নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন একটি পরাশক্তি। ঘরের মাঠে টানা পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকাকে বধ করেছে। আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর প্রত্যয় গুনছে এখন মাশরাফি বাহিনী। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টাইগার্সদের এমন ঈর্ষা করার মত অর্জনে গল্পটার ঠিক উল্টো পাশেই যেন টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের অবস্থান।
দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্ট খেলবে। আগামী ২১ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। আর আগামী ৩০ জুলাই থেকে ৩ আগস্ট ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে হবে সিরিজের শেষ টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট রেকর্ড বড়ই মর্মান্তিক। ৮টি টেস্টের সবগুলোতে বাংলাদেশে হেরেছে। যার মধ্যে ইনিংস পরাজয় এড়াতে পেরেছে মাত্র একটিতে। বাকি ৭টি টেস্ট বাংলাদেশ ইনিংস পরাজয় বরণ করেছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছেছেন ডেল স্টেইনসহ দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট দলের আট ক্রিকেটার। খুব সহজেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা দক্ষিণ আফ্রিকা ওয়ানডে সিরিজে ২-১ এ হেরেছে টাইগার্সদের কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর ধারণা, বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজও তাদের জন্য কঠিন হতে যাচ্ছে। শুক্রবার অনুশীলনের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ দলের প্রতিনিধি হয়ে আসেন সাংবাদিকদের সামনে। দলের কোচ মনে করেন, তাদের বিপক্ষে সিরিজ জেতায় আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকবে স্বাগতিকরা।
দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, “(বাংলাদেশ) ওরা আত্মবিশ্বাসী। ওরা ওয়ানডেতে ভালো খেলে আমাদের ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছে। ওদের আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে থাকবে। আমরা জানি, এটা কঠিন সিরিজ হতে যাচ্ছে। উইকেট ওদের জন্য মানানসই হবে। ওদের হারাতে আমাদের আগামী কয়েক দিন খুব ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে।”
ডেল স্টেইন একাই গুঁড়িয়ে দিতে পারেন বিশ্বের যে কোনো ক্রিকেট দলকে। বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনিই হবেন দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা অস্ত্র। তবে কোচ রাসেল ডমিঙ্গো জানিয়েছেন, তার দল একক কোনো খেলোয়াড়ের ওপর মোটেও নির্ভরশীল নয়। রাসেল ডমিঙ্গো বলেন, “টেস্ট দলে যোগ দেওয়া আট খেলোয়াড়ের এক জন হলেন ডেল স্টেইন। আমরা এক খেলোয়াড়ের দল নই। আমাদের ভার্নন ফিল্যান্ডার, মর্নে মরকেলও আছে। রিজা হেনড্রিকস, স্টিয়ান ফন জিলের মতো কয়েক জন তরুণ খেলোয়াড় আছে।” ওয়ানডে সিরিজে ভালো করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটি। ডিন এলগারে তার সমাধান দেখছেন ডমিঙ্গো। “ডিন এলগার আমাদের একজন সাহসী ক্রিকেটার। অভিজ্ঞতার দিক থেকে সে এখনও তরুণ। ঘরোয়া ক্রিকেটে ও দক্ষিণ আফ্রিকা এ দলের হয়ে সে অনেক রান করেছে। টেস্টে তার কাছ থেকে আমি বড় কিছু আশা করছি।”
ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। সেই অভিজ্ঞতা থেকে অতিথি দলের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো জানালেন, টেস্টে এই বাঁহাতি পেসারকে সামলাতে কুশলী হতে হবে তাদের। এ পর্যন্ত ৬ ওয়ানডেতে ১৮ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। তাই এখনও টেস্ট না খেলা এই তরুণ সম্পর্কে শিষ্যদের সতর্ক করে দিলেন ডমিঙ্গো। “ওর ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শুরুটা খুব ভালো হয়েছে। ওয়ানডে ও টেস্টের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। তবে সে এমন একজন বোলার যার বিপক্ষে প্রস্তুতি নিতে আমাদের কুশলী হতে হবে।”
মঙ্গলবার বাংলাদেশ বোলিংয়ের নতুন অস্ত্র মুস্তাফিজুর রহমানের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ টেস্ট দলের ক্যাপ্টেন মুশফিকুর রহিম। মুশফিক বাহিনীকে যোগ্য সাপোর্ট দেবার জন্য মুস্তাফিজুর দারুণ এক টেস্ট অভিষেক ঘটুক এটাই টাইগার্স ভক্তদের প্রত্যাশা।
এছাড়া বাংলাদেশ দলে পেসার রয়েছেন রুবেল হোসেন ও মোহাম্মদ শহীদ। কিন্তু উইকেট পেতে স্পিনারদের দিকেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তাই বড় ভূমিকা রাখতে হবে সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলামদের।
শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের অনুশীলনে ক্রিকেটারদের প্রায় অর্ধেকই অনুপস্থিত ছিলেন। মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, ইমরুল কায়েস, তাইজুল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, মোহাম্মদ শহীদরা এই দিন অনুশীলন করেন।
অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা ইমরুল কায়েস সাংবাদিকদের জানান, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে উইকেট পেতে স্পিনারদের ওপর বেশি নির্ভর করবেন তারা।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য দুই দিনের ছুটি পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। তার আগে দুই দিনের ছুটিতে হোটেল থেকে বাসায় ফিরেছেন আট ক্রিকেটার। বিসিবির পরিচালক ও জাতীয় দলের ব্যবস্থাপক খালেদ মাহমুদ সুজন জানিয়েছেন, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, রুবেল হোসেন, তাইজুল ইসলাম, লিটন দাস ও মুস্তাফিজুর রহমান হোটেলেই আছেন। এই ছয় ক্রিকেটার ঈদের ছুটি চট্টগ্রামে কাটাতে পারেন।
তামিম ইকবাল থাকবেন চট্টগ্রামে। নিজের শহরেই ঈদ উদযাপন করবেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। সতীর্থ ক্রিকেটাদের বাসায় দাওয়াত করে খাওয়াবেন টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
একদিনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন পরাশক্তি হলেও টেস্ট ক্রিকেটে এখনো অনেক দুর্বল প্রতিপক্ষ। টেস্ট পাঁচ দিনের খেলা। প্রতি দিন ৯০ ওভার করে মোট ৪৫০ ওভারের খেলা। প্রতিদিন ৩০ ওভারের একটি সেশন। দিনে তিনটি সেশন, পাঁচ দিনে মোট পনেরটি সেশন। এই ১৫টি সেশনে ব্যাট বলের লড়াইয়ে একটি দল মোট দুবার ব্যাট করার সুযোগ পায়।
কিন্তু প্রতিটি সেশনে খেলার যে চরিত্র বদলায়, তার সঙ্গে বাংলাদেশ এখনো ঠিক একদিনের ক্রিকেটের মত নিজেদের মানিয়ে নিতে পারেনি। প্রতিটি আলাদা সেশনের চারিত্রিক বৈশিষ্টও ঠিকঠাক যেন ধরতে পারেনি। বিশেষ করে দল যখন ফিল্ডিং করে, তখন দলের ক্যাপ্টেনকে যে বুদ্ধিমত্তা দিয়ে দল পরিচালনা করতে হয়, যে কৌশল নিয়ে বোলার পরিবর্তন করতে হয়, যে চাহিদা অনুযায়ী ফিল্ডিং সাজাতে হয়, এর কোথায় যেন বাংলাদেশ দলের এখনো অনেক ঘাটতি রয়েছে।
বিশেষ করে টেস্ট ক্যাপ্টেনসিতে মুশফিকুর রহিম এখনো দলকে সেভাবে পরিচিত করতে পারেননি। এর আগে সর্বশেষ পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে টস জিতে মুশফিক ফিল্ডিং নিয়েছিলেন। যা দলকে খুব ভুগিয়েছিল। প্রচণ্ড গরমে ফিল্ডারদের যখন স্টামিনা শেষ ঠিক তখন তাদের আবার ব্যাট করতে নামতে হয়েছিল। ফলে ব্যাটসম্যানরা থিতু হবার আগেই আউট হয়েছিল।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট শুরু হবে ঈদের ছুটি শেষ হওয়া মাত্রই। দলের যে আটজন ক্রিকেটার ঈদ পালন করতে দল থেকে ছুটি নিয়েছেন, তারা ঈদ শেষে ফিরে দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কতটুকু সময় পাবেন অনুশীলণ করার কিংম্বা দলকে কতোটা সাপোর্ট দিতে পারবেন, তা নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করছি না। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার মত একটি পরাশক্তির সঙ্গে টেস্ট খেলার আগে এভাবে ক্রিকেটারদের ছুটি দেওয়াটা মোটেও শুভ লক্ষণ নয়। ক্রিকেটের সঙ্গে ঈদের কোনো সম্পর্ক নাই। একটা দুইটা ঈদ পরিবারের সঙ্গে না কাটালে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না। বরং দলের সঙ্গে হোটেলে থেকে পুরো দল নিয়মিত অনুশীলন করাটা উচিত ছিল। কেবল ঈদের দিন চার/পাঁচ ঘণ্টার একটা ছুটি দেওয়া যেত। সহ-অধিনায়ক তামিম ইকবালের বাসায় ঈদের আনন্দ ভাগ করতে যাবার জন্য।
কিন্তু যারা ঈদের ছুটি কাটাতে গেছে তারা ঈদের পর ফিরে দ্রুততম সময়ে কতোটা খেলায় কনসেনট্রেশান করতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই গেল। এমনিতে আমাদের টেস্ট অভিজ্ঞতা ভালো নয়। তার উপর ক্রিকেটারদের ঈদের ছুটি চট্টগ্রাম টেস্টের ফলাফলে হয়তো একটা নেগেটিভ ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারে। তুবও টাইগার্স বাহিনীর জন্য শুভ কামনা রইল। সেই সঙ্গে টিম টাইগার্সকে ঈদের শুভেচ্ছা।
১৮ জুলাই ২০১৫
ঢাকা
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ২:৫০
বাংলার জামিনদার বলেছেন: সব সময় তো আর একরকম থাকবেনা। আশা করি পরিবর্তন শুরু হবে এবার ই। ইনিংস ডিফিট না খেলেই খুশি হবো, আর এর চেয়ে যত ভাল করবে, ভাল লাগাও জ্যামিতিক হারে বাড়তে থাকবে।