নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
ব্যাঙ্গালোরে আজকের ম্যাচ নিশ্চয়ই আইসিসি দেখেছে। অস্ট্রেলিয়ার মত মোড়লকে যেভাবে ম্যাচ জিততে নাকানি চুবানি খেতে হয়েছে, সেটা আইসিসি'র মত গোটা বিশ্বও দেখেছে। আজ তাসকিন ও সানির পর বাংলাদেশ আরেকটি দুর্ভাগ্যকে বরণ করেই খেলতে নেমেছিল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ওপেনার তামিম ইকবাল অসুস্থ। পেটের পীড়ার সঙ্গে জ্বর। এই তিন দুর্ভাগ্যকে সাথে নিয়ে একাদশ গড়তে হয়েছিল টাইগার্সদের। তারমধ্যে একটা সুখবর হলো খেলায় ফিরেছেন মুস্তাফিজ। তামিমের জায়গায় আজ ওপেন করতে হয়েছে মিথুনকে। আর একাদশে নিতে হয়েছে শুভাগত হোমসকে। এছাড়া তাসকিনের জায়গায় মুস্তাফিজ আর সানির জায়গায় খেলেছে সাকলাইন সজীব। টি২০ আন্তর্জাতিক খেলায় আজকেই ডেব্যু হয়েছে সজীবের। কিন্তু সজীবের ডেব্যুটা ক্যাপ্টেন মাশরাফির মত আমাদেরও মনে ভরেনি। ৩.৩ ওভার বল করে ৪০ রান দিয়ে কোনো উইকেটের দেখা পাননি সজীব। ক্যাপ্টেন মাশরাফির অবশ্য চাওয়া ছিল অন্তত সজীব একটা উইকেট পাক। তাই বাজিটা ধরেছিলেন সজীবের উপরেই। কিন্তু সেটা কাজে লাগেনি। উল্টো সেই ওভারেই ম্যাচ নিজেদের করে নিল অস্ট্রেলিয়া।
১৬তম ওভারে মাশরাফি কেন যে সজীবকে বল করতে দিলেন এটা আমার মাথায় আসলো না। ৩০ বলে অস্ট্রেলিয়ার তখন দরকার ৩৬ রান। আগের দুটি ওভার আল-আমিন ও শাকিব টাইট বল করলেন। এই সময় কেন মাশরাফি আবার সজীবের হাতে বল তুলে দিলেন! টি২০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হওয়া সজীব প্রথম দুটি ওভারে যেখানে ২১ রান দিয়েছে। যেখানে আল-আমিনের ওভার হাতে ছিল। মাশরাফি'র নিজের ৩ ওভার হাতে ছিল। সেখানে আল-আমিন বা মাশরাফি নিজের বল করাটাই ছিল যৌক্তিক। মাশরাফি যে বাজিটা ধরেছিলেন, সেটা শুভাগত হোমসের উপর ধরলেই ভালো হতো। কারণ শুভাগত আগে দুই ওভার বল করে মাত্র ১৩ রান দিয়েছিল। আসলে ১৬তম ওভারে সজীব যখন ১৪টি রান দিল, তখন ম্যাচটি আমাদের থেকে অস্ট্রেলিয়ার দিকেই টার্ন করলো। তখন ২৪ বলে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন আর মাত্র ২২ রান। তারপর সেই নাটকীয়তা। কিন্তু বলের চেয়ে রান তো কম। নাটকীয়তায় আর কত দূর গড়াবে এই ম্যাচ।
পরের ওভারে মুস্তাফিজ মিচেল মার্শের উইকেট পেলেও অস্ট্রেলিয়া কিন্তু ততক্ষণে ১৩টি রান নিয়ে ম্যাচ নিজেদের করে ছেড়েছে। তখন ১৮ বলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার আর মাত্র ৯ রান। হাতে ছিল ৫টি উইকেট। এমন সীমিত ওভারের ম্যাচে তখন তো অস্ট্রেলিয়ার মত বড় দলের কাছে এটা কোনো ব্যাপার না। ১৮তম ওভারে শাকিব প্রথম ও শেষ বলে দুটি উইকেট নিলেন। কিন্তু এই ঘটনাটি যদি আজকে ম্যাচের দশ ওভারের আগে ঘটতো, তাহলে ম্যাচটি আজ বাংলাদেশের হতে পারতো। শেষ ১২ বলে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৫ রান, হাতে ছিল ৭ উইকেট। ৩ বল খেলেই তারা লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। দুর্ভাগ্য টাইগার্সদের। ৯ বল হাতে রেখেই জয়ের জন্য ১৫৭ রান তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া। জয় পায় ৩ উইকেটের।
আজ অস্ট্রেলিয়া টস জিতে টাইগার্সদের প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায়। তামিমের জায়গায় ওপেনিংয়ে নেমে মিথুন বেশ ভালোই সামাল দিয়েছে। কিন্তু আজকেও সৌম্য ধারাবাহিকভাবেই ব্যর্থ। আমি বলব কোচ হাথুরুসিংহের উচিত সৌম্যকে একটু আলঅদাভাবে সময় দেওয়া উচিত। সৌম্য'র কনসেনট্রেশানে কোথাও একটা গলদ ঢুকে আছে। সেটা ফিরিয়ে আনতে পারলেই সে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারবে। আর সেটা ২৩ মার্চ ব্যাঙ্গালোরের চিন্নাস্বামীর এই মাঠে ভারতের বিপক্ষে নামার আগেই করতে হবে। টাইগার্সদের জন্য এই মুহূর্তে আরেকটা সুখবর হলো আজ ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন টেস্ট ক্যাপ্টেন মুশফিক।
