নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
বাংলাদেশের ইলেকশন কমিশন থেকে আমার মোবাইলে একটি মেসেজ এসেছে। মেসেজটি এরকম- ''১৬ আগস্ট ২০১৫ হতে দ্বিতীয় পর্যায়ে (সেকেন্ড ফেজ) ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। ১ জানুয়ারি ২০০০ বা তার পূর্বে জন্ম হলে তথ্য সংগ্রহকারীকে তথ্য দিন-ইসিবি।'' প্রথম প্রশ্ন হল আমাদের নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে এখনো ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভাবছে না কেন? কেন ২০০০ সালের আগে যাদের জন্ম কেবল তাদের তথ্য চাওয়া হল? বিষয়টিকে কেন ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সঙ্গে একসাথে মার্চ করানো হচ্ছে না? আজ যে শিশুটির জন্ম হল, তার কেন তথ্য নেওয়া হবে না?
সরকার ও ইলেকশন কমিশন একই কাজ এই ডিজিটাল যুগে আর কতবার করবে? যে কাজের একটি চিরস্থায়ী সিস্টেম চালু করলেই ল্যাঠা চুকে যায়, সেই একই কাজে আমাদের ইলেকশন কমিশন, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরো, বাংলাদেশ ব্যাংক, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর গুলো হাজার বার করে করছে। কিন্তু আধা কাজ যেমন কোনো পূর্ণাঙ্গ কাজ নয়, তাই এই সব কাজগুলো বছর শেষে আবর্জনায় পর্যবসিত হচ্ছে। বাংলায় একটা কথা আছে, আধা কাজ গাধার সমান। আমাদের সরকার ও নির্বাচন কমিশনের দশা হয়েছে তাই।
অথচ যে শিশু আজ জন্মগ্রহন করল, কাজটি যদি তাকে দিয়েই শুরু করে, তাহলে এই এতগুলো মন্ত্রণালয়, দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, কমিশন, বা ব্যাংকের এই ইস্যুতে কোনো বাড়তি ঝামেলা হয় না। পর্যায়ক্রমে দেশের সকল নাগরিককে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিতে হবে। কিন্তু কাজটি শুরু করতে হবে শিশুর জন্মের পর থেকে। মাঝখান থেকে শুরু করলে কেয়ামত পর্যন্ত এই কাজ শেষ হবে না।
ন্যাশনাল আইডি কার্ড করা দেশের সকল নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারের একটি আইন করা উচিত। যা সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় সারাদেশে পরিচালিত হবে। যে কোনো রাষ্ট্রীয় কাজেই এবং কিছু বেসরকারি নাগরিক সুবিধা নেবার ক্ষেত্রেও ন্যাশনাল আইডি কার্ড ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। কেউ যদি পাসপোর্ট করতে চায় তার শুধু ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নাম্বারটা পাসপোর্ট অফিস তলফ করবে। আর কোনো তথ্য প্রয়োজন হবার কথা নয়। কারণ ন্যাশনাল আইডি কার্ড করার সময় দেশের প্রত্যেক নাগরিকের প্রয়োজনীয় তথ্য নেওয়া হবে।
এখন কেউ যদি কোনো মোবাইল কোম্পানি থেকে একটা সিম কিনতে চায়, মোবাইল কোম্পানির জন্য প্রথম শর্ত থাকবে সিম ক্রেতার ন্যাশনাল আইডি নাম্বার জমা দিতে হবে। এবার মোবাইল কোম্পানি যে ন্যাশনাল আইডি নম্বরের নামে নতুন একটি ফোন নাম্বার বিক্রি করল, সেটা অটোমেটিক তার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নম্বরের আপডেট অংশে যুক্ত হবে। নাগরিক যদি পাসপোর্ট করেন, তার পাসপোর্ট নাম্বারও অটোমেটিক ন্যাশনাল আইডি নম্বরের সঙ্গে যুক্ত হবে। সে যদি একটা গাড়ি কেনে, তার গাড়ির লাইসেন্স নম্বর এবং তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর