![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়টা ২০০৩-২০০৪ এর দিকে।আমি তখন কৈশোর পেড়ুই নি।ডায়েরি ভরে আবর্জনার স্তুপ জমাই।ঢাকার পত্রিকাগুলোর শিশু পাতায় পাঠাই।দু একটা ছাপাও হয়।মাঝে মাঝে জেলা শহর গাইবান্ধায় যাই।শহিদ মিনারে কবিতা পড়ি।দুটো মানুষ আমার লেখায় ছুরি কাঁচি চালায়।একজন বুড়ো আর একজন অপেক্ষাকৃত তরুন সাহিত্যের অধ্যাপক।প্রথমজন উত্তরের সাহিত্যাঙ্গনের অভিভাবক সরোজ দা আর দ্বিতীয় জন মামুন মিজান।কবি,সাহিত্যিক ,গদ্যশিল্পি।জাহাঙ্গীর নগর থেকে পড়াশুনার পাঠ চুকিয়ে থিতু হয়েছিলেন গাইবান্ধার সংস্কৃতিক পরিমন্ডলে।এখানেই মামুন মিজান তার সমসাময়িক আর পাঁচজন লেখকের চেয়ে আলাদা হতে পেরেছিলেন। আত্ননিমগ্নতা,প্রকৃতি মনষ্কতার ছাপ তার লেখায় স্পষ্ট।দাঁড় কাক,বুনো হরিণ আর মানুষের জীবনকে তিনি আলাদা করতে পারেন নি,আলাদা করে দেখেন নি।একবার রেইল লাইন দিয়ে হাটতে হাটতে মামুন ভাই অরন্য আর গাংচিল হবার কথা বলেছিলেন।রবীন্দ্র নাথের অসাধারন ভক্ত মামুন ভাইয়ের চেষ্টাতেই গাইবান্ধায় শুরু হয় বর্ষাবরণ ও রবীন্দ্র জয়ন্তী।সাহিত্য ও সংস্কৃতিক পরিষদ গঠনের ইচ্ছেও ছিল তার।মামুন মিজানের লেখনীর ধরন ছিল একেবারে আলাদা।নিগৃহীত আর নিষ্পেষিত সমাজের মানুষগুলো বরাবরই প্রাধান্য পেয়েছে তার লেখায়।তার প্রথম উপন্যাস 'হাড় বণিক' আবহমান বাংলার দরিদ্র ভ্যানচালক,তার বজ্রাঘাতে মৃত্যু স্ত্রী আর অসহনীর সমাজ বাস্তবতার কথা উঠে এসেছে।তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে বাংলা একাডেমী থেকে।অসাধারন আবৃত্তি করতেন মামুন ভাই।এতো গেল সাহিত্যিক মামুনের কথা।ব্যক্তিগত জীবনে মামুন মিজান ছিলেন হাস্যজ্বল,নির্মোহ ও বিনয়ী।অনেক ছোটবেলা থেকেই ব্যাধি পায়ের স্বাভাবিক চলন কেড়ে নিয়েছিল।সমাজ সচেতন শুদ্ধতম এই মানুষটিকে বেশ কাছে থেকে দেখার ও মেশার সুযোগ হয়েছিল।তার অপত্য স্নেহ ভোলার দুঃসাহস আমার নেই।তার এই অকাল প্রয়াণ কিছুতেই কাম্য নয়।আমাদের ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় মামুন মিজানদের খুব বেশি প্রয়োজন।মামুন ভাই,খুব কি দরকার ছিল চলে যাবার?
Lik
©somewhere in net ltd.