২৩ মার্চ ভারতের বিপক্ষে মুস্তাফিজ আমাদের প্রধান অস্ত্র। মুস্তাফিজ কার্টারে ভারত বধ সম্ভব। তামিম সুস্থ হয়ে একাদশে ফিরলে হয়তো শুভাগত বা সজীবকে আবার একাদশের বাইরে যেতে হবে। বোলিংয়ে আজ শাকিব যে ফর্ম দেখিয়েছেন ৪ ওভারে ২৭ রানে ৩ উইকেট। এই ফর্মটি ভারতের বিপক্ষেও সচল থাকলে টাইগার্সদের সামনে আর কোনো সমস্যা দেখি না। পরপর দুটি ম্যাচে পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে হেরে টি২০ বিশ্বকাপ থেকে অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গেছে টাইগার্স বাহিনী। কিন্তু আমাদের তাসকিন ও সানিকে যারা এই টুর্নামেন্টের মাঝখানে খড়গ হয়ে আটকে দিলেন, সেই ভারতকে আটকে দেবার সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করা যাবে না। ২৩ মার্চ ভারতকে হারিয়ে দিলেই এই মোড়লেরও টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়াটা অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে। কারণ ভারতের শেষ ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়ার সাথে মোহালীতে ২৭ মার্চ। তখন মূলত দুই মোড়লের লড়াই। ভারতকে হারাতে পারলে আইসিসিকেও এক ঘা দেখানো হবে। সেটি মাথায় নিয়েই এখন টাইগার্সদের আগাতে হবে।
তাসকিন ও সানিকে হঠাৎ ইস্যু করে এবারের টুর্নামেন্টে আইসিসি একটি কালো অধ্যায় রচনা করলো। নইলে ফুরফুরে মেজাজে থাকা টাইগার্সদের এবার আটকানো অনেক কঠিন হতো। বিশ্বের বিখ্যাত ক্রিকেটারগণ যেমন অর্জুনা রানাতুঙ্গা, ইয়ান চ্যাপেল, ওয়াশিম আক্রামরা বিশ্বকাপের মাঝখানে এভাবে তাসকিন ও সানিকে টুর্নামেন্ট থেকে বের করে দেয়ায় খোদ আইসিসি'র সমালোচনা করেছেন। ক্রিকেট পাগল কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনও এটাকে ক্রিকেট শিল্পের সঙ্গে বেমানান বলে আখ্যায়িত করেছেন। কেবল ভারতের কোনো বাঘা বাঘা প্রাক্তন ক্রিকেটারগণ তাসকিন ও সানি ইস্যুতে মুখে একদম কুলুপ এটেছেন। এটা থেকেই প্রমাণিত যে চোরের মনে পুলিশ পুলিশ। ঘটনা যে ভারত নিজেদের স্বার্থেই করেছে, আর ভারতের প্রেসক্রিপশনই আইসিসি বাস্তবায়ন করেছে, এই সত্যই এখন সুস্পষ্টভাবেই ফুটে উঠেছে। যে কারণে ২৩ মার্চ ভারতের বিপক্ষে টাইগার্সদের একটা জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। সেই কাঙ্খিত জয়টি হবে তাসকিন ও সানির জন্য টাইগার্সদের সবচেয়ে সফল প্রতিবাদ।
আমরা টাইগার্সদের সমর্থনে এবং তাসকিন ও সানি ইস্যুতে যত কথাই বলি না কেন, যত মানববন্ধন বা প্রতিবাদ করি না কেন, বিসিবিকে এই ইস্যুতে যথাযথ আইনি লড়াই করেই আগাতে হবে। আর সেই আইনি লড়াই করতে হবে আইসিসি'র প্রচলিত নিয়ম কানুনকে মেনে নিয়েই। যা হয়তো নিস্পত্তি হতে একমাস বা আরো বেশি সময় লাগবে। ততদিনে এই টুর্নামেন্ট বাসি হয়ে যাবে। তাই ভারতকে ২৩ মার্চ হারিয়ে টাইগার্স বাহিনী'র এই শোককে শক্তিতে পরিনত করতে হবে। এবারের টি২০ বিশ্বকাপে টিম টাইগার্সদের কাছে আমার এখন একটি জিনিসই চাওয়ার আছে, তা হলো ২৩ মার্চ ভারতকে হারানো। আর ২৬ মার্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কলকাতার ইডেন গার্ডেনে টাইগার্সদের শেষ ম্যাচ। সেটি নিয়ে এখনই কোনো কথা বলতে চাই না। চাই শুধু একটি জয় আর সেটি ২৩ মার্চ বেঙ্গালোরে ভারতের বিপক্ষেই। জয়তু টিম টাইগার্স। জয়তু ক্রিকেট।
........................................................
২২ মার্চ ২০১৬
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ ভোর ৬:১৪
সাগর মাঝি বলেছেন: ভাগ্যের সাথে মগজও খাটানো খুব জরুরি।
৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ সকাল ১০:৩২
বিজন রয় বলেছেন: যুদ্ধ চলবে।
৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩
মোঃ সাইফুল্লাহ শামীম বলেছেন: আমাকে সবচেয়ে অবাক করেছে একাদশে নাসিরের ঠাঁই না পাওয়া।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৪
ডা: শরীফুল ইসলাম বলেছেন: সুনিল গাভাস্কার শেষমেষ শুধু মাসরাফির উপরই ক্ষোভ ঝাঁড়লেন। কেন মাসরাফি ১ ওভার বল করল? তার ক্যাপ্টেন্সি আহামরি কিছু ছিল না--এইসব।
উনি কেন এত ক্ষুব্ধ হলেন বুঝলাম না।