নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
মহোদয়,
আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ। আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞানের নিরন্তর উৎকর্ষের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে অনেক দূর এগিয়ে। আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো যোগাযোগ এখন মানুষের হাতের মুঠোয়। পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সারা দেশে সন্ত্রাস, হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি, ব্ল্যাকমেলিংয়ের মত ঘটনাও অহরহ ঘটছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত বাহিনী অপরাধীদের অনেক ক্ষেত্রেই যথাযথভাবে সনাক্ত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধীদের ধরার জন্য প্রযুক্তির যে কৌশলের আশ্রয় নেন, তার চেয়ে অপরাধীরা প্রায় ক্ষেত্রেই প্রযুক্তিগত ভাবে অনেকটা বেশি অগ্রসর। এজন্য প্রধানত দায়ী আমাদের আইনের দুর্বলতা এবং সেই আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের গ্রাহক সংখ্যা বর্তমানে (২০১৫ সালের জুলাই পর্যন্ত) ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৬৯ হাজার। যার মধ্যে অন্তত শতকরা প্রায় ৭০ ভাগের নিবন্ধন যথাযথ নেই বা ত্রুটিপূর্ণ রয়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের বৈশ্বিক সংগঠন জিএসএম (গ্রুপ স্পেশাল মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন) এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ইউনিক বা একক মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৭০ লাখ। যেখানে এক ব্যক্তির একাধিক সিম কার্ড থাকলেও তাকে একক ব্যবহারকারী হিসেবেই গণ্য করা হয়েছে।
অপরাধীদের সনাক্ত করার জন্য মোবাইল ফোনের যথাযথ নিবন্ধনের কোনো বিকল্প নেই। অপরাধীরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই অনেক ক্ষেত্রে অপরাধ সংঘটনের আগে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। অপরাধী সনাক্ত করার জন্য আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপরাধীদের চেয়ে অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি জ্ঞান মোটেও মান উত্তীর্ণ নয় বরং কোন কোন ক্ষেত্রে কম।
দেশের মোবাইল ফোনের নিবন্ধন বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি যথাযথ দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিম্নে আমি আপনার বরাবরে খোলা চিঠি আকারে কিছু সুপারিশ ও পরামর্শ দিতে চাই। যা অপরাধী সনাক্ত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হয়তো কাজে লাগবে। পাশাপাশি অবৈধ মোবাইল ফোনের সিম/রিম কার্ড থেকে বাংলাদেশ সরকারের রাজস্ব বিভাগ যে বিরাট অঙ্কের শুল্কফাঁকির ঝুঁকিতে থাকে তারও কিছুটা সমাধান পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।
১. এমন একটি সহজ আইন করুন, যে আইনের অধীনে বাংলাদেশে বসবাসরত যে কোনো বাংলাদেশি বা বিদেশি নাগরিক মোবাইল ফোনের গ্রাহক হলে, তার জন্য মোবাইল ফোনের সিম বা রিম কার্ডের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক।
২. বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যবসা করছে এমন সকল মোবাইল ফোন কোম্পানির জন্য এই আইনের অধীনে যে কোন সিম বা রিম গ্রাহকের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করুন।
৩. মোবাইল ফোনের সিম বা রিমের নিবন্ধনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিন। প্রয়োজনে সেই সময় সীমার মেয়াদ জরিমানা আকারে বর্ধিত করা যেতে পারে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সকল গ্রাহকের নিবন্ধন করতে অসমর্থ বা ব্যর্থ হলে মোটা অঙ্কের জরিমানা করুন। প্রতি কর্মদিবসের জন্য জরিমানার এই অর্থ মোটেও এক লাখ মার্কিন ডলারের কম হবে না।
৪. বাংলাদেশে ব্যবসা করছে এমন সকল মোবাইল ফোন কোম্পানির মোট বিক্রিত সিম বা রিম কার্ডের যথাযথ হিসাব বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এ নিয়মিত আপডেট করার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা চালু করুন।
৫. মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইডে গ্রাহকদের জন্য নিবন্ধন করার অপসান চালু করা বাধ্যতামূলক করুন। যাতে যদি কোনো গ্রাহক নিজেই সেই নির্ধারিত মোবাইল কোম্পানির ওয়েবসাইট ভিজিট করে নিবন্ধন করার সুযোগ পায়। যদি কোনো মোবাইল কোম্পানি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইডে গ্রাহকদের জন্য নিবন্ধন করার সুযোগ না রাখে তাদের সেটি করাতে বাধ্য করুন।
