নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

বাংলাদেশ আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা...

রেজা ঘটক

ছোটগল্প লিখি। গান শুনি। মুভি দেখি। ঘুরে বেড়াই। আর সময় পেলে সিলেকটিভ বই পড়ি।

রেজা ঘটক › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'হরিবোল\' বিহাইন্ড দ্য স্টোরি- ৫

১১ ই জুলাই, ২০১৯ সকাল ৭:৪১

সিনেমা একটা যুদ্ধ। পরিচালককে ওয়ার ফিল্ডে থেকে এই যুদ্ধে নেতৃত্ব দিতে হয়। প্রতিটি মুহূর্তে এই যুদ্ধে স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী নানান কিসিমের চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়। কথা ছিল ঠিক চারটায় আমরা ক্যামেরা ওপেন করবো। সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুত। কিন্তু সাইকেল টিমের সবাই তখনো এসে পৌঁছে নাই। আমরা ক্যামেরা পসিশন ঠিক করতে করতে সাইকেল নিয়ে যারা আসতে পেরেছে, তাদের নিয়েই শুটিং শুরু করবো ঠিক করলাম।

এর আগে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। বাক্স থেকে মনিটর বের করে দেখা গেল- মনিটর ৪৫ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে দুই টুকরা হয়ে আছে। ক্যামেরা হাউজের সোহাগের চেহারা তখন বাংলা ঙ হয়ে আছে। মোস্তাফিজকে জিজ্ঞেস করলাম- ক্যামেরা হাউজ থেকে মনিটর কে চেক করে এনেছিল? মোস্তাফিজ বললো, ভাইয়া জয়ের চেক করে আনার কথা ছিল! জয়কে জিজ্ঞেস করলাম- তুমি কী হাউজ থেকে মনিটর চেক করে এনেছো? জয় বললো- মনিটর চেক করার সময় পাই নাই। সোহাগ বলেছিল, ও চেক করে আনবে!

সোহাগকে জিজ্ঞেস করলাম- তুমি কখন মনিটর চেক করেছো? জবাবে সোহাগ বুঝানোর চেষ্টা করলো- রাতেই মনিটর চেক করে বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়েছিল। আমি যা বোঝার বুঝে গেলাম। সোহাগকে একটা ধমক দিয়ে বললাম, তুমি তোমার হাউজে ফোন করো! মনিটর চেক করার দায়িত্ব তুমি পালন করেছো। বাক্সের মধ্যে ভালো মনিটর রেখেছো না ভাঙা মনিটর রেখেছো, তা তুমিই ভালো জানো। সোহাগ ক্যামেরা হাউজকে ফোন করে জানালো যে মনিটর দুই টুকরা! আমি সোহাগকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলাম।

ক্যামেরা হাউজ দাবি করতে শুরু করলো- তারা ভালো মনিটর বাক্সের ভেতর দিয়েছে। এখন মনিটর ভাঙা থাকলে সেই দায় আমাদের। মানে দাঁড়ালো পথে বাসের ঝাঁকিতে মনিটর ভেঙ্গে দুই টুকরা হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি আমি মানতে পারলাম না। ক্যামেরা হাউজকে সুস্পষ্টভাবেই জানিয়ে দিলাম, মনিটর বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়েছে আপনাদের লোক। বাসে সারাপথ মনিটর সংরক্ষণ করেছে আপনাদের লোক। বাক্সের মধ্যে মনিটর ভালো না ভাঙা সেই দায়ও আপনাদের লোকের। এই দায় আমরা নেবো না।

আমি মোস্তাফিজকে ডেকে বললাম, ডিরেক্টরের কাছে সিনেমার কোনো মিথ্যাই লুকানো ইমপসিবল! কারণ ডিারেক্টর আশ্চার্য ক্ষমতাবলে উপর থেকে মানসচোখে সবকিছু দেখতে পায়। ওরা হাউজ থেকে ভাঙ্গা মনিটর-ই বাক্সের মধ্যে ঢুকিয়েছে। আর সেই অসততার প্রমাণ আমার কাছে আছে। কারণ সকালে যখন আমরা সবাই সায়েদাবাদ নাস্তা করছিলাম, তখন সোহাগ কোনো একটা ব্যাপারে একটু টেন্স ছিল। ও নাস্তা করেনি। আসলে ও এই ভাঙ্গা মনিটরের দায় কীভাবে আমাদের ঘাড়ে চাপানো যায়, ক্যামেরা হাউজের সেই কৌশল নিয়ে নিজের সাথে যুদ্ধ করছিল। যে কারণে ও নাস্তা করার মত মানসিক অবস্থায় ছিল না। ওরা ভাঙ্গা মনিটর-ই বাক্সবন্দি করেছে। আর যদি ভালো মনিটর বাক্সবন্দি করেই থাকে, মনিটর সংরক্ষণের দায়িত্বে সোহাগ ছিল। এই দায় ওর! এই দায় আমরা নেবো না।

