নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
বারো ভূঁইয়াদের একজনের নাম ছিল হাজো ভূঁইয়া। হাজো ভূঁইয়ার ছিল দুই মেয়ে। জিরা আর হিরা। সংকোশ বা সরলডাঙ্গা নদী আর চম্পাবতী নদীর মাঝখানে চিকনা পর্বতাঞ্চলে তখন ছিল মাঙ্গোলীয়দের আধিপত্য। চিকনা পর্বতের অবস্থান ডুবরী থেকে প্রায় ৫০ মাইল উত্তরে। ডুবরী হল বর্তমান আসামের গোয়ালপাড়া জেলা। চিকনা পর্বতের মাঙ্গোলীয় গোত্রের সর্দার ছিলেন হারিয়া। হরিদাস মন্ডল নামেই ইতিহাসে সবাই যাকে চেনেন। এই হরিদাস মন্ডল ছিলেন মাঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত হৈহৈ বংশের উত্তারধীকার।
চিকনা পর্বতে সংঘর্ষ এড়াতে, জাতিগত দাঙ্গা বন্ধ করতে এবং শান্তি বজায় রাখতে হাজো ভূঁইয়া হরিদাস মন্ডলের সাথে তার দুই মেয়ে জিরা ও হিরা'র বিয়ে দিলেন। জিরা ও হিরা'র বিয়ের পর জিরার গর্ভে জন্ম নিল মদন আর চন্দন। অন্যদিকে হিরার গর্ভে জন্ম নিল বিশু (বিশ্ব সিংহ) ও শিশু (শিষ্য সিংহ)। হরিদাস মন্ডলের এই চার ছেলের মধ্যে বিশু (বিশ্ব সিংহ) ছিল সবচেয়ে বেশি সাহসী, বুদ্ধিমান, প্রতাপশালী এবং ক্ষমতাপিয়াসু। পরবর্তীকালে এই বিশু বা বিশ্ব সিংহের হাতেই ১৫১৫ সালে কোচ রাজবংশের গোরাপত্তন।
ভারতের কোচবিহার বা কুচবিহার-এর নামটি এসেছে এই কোচ রাজবংশী থেকেই। 'কোচ' এসেছে কোচ রাজবংশী থেকে। আর 'বিহার' শব্দটি এসেছে সংস্কৃত 'বিহার' থেকে। যার অর্থ হল 'ভ্রমণ'। জনশ্রুতি হল, কোচ রাজবংশী'র রাজা বিশ্ব সিংহ এবং পরবর্তীকালে তাঁর ছেলে মজারাজ নারা নারায়ন চিকনা পর্বতে যতোটুকু এরিয়া নিয়ে ভ্রমণ করতেন ততোটুকুই হল কোচবিহারের আয়তন। কোচবিহার রাজ্য সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী ছিল রাজা বিশ্ব সিংহের পুত্র মহারাজ নারা নারায়নের আমলে। তখন কোচবিহারের সীমানা ছিল উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ এলাকা, বর্তমান বাংলাদেশের রংপুরের সীমান্তবর্তী কিছু এলাকা, বিহারের কিশানগঞ্জ জেলা, এবং ভূটানের দক্ষিণপাশের কিছু এলাকা। কোচ রাজবংশীদের নিজস্ব ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে স্বতন্ত্র ভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য কোচ রাজা স্বাধীন কমতপুর বা কমতপুরী রাজ্য গড়ে তোলেন। ইতিহাসে যেটি আসলে কামতা কিংডম।
কামতা রাজ্যের দুটি প্রধান নগর বা ব্যবসাকেন্দ্র ছিল। একটির নাম কোচবিহার। অপরটির নাম কোচ হাজো। পরবর্তীকালে কোচবিহারে ব্যবসা-বাণিজ্যের অযুহাতে মুঘলদের অনুপ্রবেশ ঘটল। আর কোচ হাজো নগরটি অহমদের দখলে চলে যায়। কামতা রাজ্যের তৃতীয় আরেকটি শাখা বা ব্যবসাকেন্দ্র ছিল। সেটির নাম খাসপুর। খাসপুর পরবর্তীকালে কাচারি অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়।
আসামের প্রথম ঐতিহাসিক নগরীর নাম কামরূপ। কামরূপ নগরীর অস্তিত্ব ছিল ৩৫০ সাল থেকে ১১৪০ সাল পর্যন্ত। মোট তিনটি রাজবংশ কামরূপ শাসন করেছিল। বর্মণ রাজবংশ, মলেচ্ছা রাজবংশ এবং পাল রাজবংশ। আর ওই সময়কালে কামরূপের রাজধানী ছিল যথাক্রমে প্রাগ্যতিষপুর, হারুপেশ্বরা এবং দুর্জয়া। যা বর্তমানের গৌহাটি, তেজপুর এবং গৌহাটি। যার বিস্তৃতি ছিল গোটা ব্রহ্মপুত্র নদীর অববাহিকা, উত্তরবঙ্গ, এবং বর্তমান বাংলাদেশের কিছু এলাকা।
