নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশ আসলে কে চালায়!!!

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:২১

বাংলাদেশের সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় আমি প্রায়ই খেই হারিয়ে ফেলি। সত্যি সত্যি আমাদের এই দেশটা আসলে কে চালায়? ষোলকোটি মানুষের এই দেশে ভিভিআপি, ভিআইপি, সিআইপি, মন্ত্রী, এমপি থেকে ইউপি চেয়ারম্যান, সচিব থেকে চৌকিদার, আমলা-কামলা, দোকানদার, ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী, ধর্ষক, সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারী, পুলিশ, চাঁদাবাজ, কর্পোরেটসহ নানান কিসিমের বাটপারদের খপ্পরে একেবারে ভরপুর। যখন প্রধানমন্ত্রী রাজপথ দিয়ে যাতায়াত করেন, মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বুঝি প্রধানমন্ত্রী। যখন রিক্সাওয়ালা ইচ্ছামত ভাড়া চায়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় কিনা রিক্সাওয়ালা। যখন লোকাল বাসের কনট্রাকটর ইচ্ছামত ভাড়া চায়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় লোকাল বাসের দেখো লোকাল বাসের কনট্রাকটর।

যখন মোড়ের দোকানদার সিগারেটের দাম ইচ্ছামত বাড়িয়ে নেয়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বুঝি মোড়ের টোঙ দোকানদার। যখন চাঁদাবাজরা ইচ্ছামত চাঁদা আদায় করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে চাঁদাবাজরা। যখন ব্যবসায়ীরা হুটহাট জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় সত্যি ব্যবসায়ীরা। যখন সন্ত্রাসীরা ইচ্ছামত দিনদুপুরে মানুষ খুন করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বাস্তবে সন্ত্রাসীরা। যখন পুলিশ ইচ্ছামত চাঁদাবাজি, হয়রানিসহ নানান কিসিমের তেড়ামি করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে পুলিশ। যখন এমপিরা ইচ্ছামত লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে গাড়ি আমদানি করে, অন্যের বাড়িঘর-জায়গাজমি দখল করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বুঝি এমপিরা। যখন সচিবরা ইচ্ছামত ফাইল আটকে রেখে ঘুষের দেনদরবার করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে সচিবরা। যখন ঋণখেলাপিরা ব্যাংক থেকে ইচ্ছামত ঋণ নিয়ে আর পরিশোধ করে না, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় দেখো ঋণখেলাপীরা।

যখন বিদেশি কূটনীতিকরা ইচ্ছামত মিটিং করে সরকারকে নানান কিসিমের বাহানা ধরিয়ে দেয়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বিদেশি কূটনীতিকরা। যখন জাতিসংঘ থেকে নানান কিসিমের ফাইফরমেশ পরামর্শ আদেশ নির্দেশ অটোমেটিক আসে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে জাতিসংঘ। যখন লুটেরা ইচ্ছামত এই দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় সত্যি সত্যি লুটেরা। যখন বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি করে বিদেশে মিলিয়ন ডলারের বাড়ি কেনে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলোতে যারা কাজকাম করে তারা। যখন পরীক্ষার আগে আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে যারা জড়িত তারা। যখন কেউ কেউ নিজেদের ইচ্ছেমত নদী ভরাট করে জায়গা দখল করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় এসব নদী দখলকারীরা। যখন ভোটের সময় ভোটকেন্দ্র দখল করে যারা ইচ্ছেমত ব্যালটে সিল মারে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় এসব ভোটকেন্দ্রের দখলবাজরা। যখন মামলায় হাজিরা না দিয়ে উকিল মারফত আগাম জামিন পায়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে কতিপয় উকিলরা।

যখন ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলায় ভাষা শহীদদের ভাস্কর্য ঢেকে দিয়ে চ্যানেল আই লাইভ প্রোগ্রাম করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বুঝি চ্যানেল আই। যখন ফুটপথ দিয়ে হাঁটার সময় মটর সাইকেলওয়ালারা ইচ্ছেমত ধাক্কা দিয়ে ফুটপথ ধরে সাই সাই করে চলে যায়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় আসলে মটর সাইকেলচালকরা। যখন মাছ-শাকসবজি-ফলমূল বিক্রেতারা ইচ্ছেমত প্রিজারবেটিভসহ নানান কিসিমের ভেজাল মিশিয়ে সেই জিনিস ধরিয়ে দেয়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় এসব বিক্রেতারা। যখন হাসপাতাল ক্লিনিক ডায়াগনোস্টিক সেন্টারগুলোতে ইচ্ছেমত ফি আদায় করে, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় এসব স্বাস্থ্যসেবীরা।