সেখানে যুক্ত হবে। অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংস্থা গুলো শুধু নাগরিকের সেবা প্রাপ্তির সঙ্গে নতুন যে নম্বরটি যুক্ত হল সেটা আপডেট করবে। যা ইলেকশন কমিশনের মূল সার্ভারে যুক্ত হবে। কেউ যদি ব্যাংকে একাউন্ট খুলতে চায়, তার শুধু ন্যাশনাল আ্ইডি কার্ডের নম্বরটি যথেষ্ট। এবার যারা সরকারকে কর পরিশোধ করে, তাদের কার কত ইনকাম ট্যাক্স হল, তা তাদের বেতন স্কেল অনুযায়ী জাতীয় হিসাব ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর অটোমেটিক বের করতে পারবে। এজন্য বাড়তি কোনো ইনকাম ট্যাক্স বিশেষজ্ঞের দরকার হবে না। প্রতি বছর সরকারের দেওয়া জাতীয় বাজেটের পরে ইচ্ছে করলে দেশের যে কোনো নাগরিক তার করের হিসাব নিজেই অটোমেটিক বের করতে পারবে।
কে কর পরিশোধ করল আর কে করল না, তা এই ন্যাশনাল আর্কাইভ থেকেই জানা যাবে। এজন্য বাড়তি লোকবলেরও দরকার নাই। রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক যদি ক্রাইম করে, পুলিশকে তার যাবতীয় তথ্য নেবার জন্য গলদঘর্মের কোনো প্রয়োজন হবে না। অভিযোগকারী শুধু তার পরিচয় বললেই, ন্যাশনাল আইডি কার্ড ধরে তাকে খুঁজে বের করা তখন পুলিশের জন্য কোনো বাড়তি চাপ তৈরি করবে না। কিন্তু প্রশ্ন হল, দেশের সকল নাগরিককে যতক্ষণ না এই কার্যক্রমের আওতায় আনা না যাবে ততক্ষণ সবগুলো সেবার সুযোগ পাওয়া যাবে না। মুখে আপনি তথ্য অধিকার বলবেন, আর নাগরিকদের তথ্য সংরক্ষণ করবেন না, এটা এক ধরনের মুর্খামি। আবার একই গাধার খাটুনি বারবার করেও কোনো দিশা না পাবার সামিল।
ইলেকশন কমিশন এখন যাদের তথ্য সংগ্রহ করবে, বর্তমান পদ্ধতিতে এই একই কাজ তো তার দেশব্যাপী বারবার কেয়ামত পর্যন্তই করতে হবে। অথচ যে শিশু আজ জন্মগ্রহন করল, তার জন্ম নিবন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে সরকার যদি তার জন্য একটা নতুন নম্বর দিয়ে ন্যাশনাল আইডি কার্ড করে দেয়, ওই শিশুর জীবনে বাকি জীবন এই ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নম্বরটি হবে তার প্রধান পরিচয়। স্কুলে ভর্তি, কলেজে ভর্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, হাসপাতালৈ ভর্তি, ব্যাংক একাউন্ট খোলা, পাসপোর্ট করা, সব কেবল তার এই নম্বরের সঙ্গে আপডেত হতে থাকবে। তার বয়স যেদিন ১৮ বছর পূর্ণ হবে, সেদিন সে অটোমেটিক ভোটার। নির্বাচন কমিশনের এত ঢাক ঢোল বাজিয়ে এত লোক লস্কর নিয়ে রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করে হাজার বার কেয়ামত পর্যন্ত এই কুকর্মটি করার আর প্রয়োজন হবে না।
নির্বাচন কমিশন দেশের জাতীয় নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার সময় যে দিনটিকে সেই নির্বাচনের আঠারো বছর বয়স্ক ভোটারদের তালিকা করতে চাবে, যদি সেটা ৩০ জুন ২০১৮ ধরা হয়, তাহলে ন্যাশনাল আইডি কার্ডের জাতীয় সার্ভারে ওই তারিখের পূর্বের সকল বয়স্ক নাগরিকের তথ্য চাওয়ার অপশান রাখলে, সঙ্গে সঙ্গে দেশে ২০১৮ সালের ৩০ জুন কত জন ভোটার এক মিনিটে বের করা যাবে। যা করতে আমাদের নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার শ্রাদ্ধ করে হাজার বার তথ্য সংগ্রহ করেও দিশা পায় না। যে কারণে বাংলাদেশের একটি পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা আজ পর্যন্ত তৈরি হয়নি। অথচ এটি সরকারকে একটি সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী একবার এই সিস্টেমটি চালু করলে রাষ্ট্রের কয়েক শো বিলিয়ন বিলিয়ন কোটি টাকা বাঁচানো সম্ভব।