সোহাগকে বললাম, তুমি তোমার হাউজকে জানিয়ে দাও, মনিটর ভাঙা পেয়েছি। এর দায় আমরা নেবো না। কারণ আমাদের কেউ ভালো মনিটর দেখেনি। আমরা যখন দেখলাম তখন মনিটর দুই টুকরা। এই দুই টুকরা মনিটরের দায় আমাদের নয়। তোমাদের। কারণ সারাপথ এটি সংরক্ষণের দায়িত্বে তুমিই থেকেছো। এখন পর্যন্ত আমরা মনিটর ব্যবহার করিনি। যখন ব্যবহার শুরু করবো তখনই তুমি ভাঙ্গা মনিটর বের করেছো, এই দায় তোমাদের। আর আমি হান্ড্রেড পারসেন্ট বিশ্বাস করি, তোমরা ভাঙ্গা মনিটর বাক্সবন্দি করেছো। এসব ফাজলামি চলবে না। এখন আমি এই ভাঙ্গা মনিটরসহ তোমাকে ঢাকার টিকিট ধরিয়ে দেবো। তোমার হাউজকে বলে দাও, এসব ফাজলামি আমার সাথে চলবে না। মনিটরের দায় তোমাদের।

মোস্তাফিজকে বললাম- এখন কী করবা? মনিটর ছাড়া কী আমরা শুটিং শুরু করবো? মোস্তাফিজ আমতা আমতা করলো। জয়কে বললাম, তুমি বলো মনিটরের দায় কার? জয় বললো, এটা তো সোহাগ আর আবিরের বিষয়। কারণ আমরা এখনো মনিটর ব্যব্হার করিনি। ব্যাস, মনিটরের আলাপ শেষ। এখন আমাকে বলো, সোহাগকে কী ভাঙ্গা মনিটর দিয়ে ঢাকা পাঠিয়ে দেবো নাকি টিমে রাখবো? ও যদি আর কোনো ষড়যন্ত্র পাকায়? মোস্তাফিজকে বললাম, তুমি লেন্সগুলো চেক করো। লেন্সে যদি এরকম কোনো ঝামেলা থাকে, সেসব লেন্স আর ভাঙ্গা মনিটর দিয়ে সোহাগকে ঢাকা পাঠিয়ে দাও।

আমি টোটাল বিষয়টা মোস্তাফিজের উপর ছেড়ে দিয়ে সেলিমকে ডাকলাম। কী করি বলতো? সেলিম বললো, ভাই সান কিন্তু বেশিক্ষণ থাকবে না। আপনি যদি মনিটর ছাড়া শুটিং করতে চান, তাহলে এখনই আমরা লোকেশানে চলে যাই। মোস্তাফিজকে বললাম, তুমি বলো এখন কী করবো? মোস্তাফিজ বললো, ভাই সোহাগকে ঢাকায় আর না পাঠাই। মনিটরের ব্যাপারটা আমি ঢাকায় গিয়ে দেখতিছি। চলেন আমরা শুটিং শুরু করি। আর লেন্স চেক করেছি। লেন্সে কোনো ঝামেলা নাই।

আমি সোহাগ আর আবিরকে ডেকে বললাম, মনিটরের ব্যাপারে সব দায় তোমাদের। তোমাদের হাউজ ভাঙ্গা মনিটর পাঠিয়েছে। এই দায় আমরা নেবো না। এখন তোমরা হাউজে কথা বলে জানাও, তোমরা টিমের সাথে থাকবা নাকি ঢাকা চলে যাবা? ওরা ক্যামেরা হাউজের সাথে কথা বলে জানালো, ভাই মনিটরের ব্যাপারটা আপাতত অফ রাখেন। চলেন আমরা কাজ করি। জবাবে বললাম, তাহলে হাউজকে জানিয়ে দাও- মনিটরের ভাড়াও কাঁটা যাবে। কারণ আমরা মনিটরের কোনো সুবিধা নিচ্ছি না।

------------------চলবে-------------------
১১ জুলাই ২০১৯



মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:১২

রাজীব নুর বলেছেন: নানান বায়নাক্কা পহাতে হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.