নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিল্পকলা একাডেমি\'র চলচ্চিত্র উৎসব!!!

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৮

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ২ অক্টোবর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত একযোগে ৬৪ জেলায় সাত দিনের চলচ্চিত্র উৎসব করছে। উদ্যোগটি চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার, এমনকি সকল স্তরের দর্শকদের জন্য নিশ্চয়ই একটা আনন্দের খবর। এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে কেবল বাংলাদেশে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র দেখানো হচ্ছে। উৎসবে মোট ৮৯টি চলচ্চিত্র দেখানো হবে। যার মধ্যে ৫০টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ৩৯টি প্রামাণ্য চলচ্চিত্র।

উৎসবের শুরুর দিন শিল্পকলায় গিয়েছিলাম। বন্ধু আমিনুর রহমান মুকুলের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'অবরোধ' প্রথম দিন উৎসবে দেখানো হয়েছে। আমরা পাঁচ বন্ধু (রিয়াজ, নাহিদ, বিপ্লব, হুমায়ুন আর আমি) শিল্পকলায় যাবার পর একটা উটকো ঝামেলায় আমাদের আর ছবি দেখা হয়নি। 'অবরোধ' অবশ্য আমি আগেও দেখেছি। জহির রায়হায়নের 'স্টপ জেনোসাইড' ও তারেক মাসুদের 'আদম সুরত' আমার কয়েকবার দেখা। কিন্তু মোরশেদুল ইসলামের 'আগামী', রহমান লেনিনের 'মন ফড়িং' আর ইয়াসমিন কবিরের 'পরবাসী মন আমার' দেখা মিস হলো সেই উটকো ঝামেলায়।

মাঝখানে গতকাল ৫ অক্টোবর আবার শিল্পকলায় গিয়েছিলাম ছবি দেখতে। দেখলাম বন্ধু টোকন ঠাকুরের 'রাজপুত্তুর', ছোটভাই মামুন শ্রাবণের 'মাটির পাখি', খন্দকার সুমনের 'পৌণঃপুনিক' ও অদ্রি হৃদয়েশের 'আপসাইড ডাউন'। এই চারটি ছবি দেখার পর অবশ্য আমাকে সময় অভাবে চলে আসতে হয়েছিল। 'রাজপুত্তুর' আর 'মাটির পাখি'র নির্মাণপর্বে আমি কিছুটা যুক্ত ছিলাম। হাউজফুল দর্শকদের সঙ্গে ছবি দুটি দেখতে পারার আনন্দ অন্যরকম। টোকন ঠাকুর যেটা মিস করলেন বলতেই পারি!

ছবি'র আলোচনায় যাবো না। কিন্তু শিল্পকলা একাডেমির অব্যবস্থাপনা নিয়ে আমার কিছু ক্ষোভের কথা বলব। উৎসবের সিডিউল অনুযায়ী, ছবি দেখানো শুরু হওয়ার কথা বিকাল ৪টায়। কিন্তু গিয়ে দেখি সেখানে লাকি ভাই'র (শিল্পকলা'র ডিজি লিয়াকত আলী লাকি) নেতৃত্বে 'ইয়ুথ ভয়েস' নামে একটা টকশো'র শ্যুটিং হচ্ছে। কিন্তু লাকি ভাই তো জানতেন যে ৪টায় ওই হলে (চিত্রশালার অডিটোরিয়াম) ছবি দেখানো হবে। ছবি দেখার জন্য সেখানে মানুষ যাবে। সবার নিজস্ব সিডিউল থাকে। আমারও ছিল। কিন্তু সেখানে ওই টকশো রেকর্ডের কারণে শিল্পকলা একাডেমি ছবি দেখানো শুরু করলো প্রায় দুই ঘণ্টা লেটে! মানুষকে এরা কেন এত ভোদাই মনে করে যে, যখন দেখাবো তখন দেখবা, এইটা নিয়ে আবার কথা কী?