রাষ্ট্র যদি চায়, বিনা কনসালটেন্সি ফি তে আমি রাষ্ট্রের এই বিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা দিতে রাজি আছি। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমার একটি ছোট্ট শর্ত আছে। রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে সকল স্তরে ন্যাশনাল আইডি কার্ড ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। এতে করে বাংলাদেশের মত গরিব রাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা বাঁচানো সম্ভব। শ্রম বাঁচানো সম্ভব। কোনো নাগরিকের পক্ষেই তখন আইনের বাইরে কোনো ধরনের অপকর্ম করার অন্তত কয়েক শো সুবিধা বন্ধ হয়ে বরং প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে। সরকার যদি আইনের শাসন চায়, তখন তা কার্যকর করার জন্য, এই ডিজিটাল পদ্ধতির ন্যাশনাল আইডি কার্ড জাতীয় পর্যায়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হিসাবে বিবেচনায় নিতে হবে। নইলে হাজার বার তথ্য সংগ্রহ করে লক্ষ বার মানুষকে বিরক্ত করে, হাজার টা নতুন তারিখ দিয়ে আমাদের নির্বাচন কমিশনের অফুরন্ত কাজ কেয়ামত পর্যন্ত শেষ হবে না।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা কত? এটা যদি কেউ জানতে চায়, এই পদ্ধতিতে তা বের করার জন্য এক মিনিটের বেশি লাগবে না। যা দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অটোমেটিক আইনের আওতায় নিয়ে আসবে। কারণ দেশের প্রত্যেক নাগরিকের তখন জানা থাকবে যে, কোনো অপরাধ করলে তার সকল তথ্য খুঁজে পেতে পুলিশের এক মিনিট লাগবে। এবার পুলিশকে শুধু তাকে খুঁজে বের করে আইনের হাতে সোপর্দ করার দায়িত্ব থাকবে। একজন নাগরিককে মোট দু'বার রাষ্ট্রীয় খরচে ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেওয়া হবে। শিশুর জন্মের পর একবার। আর আঠারো বছর বয়স পূর্ণ হলে দ্বিতীয় বার। প্রথম বার হয়তো নীল রঙের। দ্বিতীয় বার হয়তো সবুজ রঙের। কারো যদি এর বেশি বার প্রয়োজন হয়, তখন একটা সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে সে নতুন ন্যাশনাল আইডি কার্ড তুলতে পারবে।
এক্ষেত্রে রাষ্ট্রও নাগরিকদের ঘাড়ে কিছু বাড়তি দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে পারে। যেমন প্রত্যেক নাগরিক তার আপডেট তথ্য নিজ দায়িত্বে কমিশনে জমা দেবে। যদি কেউ তা না দেয়, কমিশন তাকে জরিমানা করতে পারবে। যেমন কেউ যদি একটা নতুন ফোন নেয়, সেই ফোন নম্বরটি সেই ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে রাষ্ট্রকে জানাবে। পাশাপাশি মোবাইল কোম্পানিকেও জানাতে হবে। কেউ যদি না জানায়, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। বেসরকারি সেবা গুলো সম্পর্কে নাগরিক রাষ্ট্রকে তথ্য জানাতে বাধ্য থাকবে। এখন কেউ যদি রাস্তায় ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করে, তাকে খুঁজে বের করতে পুলিশের তেমন কষ্ট হবে না। তাকে ট্রাফিক আইনের আওতায় সাজা দেওয়াও কঠিন হবে না। তখন দেশের মানুষ অটোমেটিক আইনের প্রতি একটা শ্রদ্ধা অনুভব করবে।
