নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলে গেলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন সত্যিকারের বন্ধু জগমোহন ডালমিয়া !!!

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:০০

আইসিসির প্রাক্তন সভাপতি ও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিসিআই) ও ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর সভাপতি জগমোহন ডালমিয়া মারা গেছেন। আজ রোববার রাতে কলকাতার বিএম বিরলা হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে ডালমিয়াকে কলকাতার বিএম বিরলা বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেই তাঁর হার্টের অ্যাঞ্চিওগ্রাম করা হয়। তাঁর বাঁ-দিকের ধমনীতে একাধিক ক্লট অর্থাৎ রক্ত জমাট বেঁধেছিল। অপারেশনের পরে তাঁর অবস্থা সামান্য স্থিতিশীলও হয়েছিল। আজ রবিবার ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভারতের স্থানীয় সময় রাত ৯টার দিকে ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে তিনি মারা যান।
জগমোহন ডালমিয়ার মৃত্যুর খবরে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি ও পশ্চিমবঙ্গের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস হাসপাতালে ছুটে যান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক ট্যুইটার বার্তায় বলেন ''Sad. Dalmiya ji passes away. He was a giant amongst sports administrators, a true lover of Bengal. On my way to pay my respect. RIP"
বিএম বিরলা হাসপাতাল তাঁর মৃত্যুর কারণ হিসেবে গণমাধ্যমবে বলেছে, “Mr. Dalmiya died of internal gastrointestinal bleeding and internal organ failure,”

১৯৭৯ সালে ডালমিয়া ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সালে ভারত যে বছর বিশ্বকাপ জয় করেছিল ওই বছরই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তিনি কোষাধ্যক্ষ হন। এছাড়া ১৯৮৭ (ভারত-পাকিস্তান যৌথ আয়োজক) এবং ১৯৯৬ সালে (ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যৌথ আয়োজক) ইন্দ্রজিৎ সিং বিন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ভারতে বিশ্বকাপ আয়োজনে সহযোগিতা করেছেন। ১৯৯৬ সালে আইসিসি'র সভাপতি নির্বাচনে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ম্যালকম গ্রে-কে ২৩-১৩ ভোটে বিজয়ের পরেও আইসিসি'র নিয়ম অনুযায়ী দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পাওয়ায় সে বছর সভাপতি হতে পারেননি। কিন্তু পরের বছর ১৯৯৭ সালে তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ক্রিকেটের বিশ্ব সংস্থা আইসিসির সভাপতি নির্বাচিত হন। এবং টানা তিন বছর আইসিসি'র সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ভারতীয় ক্রিকেটে মিস্টার ডালমিয়াকে বলা হতো 'ম্যাকেয়াভিল্লি অব ক্রিকেট বা Machiavelli of Indian cricket'।

২০০৫ সালে বিসিসিআই'র সভাপতি নির্বাচনে ডালমিয়ার সমর্থন নিয়ে রনবীর সিং মহেন্দ্র পরাজিত হন প্রবল প্রতাপশালী মন্ত্রী শারোদ পাওয়ার-এর কাছে। পরের বছর ডালমিয়াকে বিসিসিআই থেকে অর্থ খরচের ব্যাপারে কিছু অনিয়মের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। ২০০৭ সালে বোম্বে হাই কোর্টের সেই আদেশের বিরুদ্ধে ডালমিয়া ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে, সরকারি পক্ষ উপযুক্ত প্রমাণপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হয়। ২০১০ সালে কলকাতা হাই কোর্ট ডালমিয়ার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ খারিজ করে দেন এবং ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর নির্বাচনের যোগ্য হিসেবে ঘোষণা করেন। এবং সে বছর তিনি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর সভাপতি নির্বাচিত হন।

২০১৩ সালে বিসিসিআই সভাপতি এস শ্রীনিবাসন-এর জামাতা কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে স্পট ফিক্সিং-এর অভিযোগে অভিযুক্ত হলে মিস্টার শ্রীনিবাসনকে বিসিসিআই সভাপতি থেকে বহিষ্কার করে ডালমিয়াকে বিসিসিআই-এর অন্তর্বর্তী সভাপাতি করা হয়। সে বছল অক্টোবর মাসে শ্রীনিবাসন আবার বিসিসিআই-এর সভাপতি হিসেবে ফেরত আসেন। এরপর শ্রীনিবাসন আইসিসি'র চেয়ারম্যান নিযুক্ত হলে ২০১৫ সালে ডালমিয়াকে আবার বিসিসিআই-এর সভাপতি করা হয়।

গ্লোবাল স্পোর্টসে অনন্য অবদানের জন্য ২০০৫ সালে ডালমিয়া 'International Journal of the History of Sports Achievement' পদকে ভূষিত হন। এর আগে ১৯৯৬ সালে বিবিসি তাঁকে বিশ্বের সেরা ছয় জন স্পোর্টস এক্সিকিউটিভ-এর একজন হিসেবে ঘোষণা দেয়।

১৯৪০ সালের ৩০ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি মারোয়ারি পারিবারে জগমোহন ডালমিয়া জন্মগ্রহণ করেন। স্কটিশ চার্জ কলেজে পড়াশুনা করার সময় একজন উইকেট রক্ষক হিসেবে ডালমিয়ার ক্রিকেট জীবনের শুরু। কলেজ জীবনে একবার তিনি ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন।

ডালমিয়া বাবার প্রতিষ্ঠিত এমএল ডালমিয়া অ্যান্ড কোং কনস্ট্রাকশান ফার্মের কর্নধার ছিলেন। ১৯৬৩ সালে তাঁদের ফার্ম কলকাতার বিখ্যাত বিএম বিরলা প্লানেটারিয়াম নির্মাণ করে। এছাড়া ব্যক্তি জীবনে তিনি পাঠুরিয়াঘাটার ঘোষ পরিবারে বিবাহ করেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।

জগমোহন ডালমিয়া বাংলাদেশের ওয়ান ডে এবং টেস্ট স্টাটাস পাওয়ার ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থ সহযোগিতা করেছিলেন। আজ তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ ক্রিকেট একজন সত্যিকারের বন্ধুকে হারালো। জয়তু জগমোহন ডালমিয়া। আপনি যেখানে থাকুন শান্তিতে থাকুন।

...............................
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
ঢাকা

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:১৫

এস কাজী বলেছেন: বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন ডালমিয়া। তবে আজ কোথায় পড়লাম তাঁর মেয়ে মেনে নিতে পারছেন না এ মৃত্যু। বলছেন ভুল চিকিৎসার শিকার তাঁর বাবা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.