নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার কোল্ড-ওয়ার যুগে পাকিস্তান ও ভারতে নির্মিত দুইটি বাঁধ শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য বিপদ ডেকে এনেছে। বাঁধ দুটি হলো কাপ্তাই বাঁধ ও ফারাক্কা বাঁধ। মজার ব্যাপার হলো, কাপ্তাই বাঁধের জন্য পাকিস্তানকে অর্থ সাহায্য করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর ফারাক্কা বাঁধ ভারতের হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি তৈরি করলেও এর পেছনে রাশিয়ার সরাসরি সহযোগিতা ছিল।
কাপ্তাই বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় শুরু হয় ১৯৫৭ সালে আর নির্মাণ শেষ হয় ১৯৬২ সালে। অন্যদিকে ফারাক্কা বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালে আর শেষ হয় ১৯৭৫ সালে। কাপ্তাই বাঁধের ফলে তখন চট্টগ্রামের কাপ্তাই এলাকায় প্রায় চল্লিশ হাজার চাকমা সম্প্রদায়ের মানুষ চাষের জমি, বাড়িঘর হারিয়ে প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় নেয়। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি বাহিনী প্রতিষ্ঠা এবং ওই অঞ্চলে সৃষ্ট সংঘর্ষের প্রধান কারণ এই কাপ্তাই বাঁধ। যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান ২৩০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে সৃষ্টি করেছিল। কাপ্তাই বাঁধ নির্মাণের ফলে পার্বত্য এলাকায় জীববৈচিত্র্য ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে। বন্যপ্রাণী এবং তাদের বসবাস উপযোগী আবাসও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
অন্যদিকে রাশিয়ার সাহায্য নিয়ে গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে ভারত কলকাতা বন্দরকে পলি জমা থেকে রক্ষা করা এবং ফারাক্কা সুপার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল সরবরাহ করার অযুহাত দেখায়। বাস্তবে ফারাক্কা বাঁধ গোটা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পদ্মা নদী নির্ভর কৃষি চাষাবাদের উপর সুদূরপ্রসারী নেগেটিভ প্রভাব ফেলেছে। যা বাংলাদেশকে ধীরে ধীরে মরুভূমি বানাতে চলেছে। পদ্মা নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় প্রতি বছর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বড় ধরনের বন্যা হচ্ছে।
কাপ্তাই বাঁধ ও ফারাক্কা বাঁধ কোল্ড-ওয়ার যুগের মার্কিন-রাশিয়ার আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বের চরম বহিপ্রকাশ, যা এই দুই দেশের বন্ধু রাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারত তাদের স্বার্থরক্ষায় করতে আগ্রহী হয়েছিল। কিন্তু এই বাঁধ দুটির ফলে স্থায়ী ক্ষত সহ্য করতে হয়েছে বা এখনো হচ্ছে বাংলাদেশকে। মজার ব্যাপার হলো, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কাপ্তাই বাঁধের সমস্যা নিয়ে যতটা নিরব, ফারাক্কা বাঁধের সমস্যা নিয়ে ততটাই সরব। অথচ আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিশ্লেষণে একটু যদি খেয়াল করা যায়, তাহলে অন্তত বলা যায় যে, পাকিস্তান কাপ্তাই বাঁধ না দিলে ভারত হয়তো ফারাক্কা বাঁধ দিতো না! বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরেও এই বাঁধ দুটি নিয়ে সরকারিভাবেই আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি থাকায় দেশের সাধারণ মানুষ আসল সমস্যাটি আজ পর্যন্ত ধরতে পারেনি। অথচ প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে নদীর উপর যে কোনো ধরনের বাঁধ দেওয়া একটা বড় ধরনের অপরাধ হলেও রাষ্ট্রযন্ত্র সেই অপরাধের জন্য দায়ী। আর তা থেকে সৃষ্ট নেগেটিভ বিষয়গুলো পরবর্তী সময়ের সকল অনাচারের অনুসঙ্গ।
..................................
৬ অক্টোবর ২০১৬
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৪:৪৩
অঞ্জন ঝনঝন বলেছেন: আরে আমি তো কাপ্তাই বাঁধের ভয়াবহতা নিয়ে এ সেদিব শুনলাম। অথচ ফারাক্কা নিয়া ছোট থেকেই শুনে আসছি। আচ্ছা একটা প্রশ্ন কাপ্তাই থেকে তো বাংলাদেশ বিদ্যুৎ পায়, ফারাক্কার ফলে পায় কি?
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৮
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: মাসুষ অজ্ঞতার কারনে প্রকৃতি নিয়ে খেলতে চায়।
কিন্তু সময়মত ঠিকই প্রকৃতি তার খেল দেখায়।
৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:৪৮
বিলিয়ার রহমান বলেছেন: পোস্টে লাইক!!
৫| ০৯ ই অক্টোবর, ২০১৬ ভোর ৫:১৬
নোমান প্রধান বলেছেন: বিনা দোষে এখন দন্ড কাটে বাংলাদেশ
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:৪০
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
অথচ প্রকৃতির বিরুদ্ধাচারণ করে নদীর উপর যে কোনো ধরনের বাঁধ দেওয়া একটা বড় ধরনের অপরাধ হলেও রাষ্ট্রযন্ত্র সেই অপরাধের জন্য দায়ী।
প্রকৃতিকে মানুষ বৈরি করে তুলছে
দেশ ও জাতির নামে এই ধ্বংস লীলার অবসান চাই।