কিন্তু আমাদের গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় খুব সূক্ষ ভাবে যে ব্যবস্থাটি বাঁচিয়ে রাখা হয়, সেটি হল আইনের ফাঁক ফোকর। যে কারণে দেশের আইনের প্রতি নাগরিকদের কোনো শ্রদ্ধাবোধ নাই। আইন যারা বানাচ্ছে তারাই বাংলাদেশে প্রথম আইন ভঙ্গ করেন। এটাই বাংলাদেশের বর্তমান সময়ের বাস্তব চিত্র। দেশের মানুষ তাই আইনকে তেমন পাত্তা দেওয়ায় অভ্যস্থও নয়। যে কারণে সবল ও দুর্বল গ্রুপের জন্য রাষ্ট্রে দুই ধরনের আইনের ব্যবহার। যা মানুষকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা আনতে মোটেও উৎসাহিত করে না।
২০২১ সালে বাংলাদেশে আবার ষষ্ঠ আদম শুমারি অনুষ্ঠিত হবে। সেই আদম শুমারির জন্য সরকার গলদঘর্ম করে বিশ্ববাসিকে যে তথ্যটি দেবে, সেটি হবে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য। তারপর শ্রম বিনিয়োগ, টাকার শ্রাদ্ধ, দ্বৈত গণনা, কত হাজার রকমের বিভ্রাট তো থাকবেই। অথচ একটি পরিকল্পিত পূর্ণাঙ্গ ন্যাশনাল আইডি কার্ড রাষ্ট্রের এমন হাজারটা প্রয়োজনের কাজটি এক মিনিটে সমাধান দেবে। যদি আমার পরিকল্পনাটি সরকার গ্রহন করে। তখন ২০২১ সালের ১ লা জানুয়ারি মধ্য রাত ১২ টা এক মিনিটে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা কত, তা বের করার জন্য তিন মাস ধরে পরিসংখ্যান ব্যুরো দেশের প্রাইমারি স্কুলের মাস্টারদের দিয়ে সংগ্রহ করা ভুল তথ্যের উপর আর নির্ভর করতে হবে না। সদরঘাট থেকে কত জন লঞ্চে উঠল, কমলাপুর থেকে কতজন ট্রেনে উঠল, ভ্রমণরত নাগরিকদের জন্য একটা আন্দাজি পাইকারি হিসাব, কলিম সলিমকে বাড়িতে পাওয়া যায়, তাই হিসাব থেকে বাদ পড়েছে, এসব গঞ্জনা আর শুনতে হবে না।
শুধুমাত্র একটি পরিকল্পিত ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়ে বাংলাদেশ হাজার বিলিয়ন কোটি টাকা বছর বছর বাঁচাতে সক্ষম হবে। অথচ আমাদের সরকার গুলো, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা কর্মচারি গুলো, মন্ত্রণালয়, কমিশন, ব্যাংক পরিসংখ্যান ব্যুরো, হাজার হাজার লোকবল নিয়েও যে কাজ গুলো করছে, তাকে অর্ধকর্মই বলি আমি। আর এই আধা কাজ ঠিক গাধার সমান। সরকারের যে এই কাজটি ঠিকমত করার একেবারেই সদিচ্ছা নাই, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করায় সদিচ্ছা নাই, সকল ক্ষেত্রে নাগরিকদের পূর্নাঙ্গ সেবা দেবার মানসিকতা নাই, সেটাই হল বাস্তবতা। তাই যখন ইলেকশন কমিশন থেকে আমার মোবাইলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য এমন একটি তথ্য আসে, এটাকে আমার সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় বলেই মনে হয়। সবচেয়ে বড় কথা কাজটি মোটেও সম্পূর্ণ কাজ নয়। আধা কর্ম। যার মধ্যে তথ্য বিভ্রাটই বেশি। যে তথ্যের উপর কেউ নির্ভর করতে পারে না।
