নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুক্রবার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু\'র গোপন নথি প্রকাশ করলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার !!!

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৩৭

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম নেতা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও তাঁর আজাদ হিন্দ ফৌজ সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল গতকাল শুক্রবার প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওই ফাইলগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সুরজিত করপুরকায়স্থ বসু পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দেন। শুক্রবার প্রকাশ করা ওই ফাইলগুলি কলকাতা পুলিশ মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। আর সেগুলি স্ক্যান করে কম্পিউটারের মাধ্যমেও সাধারণ মানুষ আগামী সোমবার থেকে দেখতে পারবেন। ১২ হাজার পাতারও বেশি ওই ফাইলগুলিতে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দাদের সংগ্রহ করা তথ্য রয়েছে।

বসু পরিবারের এক সদস্য অভিজিত রায় বিবিসিকে বলেছেন, ''এই ফাইলগুলির মধ্যে একটি নথিতে জানা যাচ্ছে যে, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু তাইহোকুতে কথিত বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হননি এবং তিনি যে ১৯৬৪ সালেও জীবিত ছিলেন, সেটারও একটা প্রামাণ্য নথি রয়েছে।''

অভিজিত রায় অভিযোগ করে বলেন, নেতাজি সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, পশ্চিমবঙ্গের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় এবং আরেক মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় কেবল রাজনৈতিক কারণেই নষ্ট করে ফেলেছেন। এর ফলে নেতাজি সুভাষচন্দ্র রায় সম্পর্কিত অনেক তথ্যই হারিয়ে গেছে। এছাড়াও আজাদ হিন্দ ফৌজের সিনিয়র অফিসার থেকে শুরু করে সাধারণ সৈন্য পর্যন্ত সকলের বিষয়ে গোয়েন্দাদের রিপোর্ট রয়েছে ওই নথিতে। তথ্যগুলি যেমন ব্রিটিশ আমলে সংগ্রহ করা, তেমনি স্বাধীন ভারতের পুলিশও যে বসু পরিবারের ওপরে নিয়মিত নজরদারি চালিয়েছে, তার প্রমাণও পাওয়া গেছে এসব নথিতে। বসু পরিবার ও আজাদ হিন্দ ফৌজের সদস্যদের মধ্যে আদান প্রদান হওয়া চিঠিপত্র, যেগুলি সেন্সর অফিসে গোপনে খুলে পড়া হতো, সেসবও রয়েছে এসব নথিতে।

বসু পরিবারের আরেক সদস্য চন্দ্র বসু বিবিসিকে বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ফাইলগুলি প্রকাশ করার পরে এখন কেন্দ্রীয় সরকারেরও উচিত তাদের কাছে থাকা ১০০-রও বেশি ফাইল প্রকাশ করে দেওয়া। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে থাকা ওই অতি গোপণীয় নথি প্রকাশের দাবি বারবার উঠলেও সব সময়েই সরকার বলে থাকে যে, ওই ফাইলগুলি প্রকাশ করা হলে কয়েকটি বন্ধুত্বপূর্ণ বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, তাই সেগুলি প্রকাশ করা যাবে না।''

ব্রিটিশ পুলিশ তো বটেই, স্বাধীনতার পর নেহরুর পুলিশও নেতাজির পরিবারের উপর নজরদারি করত। রাজ্য সরকারের হাতে থাকা নেতাজী সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল থেকে প্রাথমিক ভাবে এই তথ্যই সামনে আসছে। ১৯৫০ সালে মৃত্যু হয় সুভাষচন্দ্র বসুর দাদা শরত্চন্দ্র বসু'র। এসব ফাইল থেকে জানা যাচ্ছে, আমৃত্যু নজরদারি চলেছিল তাঁর উপরেও। ফাইল প্রকাশ অনুষ্ঠানে পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ প্রসঙ্গে শুধু বলেছেন, “ভালো মন্দ কিছু বলব না, শুধু বলব নেতাজি এবং তাঁর পরিবারকে নিয়ে স্বাধীনতার পরেও অনেক কিছু ঘটেছে, যা দুর্ভাগ্য জনক। কিছু চিঠি থেকে মনে হচ্ছে, ১৯৪৫-এর পরেও জীবিত ছিলেন নেতাজী। আমি চাই সত্য উদ্ঘাটিত হোক।”