৬. মোবাইল ফোন নিবন্ধন করার জন্য ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নম্বর যাতে কেউ অপপ্রয়োগ করতে না পারে, সেজন্য মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন, বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় চুক্তি করতে পারে। যাতে মোবাইল ফোন কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইডে কোন গ্রাহক অনলাইন নিবন্ধন করতে সুযোগ পায়। পাশাপাশি মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো থেকে কেউ যাতে অন্য কারো জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ব্যবহার করতে না পারে, তা যাচাই করার জন্য বিটিআরসিকে বা প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সেলের কাছ থেকে যথাযথ যাচাই বাছাইয়ের সুযোগ রাখুন। অর্থ্যাৎ কোনো গ্রাহক যাতে অন্য কারো নামে সিম বা রিম নিবন্ধন না করতে পারে তার যথাযথভাবে যাচাই করার বা সেফটি গার্ড ব্যবস্থা রাখুন।
৭. অনিবন্ধিত বা অবৈধ সিম কার্ড বা রিম কার্ড নিবন্ধনের জন্য মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে একটি সুনির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গ্রাহকদের ব্যবহৃত অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ডের নিবন্ধন মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো সমাপ্ত করতে না পারলে প্রয়োজনে জরিমানার ভিত্তিতে সময় সীমা বাড়ানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে জরিমানা করা হোক প্রতি কর্ম দিবসের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলার। কোনো ভাবেই সিম কার্ড বা রিম কার্ডের সংখ্যার ভিত্তিতে জরিমানা করা যাবে না। জরিমানা করা হোক কর্মদিবসের হিসাবে। যাতে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ডের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে বাধ্য হয়। আর করতে না পারলে কর্মদিবস হিসাবে জরিমানা দিতে বাধ্য থাকবে। সুনির্দিষ্ট সময় সীমা অতিক্রমের পর অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ড বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করুন।
৮. নতুন সিম বা রিম বিক্রির ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করুন। এই আইন লঙ্ঘন করলে প্রয়োজনে সেই মোবাইল কোম্পানিকে বাংলাদেশে ব্যবসা করার লাইসেন্স বাতিল করুন। আইন কঠোর ভাবে প্রয়োগ করা না হলে আইন করে কোনো লাভ নেই। বাংলাদেশে প্রচলিত আইনের অধীনেই মোবাইল ফোন কোম্পানিকে নিবন্ধন মানতে বাধ্য করা যায়। যেহেতু তারা সেটি করছে না, তাই তাদের আরেকটা সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
৯. অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ডের গ্রাহকদের জন্য যথাযথ ভাবে নিবন্ধন করার জন্য একটা সাধারণ সময় সীমা বেঁধে দিন। এই সময়ের পরে অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ড অটোমেটিক কেন বাজেয়াপ্ত হবে না বা কেন তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে না, সেই মর্মে কঠোর তদারকি ব্যবস্থা রাখুন।
১০. নিবন্ধন না করে সিম বা রিম কার্ড বিক্রি করে মোবাইল কোম্পানিগুলো অপরাধীদের যে সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে, সেজন্য কেন তাদের দেশের প্রচলিত আইনের অধীনে যথাযথ জবাবদিহিতা বা জরিমানা করা হবে না, তা নোটিশ করুন। আইন ভঙ্গ করে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো যে অপরাধ করেছে এবং অপরাধীদের সুযোগ করে দিয়েছে, সেজন্য অনিবন্ধিত সিম বা রিম কার্ডের ভিত্তিতে এখনই একটা অগ্রিম জরিমানা ধরিয়ে দিন। সেটা মোটেও পাঁচ লাখ মার্কিন ডলারের কম হবে না।
১১. মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো তাদের বিভিন্ন ধরনের অফারের আড়ালে প্রতিদিন লাখ লাখ গ্রাহকের মোবাইল সংযোগ থেকে বিনা নোটিশে টাকা কেটে নিচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা মোবাইল সেট যারা বিক্রি করে তাদের সঙ্গে একটা গোপন চুক্তি করে। একজন গ্রাহক একটি মোবাইল সেটে তার সিম বা রিম চালু করলেই অটোমেটিক কিছু অফারে সেই গ্রাহক নিবন্ধিত হয়ে যায়। যা ওই গ্রাহক একদম জানে না। আর সারাদিন নানান অফারের আড়ালে সেসব অটোমেটিক নিবন্ধিত অফার থেকে গ্রাহকের টাকা কেটে নেওয়া হয় গ্রাহকের অজান্তেই। এটা একটা ফোজদারি অপরাধ। এটা যাতে কোনো মোবাইল ফোন কোম্পানি না করতে পারে সেজন্য কঠোর আইনের বিধান রাখুন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সুবিধাটি তার অজান্তে দিয়ে এরা একবার টাকা কাটে। এটা দিন, সপ্তাহ, পক্ষ বা মাসের ভিত্তিতে ঘটে। আবার সেই সুযোগ বন্ধ করার জন্য একটা অপশান রাখে, যা বন্ধ করার জন্য গ্রাহক যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণ করলেও সেখান থেকেও সুযোগটি বন্ধ করার জন্য এরা আবার আরেক দফা টাকা কাটে। এই চুরি কঠোরভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন।
