নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
ওবামা প্রশাসনের দীর্ঘ আট বছরের শাসনামলে কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করেননি। আগামী নভেম্বর মাসের ৮ তারিখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এখন কেবল রুটিন ওয়ার্ক করছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারির ২০ তারিখে তিনি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। যতদূর জানা যায় আগামী ৩০শে আগস্ট ‘ইউএস-ইন্ডিয়া স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড কমার্শিয়াল ডায়ালগ’-এ মার্কিন প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন জন কেরি। মানে ভারতের সঙ্গে জন কেরির সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়েই আলোচনা হবে। দিল্লী যাবার আগে জন কেরি ২৯ আগস্ট ঢাকা হয়ে যাবার আগ্রহ দেখিয়েছেন!
কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো জানে না বা প্রস্তুত নয় মিস্টার কেরির সঙ্গে তারা কী নিয়ে আলোচনা করবেন! এখন পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডার কথা বলতে পারেনি। অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের অনেক অমিমাংসিত বিষয় রয়েছে। আমাদের তৈরি পোষাক খাতের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিয়ে একটি জটিলতা আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কমুক্ত পণ্য রপ্তানি-সুবিধা চুক্তি, অন্যান্য অশুল্ক বাধা দূর করার মত অনেক প্রসঙ্গ আছে। বঙ্গবন্ধু'র খুনীদের যারা এখনো যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন, তাদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করার বিষয়টি দীর্ঘদিন ঝুলে আছে। অর্থ্যাৎ দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তির কার্যকারিতার বিষয়টি আছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দূর করার উপায় নিয়েও আলোচনা করা যেতে পারে।
কিন্তু আমাদের যেটা মনে রাখতে হবে মিস্টার জন কেরি এর আগে একাত্তরের মানবতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে বেশ কয়েকবার যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি ঠেকাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেমের আপিল শুনানি আগামী রোববার শুরু হচ্ছে। এমন সময়ে মিস্টার কেরি মীর কাসেমকে বাঁচাতে কয়েক ঘণ্টার জন্য বাংলাদেশ সফর করছেন কিনা, এটা খুব গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। শোনা যায় মীর কাসেম দেশের বাইরে মিলিয়ন ডলার খরচ করে লবিস্ট নিয়োগ করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে কোনো সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নিয়ে জন কেরির কোনো বিশেষ উদ্যোগের খবর বিগত চার বছরে ছিল না। হঠাৎ করেই দিল্লী যাবার আগে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকা সফরকে তাই সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি প্রতিরোধ বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত আগ্রহের আড়ালে বরং তাদের নেতৃত্বেই সারাবিশ্বে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি বিস্তারের ঘটনা ঘটছে। মিস্টার কেরির ঢাকা সফরের আসল উদ্দেশ্য যদি হয় সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা, তাহলে বুঝতে হবে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক ইস্যুতে এখনো এক বোকার স্বর্গে বসবাস করছে।
সিরিয়ার পর মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিস্তারের নতুন ক্ষেত্র হতে যাচ্ছে তুরস্ক। এতোদিন তুরস্ক মার্কিন নেতৃ্ত্বাধীন ন্যাটোর সদস্য হিসেবে তাদের সহায়ক বন্ধু ছিল। তুরস্কে এরদোয়ান সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থ সামরিক ক্যু'র পরের তুরস্ক এখন মার্কিন জুজু ছেড়ে রাশিয়ার দিকে ঝুঁকেছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গি বিস্তারের জন্য মার্কিন প্রশাসনের সবসময় পছন্দের তালিকায় মুসলিম দেশগুলো। তাই বাংলাদেশকে খুব হিসাব কষেই মিস্টার কেরির সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে। হিসাবে চুল পরিমাণ ভুলের জন্য কিন্তু বিশাল অংকের মাসুল দেওয়া লাগতে পারে বাংলাদেশের।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশে স্বাগতম জানানোর আগে নিজেদের এজেন্ডা চূড়ান্ত করার পাশাপাশি কোনো ধরনের চাপিয়ে দেওয়া কৌশলের কাছে নতি স্বীকার না করার ব্যাপারে দৃঢ় থাকাই হতে হবে বাংলাদেশের কৌশল। মনে রাখতে হবে আমাদের গভীর সমুদ্রবন্দর এবং তেল ও গ্যাস সেক্টরের উপর মার্কিনীদের দীর্ঘদিনের নজরদারি ও আগ্রহ রয়েছে। ভারত ও চীনকে বাগে আনতে বঙ্গোপসাগরে একটা স্থায়ী মার্কিন নৌঘাঁটি গড়ে তোলার স্বপ্ন তাদের দীর্ঘদিনের। যে কোনো ধরনের টোপ বা কৌশলের বিনিময়ে ওরা এগুলো বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাতে পারে। তাই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কয়েক ঘণ্টার বাংলাদেশ সফর নিয়ে অতিরিক্ত উৎসাহ বুমেরাং ফল দিতে পারে, এটা আমাদের যেন ঠিক সময়ে মনে থাকে।
আলোচনায় কোনো ছাড় না দিয়ে বরং বাংলাদেশের অপরচুনিটি কী হবে তা নিয়েই জন কেরির সঙ্গে কূটনৈতিক যুদ্ধ করতে হবে। খামাখা জন কেরিকে পরম বন্ধু ভাবার কোনো সুযোগ নাই। ১৯৭৪ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হেনরি কিসিঞ্জারের বাংলাদেশ সফরকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটু সময় নিয়ে যেন ভালোভাবে খতিয়ে দেখে, সেই অনুরোধ রইলো।
...............................
২৪ আগস্ট ২০১৬
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৫:০৭
বাংলার জামিনদার বলেছেন: তাদের টার্গেট কাশুরে মুক্ত করা আর একটা ঘাটি করার যায়গা করা। আর কিছুনা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:২১
রানার ব্লগ বলেছেন: এজেন্ডা দুই রকম হবেঃ
১। সরকারি দলের এজেন্ডাঃ যেমনে হোক ক্ষমতায় থাকতে দিন থাকতে চাই।
২। বি এন পিঃ ভাই গো আল্লার দুহাই থুক্কু ঈশ্বরের দোহাই আমারে ক্ষমতায় নেন, মধু না খাইতে খাইতে চেহারা নষ্ট হয়ে গেলো গো। বিউটিশিয়ানের টাকা বাকি পরছে, মান সম্মান আর থাকল না।