নেতাজি পরিবারের সদস্য কৃষ্ণা বসুও স্বাধীনতার পরের এই গোয়েন্দা নজরদারির প্রসঙ্গে বলেন, “কেন্দ্রের কাছে আরও অনেক ফাইল রয়েছে। আমি চাই সেগুলিও প্রকাশ্যে আসুক।” নেতাজি পরিবারের অন্য এক সদস্য চন্দ্র বসু দাবি করেন, “হাওড়া সিআইডির একটি ফাইল অনুযায়ী, চল্লিশের দশকের শেষ দিকে নেতাজিকে রাশিয়া এবং চিনে দেখা গেছে। মার্কিন এবং ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের দাবি অনুযায়ী, তিনি নতুন একটি সেনাবাহিনী নিয়ে দেশে ঢুকতে চেয়েছিলেন।”

দীর্ঘদিন রাজ্য সরকারের হেফাজতে থাকার পরে গতকাল শুক্রবার প্রকাশ্যে এল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল। মানিকতলায় কলকাতা পুলিশ মিউজিয়ামে ওই নথি সংক্রান্ত ডিভিডি প্রকাশ করলেন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটায় নেতাজির পরিবারের সদস্যদের হাতে সেই ডিভিডি তুলে দেওয়া হয়। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকেও দেওয়া হয় ওই ডিভিডি। এখন থেকেই আমজনতা সেগুলি দেখতে পাবে।

শুক্রবারের ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ কৃষ্ণা বসু-সহ নেতাজি পরিবারের একাধিক সদস্য। প্রকাশিত নথিতে মোট দশ বছরের তথ্য আছে বলে জানিয়ে সুরজিতবাবু বলেন, “১৯৩৯ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত নেতাজি সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে এই ফাইলগুলিতে। ১৯২২ সালের একটি ফাইলও রযেছে। মোট ১২ হাজার ৭৪৪ পাতা রয়েছে ফাইলগুলিতে। নথিগুলিকে নির্দিষ্ট ক্রমে বিন্যস্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল রূপ দেওয়া হয়েছে সব গুলিকেই।”

এর আগে গত ১১ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ এবং রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের (আইবি) হেফাজতে থাকা নেতাজি-নথি প্রকাশ করা হবে।

বসু পরিবারের সদস্য সাংসদ কৃষ্ণা বসু। তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে ভাবনার গোড়াতেই আমি মমতাকে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম। আবারও জানাচ্ছি। না হলে নেতাজিকে নিয়ে একটা যেন লুকোচুরি খেলা চলছিল। পাগলের মত গল্প তৈরি করছিল কেউ কেউ। নথি প্রকাশ করে তাই বাস্তবের মুখোমুখি হওয়াই ভালো। তবে, আমি চাইব কেন্দ্র নেতাজির নথিগুলো প্রকাশ করুক। ওঁদের কাছে তো আরও গুরুত্বপূর্ণ নথি আছে। সবচেয়ে বড় কথা, স্বাধীনতার পরেও বসু পরিবারের উপর নজরদারি ছিল। শরৎচন্দ্র বসু ১৯৫০-এর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তাঁর উপরেও ছিল গোয়েন্দা নজর।’’ কেন্দ্রেরও তরফেও নেতাজি সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রের কাছেও নেতাজি ফাইল রয়েছে। কেন্দ্রও প্রকাশ করুক ফাইলগুলি।”

তবে রাজ্যের নথি প্রকাশ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি নেতাজির নাতি, অনিতা পাফের পুত্র পেটার অরুণ পাফ। প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ফেসবুকে পেটার বলেন, ‘‘আমি তো নথি দেখিনি! কীভাবে বলব? আমার কোনও মন্তব্য নেই।’’

তথ্যসূত্র: বিবিসি, আনন্দবাজার



মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ২:৫২

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: অত্যধিক সিনিয়রের লেখায় মন্তব্য না করাই উচিৎ কারন উনারা মিথ্যেগর্বে উত্তর দেয়াটাকেও বাহুল্য মনে করেন !!

২| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:২১

অশুভ বধ বলেছেন: আজ সত্য টা উম্মোচিত হল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.