নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
আইন ও আদালতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের যে ন্যূনতম আস্থা নেই তা আবারো আজ প্রমাণিত হল। গতকাল ফরিদপুরের আদালত সাংবাদিক প্রবীর সিকদারকে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একদিনের রিমান্ড শেষ না হতেই আজ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন তাঁর আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন যে, প্রবীরের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে মানবিক কারণে তার যেন বিরোধিতা না করা হয়।
প্রবীর সিকদারের আইনজীবী আলী আশরাফ নান্নু মিডিয়াকে জানান, তিন দিনের রিমান্ড এক দিনে শেষ করে আজ বিবাদীকে আদালতে উপস্থাপন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। আদালতে পুলিশ বলে, রিমান্ডের আর প্রয়োজন নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আদালতে প্রবীর সিকদারের জামিনের আবেদন জানাই।
আদালত সূত্র জানায়, আজ প্রবীর সিকদারের পক্ষে তাঁর আইনজীবী আলী আশরাফ আদালতে জামিনের আবেদন জানালে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা তার বিরোধিতা করেননি। পরে আদালত পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত প্রবীর সিকদারের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
ঘটনার অন্তরালের খবর হল, প্রবীর সিকদারের স্ত্রী স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রবীর সিকদারের জামিনের বিরোধিতা না করতে মন্ত্রী আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছেন। মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রবীর সিকদার শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাঁর স্ত্রী আমাকে বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার অনুরোধ করেছিলেন। এ কারণে আমি আইনজীবীদের পরামর্শ দিয়েছি, প্রবীরের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হলে মানবিক কারণে তার যেন বিরোধিতা না করা হয়। যে কারণে ফরিদপুরের বিজ্ঞ আদালত আজ পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় আগামী ২২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত প্রবীর সিকদারের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
দেশের আইন আদালত যে ক্ষমতাওয়ালাদের কথায় ওঠবস করে, তাদের নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকে, তাদের পরামর্শ অনুযায়ী নানান কিসিমের হুকুমনামা জারী করে, আজকে ফরিদপুরের আদালত তা গোটা জাতির সামনে আবারো নতুন করে প্রমাণ করলো। এতে দেশের সাধারণ মানুষের আইন ও আদালতের প্রতি আস্থা আরো কমে যাবার আশংকাই তৈরি হল। কারণ, যে আদালত শক্তিশালী পক্ষের ইসারার দিকে তাকিয়ে থাকে, তাদের ফাই-ফারমায়েস খাটে, সেই আদালত থেকে তো কেউ ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করতে পারে না।
সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এখনো প্রত্যাহার হয়নি। এমন কি প্রবীর সিকদারের জীবনের নিরাপত্তা সরকার কতটুকু দিচ্ছে, সেসব বিবেচনায় না নিয়ে দেশের গৃহপালিত কিছু মানুষ ইতোমধ্যৈই মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে ধন্যবাদ দিয়ে নতুন করে তেলবাজী শুরু করেছে। অন্যায় যিনি করলেন, তারে আবার তেলবাজী, এ কোন আজব দেশে বাস করছি আমরা?
আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনায় যতই ভালো কাজ করুক, এমন কিছু বিতর্কিত ঘটনায় সেই ভালো কাজগুলো মানুষের মনে যে আশংকা ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে, সেই দায়ও সরকারকেই নিতে হবে। দেশের আইন ও আদালতের প্রতি মানুষের পূর্ণ আস্থা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাও সরকারেরই দায়িত্বের অংশ। সেটা না করে ক্ষমতার বাহাদুরি দেখানো মোটেও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি হতে পারে না।
মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কখন কিভাবে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলা তুলে নিচ্ছেন এবং তার সম্পূর্ণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছেন, সেটা দেখার জন্যই মানুষ কেবল এখন অপেক্ষা করতে পারে। নতুবা লোক দেখানো এসব গ্রাম্য কুটকৌশল দেশের একেবারে নির্বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষটিও যে বুঝতে সক্ষম, সেটি যেন সরকার বাহাদুর আরেকবার বিবেচনা করেন। সরকারের সেই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি।
.............................
১৯ আগস্ট ২০১৫
ঢাকা
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬
নুর ইসলাম রফিক বলেছেন: মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন কখন কিভাবে প্রবীর সিকদারের বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মামলা তুলে নিচ্ছেন এবং তার সম্পূর্ণ নিরাপত্তার দায়িত্ব নিচ্ছেন, সেটা দেখার জন্যই মানুষ কেবল এখন অপেক্ষা করতে পারে। নতুবা লোক দেখানো এসব গ্রাম্য কুটকৌশল দেশের একেবারে নির্বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষটিও যে বুঝতে সক্ষম, সেটি যেন সরকার বাহাদুর আরেকবার বিবেচনা করেন। সরকারের সেই শুভ বুদ্ধির উদয় হবে, আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করি।
সহমত......
তেল বাজদের তেলবাজি (দালাল) বন্ধ করার কি উপায় আছে।
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:৩১
মোহাম্মদ জামিল বলেছেন: এই সুবিধা শুধুমাত্র সাচ্চা আওয়ামীলীগার (প্রবীর শিকদার) দের জন্য প্রযজ্য মানুষের জন্য না। আপনাকে মানুষ থেকে আওয়ামীলীগার হতে হবে তবে এ সুবিধা আপনি পাবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৮
নতুন বলেছেন: গনতন্ত্রের দেশে সকল ক্ষমতার উতস জনগন<<<
নেতারা ভয়ে থাকে যে জনগন যদি তাদের ভোট না দেয়।
আমাদের দেশে মানুষ নেতাদের ভয়ে কথা বলার সাহস পায়না।
বিচিত্র আমাদের দেশ।