নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

দিল্লি\'র পর এবার বিহার বিধানসভায়ও নরেন্দ্র মোদী\'র বিজেপি\'র ভরাডুবি!!!

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৫৩

দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের পর এবার সদ্য অনুষ্ঠিত বিহারের বিধানসভা নির্বাচনেও নরেন্দ্র মোদী'র ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা দল (বিজেপি) গো-হারা হেরেছে। নির্বাচনের আগে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ), প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) ও কংগ্রেস মিলে বিহারে যে মহাজোট গঠিত হয়েছিল, সেই মহাজোটের কাছেই বিজেপি জোট হেরেছে। ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় মহাজোট পেয়েছে ১৭৮ আসন, বিজেপি জোট পেয়েছে মাত্র ৫৮ আসন আর অন্যান্য ছোট দল পেয়েছে ৭টি আসন। তবে বিহার বিধানসভায় একক দল হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ৮০ আসন জিতেছে লালু প্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়েছে ক্ষমতাসীন নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ), জেডিইউ জিতেছে ৭১টি আসন। বিজেপি একক ভাবে জিতেছ ৫৩টি আসন আর বিজেপি শরিক দল এলজেপি ২টি, আরএলএসপি ২টি ও এইচএএম(এস) জিতেছে ১টি আসন। বিজেপি জোট জিতেছে মোট ৫৮ আসন। কংগ্রেস একক ভাবে জিতেছে ২৭টি আসন। অন্যান্যরা জিতেছে ৭টি আসন। মহাজোটের মোট আসন জেডিইউ ৭১, আরজেডি ৮০ ও কংগ্রেসের ২৭ মিলে ১৭৮টি। আগামী ২০ নভেম্বর জেডিইউ'র নেতা নীতিশ কুমার তৃতীয়বারের মত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিবেন।

নির্বাচনে জয়ের পর শরিকদের খুশি রাখতে নীতিশ কুমার প্রতি পাঁচ জন বিধায়কের বিপরীতে একজন করে মন্ত্রী করার ঘোষণা দিয়েছেন। সেই হিসেবে লালু প্রসাদ যাদবের আরজেডি পাচ্ছে ১৬টি মন্ত্রণালয়, নীতিশ কুমারের জেডিইউ পাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীসহ ১৪ বা ১৫টি মন্ত্রণালয় আর কংগ্রেস পাচ্ছে ৫টি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রিসভার আকার ৩৬ এর উপরে যাবে না বলে নীতিশ কুমার ঘোষণা দিয়েছেন।
মহাজোটের বিপুল বিজয়ের পরেও নীতিশ কুমারের কাছে এখন সরকার তৈরিই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ বিধানসভায় জিতে আসা বিধায়কদের প্রায় ৫৯ শতাংশের বিরুদ্ধে কোনও না কোনও ফৌজদারি মামলা ঝুলে রয়েছে। সে কারণেই মন্ত্রিসভাকে যতটা সম্ভব ‘নিষ্কলঙ্ক’ রাখতে চেষ্টা করছেন নীতিশ কুমার। তাছাড়া কোন দলকে কোন দফতরের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তা নিয়েও কিছুটা দ্বন্দ্ব রয়েছে। পাশাপাশি উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দৌড়ে লালু প্রসাদের পরিবারের সদস্যেরা তো রয়েছেই।

জেডিইউ'র এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, মন্ত্রিসভা গঠনে কোনো কোন্দলের আশঙ্কা নেই। দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত লালু প্রসাদ যাদব নিজে ভোটে লড়তে পারেননি, কিন্তু সমান সংখ্যক আসনে লড়াই করে তাঁর দল আরজেডি ৮০টি আসন জিতেছে। তাই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব তাঁর দুই ছেলের কারও জন্য এখন হয়তো একটি পদ চাইতে পারেন। তাঁরা এবারই প্রথম বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন। তেজপ্রতাপ যাদব (২৭) ও তেজস্বীপ্রতাপ যাদব (২৬) দুজনই বলেছেন, তাঁরা নীতিশ কুমার সরকারের মন্ত্রী হতে প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে একজনকে হয়তো উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদে দেখা যেতে পারে। তবে কোন দল থেকে বিধানসভার স্পিকার হবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলছে, স্বরাষ্ট্র দফতর নিজের হাতেই রাখতে চাইছেন নীতিশ। এ ছাড়াও, গত ১০ বছরে যে দফতরগুলি ভালো কাজ করেছে, সেগুলিও তিনি জেডিইউ-এর হাতে চাইছেন। বিশেষ করে সড়ক, বিদ্যুৎ, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য দপ্তর রাখতে চায় জেডিইউ। নির্বাচনের সময়ে সাতটি ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নীতিশ। তার মধ্যে এই চারটি দপ্তর রয়েছে। তবে ভাগ-বাটোয়ারার ক্ষেত্রে লালু প্রসাদ এবং কংগ্রেস নেতৃত্বকে কতটা খুশি তিনি করতে পারবেন, তা নিয়েই এখনও প্রশ্ন রয়েছে।

ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভা নিয়ে লালু প্রসাদ যাদব তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা ভোলা যাদবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। লালু প্রসাদ-নীতিশ কুমারের জোট তৈরির ক্ষেত্রে ভোলা যাদব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে দু’জনের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা নিয়ে কেউই কিছু বলতে চাননি। লালু প্রসাদ বলেছেন, ‘‘কোনও সমস্যা হবে না। সময় হলেই সব জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ নীতিশ কুমার চাইছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেই তাঁর পূর্ণ মন্ত্রিসভা শপথ নিক। যাতে কোনও সমস্যা ছাড়াই প্রথম দিন থেকে কাজ শুরু করা যাবে।

মহাজোট ঠিক করেছে, দীপাবলির পরেই জোট বিধায়কদের বৈঠক ডেকে দলনেতা নির্বাচন পর্ব সম্পন্ন করা হবে। তারপরেই রাজ্যপালের কাছে গিয়ে প্রথা মেনে নীতিশ কুমার সরকার গঠনের দাবি জানাবেন। তবে কবে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্যপালের দপ্তর থেকে এখনও কিছুই স্পষ্ট করা হয়নি। ওদিকে শপথ গ্রহণে হাজির থাকার জন্য আমন্ত্রিতদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সেই তালিকায় সোনিয়া-রাহুলের পাশাপাশি রাখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। তাছাড়া শপথ অনুষ্ঠানে আসতে সম্মত হয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও।

বিহারে বিজেপি'র হারের কারণ কি?
বিহার বিধানসভায় বিজেপি মূলত ভরসা করেছিল তাদের প্রধান তিন মিত্র দলের উপর। বিজেপি’র তিন শরিক দল হলো— রামবিলাস পাসোয়ানের এলজেপি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝির হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা এবং উপেন্দ্র কুশওয়াহা'র রাষ্ট্রীয় লোক-সমতা পার্টি। লালু প্রসাদ যাদব ও নীতিশ কুমারের ভোটদুর্গে হানা দিতেই বিজেপি বিহারে যে কৌশল নিয়েছিল, তা কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। এর আগে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি'র এই কৌশল ফলদায়ক হয়েছিল। তখন এলজেপি এবং রাষ্ট্রীয় লোক-সমতা পার্টির কাঁধে ভর করে বিহারে ৪০ আসনের মধ্যে ৩১টি আসনই জিতেছিল নরেন্দ্র মোদী'র এনডিএ। যে কারণে রামবিলাস পাসোয়ান ও উপেন্দ্র কুশওয়াহাকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় নিতে হয়েছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি'র সেই কৌশল এবার কার্যত ব্যর্থ হয়েছে।

৪২টি আসনে লড়াই করে রামবিলাসের দল এলজেপি জিতেছে মাত্র দু’টি আসন। ২৩টি আসনে লড়াই করে উপেন্দ্র কুশওয়াহা'র দল রাষ্ট্রীয় লোক-সমতা পার্টি জিতেছে মাত্র দু’টি আসন। আর ২১টি আসনে লড়াই করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঁঝি'র হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা জিতেছে মাত্র একটি আসন। সেই আসনটি কেবল জিতনরাম মাঁঝি'র নিজের আসনটি। এর আগে জিতনরাম মাঁঝি নীতিশ কুমারের সঙ্গে বিদ্রোহ করে জেডিইউ ছেড়েছিলেন। তখন তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন নরেন্দ্র সিংহ, বৃষণ পটেল, নীতিশ মিশ্রের মতো জেডিইউ নেতারা। কিন্তু ওই তিন নেতাকেই এবারের নির্বাচনে হার স্বীকার করতে হয়েছে। তিন জনেরই রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এখন প্রশ্নের মুখে।

নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই উপেন্দ্র কুশওয়াহা ও রামবিলাস পাসোয়ান মুখে কুলুপ এঁটেছেন। দুই নেতাই পটনা ছেড়ে এখন দিল্লিতে অবস্থান করছেন। এলজেপি-র এক নেতা তাই ঠাট্টা করে বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রে নিজেদের গুরুত্ব এখন কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, ওঁরা তা-ই নিয়েই আশঙ্কায়।’’ আর জিতনরাম মাঁঝি অবশ্য সব দোষ চাপিয়েছেন বিজেপি'র ঘাড়ে। তিনি নিজে যে দু’টি আসন থেকে দাঁড়িয়েছিলেন, তার মধ্যে একটিতে হেরে গেছেন। জিতেছেন শুধু ইমামগঞ্জ থেকে। তিনি এই হারের দায় চাপিয়েছেন বিজেপির উপরেই। তাঁর কথায়, ‘‘মোহন ভাগবতের মতো নেতারা বিহারকে না-বুঝে যে ভাবে উল্টোপাল্টা বক্তৃতা দিয়েছেন, তারই ফল ভোগ করতে হয়েছে এনডিএ-কে।’’

বিহারকে ঠিকমত না বোঝার এই অভিযোগ বিজেপির ভিতর থেকেও উঠেছে এখন। বিহারিবাবু শত্রুঘ্ন সিনহা ফল বেরোনোর পর থেকেই বেশ সরব হয়েছেন। তার জবাবে কৈলাস বিজয়বর্গীয় তাঁকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করে বিদ্রুপ করেছেন। আজ আবার শত্রুঘ্ন পাল্টা টুইট করেছেন, ‘‘হাতি চলে বিহার, ...ভোকে হাজার!’’ বেগুসরাইয়ের বিজেপি সাংসদ ভোলা সিংহ শত্রুঘ্ন সিনহার চেয়ে একধাপ এগিয়ে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, মোদীর ‘অসংসদীয়’ কথা বিহারে দলের বিপর্যয় ডেকে এনেছে।

ওদিকে প্রধানমন্ত্রীর মুখের হাসি কেড়ে নিলেন বিজেপি'র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতা লালকৃষ্ণ আদবাণী। বিহারে দলের ভরাডুবির জন্য তিনি নাম উচ্চারণ না-করেই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহকে। বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর লোকসভার স্পিকার হতে চেয়েছিলেন আদবাণী। মোদী রাজি হননি। শুধু তা-ই নয়, নিঃশব্দে তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন এনডিএ-র আহ্বায়ক পদ থেকেও। সে সব ঘটনা নিয়ে তখন তেমন হইচই হয়নি। কারণ, মোদীর জনপ্রিয়তা তখন তুঙ্গে। তাই বিদ্রোহের বোমা ফাটানোর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আদবাণী। মোদী হাওয়ায় ইদানীং ভাটার টান। সেই সুযোগে দীপাবলির সন্ধ্যায় বিক্ষুব্ধ আরও তিন প্রবীণ নেতা মুরালী মনোহর জোশী, শান্তা কুমার ও যশবন্ত সিনহাকে সঙ্গে নিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের দিকে। তাঁরা বলছেন যে, দিল্লির পরাজয় থেকে দল কোনো শিক্ষা নেয়নি। বরং গত এক বছর ধরে দলকে যেভাবে দুর্বল করা হয়েছে, এটাই বিহারে হারার প্রধান কারণ।

বিহারের ফলাফলের পর্যালোচনা করতে বসে গতকাল বিজেপির সংসদীয় বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এই হারের দায় কারও একার নয়। দলগত ব্যর্থতাই দায়ী। বোর্ডের বৈঠক শেষে অরুণ জেটলি সাংবাদিকদের এ খবর জানানোর পরেই গুঞ্জন ওঠে, মোদী-অমিত জুটিকে আড়াল করতেই এমন সিদ্ধান্ত। বিহারে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে ভোটে লড়েনি বিজেপি। প্রচারের একমাত্র মুখ ছিলেন নরেন্দ্র মোদী আর প্রচারের একমাত্র ম্যানেজার ছিলেন অমিত শাহ। আদবাণীর মতো প্রবীণ নেতাকে একটি বারের জন্যও রাজ্যে ঢুকতে দেননি তাঁরা। ফলে বিপর্যয়ের দায়ও যে ওই দু’জনকেই নিতে হবে, তা একান্তে বলছিলেন বিজেপির মোদী বিরোধী শিবির। আজ সে কথা প্রকাশ্যে বলে দিলেন আদবাণীরা। তাঁদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বিহারে ভরাডুবির দায় সকলের, এ কথা বলার অর্থ কাউকেই দায়ী না-করা। দল জিতলে যাঁরা কৃতিত্ব নিতেন, আজ তাঁরাই নিজেদের দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন।’’

বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল যেদিন বেরোয়, ঘটনাচক্রে সেই ৮ নভেম্বরই ছিল লালকৃষ্ণ আদবাণীর জন্মদিন। সেদিন সকালে মোদী-অমিতরা প্রথামাফিক সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন আদবাণীর বাড়িতে। তখনও বিহারের ফল ঘোষণা হয়নি। মোদী টুইট করে আদবাণীকে নিজের ‘শ্রেষ্ঠ শিক্ষক’ বলে বর্ণনা করেন। আজ আদবাণী সুযোগ পেয়েই বুঝিয়ে দিলেন, মোদী অন্তত তাঁর সেরা ছাত্র নন। কারণ, আদবাণীদের অভিযোগ, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফল থেকে মোদীরা কোনও শিক্ষাই নেননি। ওদিকে বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ পরাজয় মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিতিশ কুমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বিহারের জনতার রায়কে তার দল শ্রদ্ধা করে বলেও মন্তব্য করেছেন অমিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিহারে বিজেপির এই ভরাডুবি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য বিরাট একটি ধাক্কা। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও প্রভাবশালী নেতা রাম মাধব স্বীকার করেছেন, ‘এই ফল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ছিল – কাজেই এর কারণ বিশ্লেষণ করতে সময় লাগবে। আমাদের ধারণা ছিল লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হবে, কিন্তু জেডিইউ জোট এত ভালো করবে তা বিজেপি ভাবেনি, এমন কী হয়তো তারা নিজেরাও ভাবেনি।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, ‘সারা দেশে বিজেপির একচ্ছত্র রথ ছুটবে বলে দলের নেতারা যে বড়াই করছিলেন, তা এবার বড় ধাক্কা খেয়েছে– এটা একটা স্বস্তির ব্যাপার। হয়তো স্বস্তি পাবেন দেশের সংখ্যালঘু শ্রেণী ও উদারপন্থীরাও– যারা গত দুমাস ধরে দাদরি বা বিহার নির্বাচনকে ঘিরে নানা প্ররোচনামূলক বা উত্তেজক কথাবার্তার বিস্ফোরণ একেবারেই হজম করতে পারেননি।”

বিহারের নির্বাচনী ফলাফল নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে দিশা পরিবর্তনের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও বিশ্লেষকদের ধারণা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার নানা ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার নীতি ঘোষণা করেছিল, তার ভবিষ্যৎ নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠবে। কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী নিজ ট্যুইটে বলেছেন, “এ জয় বিভেদের বিরুদ্ধে একতার জয়। ঔদ্ধত্যের বিরুদ্ধে নম্রতার জয়। ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালোবাসার জয়। এ জয় বিহারবাসীদের জয়।” তিনি নির্বাচনী এ ফলাফলের জন্য বিহারবাসী, নিতিশ কুমার ও লালু প্রসাদকে অভিনন্দন জানান। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এ জয় সহিষ্ণুতার জয়, অসহিষ্ণুতার পরাজয়।” তিনিও নিতিশ কুমার, লালু প্রসাদ ও বিহারবাসী ‘ভাই-বোনদের’ অভিনন্দন জানিয়েছেন।

এদিকে বিহার বিপর্যয়ের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই লন্ডনে পাড়ি দিতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘদিন বিহারের রাজনৈতিক প্রচারের প্রধান তারকা ছিলেন তিনি। হেরে যাওয়ার পরে সেই পোশাকটি ছেড়ে ফের রাষ্ট্রনেতার পোশাকে এখন মোদী। রাজনৈতিক শিবিরের তাই প্রশ্ন, এই পর্বান্তর তাঁর কাছে এখন কতটা মসৃণ? বিহারের পরাজয়ের গ্লানি কি তাঁকে লন্ডনেও পিছু করবে না? ১২ তারিখ শুরু হচ্ছে মোদীর লন্ডন সফর। সেটি অনেক আগে থেকেই স্থির ছিল। কিন্তু আজ যদি বিহার জয় করে তিনি লন্ডন যেতেন, তাতে সফরটি অন্য মাত্রা পেত বলে অনেকেই মনে করছেন।

.........................................
১১ নভেম্বর ২০১৫
ঢাকা


মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৬

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: এই বার যদি হুঁশ ফেরে।

২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:১০

বিপরীত বাক বলেছেন: মোদী জিতলেই বা আপনার কি ক্ষতি হত আর হারতেই বা আপনার কি লাভ হবে।। আপনাকে খুব উল্লসিত মনে হচ্ছে।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.