প্রাচীন বাংলার পাল রাজবংশের লোকজন ছিল বৌদ্ধধর্মাবলম্বী। আর কামরূপার পাল রাজবংশের লোকজন ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ওই সময়ে ক্রমাগত হিন্দুদের প্রভাব বিস্তারের ফলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা ধীরে ধীরে দক্ষিণে, পূর্বে এবং উত্তর-পূর্বের দিকে সরে যেতে বাধ্য হয়। ছিটমহল সমস্যার শুরু আসলে তখন থেকেই। সীমানা সমস্যা মেটানোর জন্য কোচবিহারের রাজা এবং রংপুরের মহারাজা ১৭১৩ সালে মুঘল সম্রাটের নির্দেশে একটি সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। ১৭১৩ সালের ওই সীমান্ত চুক্তি অনুসারেই পরবর্তীকালে বৃটিশ আমলেও কোচবিহার ও রংপুরের সীমানা সেভাবেই ছিল।
১৯৪৭ সালে বৃটিশদের কাছ থেকে ভারতবর্ষ ভাগ হয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সৃষ্টির সময় রংপুর সেই সীমান্ত সমস্যা নিয়েই পূর্ব-পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হল। আর কোচবিহার ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত স্বতন্ত্র বৃটিশ কলোনি হিসেবে থেকে পরে ভারতের সঙ্গে যুক্ত হল। ১৯৫৮ সালে ছিটমহল সমস্যা সমাধানের জন্য পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদ মিমাংসায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত দৌড়ঝাঁপ হয়েছিল। কিন্তু সমস্যার তেমন কোনো সুরাহা তখন হয়নি। এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হলে রংপুর ও কোচবিহার সীমান্তের সেই পুরানা সমস্যা আবারো শুরু হল।
১৯ শে মার্চ ১৯৭২ সালে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ বছর মেয়াদী এক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ভারত-বাংলাদেশ শান্তি চুক্তির পর উভয় দেশের মধ্যে সীমানা সমস্যা সমাধানের জন্য ছিটমহল বিনিময়ের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লীতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যা ১৯৭৪ সালের ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে পাশ হয়।
১৯৭৪ সালের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি অনুসারে, তখন মোট ১৫টি সমস্যার সমাধান হয়। তখন ২.৬৪ বর্গ মাইল এলাকার বেরুবাড়ি ছিটমহল ভারতকে দিয়ে বাংলাদেশ পায় তিনবিঘা করিডোরের পাশে ১৭৮ মিটার X ৮৫ মিটার সাইজের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহল। এছাড়া ওই চুক্তি অনুসারে মিজোরাম-বাংলাদেশ সীমান্ত, ত্রিপুরা-সিলেট সীমান্ত, ভগলপুর রেলওয়ে লাইন, শিবপুর-গৌরাঙ্গালা সীমান্ত, বেলুনিয়া পয়েন্টে মুহুরী নদী সীমান্ত, ত্রিপুরা-নোয়াখালী সীমান্ত, ত্রিপুরা-কুমিল্লা সীমান্ত, ফেনী নদী সীমান্ত, ত্রিপুরা-হিলট্র্যাকস সীমান্ত, বিয়ানিবাজার-করিমগঞ্জ সীমান্ত, হকার খাল, বইকরী খাল, হিলি সীমান্ত, লাঠিটিলা-দুমাবেড়ী সীমান্ত এবং অন্যান্য ছিটমহলের সীমানা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের কথা ছিল।
কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর ভারত বাংলাদেশ শান্তি চুক্তি এবং ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত চুক্তি মুখ থুবড়ে পড়ল। এর দীর্ঘ দিন পর ২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মানমোহন সিং এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও ভারতের সমস্যা জর্জরিত ১৬২ টি ছিটমহলের সীমানা পুনঃনির্ধারণ, তিস্তা জল বিনিময় চুক্তি, রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ, সুন্দরবন সংরক্ষণ, বাঘ সংরক্ষণ, উভয় দেশের উন্নয়ন ফ্রেমওয়ার্ক, বাংলাদেশ থেকে নেপালে ট্রানজিট সুবিধা, খনিজ সম্পদ আহরণ, মৎস্য সম্পদ আহরণ, জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম বিনিময়, ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশ ডিজাইন এবং বাংলাদেশের বিজিএমইএ ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন টেকনোলজি'র মধ্যে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
তখন ভারতের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ঢাকায় না আসায় তিস্তা জল বিনিময় চুক্তি এবং ছিটমহল সংক্রান্ত সীমান্ত সমস্যা সমাধান চুক্তি আলোর মুখ দেখেনি।
সেপ্টেম্বর ২০১১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মানমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত সমস্যা জর্জরিত ১৬২ টি ছিটমহলের সীমানা পুনঃনির্ধারণ, ছিটমহলগুলোর জনগণের নাগরিকত্ব এবং যাতায়াত সুবিধা নির্ধারণে যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, সেখানে ৫১ টি ছিটমহল ভারত নেবে, যার আয়তন প্রায় ৭,১১০ একর। আর ১১১টি ছিটমহল বাংলাদেশ পাবে, যার আয়তন প্রায় ১৭,১৪৯ একর।
২০১৩ সালের আগস্ট মাসে ভারতীয় লোকসভায় ছিটমহল সংক্রান্ত নতুন সীমানা নির্ধারণ বিলটি কংগ্রেস নের্তৃত্বাধীন জোট সরকার লোকসভায় পাশের জন্য উত্থাপন করলেও বিরোধীদল বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের বাধার মুখে তা লোকসভায় পাশ হয় নি। ভারতীয় লোকসভায় এই বিলটি পাশের জন্য কংগ্রেস নের্তৃত্বাধীন জোট সরকারের দুই তৃতীয়াংশ ভোট প্রয়োজন। যা কংগ্রেসের ছিল না। ফলে বিলটি আর পাশ হল না।
ওদিকে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আবারো ছিটমহল সীমানা নির্ধারণ নিয়ে নতুন করে গোল পাকিয়ে তখন বলেছিলেন, 'এই চুক্তিটির খসড়া করার সময় কেন্দ্রীয় সরকার একরকম কথা বলেছিলো। কিন্তু চুক্তি হওয়ার পর তা অন্যরকম হয়ে গেছে। জমি পুনর্বন্টন চুক্তির ক্ষেত্রেও আমরা প্রথম থেকেই কেন্দ্রকে বলে আসছি যে, হস্তান্তর হওয়ার কথা আছে যেসব জমির, সেখানকার বাসিন্দাদের সম্মতি নেয়া প্রয়োজন।' এছাড়া মমতা রাজ্যের জমি হারানোর প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, ‘এই চুক্তিতে রাজ্যের ছিটমহলের ১৭ হাজার একর জমি হস্তান্তর হওয়ার কথা। বদলে আমরা পাবো মাত্র ৭ হাজার একর। সুতরাং যারা এইসব এলাকায় থাকেন তাদের সম্মতি না নিয়ে এমন জিনিস কীভাবে আমরা মেনে নিতে পারি?’
কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের কাছে তখন তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘রাজ্যের সম্মতি ছাড়াই আমাদের জমি (ছিটমহল), জল (তিস্তা) বিলিয়ে দিতে এত তাড়া কীসের? কী ধরণের রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে তারা?’
