নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তালিকাভুক্ত ৫৫৬ যুদ্ধাপরাধীর মধ্যে ১৭ জনের রায় হয়েছে, চূড়ান্ত নিস্পত্তি ৪টি, বর্তমানে আপিল বিভাগে ৯টি এবং ৪ জন আসামি পলাতক!!!

১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৪২

বাংলাদেশে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত একাত্তরের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর ২০১২ সালের ২২ মার্চ আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ যাত্রা শুরু করে। দুটি ট্রাইব্যুনালে গত পাঁচ বছরে এখন পর্যন্ত মোট ১৭টি মামলায় রায় হয়েছে। ৫টি মামলা পুরপুরি নিস্পত্তি হয়েছে। এছাড়া অপর ৬টি মামলা এখন বিচারধীন রয়েছে। আর চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আরও নয়টি আপিল।

১. ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি প্রথম রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক রুকন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকারের ফাঁসির আদেশ আসে। পলাতক থাকায় তিনি আপিলের সুযোগ পাননি। ওই রায় এখনো কার্যকর হয়নি।
২. ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যা প্রত্যাখ্যান করে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান নেয় হাজার হাজার সাধারণ মানুষ। যেটি গণজাগরণ মঞ্চ নামে পরিচিত। যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে সেই আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে জনতার দাবির মুখে সরকার ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধন আনতে বাধ্য হয়। আইনে সংশোধনীর কারণে রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষেরই আপিলের সমান সুযোগ তৈরি হয়। ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ এ মামলার চূড়ান্ত রায়ে কাদের মোল্লাকে প্রাণদণ্ড দেয়। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়।
৩. ট্রাইব্যুনালের তৃতীয় রায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ হয়। তখন সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে ব্যাপক সহিংস ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ৭০ জন নিহত হয়। ওই রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ‘দেইল্যা রাজাকার’ নামে খ্যাত এই জামায়াত নেতার সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।
৪. ২০১৩ সালের ৯ মে ট্রাইব্যুনালের চতুর্থ রায়ে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানকেও মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১৪ সালের ৩ নভেম্বর আপিলের রায়েও তার সর্বোচ্চ সাজা বহাল থাকে। ২০১৫ সালের ৫ মার্চ কামারুজ্জামানের রায় পুর্নবিবেচনার আবেদন খারিজ হয়ে গেলে ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
৫. একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উসকানির দায়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াত আমীর গোলাম আযমকে ২০১৩ সালের ১৫ জুন ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। এটি ছিল ট্রাইব্যুনালের পঞ্চম রায়। রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি চলার মধ্যেই ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ৯২ বছর বয়সী জামায়াতগুরু গোলাম আজম।
৬. ২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ষষ্ঠ রায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মুজাহিদ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।
৭. ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর সপ্তম রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রামের সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় আসে। সাকাচৌ রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেছেন।
৮. ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর বিএনপির সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় আদালত। যুদ্ধাপরাধের দণ্ড ভোগের মধ্যে ৮৩ বছর বয়সে ২০১৪ সালের ৩০ অগাস্ট আবদুল আলিম মারা যায়। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ১১ মাস কারাবন্দি অবস্থায় আবদুল আলিম হাসপাতালের প্রিজন সেলে ছিলেন।
৯. বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে একাত্তরের দুই বদর নেতা আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মুঈনুদ্দীনকে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। পলাতক থাকায় তারা আপিলের সুযোগ পাননি।
১০. ট্রাইব্যুনালের দশম রায় আসে ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর। জামায়াত আমির একাত্তরের বদর প্রধান মতিউর রহমান নিজামীকেও দেওয়া হয় সর্বোচ্চ সাজা, যিনি বাঙালি জাতিকে সমূলে ধ্বংস করতে ‘স্বেচ্ছায় ও সচেতনভাবে’ ইসলামের অপব্যবহার করেন বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়। তিনিও এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।
১১. একাদশ রায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর চট্টগ্রামের আলবদর কমান্ডার মীর কাসেম আলীকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেয়। জামায়াতে ইসলামীর এই শুরা সদস্যকে দলটির প্রধান অর্থ যোগানদাতা বলা হয়ে থাকে। সর্বোচ্চ আদালতে তিনি খালাস চেয়েছেন।
১২. ১৩ নভেম্বর ২০১৪ সালে ট্রাইব্যুনালের দ্বাদশ রায়ে ফরিদপুরের রাজাকার কমান্ডার জাহিদ হোসেন খোকন ওরফে খোকন রাজাকারের ফাঁসির আদেশ আসে। পলাতক থাকায় তিনি আপিলের সুযোগ পাননি।
১৩. ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের ত্রয়োদশ রায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রাজাকার কমান্ডার ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মোবারক হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ।
১৪. ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর এরশাদ আমলের প্রতিমন্ত্রী ও একাত্তরে হবিগঞ্জের মুসলিম লীগ নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেয়।
১৫. ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর পঞ্চদশ রায়ে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসির আদেশ আসে। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছেন।
১৬. ২০১৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ষোড়শ রায়ে জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আব্দুস সুবহানকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দেয়। দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেছেন।
১৭. সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল জব্বারকে বয়স বিবেচনায় আমৃত্যু কারাদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। আনুমানিক ৮০ বছর বয়সী এই পলাতক যুদ্ধাপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এদের মধ্যে গোলাম আযম ও আবদুল আলিম ইতোমধ্যে জেলে থাকাকালীন মারা যায়। এছাড়া আবুল কালাম আজাদ, আশরাফুজ্জামান খান, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও জাহিদ হোসেন খোকন পলাতক থাকায় মামলায় রায়ের বিরোদ্ধে আপিল করার সুযোগ পাননি। আর আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী, মোবারক হোসেন, সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আব্দুস সুবহান ও আবদুল জব্বার এই ৯ জনের মামলা আপিল পর্যায়ে বিচারাধীন। এই শেষ ৯ জনের বিরুদ্ধে আনীত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় এখন আপিল বিভাগে রয়েছে।