১২. মোবাইল ফোন কোম্পানির নতুন বিক্রি হওয়া সিম বা রিম কার্ড যথাযথ ভাবে নিবন্ধন না হওয়া পর্যন্ত যাতে সংযোগ না পায় সেই আইন কঠোর ভাবে অনুসরণ করুন।
১৩. মোবাইল ফোন কোম্পানির নিবন্ধিত গ্রাহকদের একটি ডাটাবেজ প্রতিসপ্তাহে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জমা দেবার ব্যবস্থা করুন। এটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে হওয়াই যুক্তিযুক্ত। যাতে মোবাইল ফোন কোম্পানি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে বা ডাবল এন্ট্রি দিয়ে কোনো নাম্বার দিলেই তা অটোমেটিক ধরা পড়ে।
১৪. মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো ৪জি, ৩জি'র নামে সারা দেশের গ্রাহকদের সঙ্গে যে প্রতরণার ফাঁদ পেতে অবৈধ ব্যবসা করছে, সেটি যাচাই বাছাই করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করুন। গ্রাহকদের নানাভাবে ঠকিয়ে বা গ্রাহকের পকেট কাটা মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর জন্য সরকারের কোনো অনুতাপ বা অনুকম্পা দেখানোর কোনো সুযোগ নেই। কারণ আমরা জানি, জনগণের কাছেই সরকারের জবাবদিহি করার কথা আমাদের সংবিধানে সংরক্ষণ করা আছে। তাই গ্রাহকের নালিশই সরকার বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান বিবেচ্য বিষয় হওয়াটা জরুরি।
১৫. মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের নিবন্ধন ফরম যতোটা সম্ভব সহজ সরল করা হোক। নাম, পিতা ও মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বিদেশি নাগরিকদের জন্য পাসপোর্টের ফটোকপি, একজন নিবন্ধিত গ্রাহকের ফোন নাম্বার, একজন নিবন্ধিত গ্রাহকের উপস্থিতি (নতুন সিম বা রিম কার্ড নিবন্ধনের ক্ষেত্রে) বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে নতুন কোনো গ্রাহককে মিনিমাম দুইজন নিবন্ধিত গ্রাহকের অনুমোদন ছাড়া নতুন সিম বা রিম কার্ডের গ্রাহক হবার সুযোগ না রাখার কঠোর আইন বাধ্যতামূলক করুন। এটি যাতে সকল মোবাইল কোম্পানি অনুসরণ করতে বাধ্য হয়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।
১৬. যদি কারো মোবাইল ফোন, সিম বা রিম চুরি বা ছিনতাই হয় বা হারিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে থানায় জানানো বাধ্যতামূলক করুন। পাশাপাশি যে মোবাইল কোম্পানির সিম বা রিম সেই কোম্পানিকেও চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তা জানানোর ব্যবস্থা রাখুন। যাতে অপরাধী সেই ফোনের সিম বা রিম ব্যবহার করে নতুন কোনো অপরাধ করতে সুযোগ না পায়।
১৭. প্রতিটি মোবাইল সেটের একটি স্পেশাল আইডেনটিটি নম্বর আছে। অনেকে এটাকে মোবাইল সেটের সিরিয়াল বা নানান নামে জানে। কোনো মোবাইল ক্রেতা যদি নতুন সেট ক্রয় করে, তাঁকে সেই নম্বরটি সংরক্ষণ করার পরামর্শ দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি মোবাইল সেটের সেই নম্বরটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মোবাইল কেনার তিন কর্ম দিবস অথবা এক সপ্তাহের মধ্যে জানানোর ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। নতুবা মোবাইল সেট বিক্রি করা কোম্পানি/প্রতিষ্ঠানগুলোও গ্রাহকের পরিচিতি রাখতে পারে। সেক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের গ্রাহক হতে একজনকে যা যা দিতে হয়, মোবাইল সেট ক্রয়ের সময় একই তথ্য সরবরাহ বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো কারো মোবাইল চুরি গেলে বা হারিয়ে গেলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ট্রাক করে সেই মোবাইল ফোনের অবস্থান সনাক্ত করতে সক্ষম হবে।
১৮. অনেকে বলেন মোবাইল ফোন বন্ধ করলেই বা সিম/রিম মোবাইল থেকে আউট করলেই তার অবস্থান ট্রাক করা যায় না। কিন্তু মোবাইল সেট নাম্বারটি জানা থাকলে সেই গ্রাহকের অবস্থান সনাক্ত করা হয়তো সম্ভব। সেক্ষেত্রে বিদেশ থেকে আরো উন্নত প্রুযক্তি সুবিধা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সংগ্রহ করতে পারে। সেক্ষেত্রে একজন অপরাধী মোবাইল বন্ধ রাখলে বা সিম/রিম ফোন থেকে আউট করলেও তার অবস্থান সনাক্ত করা সম্ভব হবে।