একটি দেশের উন্নয়নের প্রধান পূর্ব-শর্ত হওয়া উচিত সেই দেশের নাগরিক ও সরকার ব্যবস্থার মধ্যে একটা প্রত্যক্ষ সম্পর্ক হওয়া। ন্যাশনাল আইডি কার্ড হতে পারে রাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের নাগরিকের সেই সম্পর্কের যোগসূত্র। এটা চালু করা গেলে তখন কোনো রহিঙ্গার পক্ষে আর জাল পাসপোর্ট করার সুযোগ থাকবে না। কোনো সন্ত্রাসীর পক্ষেও দুটো পাসপোর্ট করার সুযোগ থাকবে না। কারণ, প্রথমে আমার এই পদ্ধতিতে যে কাজটি করা হবে সেটি হল নাগরিকের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার কাজ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সবার ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়া হবে। তখন আর অপরাধীকে ধরার জন্য কোটি টাকা খরচ করে ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হবে না।
যে কারণে আমাদের ইলেকশন কমিশনের ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য তথ্য সংগ্রহকারীদের কি কি তথ্য দিয়ে কতোটা উপকার করা যাবে, তা দিয়ে রাষ্ট্রের আদৌ কোনো উপকারে লাগবে কিনা, তা নিয়ে আমার একশো ভাগ সন্দেহ আছে। এটাকে আমি রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় বলেই মনে করি। একটি দেশের ইলেকশন কমিশনের হাজার বার অকারণে রাষ্ট্রীয় টাকা অপচয় করার কোনো এখতিয়ার থাকতে পারে না। এটা যদি দেশের পচলিত আইনেও থেকে থাকে, তাহলে আমি মনে করি, এখনো রাষ্ট্রের এই আইনটিকে সংশোধন করাটা ডিজিটাল যুগে একটা প্রয়োজনীয় সময়ের দাবি।
আমি সুস্পষ্ট ভাবেই বলতে চাই, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করার মত বিষয়ে যে কোনো নাগরিকের আইন গত ব্যবস্থা নেবার সুবিধা থাকাটা অত্যন্ত জরুরী। এখন বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের জন্য ইলেকশন কমিশনের বিরুদ্ধে একজন নাগরিক হিসেবে আমার আইন গত ব্যবস্থা নেবার যদি সুযোগ থাকতো, তাহলে আজই আমি একজন আইন উপদেষ্টা ডেকে হাই কোর্টে ইলেকশন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়ের যুক্তি টেনে একটা রিট পিটিশন দায়ের করতাম। একটি গণতান্ত্রিক দেশের একজন নাগরিকের রাষ্ট্রের সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ জবাবদিহিতা চাইবার অধিকার যতক্ষণ না রাষ্ট্র দিতে না চাইবে, ততক্ষণ সেই রাষ্ট্র আসলে গণতন্ত্রেই বিশ্বাস করে না বলে আমি মনে করি। যে কারণে ইলেকশন কমিশন আমার মোবাইলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য তথ্য চেয়ে সুস্পষ্ট ভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের যে কাজটি করতে যাচ্ছে, এটা যে একটা রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়, এটা বোঝার মত বুদ্ধিমান লোক সরকার বা ইলেকশন কমিশনে আছে কিনা, সেটাও একটা প্রশ্ন বটে।
নইলে বুঝতে হবে, গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা একটি ব্যবসা। এখানে কিছু লোক সেই ব্যবসাটি হাজার বছর করার জন্য কিছু কিছু বিষয়কে প্রচলিত ভাবেই মেনে নিয়ে যুগের পর যুগ কাজ করে যাচ্ছে। হয় এদের চিন্তায় কোথাও উন্নয়নের ছোয়া নেই। অথবা এটি একটি ব্যবসায়িক ধান্দা। কারণ এ ধরনের কাজের উপর সরকার ও সরকার দলীয় লোকজনের ব্যবসা-মুনাফা-রুটি-রোজগারের একটা ধান্দা জড়িত। কাজটি যতবার হবে, ততবার কিছু লোকের কিছু ব্যবসায়িক ধান্দা হল। লোক দেখানো জনসেবা কেবল কাগজ কলমেই শোভা পাবে। বাস্তবে গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থা কিছু ক্ষমতাবান লোকদের আরো পুঁজি বানানোর একটি কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