বাংলাদেশ এমন হাজার কিসিমের নানান চালিয়েদের খপ্পরে এখন এক জগাখিচুরিতে পরিনত হয়েছে। রাষ্ট্রের কোনো প্রতিষ্ঠানের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বলতে কিচ্ছু নাই। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইচ্ছেমত টিউশন ফি নেয়। কী কী সব আবর্জনা মিশিয়ে একদল নাকি কনডেন্সমিল্ক বানায়! লাশের চা বিক্রি হয় খাবার চা হিসাবে। মরা মুরগি কিনে হোটেলে চলে রমরমা ব্যবসা। লাল-শাকে রঙ মিশিয়ে লাল বানিয়ে বিক্রি হচ্ছে দেদারসে। মশলায় ভেজাল, দুধে ভেজাল, খাবারে ভেজাল, রোগীর চিকিৎসায় ভেজাল। মরা মানুষকে আইসিইউতে রেখে দিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করে ভিআইপি হাসপাতাল। হাসপাতালে ডাক্তাররা প্রেসক্রিপশান লেখেন ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটেটিভদের শিখিয়ে দেওয়া ঔষুধের নামে। ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের শিখিয়ে দেওয়া পারসেন্টেজে চলে ডাক্তারি টেস্ট। মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট কেনাবেচা চলে প্রকাশ্য দিবালোকে। মুখ চিনে দেওয়া হয় জাতীয় পুরস্কার। আর আমাদের ভিআইপি সিআইপিরা বিদেশে স্বর্গের সেকেন্ড হোম গড়ে তোলে আরামসে। পৃথিবীর আর কোথায় আছে এমন যা ইচ্ছা তাই'র দেশ!!
তাই মাঝে মাঝে মনে বড় প্রশ্ন জাগে সত্যি সত্যি এই দেশটা আসলে কে বা কারা চালায়? এক দেশে এত অনিয়ম পৃথিবীর আর কোথায় আছে রে ভাই? যাই, মাথা গরম না করে এবার চুপ মেরে যাই!

.......................................
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৫৭

মহা সমন্বয় বলেছেন: যখন মোড়ের দোকানদার সিগারেটের দাম ইচ্ছামত বাড়িয়ে নেয়, তখন মনে হয় এই রাষ্ট্র চালায় বুঝি মোড়ের টোঙ দোকানদার।[/sb

হা হা ভাল বলেছেন।

তাই মাঝে মাঝে মনে বড় প্রশ্ন জাগে সত্যি সত্যি এই দেশটা আসলে কে বা কারা চালায়? এক দেশে এত অনিয়ম পৃথিবীর আর কোথায় আছে রে ভাই? যাই, মাথা গরম না করে এবার চুপ মেরে যাই!

সেটাই বরং ভাল।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৪১

মোঃ ইমরান কবির রুপম বলেছেন: সবেই জগাখিচুরি

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৩:৫০

ঝাপসা বালক বলেছেন: ভোটহীন অবৈধ সরকার ।

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:৫৩

প্রামানিক বলেছেন: সুন্দর কথা বলেছেন। ধন্যবাদ

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:০১

রাশেদ রাহাত বলেছেন: ভাইয়া ভালো বলেছেন। সিগারেটের দাম এখন তুঙ্গে।

আরেকটা হেল্প করুন।
আমি প্রায় ১মাস আগে ব্লগ এ একটা ফানি পোস্ট করেছিলাম। তার পরের দিন আমাকে নতুন পোস্ট করা থেকে বিরত রাখা হল। মেইলে বলা ছিলো যে সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড করা হচ্ছে। কিন্তু দুঃখ জনক হল এক মাস পার হয়ে গেলেও আমাকে্ এখনো নতুন পোস্ট করার অনুমতি দিলো না। ব্লগকতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া পাইনি। খুব খারাপ লাগঝছ ব্যাপাট টা।
আপনার কি এই ব্যাপারে কোন জান-কারি আছে..? তাহলে প্লিজ হেল্প করুন।
আমাদের মত নতুনদের প্রতি শুরুতেই এই স্টিম রোলার চালনা অনুচিৎ বলে আমি মনে করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.