ভারতের ১৫তম লোকসভার মেয়াদ শেষ হয় ৩১ মে ২০১৪ সালে। নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদী'র নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। আবার বাংলাদেশেও ২৫ শে অক্টোবর ২০১৩ সালে নবম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হয়। ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ আবারো ক্ষমতাসীন হয়।
নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী হয়ে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের উপর। মোদীর প্রথম কার্যদিবস থেকেই সেই বার্তাটি আমরা দেখেছি। অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুটা নরম হয়েছেন। এ বছর ২১ ফেব্রুয়ারিতে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পুস্পস্তবক অর্পন করেন।
শেষ পর্যন্ত ৫ মে নরেন্দ্র মোদী'র নেতৃত্বাধীন ভারতীয় মন্ত্রীসভা বহুল আলোচিত বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত বিল মন্ত্রিপরিষদে অনুমোদন করেন। পরদিন ৬ মে এই বিল ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। গতকাল ৭ মে এই বিল ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি এই বিলে সাক্ষর করার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে এই সুসংবাদটি অবহিত করেন।
নরেন্দ্র মোদী আজ চীন ও মাঙ্গোলীয়া সফরে যাচ্ছেন। মোদীর ইচ্ছা আগামী জুন বা জুলাই মাসেই বাংলাদেশ সফর করবেন। আর তখন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ ৩০২ বছরের সীমান্ত জটিলতা দূর করার এই ঐতিহাসিক চুক্তি সাক্ষর হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যেকার দীর্ঘদিনের সীমান্ত জটিলতার অবসান হতে যাচ্ছে, যা উভয় দেশের সম্পর্কে একটি নতুন মাইলফলক রচনা করবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আন্তরিক সদিচ্ছার কারণেই দীর্ঘদিনের এই সীমান্ত জটিলতা শেষপর্যন্ত আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। যে কারণে উভয় দেশের দুই প্রধানমন্ত্রী উভয় দেশের জনগণের কাছ থেকে বড় ধন্যবাদ পাবার যোগ্য। পাশাপাশি ছিটমহলে আটকাপড়া বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন পরে যে রাষ্ট্রীয় নাগরিকত্ব পাবার সুযোগ তৈরি হচ্ছে, এটি শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয় গোটা বিশ্বের আলোচিত সীমান্ত জটিলতার মধ্যে অন্যতম ইস্যু। সুতরাং চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ঐতিহাসিক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত চুক্তি বিশেষভাবে আলোচিত হবে বলেই আমি মনে করি।
বাংলাদেশ এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসন্ন বাংলাদেশ সফর উপলক্ষ্যে উৎসবে মেতে ওঠার অপেক্ষায় আছে। বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে আম্পায়ারদের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে দুই দেশের ক্রিকেট সম্পর্কে যে বৈরিতা শুরু হয়েছিল, ইতোমধ্যে সেটাও দূর হয়েছে। জুন মাসে ভারতীয় ক্রিকেট দল বাংলাদেশ সফর করবে। তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও একটি টেস্ট খেলবে তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে। একটি টি২০ খেলা পাতানোরও প্রক্রিয়া চলছে।
বাংলাদেশ ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যত মজবুত হবে, ততই উভয় দেশের মানুষেরই সবচেয়ে বেশি উপকার হবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা পর্ব থেকে ভারত যে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু সেটি তারা আসন্ন ঐতিহাসিক বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত চুক্তি করে আবারো প্রমাণ দিতে যাচ্ছে। আমরা চাই আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব সবসময় এমন মধুর থাকুক। সীমান্তে বিএসএফের গুলি আমরা আর দেখতে চাই না। বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিরোধীদলের বাংলাদেশ ভারত হয়ে যাবে, এমন গুজবও আর শুনতে চাই না। ভারতের সংবিধান পরিবর্তন করে সীমান্ত বিল পাস হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধান বিরোধীদল বিএনপিও ভারতেকে অভিনন্দন জানিয়েছে। সবকিছু দেখে মনে হচ্ছে, দুই দেশের সম্পর্কের বরফ গলে এবার হয়তো একটি স্থায়ী সম্পর্কের দিকে যাচ্ছে।
.............................................
৮ মে ২০১৫
ঢাকা
২| ০৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৫
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন:
বেরুবারী যেহেতু আগেই দেয়া হয়ে গিয়েছিলো, তাই এলাকার পরিমান দুইদেশেরই প্রায় সমানই। আর এটা দেশের চেয়েও মানবিক ইস্যু হিসেবে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শেষ পর্যন্ত হচ্ছে এটাই অনেক। নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রধান হিসেবে খারাপ না। চেয়ারের ভার অনেকের আচরন পরিবর্তন করতে বাধ্য করে।
৩| ০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: ভালো তথ্যবহুল পোস্ট, তবে শুরুর ভূমিকার দৈর্ঘ্য কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে, পাঠককে অনেকটা ধৈর্যচ্যুতি করতে প্রভাবকের কাজ করে।
পোস্টে +++
ভালো থাকুন সবসময়, শুভকামনা জানবেন।
৪| ১০ ই মে, ২০১৫ বিকাল ৩:০৩
আবু মুছা আল আজাদ বলেছেন: এত বঝিনা। চাই বৃহত দেশ
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪
জেন রসি বলেছেন: বারো ভূঁইয়াদের এই ইতিহাস অজানা ছিল।
ধন্যবাদ আপনাকে।