নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বইমেলার ডায়েরি (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫) !!!

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:৩৯

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, মঙ্গলবার। আজ ছিল অমর একুশে বইমেলার ২৪তম দিন। গোটা বইমেলায় এখন বিদায়ের একটা সুর বাজছে। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে প্রকৃত বইপ্রেমীদের বাছাই করে বই কেনার দৌড়ঝাপ। কারণ, আর মাত্র চার দিন পরেই ভাঙবে এই মাসব্যাপী বইয়ের হাট।
আজ বইমেলায় গেছি চারটায়। ছিলাম একেবারে মেলার শেষ পর্যন্ত। আজ বাংলা একাডেমির মূল মঞ্চে আলোচনার বিষয় ছিল 'বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বাংলাদেশের লোকজ-সংস্কৃতি গ্রন্থমালা'। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাহবুবুল হক। আলোচক ছিলেন অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায়, গোলাম কিবরিয়া ভুঁইয়া, মুহম্মদ শহীদ উজ জামান, মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও মাহবুবা নাসরীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। সন্ধ্যায় যথারীতি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মেলায় এসেছে অনিন্দ্য প্রকাশনী থেকে কবি রহিমা আফরোজ মুন্নী'র কবিতার বই 'উড্ডীন নদীর গান'। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী ধ্রুব এষ। বইটির দাম রাখা হয়েছে ১২০ টাকা। বইটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলায় অনিন্দ্য প্রকাশনীর স্টলে (স্টল নং ৩২৬-৩২৮)।
মেলায় এসেছে দেশ পাবলিকেশন্স থেকে তরুণ লেখক মাসুদ পারভেজের গল্পের বই 'বিচ্ছেদের মৌসুম'। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন শিল্পী নিয়াজ চৌধুরি তুলি। বইটির দাম রাখা হয়েছে ১৩৫ টাকা। বইটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অমর একুশে বইমেলায় দেশ পাবলিকেশন্স স্টলে (স্টল নং ৮১)।
অমর একুশে বইমেলায় সাধারণত এই সময়ে প্রকৃত বইয়ের পাঠক আর সারা দেশের পাঠাগার ও বইক্রেতা-বিক্রেতাদের সমাগম ঘটে। কিন্তু দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে ঢাকার বাইরের ক্রেতাদের তেমন কোনো উপস্থিতি নেই। সারা দেশ থেকে এবার অমর একুশে বইমেলায় আসা বইপ্রেমীদের ভিড় বলতে গেলে একদম ছিল না। বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে ঢাকার বাইরের বইপ্রেমীরা এবার মাসব্যাপী অমর একুশে বইমেলা অনেকটাই মিস করেছেন।
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও পাঠাগারের জন্য ক্রয় তালিকায় এখন যেসব বই তালিকাভুক্ত হচ্ছে, সেই তালিকা যারা তৈরি করছেন, তাদের উচিত বইমেলায় আসা সঠিক বইটি ক্রয় করা। কোনো ধরনের অনুরোধের আসরের ঢেকুর গিলে অপাঠ্য অখাদ্য কুখাদ্য বই কিনে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পাঠাগারের সেলফ ভর্তি করলে প্রকৃত বই পাঠকদের সত্যি সত্যিই ঠকানো হবে। যদি কেউ এটা করার চেষ্টা করেন তাহলে প্রকৃত পাঠকদের সাথে এক ধরনের প্রতারণা করা হবে। এমনিতে প্রতি বছর আমাদের কাছে নানান মাধ্যমে অভিযোগ আসে যে, দেশের পাঠাগারগুলোর জন্য একশ্রেণীর সরকারি আমলাদের লেখা বইপত্রের ঢালাউ চালানে গোজামিলের কেনাকাটার এক মহোচ্ছপ করা হয়। সরকারের উচিত সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বা শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একটি কার্যকরী নীতিমালা অনুসরণ করা। সেখানে কোনো আমলার লেখা অখাদ্য বইয়ের নির্লজ্ব চালান রয়েছে কিনা তা যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা। পাশাপাশি আমাদের সরকারি আমলা কবি-সাহিত্যিকদের দৃষ্টিভঙ্গিতে রুচিশীলতার পরিচয় দেওয়া। নিজেদের লেখা বইটি যদি সত্যিই পাঠযোগ্য হয়, তার বাইরে তালিকায় কোনো বাজে বই ঢুকতে না দেওয়া। বরং ভালো বই খুঁজে বের করে তা সরকারি ক্রয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা।