ভোটার তালিকা, ভোটার তালিকা হালনাগাদ, পরিসংখ্যান ব্যুরো, একশো'র মত মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, আঞ্চলিক শাখা, কোতোয়ালী শাখা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, এত হাজার হাজার অঙ্গ সংগঠনের অনেক ঝামেলা পূর্ণ কাজের একটি সন্তোষজনক সমাধান হতে পারে, কেবল একটি পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ন্যাশনাল আইডি কার্ড। যা একজন নাগরিককে অটোমেটিক বলে দবে কোন তারিখে সে দেশের ভোটার হবার যোগ্যতা পাচ্ছে। কারণ পুরো বিষয়টি একজন নাগরিকের জন্ম নেবার মুহূর্ত থেকেই যেহেতু শুরু হচ্ছে। তার মানে একজন নাগরিকের পুরো জীবনে এটি একটি স্থায়ী নম্বর হবার মত বিষয়। তখন সে শিক্ষিত হোক আর অশিক্ষিত হোক, তার ন্যাশনাল আইডি নাম্বারটা ই রাষ্ট্রের কাছে তার সকল পরিচয় তুলে ধরবে।
কিন্তু সমস্যা হল, বাংলাদেশের মত একটি গরিব দেশের মুর্খ ও সামর্থহীন একটি ইলেকশন কমিশনের পক্ষে এমন একটি পূর্ণাঙ্গ ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ধারণাপত্রও চিন্তা করা সম্ভব কিনা, সেটা একটি দু"শ্চিন্তার বিষয় হতে পারে। যদি ইলেকশন কমিশন ততোটা দুঃসাহসি হতে না পারে, তাহলে সরকারের উচিত এমন একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা করে ন্যাশনাল আইডি কার্ড করার উদ্যোগ নেওয়া। নইলে মুখে যতোই গণতন্ত্রের কথাই বলা হোক না কেন, যতোই ডিজিটাল উন্নয়নে দেশ ভেসে যাক না কেন, বাংলাদেশে হাজার হাজার সমস্যাকে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে ইচ্ছে করেই বাঁচিয়ে রাখার কৌশল নেওয়া হয় বলেই আমি মনে করি।
.................................
১৬ আগস্ট ২০১৫
ঢাকা
১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬
রেজা ঘটক বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। বাংলাদেশের প্রচলিত শাসন ব্যবস্থায় দাবি আদায় করা এক ধরনের সময় নষ্টের মত ব্যাপার বলেই মনে করি। কারণ এখানে সবার লক্ষ্যই কোনো অছিলায় দু-চার পয়সা কামানোর ধান্দা....
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৯
জেকলেট বলেছেন: সুন্দর গোছানো লেখা এবং অনেক নিখুত প্লান। খুব সম্ভবত পাকিস্তানে এই রকম কিছু একটা চালু আছে। যার কারনে কেউ চাইলেও হুট করে গিয়ে পাকিস্তানের নাগিরকত্ব দাবি করতে পারেনা।
৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৫
কাজী শাহ এমরান বলেছেন: অনেক নিখুত প্লান । অাপনার চিন্তা ধারার সাথে আমি সম্পুর্ন একমত ।
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:২৭
মাথা নষ্ট সিপাহি বলেছেন: মনে করেন একজন বিয়ের আগে তার বাবার বাড়ীর ঠিকানায় ভোটার হয়েছেন, আইডি কার্ডও পেয়েছেন্, কিন্তু তার নামের বানান ভুল শিক্ষা সনদ অনুযায়ী নয় , বাবার নামের সাথে আলী ও মাযের নামের সাথে অতিরিক্ত বেগম যুক্ত হয়েছে, যা তার শিক্ষা সনদ অনুযায়ী নয়,এই ভুলগুলো তখনকার কোন স্কুল মাস্টার করেছে , সে বলেছে মনে করেন লিজা তিনি লিখেছেন "লীজা"
বানান জিগায় নাই , বাবার নাম বলেছে মনে করেন ওমুক চৌধুরি তিনি লিখেছেন ওমুক আলী চৌধুরি এমন ভুল আবার সে গ্রাজুয়েট ,
বিয়ে হয়েছে অন্যত্র এখন তার স্বামীর ঠিকানায় নতুন করে নাম ধাম ঠিক করে এই হালনাগাদ এর সময় ভোটার হওয়া যাবে কি ? কোন জটিলতা আছে কি এ খেত্রে ?
৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১৫
এমাজ আরেফিন বলেছেন: আপনার প্রস্তাবনা অসম্ভব যুক্তিযুক্ত, প্রস্তাবনার লিখিত কপি নির্বাচন কমিশন, প্রধান মন্ত্রির কার্যালয়, জাতীয় কয়েকটা দৈনিকে দিলে ভাল হবে, গবেষণা করে লেখাটা যেহেতু লিখেছেন দেশের মানুষ অন্তত জানুক।
১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৫:১২
রেজা ঘটক বলেছেন: সার্ভারে একটা অপশান রাখা হবে যেখানে একজন নাগরিক তার সকল আপডেট বানান বা তথ্য ইনপুট ডিতে পারবে। যা ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর মূল সার্ভারে একজন সুপারভিশনের মাধ্যমে ঠিক করবেন। না কোনো জটিলতা হওয়ার কথা নয়। ধন্যবাদ মাথা নষ্ট সিপাহি আপনাকে
৬| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৪
কীর্তন কানাই বলেছেন: ন্যাশনাল আইডি কার্ডের এই ধারণাটা দারুণ। কিন্তু আমার ব্যাক্তিগুঅঅভাবে মনে হচ্ছে এই ব্যবস্থা আপডেট হবে তবে সময় লাগবে। আমাদের রাজনৈতিক পরিসরে এখনো অনেক কিছু সাজানো বাকি। সবকিছুতেই আমাদের সুস্থ চিন্তার প্রয়োগ ঘটবে তবে সময় দিতে হবে। অধৈর্য হলে চলবে না।
৭| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩২
কীর্তন কানাই বলেছেন: ন্যাশনাল আইডি কার্ডের এই ধারণাটা দারুণ। কিন্তু আমার ব্যাক্তিগতভাবে মনে হচ্ছে এই ব্যবস্থা আপডেট হবে তবে সময় লাগবে। আমাদের রাজনৈতিক পরিসরে এখনো অনেক কিছু সাজানো বাকি। সবকিছুতেই আমাদের সুস্থ চিন্তার প্রয়োগ ঘটবে তবে সময় দিতে হবে। অধৈর্য হলে চলবে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৪২
শান্তি প্রিয় একজন মানুষ বলেছেন: ভাই একটি বিষয় দেখে খুবই বিস্মিত হলাম যে, আপনার এত সুন্দর লেখাটি প্রায় ৭৭ জন পড়ল কিন্তু কেউ কোন মন্তব্য করল না??????????
অাপনার চিন্তা ধারার সাথে আমি সম্পুর্ন একমত এবং আমার মনে হয় এ বিষয়টি বর্তমানে পরামর্শ না দিয়ে দাবী হিসেবে আদায় করা উচিত। এতে করে দেশের অভ্যন্তরিন অনেক সমস্যা মিটে যাবে।অনেক দিন যাবৎ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করেছি কিন্তু আপনার মত গুছিয়ে লিখে প্রকাশ করতে পারিনি। সামুর মডারেটরদের অনুরোধ করবো পোষ্টটি দৃষ্টি আকর্ষনে রাখার জন্য। ধন্যবাদ।