নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
একুশের বইমেলার দ্বিতীয় দিনেই জমে উঠেছে আমাদের প্রাণের মেলা। বিকালে একাডেমি প্রাঙ্গনে 'মোদের গরব' ভাস্কর্যের পাশে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি'র স্টল উদ্ভোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এ সময়ে মন্ত্রী বলেন, একুশের বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। সবাই নির্ভয়ে মেলায় আসুন। আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ পাঁচটি উৎসবের কারণে কখনোই অন্ধকারে ফিরে যাবে না। একুশে ফেব্রুয়ারি, অমর একুশে বইমেলা, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও পহেলা বৈশাখ, এই পাঁচটি উৎসব সকল চক্রান্তকে উপেক্ষা করে জীবনের পথে বাঙালিকে উৎসাহিত করে।
আজ একাডেমি'র মূল মঞ্চে ছিল 'বাংলা একাডেমি'র হীরকজয়ন্তী: বাংলা একাডেমিকে ফিরে দেখা' শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শফিউল ইসলাম। আলোচক ছিলেন ফজলে রাব্বী, আজিজুর রহমান, বেগম আকতার কামাল ও মোহিত কামাল। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম। দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যায় যথারীতি ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী অংশে এখনো অনেক প্রকাশনীর স্টল নির্মাণ শেষ হয়নি। প্রথম দিনের চেয়ে আজ মেলা প্রাঙ্গন কিছুটা পরিচ্ছন্ন ছিল। তবে ধূলার উৎপাত বেশ ভালোই শুরু হয়েছে। মেলা আয়োজকরা এখনো পর্যাপ্ত শৌচাগার ও বইপ্রেমীদের জন্য কোনো বসার ব্যবস্থা করেনি। তবে আজ একাডেমির বহেরাতলার লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে আলো কিছুটা বেড়েছে। আশা করছি দু'একদিনের মধ্যে বইমেলার পূর্ণাঙ্গ সাজগোজ, পর্যাপ্ত আলো, শৌচাগার ও বসার ব্যবস্থাগুলো আয়োজকরা সম্পন্ন করবেন।
আজ বইমেলায় অনেক বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আড্ডা হয়েছে। চা-সিগারেট, ঘোরাঘুরি হয়েছে। বিকালে কবি সরকার আমিনের রুমে ঢু মারতেই মুঠোফোনে কথা বলারত আমিন ভাই ফোনটি আমাকে দিয়ে বললেন, কথা বলেন। মুঠোফোনের ওপাশে সুদূর দক্ষিণ কোরিয়া থেকে বন্ধু কবি শাহেদ কায়েস। বললাম, বরফের লগে যে হারে প্রেম করতাছেন, দেইখা তো দুপুর থাইকাই আমি খুশি। শাহেদ মজা করে হাসলেন। অন্য বন্ধুদের খোঁজখবর নিলেন।
আজ বইমেলায় ঢুকেই প্রথমে দেখা হলো দ্রষ্টব্য সম্পাদক কবি কামরুল হুদা পথিক, কথাসাহিত্যিক ঋষি এস্তেবান, শিল্পী চারু পিন্টু, কবি শাফি সমুদ্র গংদের সঙ্গে। আড্ডায় পথিক ভাইয়ের প্রেমঘটিত একটা থলের খবর জানা গেল। সেটা অবশ্য এখানে ইচ্ছে করেই রাষ্ট্র করছি না। বর্ধমান হাউজের সিড়িতে বসা ছিলেন কবি কুহক মাহমুদ। ঋষিদা আর আমাকে জোর করে বোতল থেকে কী যেন বের করে খাইয়ে দিলেন। তারপর সূর্যালোকে ফটাফট তার হাতের ক্যামেরা ঝিলিক মেরে উঠল।
একফাঁকে কবি কুতুব হিলালী'র হাতের সিগারেট ছিনিয়ে নিয়ে ওটায় মুখাগ্নি করলাম। ঋষিদা আর আমি ভাগাভাগি করে খেলাম। হিলালী 'বাংলালিপি' স্টলের সাজগোজের ব্যস্ততা শেষে ফিরে এসে দেখে সিগারেট শেষ। দূর থেকে কবি নীলসাধু দৌড়ে এসে শেষ টানটা দিলেন। তারপর সাধুদা আর আমি চা খেতে বাইরে গেলাম। ফিরে এসে দেখি বর্ধমান হাউজের সিড়ির সামনে বন্ধু কবি আলফ্রেড খোকন ও বন্ধু লেখক-সাংবাদিক নজরুল কবীর, লেখক রাজু আলাউদ্দিনকে নিয়ে আড্ডা জমিয়েছে। খোকনরে কইলাম, শুদ্ধস্বরের স্টল আমি নিজের চোখে দেইখা আইছি। দুপুরে এনটিভি অফিসে ও এইডা লইয়া আমার লগে তর্ক করছিল। জবাবে কইল, চল ওপারে যাই। তাইলে তো আমার কয়েকটা বই পাওয়া যাবে। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর থেকে রাজু ভাই, খোকন, নজরুল আর আমি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাবার জন্য হাঁটা ধরলাম। কিন্তু নজরুল আমার টেংরি ধইরা বামে ঘুরল।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি'র স্টলের দিকে। খুব সুন্দর সাজসজ্বা হয়েছে স্টলটি। হেরিকেন দিয়ে আলোকসজ্বা এটাই এবারের বইমেলায় প্রথম। নজরুল অবশ্য তাতেও পুরোপুরি খুশি না। ও আরো কিছু পরামর্শ দিল। পাশেই জাগোনিউজ২৪ ডট কম। দেখি হারুন ভাই বসে আছেন। লেখক-সাংবাদিক হারুন রশিদ যে জাগোনিউজ২৪ ডট কমে যোগ দিয়েছেন, আজই শুনলাম আমরা। হারুন ভাই নজরুল আর আমাকে জাগোনিউজের ঈদ সংখ্যা গিফট দিলেন। জাগোনিউজে যোগ দিয়ে এই কর্মটি করেছেন হারুন ভাই।