যার মধ্যে দুই ট্রাইব্যুনাল মিলিয়ে পাঁচটি মামলায় আরও নয় জনের বিচার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত ও অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে আরও কয়েকটি মামলা। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আপিল আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে দৈনন্দিন কার্যতালিকায় রয়েছে। এ ছাড়া জামায়াতের আমির মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত মতিউর রহমান নিজামী, অন্য নেতা মীর কাসেম আলী, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আবদুস সুবহান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেন, হবিগঞ্জের সৈয়দ মুহম্মদ কায়সারের আপিল পর্যায়ক্রমে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের দেওয়া আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পিরোজপুরের সাবেক এমপি পলাতক জব্বার ইঞ্জিনিয়ারের সাজা বৃদ্ধি চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

ট্রাইব্যুনালে পাঁচ মামলায় আরো ১১ আসামি:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও ৫টি যুদ্ধাপরাধের মামলায় ১১ আসামির বিরুদ্ধে বিচার চলছে। আসামিরা হলেন- বাগেরহাটের শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার ওরফে কসাই সিরাজ, আবদুল লতিফ ও খান আকরাম হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মো. হাসান আলী ওরফে হাছেন আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাহিদুর রহমান ও আফসার হোসেন চুটু, পটুয়াখালীর ফোরকান মলি্লক এবং নেত্রকোনার মো. ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননী। তাদের মধ্যে আসামি হাছেন আলী পলাতক। অন্যরা কারাগারে রয়েছেন।

............................................
ঢাকা
১৩ এপ্রিল ২০১৫

সূত্র: বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদ থেকে সংগৃহীত

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৩:২৫

কেএসরথি বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
এরমধ্যে বড়জোর ৫০ জন জীবিত অবস্থায় বিচারের সাজা ভোগ করতেও পারে। বাকীরা মরণোত্তর সাজা পাবে। বিচারের কাজটা শুরু হইতে একটু বেশিই দেরী হইছে।

৩| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২০

কবি আলমগীর গৌরিপুরী বলেছেন: তবে তা দেশের জন্য কতটুকু কল্যাণকর সেটা ভাববার বিষয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.