বইমেলায় একটি মজার বিষয় সবার চোখে পড়ছে কয়েকদিন ধরে। সরকারি চাকরি করেন বা সৌখিন কবি-সাহিত্যিকদের যাদের বই এসেছে মেলায়, তাদের বইটি যেদিন মেলার মাঠে আসছে, সেদিন বইটির মোড়ক উন্মোচন হচ্ছে নজরুল মঞ্চে। আমাদের বিশিষ্টজনেরা বুঝে বা না বুঝে অনেক অখাদ্য-কুখাদ্য বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করছেন। আর সেই ছবি দেখিয়ে এসব বইয়ের লেখকরা এক ধরনের স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছেন। যেদিন বইটি মেলায় আসছে সেদিন অফিসের কলিগদের জোর করে বা অনিচ্ছা স্বত্তেও কলিগ বন্ধুর বইটি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। বা কেউ একক স্পন্সরে বইটি কিনে অন্য কলিগদের মধ্যে বিতরণ করছেন। আর সৌখিন লেখকরা তাদের গোটা আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে মেলায় আসছেন। তাদের হাতে চক্ষু লজ্বার দোহাই দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছেন সেই বই। ফলে বইমেলা থেকে একটি ভালো বই খুঁজে নিজেদের ইচ্ছায় কিনতে পারছেন না এসব ভুক্তভোগীরা। কারণ এদের সবার বই কেনার জন্য সারা বছরে তেমন কোনো বাজেট থাকে না। কিন্তু এমন বিড়াম্বনার অনুরোধের ঢেকুর গিলতে হয়। এদের অনেকে স্বীকার করেছেন যে, কিচ্ছু করার নেই, কি বলব, বসের বই হলে তো কথাাই নেই। আর কাছের আত্মীয় হলেও একই দশা। ফলে এসব করতে গিয়ে একটি ভালো বই তার পাঠক হারাচ্ছে।
আজ বইমেলায় যাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে বা আড্ডা হয়েছে তারা হলেন- কবি অসীম সাহা, কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান, কবি ও গবেষক তপন বাগচী, লেখক ঋষি এস্তেবান, কবি শাফি সমুদ্র, কবি কাজী টিটো, নাট্যাভিনেতা ইকতারুল ইসলাম, নাট্যাভিনেতা শাহজাহান সম্রাট, নির্মাতা রানা ভাই ও তার পরিবারবর্গ, লেখক ও নির্মাতা মোস্তফা মনন, শিল্পী চারু পিন্টু, কবি সরসিজ আলীম, কবি মামুন খান, কবি মাসুদুজ্জামান, কবি পিয়াস মজিদ, কবি ও সম্পাদক নীলসাধু, লেখক ও গবেষক তপন বড়ুয়া, কবি ও প্রকাশক আফজাল আলী খান, কবি শামীমুল হক শামীম, লেখক ও প্রাবন্ধিক আহমাদ মাযহার, কবি দিলদার হোসেন, তরুণ কবি ও নির্মাতা ঈয়ন, মেধা প্রমুখ।
আজ আমি বই বিক্রি করেছি নয়টি। মুজিব দ্য গ্রেট ৫টি, আমার গল্পের বই পঞ্চভূতেষু ২টি, আর বন্ধু কবি আলফ্রেড খোকনের কবিতার বই 'মধু বৃক্ষ প্রতারণা বিষ' ও 'দুর্লভার দিন' এক কপি করে। আমার প্রকাশক মাধবদা জানালেন, মুজিব দ্য গ্রেট আজ তিনি বিক্রি করেছেন ১৪টি। এ পর্যন্ত মুজিব দ্য গ্রেট ৫ দিনে বিক্রি হয়েছে মোট ১০৮ কপি।
মেলা থেকে বের হয়ে শাহবাগ আসার পথে আড্ডা হয়েছে কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা টোকন ঠাকুর, লেখক ও সাংবাদিক তরুণ সরকার, বন্ধু নাহিদ, টাইগার দোয়েল, সুধীর দা, আর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কবি'র সাথে।

..................................
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫
ঢাকা

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫১

শহীদুজ্জামান বলেছেন: ঘটক সাহেবকে ফেবু দেখা যায় না কেনু

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.