নজরুলের পাল্লায় একবার পড়লে তার খবর আছে! এরমধ্যে খোকনের ফোন- ব্যাডা, শুদ্ধস্বরের স্টল কোনদিকে ক? খোকনরে বর্ণনা দিয়ে কইলাম টিনের বেড়া ধইরা ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সিটিউটের দিকে হাঁটতে থাক...। ততক্ষণে আমরা একাডেমি থেকে রাস্তায় বের হয়েছি। নজরুল কইল আগে চা খাইয়া লই। আমরা চা শেষ করতেই নজরুল আবার সিগারেটের প্যাকেট কিনতে ভীরের মধ্যে ঢুকলো। বাইরে আইসা কইল, চল এবার ওপারে ঢুকি। আমি কইলাম, তোর লগে আমি আর নাই। ফুটলাম। নজরুলকে ছেড়ে দিতেই রাস্তায় দেখা বন্ধু কামরুল হাসান মেনন আর কবি দিদার মালেকী'র লগে। আমি যেমন নজরুলকে এড়াইলাম, মেনন তেমনি আমারে এড়াইতে কইল, না ভিতরে ঢুকুম না। বরিশাইল্যাগো লগে আমি ঘুরি না (মজার ব্যাপার হল, মেননের প্রায় সব বন্ধুই বরিশালের)। আগামীকাল আমনের ওস্তাদ আইতাছে! ওস্তাদ মানে গল্পকার খোকন কায়সার। চট্টলা থেকে ঢাকা আসবেন। কইলাম ওস্তাদ তো এত তাড়াতাড়ি বইমেলায় আহে না। কাহিনী কী? ওস্তাদের কী বই আইতাছে? মেনন কইল, না ট্রেনিং! এই বয়সে কীসের ট্রেনিং কে জানে। মেনন কিছু না কইয়া ঘাড় ঘুরাইয়া টিএসসির দিকে হাঁটা ধরল।
আমি আবার একাডেমি প্রাঙ্গনে ঢুকলাম। বেঙ্গল ফাউন্ডেশান এবার বইমেলায় লেখকদের জন্য ই-বই আপ করার সুযোগ দিচ্ছে। কাহিনী কী খোঁজ নিতে গেলে 'আলপনা' নামে তারা একটা গানের সিডি গিফট করল। আর কাহিনী শুনলাম ফাউ। বেঙ্গল থেকে বের হবার পরেই জাহিদের ফোন। ছায়াবিথী প্রকাশনের প্রকাশক জাহাঙ্গীর আলম সুজনের ছোটভাই জাহিদ। আমার গল্প সংকলন 'পঞ্চভূতেষু' আগামীকাল থেকে মেলায় থাকবে সেকথা জানালো জাহিদ। বলল, ভাইয়া একবার স্টলে ঘুইরা যান।
তারপর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আবারো ঢু মারলাম। আজও অনু তারেকের লগে দেখা হলো না। তবে ছায়াবীথিতে অপুদার সুন্দর বইটি নেড়েচেড়ে দেখলাম। খুব সুন্দর প্রোডাকশন হয়েছে। অনু তারেকের বড় ভাই তানভীর অপু'র প্রথম ভ্রমণবিষয়ক বই 'যাত্রা হল শুরু', প্রকাশ করেছে ছায়াবীথি। অপুদা যখন থাকবে তখন আমি বইটা নিব। ছায়াবীথি'র আশা কইলো, ভাইয়া আপনারে ফেসবুকে খুঁইজা পাই না ক্যান? কইলাম, তুমি তো খোঁজো নাই, পাইবা কেমনে! আশা'র দুষ্টু হাসিতে বুঝলাম, এইটা তিনশো তেরো নাম্বার চাপা। পরে আমারে খুশি করতে আশা আমার মুঠোফোন নাম্বার নিল। এই সময় হঠাৎ গুণদা'র কথা মনে পড়ল। ভাবতাছি আমারও গুণদার মত আরেকটা ফোন লাগবে। সুন্দরী মেয়েদের ফোন নাম্বার সেই আলাদা ফোনে সেইভ করুম! গুণদা'র এই কৌশলটা সত্যি সত্যি আমাদের মত একুশ বছরের বালকদের অনুসরণ করাটা খুব জরুরি। নইলে নজরুলের লগে দেখা হইলে নাম্বার হারানোর সম্ভাবনা থাকে!! এই সময় শহীদ ভাইয়ের ফোন। একাডেমির রাস্তায় আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমি মেলা থেকে বের হয়ে শহীদ ভাইয়ের সাথে চলে আসি। ফেরার পথে দেখা হল আসাদ আর সাদিয়ার লগে... ওরা যাচ্ছে আমরা ফিরছি... এই ছিল দ্বিতীয় দিনের বইমেলার কেচ্ছাকাহিনী।
...............................
৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:৫৫
পরিবেশবাদী ঈগলপাখি বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৭:৪৪
ওপেল বলেছেন: রেজা ভাই,মেজাজ খারাপ আসে আপনার উপরে,কল দিলে ধরেন না কে? কেমন আসেন ভাই? লেখা ভাল লাগল।