শেষপর্যন্ত এই সময় বিপর্যয়ের কারণে আমি বাকি ১১টি ছবি দেখা থেকে বঞ্চিত হলাম। কারণ আমার অন্য সিডিউল ছিল। আমাকে চলে আসতে হয়েছিল। মাঝখানে ওই দুই ঘণ্টা (চারটা থেকে ছয়টা) শিল্পকলা একাডেমি খামাখা নষ্ট করে দেওয়ায়, আমার মত নিশ্চয়ই আরো অনেকে হয়তো দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে ছবি না দেখেই বাসায় বা অন্য কাজে চলে গেছেন।

শিল্পকলা একাডেমি একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান একটি পূর্ব নির্ধারিত অনুষ্ঠান কী করে এভাবে অবজ্ঞা করে সেখানে টকশো'র রেকর্ড করতে পারে? নাকি লাকি ভাই ওই টকশো'তে ছিলেন বলে কী সেটি জায়েজ হয়ে যায়! লাকি ভাই নিশ্চয়ই মানুষের সময়ের জ্ঞান বোঝেন। নিজে একজন সময় সচেতন মানুষ। আধুনিক চিন্তাভাবনা করেন। শিল্পকলায় লাকি ভাই যোগ দেবার পর, এটার চেহারা আমুল বদলে গেছে। আগের চেয়ে এটি অনেকটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কিন্তু তাই বলে এভাবে সরকারি স্টাইলে সেদিন চলাটা আমার ঠিক পছন্দ হয়নি। লাকি ভাই'র সঙ্গে দেখা হলেও আমি এই ক্ষোভের কথা বলতাম।

এমনিতে শিল্পকলা একাডেমি চলচ্চিত্রের উপর বরাবর অনাগ্রহ দেখিয়েছে। বন্ধু বেলায়াত হোসেন মামুনের একক চেষ্টায় শিল্পকলা চলচ্চিত্র দেখানোর যে উদ্যোগটি কয়েক বছর ধরে শুরু করেছে, এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের একটা খবর। শুনলাম, শিল্পকলার কাছে এই ছবিগুলো ছিল না। হয়তো মামুন এগুলো সংগ্রহ করতে অনেক পরিশ্রম করেছে। সেজন্য মামুনকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ। মামুন নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। পাগলামিটা বেশ ভালো! পাশাপাশি আরেকটি খবর শুনেছি, জেলা শিল্পকলা একাডেমিগুলোতে ছবিগুলো একই সময় দেখাচ্ছে। এই প্রথম বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় একই সময়ে কোনো চলচ্চিত্র উৎসব হচ্ছে। কিন্তু সেখানে অনেক হলেই সাউন্ড নাই। কোথাও কোথাও টেকনিসিয়ান নাই। ছবি দেখায় অনেক জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে নানান কিসিমের বিপত্তি হচ্ছে। কথা হলো, এত বড় একটা উৎসবে শিল্পকলা একাডেমি কেন এই তাচ্ছিল্য দেখাচ্ছে! যেখানে চলচ্চিত্র উৎসবের খুব সুন্দর এই উদ্যোগ নেয়ার কারণে সবার কাছ থেকে ধন্যবাদ পাওয়ার কথা।

আমি লাকি ভাইকে অনুরোধ করব, প্লিজ, আপনার দক্ষ ব্যবস্থাপনায় শিল্পকলা একাডেমি যে নতুন করে আবার প্রাণ ফিরে পেয়েছে, এমন ছোটখাটো ঘটনায় সেই অর্জনটুকুকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। আমাদের যাবার মত জায়গা কিন্তু দেশে খুব কম। সংস্কৃতি অঙ্গনের দু'একটা জায়গায় আমাদের একটু যা উকিঝুকি এখনো অবশিষ্ট আছে, সেই জায়গাগুলোতে যখন নির্ভর করা যায় আপনার মত এমন একজন দক্ষ ব্যক্তি রয়েছেন, সেখানে আমাদের প্রত্যাশা কিন্তু একটু বেশিই থাকে।

..........................
৬ অক্টোবর ২০১৬

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.