নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

টেস্ট ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান লারার সেই ঐতিহাসিক ইনিংস !!!

০২ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৪

২০০৪ সালের ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল। টেস্ট ক্রিকেট নাম্বার ১৬৯৬। সেন্ট জোন্সের এন্টিগুয়াতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় উইসডেন ট্রফি নামে পরিচিত টেস্ট সিরিজের চতুর্থ টেস্ট। ১২ এপ্রিল ২০০৪ ছিল এন্টিগুয়া টেস্টের তৃতীয় দিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টস জিতে ব্যাটিং নেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে তখনো ব্যাট করছিল। তৃতীয় দিন সকালে খেলার শুরু হওয়ার মুহূর্তে ব্রায়ান লারা ৩১৩ রানে ও রিডলি জ্যাকবস ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দলীয় রান তখন ৫ উইকেটে ৫৯৫।
লারার সামনে তখন ৩৮১ রান করার টার্গেট। এর আগে ১৯৯৪ সালে ব্রায়ান লারা টেস্ট ক্রিকেটের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস ৩৭৫ রান করেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এন্টিগুয়ায়। মাত্র সাড়ে নয় মাস আগে পার্থে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথিউ হেইডেন জিম্বাবৃয়ের বিপক্ষে লারার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন ৩৮০ রানের। ম্যাথিউ হেইডেনের ৩৮০ রানের রেকর্ড ভাঙ্গার জন্য এন্টিগুয়া টেস্টের তৃতীয় দিনে লারা ৩১৩ রানে অপরাজিত থেকে দিনের খেলা শুরু করেন।
লারার রান যখন ৩৫৯ তখন লারাকে একবার নারভাস দেখা যায়। গ্যারেথ ব্যাটি'র বল লারার ব্যাট ছুঁয়ে উইকেট কিপার জিরায়ান্ট জোন্সের গ্লাভসে জমা হল। দুই আম্পায়ার কিছুক্ষণ চুপ থাকলেন। লারা ডিটারমাইন্ড বল ব্যাট টাস করেনি। থার্ড আম্পায়ার টিভি রিপ্লে দেখে লারাকে নটআউট ঘোষণা দিলেন।
লারার রান যখন ৩৭৪ তখন নিজের আগেরবার করা ৩৭৫ এবং হেইডনের ৩৮০ এই দুটি স্কোর ক্রোস করার টার্গেট সামনে। গ্যারেথ ব্যাটিকে এক বিশাল ছক্কা মেরে লারা ম্যাথিউ হেইডেনকে টাস করলেন। পরের বলে আরেকটি চার মেরে লারা পৌঁছে গেলেন ৩৮৪ রানে। যা তখন টেস্ট ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড।
এর কিছুক্ষণ পর ব্রায়ান লারা বিশ্ব ক্রিকেটে এক নতুন মাইলফলক টাস করেন। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৪০০ রান করেন। একই সঙ্গে লারা সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি ও ত্রিপল সেঞ্চুরি করা প্রথম টেস্ট ক্রিকেটার। লারা ৪০০ রানে অপরাজিত থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ৫ উইকেটে ৭৫১ রানে তাদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা দেন। লারার সঙ্গে তখন অপরাজিত অপর ব্যাটসম্যান ছিলেন রিডলি জ্যাকবস। জ্যাকবস তখন ১০৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
লারা অপরাজিত ৪০০ রান করতে ক্রিজে ছিলেন মোট ৭৭৮ মিনিট। ৪০০ রান করতে লারা মোট ৫৮২ টি বল খেলেন। যার মধ্যে ছিল ৪৩টি চার এবং চারটি ছক্কা। এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে লারার করা ৪০০ রান ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য এন্টিগুয়া টেস্ট ড্র হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০২ ওভারে ৭৫১ রানে ইনিংস ডিকলার করার পর ইংল্যান্ড ৯৯ ওভারে ২৮৫ রানে অলআউট হয়ে ফলোঅনে পড়ে। যদিও ইংল্যান্ডের এন্ডি ফ্লিনটপ ১০২ রানে অপরাজিত ছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড ১৩৭ ওভারে ৫ উইকেটে ৪২২ রান করার পর ম্যাচটি ড্র হয়। ইংল্যন্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ভন করেছিলেন ১৪০ রান।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে লারার করা অফরাজিত ৫০১ রানের রেকর্ডটি এখন পর্যন্ত ক্রিকেট ইতিহাসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের স্কোর। ইংল্যান্ডের ডারহামের বিপক্ষে ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে লারা অপরাজিত ৫০১ রানের ইনিংসটি খেলেন ১৯৯৪ সালে। বিল পন্সফোর্ডের পর লারা দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান যিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে দুইবার চারশো রান করেন।
লারা মোট ১৩১টি টেস্ট ম্যাচ খেলেন। লারার টেস্টে মোট রান ১১ হাজার ৯৫৩। ব্যাটিং গড় ৫২.৮৮। যার মধ্যে ভারতের সুনীল গাভাস্কারের সমান সংখ্যক ৩৪টি সেঞ্চুরি ও ৪৮টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে। টেস্টে লারা মোট ৯টি ডাবল সেঞ্চুরি করেন, যা টেস্ট ক্রিকেটে একমাত্র স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের পরে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান। ব্র্যাডম্যান টেস্টে ১২টি ডাবল সেঞ্চুরি করেন। টেস্ট ক্রিকেটে স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের পরে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে লারা দুইটি ত্রিপল সেঞ্চুরি করেন। দুইটি ত্রিপল সেঞ্চুরি করা অপর ব্যাটসম্যানরা হলেন ভারতের বিরেন্দর সেবাগ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিজ গেইল।
১৯৯৩ সালের জানুয়ারি মাসে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে লারা টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। মেইডেন টেস্ট সেঞ্চুরিকে লারা ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিনত করেন। লারা শেষ পর্যন্ত করেন ২৭৭ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ পর্যন্ত ফাইনাল দু্ই টেস্ট জিতে ২-১-এ সিরিজ জেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। লারা হন ম্যান অব ম্যাচ ও ম্যান অব দ্য সিরিজ।
টেস্ট ক্রিকেটে লারা মোট ১৬৪টি ক্যাচ ধরেন। লারা টেস্ট ক্রিকেটে মোট ৬০ ওভার বল করেন কিন্তু কোনো উইকেট পাননি। এছাড়া লারা ২৯৯টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন। একদিনের ক্রিকেটে লারার মোট রান ১০ হাজার ৪০৫। যার মধ্যে ১৯ টি সেঞ্চুরি ও ৬৩ টি হাফ সেঞ্চুরি। ব্যাটিং গড় ৪৮.৪৮। একদিনের ক্রিকেটে লারা মোট ১২০ টি ক্যাচ ধরেন। বল করেন মোট ৪৯ ওভার, আর উইকেট লাখ করেন ৪টি। বেস্ট বোলিং ৫ রানে ২ উইকেট।

...........................
২ আগস্ট ২০১৫
ঢাকা

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.