোড়ক উন্মোচন করেছেন বিজ্ঞান লেখক ডক্টর ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী ও লেখক ফারহানা মান্নান দম্পতি। গতকাল লেখক ও সাংবাদিক তুষার আব্দুল্লাহ'র ইন্টারভিউ পড়ে নতুন করে বই চুরিতে উৎসাহী হয়েছিলাম। সেই উৎসাহে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে ছবি তোলার হৈ হৈ রৈ রৈ'র মধ্যে একটি বই চুরি করার চেষ্টাও করলাম। কিন্তু ফারসীমের কারণে আমার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল। ফারসীম কইল, আম্নেরে আমি বইটা কিন্না দিমুনে। খামাখা পোলাপাইনের বই চুরি কইরা কী শান্তি পাইবেক!! আর বইটির অনুবাদক ইমতিয়াজ আহমেদ তো ব্যাপারটা টের পেয়ে ছো মেরেই বইটা ছিনিয়ে নিল। ভাগ্যিস আমার লগে এক বন্ধু ছিল, হেয় এই ঘটনা দেখে নাই। হেয় ছায়াবীথি'র স্টলে তখন নতুন বই দেখছিল। নইলে আমার ইজ্জ্বত আজ ব্যাবাক পাংচার হইয়া জারগোই। তবে তুষারদা যেদিন মেলায় আসবে, সেদিন তুষার'দার বইটা চুরি করে অটোগ্রাফ নেবার ইচ্ছে রইল!!
রাত আটটায় নন্দনের স্টল বন্ধ করে মেলা থেকে বের হবার সময় ফোন করেন বন্ধু টোকন ঠাকুর। ঠাকুর আর আমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলার মাঠে ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সঙ্গে যোগ দেন সন্দীপ, লক্ষী আর অন্তু আজাদ। বিভাসের সামনে গিয়ে আমরা পাই কবি নির্মলেন্দু গুণ ও কবি কন্যা কবি ও নির্মাতা মৃত্তিকা গুণকে। আজ প্রথম মেলায় গুণ'দার সঙ্গে দেখা হল। তারপর গুণ'দাকে ঘিরে কিছুক্ষণ আড্ডা হল। গুণদা জানালেন, শরীর এখন পুরোপুরি ফিট। গুণদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা মেলা থেকে বাইরে এসে সন্দীপের একটি শর্ট ফিল্ম দেখলাম শিখা চিরন্তন চত্বরে বসে।
.......................................
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা
২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২৯
সাদী ফেরদৌস বলেছেন: জাতির পিতাকে নিয়ে লেখা বেশির ভাগ বই ই আমার সংগ্রহে আছে, এটাও সংগ্রহে রাখবো বলে আশা করছি
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৭:৪৯
কলাবাগান১ বলেছেন: অভিনন্দন লেখক কে