১৯. মোবাইল ফোনের নাম্বার সনাক্তকরণের জন্য কলদাতার নাম্বার কলগ্রহীতার মোবাইল সেটে প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করার অপশান চালু রাখা হোক। কোন ধরনের কোড বা সাংকেতিক নাম্বার প্রদর্শন না করে সরাসরি কলদাতার নাম্বার যাতে কলগ্রহীতার মোবাইলে প্রদর্শিত হয়, সেই ব্যবস্থা বাধ্রতামূলক করা হোক।
২০. মোবাইল ফোন গ্রাহকদের জন্য আইন মানা বাধ্যতামূলক করা হোক। কেউ আইন অমান্য করলে জরিমানা বা সাজার ব্যবস্থা করা হোক।
২১. মোবাইল কোম্পানিগুলোর বাজারে ছাড়া নতুন যে কোনো অফার আগে বিটিআরসি থেকে অনুমোদন করানোর অপশান চালু করা হোক। গ্রাহকদের ঠকিয়ে পকেট কাটা হয় এমন কোনো অফার থাকলে গ্রাহক যদি সে বিষয়ে বিটিআরসি বা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে, সঙ্গে সঙ্গে সেই মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের দায়ে কঠোর সাজার ব্যবস্থা রাখা হোক। অফারটি যথাযথভাবে বিটিআরসি অনুমোদন করেছে কিনা, সে বিষয়ে বিটিআরসি'র অনুমোদন গ্রাহকদের অটোমেটিক জানানোর একটি ব্যবস্থা বিটিআরসি মোবাইল ফোন কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে করতে পারে।
আমি বিশ্বাস করি, যদি এই ২১টি বিষয় বাংলাদেশের মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বাধ্য হয়, তাহলে কোনো অপরাধী মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপরাধ করার স্পর্ধা দেখাতে সাহস পাবে না। কারণ সেক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সেই অপরাধীকে সনাক্ত করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে আর বেগ পেতে হবে না।
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা সবাই লালন করি। বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য আপনাদের সত্যিকার সদিচ্ছাই যথেষ্ঠ বলে আমি মনে করি। মুদি দোকানে গিয়ে অনিবন্ধিত সিম/রিম কার্ড ধরার পেছনে সময় নষ্ট না করে মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে নিয়ে টেবিল ওয়ার্ক করুন। যথাযথ আইন করুন, আইনের কঠোর প্রয়োগ চালু করুন, দেখবেন অপরাধী প্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে অপরাধ করার মত দুঃসাহস আর দেখাবে না।
আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি সরকারের সদিচ্ছার সঙ্গে সঙ্গে মার্চ করে এবং কোথাও কোনো ধরনের অবৈধ সুযোগ বা দুর্নীতির আশ্রয় না নেয়, কোনো অপরাধীর পক্ষে অপরাধ করে বাংলাদেশ টিকে থাকা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ। আমি প্রত্যাশা করব, আমার পরামর্শগুলো মাননীয় প্রতিমন্ত্রী মহোদয়, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বিটিআরসি, মোবাইল ফোন কোম্পানি ও মোবাইল সেট বিক্রেতা কোম্পানি/প্রতিষ্ঠান এবং অবশ্যই মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের জন্য অপরাধ এড়ানোর কাজে সহায়তা করবে।
আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে বিশ্বকে হাতের মুঠোয় জয় করতে চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাংলাদেশের ষোলকোটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে উত্তরোত্তর এগিয়ে যাক, সেই প্রত্যাশা করি। মাননীয় প্রতিমন্ত্রী আপনার সদয় বিবেচনার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিয়েই অনলাইনে আমি এই খোলা চিঠি লিখছি। আপনার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল ও কল্যান কামনায়-
বিনীত নিবেদক
রেজা ঘটক
কথাসাহিত্যিক
৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঢাকা
২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০২
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: আমার যতদূর মনে পড়ে, আগেও একবার রেজিস্ট্রেসনের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছিল!
৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৮
সুমন কর বলেছেন: চমৎকার সব প্রস্তাপ। মনে হয়, একটু বেশী হয়ে গেল। বাস্তবে রূপ নিলে ফলাফল ভালোই হতো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৮
বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: ভাই মনে হয় তারানা আংটির মাথায় গন্ডগোল আছে ।