নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

নেপালে ভুমিকম্পে নিহতের সংখ্যা সহস্রাধিক! অসংখ্য মানুষ এখন ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা !!!

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:৩৪

আজ ২৫ এপ্রিল ২০১৫, নেপালে এক শক্তিশালী ভুমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি হয়েছে। সবশেষ বিবিসি'র খবরে বলা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা ৮৭০ ছাড়িয়ে গেছে, আহত এবং নিখোঁজ হয়েছেন বহু লোক। আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১১ মিনিট ২৭ সেকেন্ডে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ৭৪৫ কিলোমিটার দূরে, নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও পোখারার মাঝখানে লামজুং এলাকায় ছিল ভুমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল, এবং রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.৯। নেপাল ছাড়াও সমগ্র উত্তর ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জুড়ে এই ভূকম্পন অনুভুত হয়। রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৫। প্রথম কম্পনটির পর ৬ দশমিক ৪ মাত্রার আরেকটি ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।



যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, রিখটার স্কেল অনুযায়ী ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলে এর তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৯। তীব্রতা অনুযায়ী এটি শক্তিশালী ভূমিকম্প। এটির গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৮১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে ছিল ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল। ভেঙে পড়া অসংখ্য ভবনের নিচে এখনো অনেকে চাপা পড়ে আছেন। নেপালের পুলিশ বলছে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।



নেপালের তথ্যমন্ত্রী মীনেন্দ্র রিজ্জাল বলেছেন, এই বিপর্যয়ের মোকাবিলায় তার দেশের আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন।



রাজধানী কাঠমান্ডুর বিখ্যাত ধারাহারা টাওয়ার সহ বহু ভবন ধ্বংস হয়েছে। রাজধানীর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হিমালয়ের এভারেস্ট শৃঙ্গে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। হিমালয় অভিযানে যাওয়া পর্বতারোহীদের একটি 'বেস ক্যাম্পের একাংশ বরফের ধসে চাপা পড়েছে। ভূমিকম্পের কারণেই জমাট বাঁধা এই বরফে ধস শুরু হয়। নেপালের একজন পর্যটন কর্মকর্তা বলেন, পৃথিবীর সর্বোচ্চ এই পর্বতটিতে তুষার ধসে অন্তত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। “নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে। নিহতদের মধ্যে বিদেশি নাগরিক এবং শেরপারা রয়েছে।”



ভূমিকম্পে কাঠমান্ডুর অনেক ভবন ধসে পড়েছে, এর মধ্যে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য ধারারা টাওয়ারও রয়েছে। ১৮৩২ সালে নির্মিত এই স্থাপনাটি কাঠমান্ডুর অন্যতম প্রধান পর্যটন স্থান। কাঠমান্ডুর একটি পার্কে ভাস্কর্য ভেঙে পড়লে তার নিচে চাপা পড়ে এক নারী শিশু নিহত হয়।



বিধ্বস্ত ভবন থেকে উদ্ধার করে হতাহতদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে, এদের মধ্যে অনেকেই হাত-পাসহ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়েছেন। কাঠমান্ডুতে অনেকেই ধসে পড়া ঘর-বাড়ির ছবি ইন্টারনেটে তুলেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিধ্বস্ত ভবনগুলোর আশেপাশে পাথরকুচি ছড়িয়ে আছে। রাস্তায় বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে এবং আতঙ্কিত মানুষজন বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় অবস্থান করছে।



রয়টার্সের এক সাংবাদিক বলেছেন, অনেক ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবাই নেমে এসেছে রাস্তায়। অনেকে ছুটছে হাসপাতালের দিকে।



নেপালের তথ্যমন্ত্রী মিনেন্দ্র রিজাল উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন। “আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সব সম্প্রদায় থেকে সাহায্য প্রয়োজন। আমরা এখন যে দুর্যোগের মুখে পড়েছি, তা মোকাবেলায় যাদের বেশি জ্ঞান ও সরঞ্জাম রয়েছে, তাদের সাহায্য এখন আমাদের জন্য জরুরি।”



এ ভুমিকম্পে ভারতের নানা স্থানে অন্তত ৩০ জন এবং বাংলাদেশে অন্তত ২ জন নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে। ঢাকায় প্রথম দফায় ভূমিকম্পটি প্রায় দুই মিনিট স্থায়ী ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছে। শহরের বহুতল ভবনগুলো কয়েক মিনিট ধরে দুলতে থাকায় আতংক তৈরি হয়। এসময় ভবনগুলো থেকে মানুষজন ছুটোছুটি করে নেমে রাস্তায় এসে অবস্থান নেয়। এর চল্লিশ মিনিট পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা ভূমিকম্প আঘাত হানে।



বাংলাদেশে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৫ বা তার কিছু বেশী', বলছিলেন মি. আলম। মিরপুর এলাকার কয়েকজন গার্মেন্টস উদ্যোক্তা জানাচ্ছেন, ভূমিকম্প আঘাত হানার সাথে সাথে ওই এলাকার সব গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা বাগেরহাট থেকে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি পুকুরের পানিতে ঢেউ সৃষ্টি হতে দেখেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ায় যে ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন পুকুরে এমন ঢেউ উঠতে দেখেছিলেন।



মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ৮১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে। এর গভীরতা ছিল ১৫ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলে এর তীব্রতা ছিল ৭ দশমিক ৯।



ভারতে নিহত ২০:

টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতে ভূমিকম্পে অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ১৪ জন নিহত হয়েছে বিহারে। নয়াদিল্লিসহ ভারতের পুরো সীমান্ত এলাকাজুড়ে ভূ-কম্পন অনুভূত হয়। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও সিকিমেও এ কম্পন অনুভূত হয়। দেশটির বিভিন্ন স্থান থেকে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আমাদের কলকাতা প্রতিনিধি জানান, ভারতের দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাব, আসাম ও রাজস্থানে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। পশ্চিমবঙ্গেও তীব্রভাবে অনুভূত হয়েছে ভূমিকম্প। ভূমিকম্পের কারণে কলকাতার পাতাল রেল চলাচল ১৫ মিনিট বন্ধ ছিল।



ভারতে ভবন ধসে অন্তত ১২জন এবং বাংলাদেশে আতঙ্কের হুড়োহুড়িতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। নেপালে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ১৯৩৪ সালের ভূমিকম্পে, ওই দুর্যোগে সাড়ে ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।



ভূমিকম্পে কাঠমান্ডুতে ত্রিভূবন বিমানবন্দরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হবে বলে কর্মকর্তারা মনে করছেন।



এনডিটিভি বলছে, রাজধানী দিল্লিতে ভূমিকম্পের কারণে আতঙ্কিত মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিল। ভূমিকম্পটি প্রায় মিনিটখানেক সময় অনুভূত হয়। এছাড়াও ভারতের পাটনা, লক্ষ্ণৌ, কলকাতা, জয়পুর, চন্ডিগড় এবং অন্যান্য বেশকিছু শহরে কম্পন অনুভূত হয়।



[সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা, রয়টার্স, এপি, এনডিটিভি, প্রথম আলো, বিডিনিউজ২৪, টাইমস অব ইন্ডিয়া, এএফপি ও কিছু অনলাইন নিউজপেপার]







মন্তব্য ১ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: শেয়ার করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.