নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাটির মানুষ

কাজী রিদয়

পেশা সাংবাদিকতা। মানুষকে সাহায্য করাটা নেশা। পছন্দ করিনা অসততা। স্বচ্ছতা নিয়ে পথচলা। সমাজের জন্য কিছু একটা করার চেষ্ঠা। সুখি সমৃদ্ধ একটি দেশের স্বপ্ন দেখা।

কাজী রিদয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতবর্ষ যেভাবে চলে যায় বৃটিশদের দখলে..১

০৭ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৮

ভারতবর্ষ জুড়ে বৃটেনের উপনিবেশ গড়ার পেছনের ইতিহাস সর্ম্পকে অনেকে জানেন না। সামান্য ঘটনা থেকে বিশাল ঐতিহাসিক ঘটনা সুত্রপাত। বিদেশীরা এ অঞ্চলের জন্য মুগ্ধ হয়ে বাণিজ্য করতে আসতেন। এ বাণিজ্যে ক্ষেত্র বিশেষে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করতো যা রীতিমতো যুদ্ধের মতোন। কেউ কাউকে এতটুকু ছাড় দিতেন না। ১৫৯৯ সালের কথা। মসলার বাজারকে কেন্দ্র করে বিদেশীদের সাথে এদেশের ব্যবসায়ীদের মতবিরোধ দেখা দেয়। এ অঞ্চলে তখন মসলার বাজার নিয়ন্ত্রন করতো olandas বণিকরা। এ আমলের কোন একটি সময় এক পাউন্ড গোল মরিচের দাম পাচ শিলিং বাড়িয়েঁ দেয়া হয়। এরই প্রতিবাদে সোচ্চার হতে থাকেন বৃটিশরা। কিন্ত দাম বাড়ানোর পক্ষটি কিছুতেই দাম কমাবেন না। ক্ষুদ্ধ বৃটিশরা তখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি কোম্পানি খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সময় ২৪ জন বৃটিশ বণিক ১৫৯৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর লন্ডনের লীডেনহল স্ট্রীটের একটা ভাংগাচোর বাড়িতে বৈঠকে মিলিত হনে। মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়,১২৫ জন শেয়ার হোল্ডার এবং ৭২ হাজার পাউন্ড শেয়ার ক্যাপটেল নিয়ে তারা কোম্পানি খুলবে। এ কোম্পানি একটিই লক্ষ্য থাকবে তা হলো লাভ আর লাভ। টাকায় টাকা আনা। সেই থেকে শুরু। অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু হয় ভারতবর্ষে। ১২৫ জন শেয়ার হোল্ডার ১৫৯৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাজসনদ পেলো। বৃটিশ সম্রাজ্ঞি প্রথম এলিজাবেথের সই করা ফরমান হাতে নিয়ে ১৫ বছরের জন্য তারা বাণিজ্যের অধিকার পেল। ফরমান পাবার ঠিক ৮ মাস পর ‌হেক্টর নামের একটি বাণিজ্য জাহাজে ২৫ টন পন্য নিয়ে ভারতের সুরাটে নোংগর করলো। এ দিন ছিল তাদের ভারতবর্ষে সরাসরি বাণিজ্যের প্রথম দিন। বৃটিশদের এ পদার্পন অন্যান্য অনেক দেশের মতোন ছিল সাদামাটা। তবে জাহাজের ক্যাপ্টেন উইলিয়ম হকিন্স এর মনোভাবটা তেমন সাদামাটা ছিল না। তার দুরদর্শি চিন্তা ছিল তার মনে। লোকটি ছিল অনেকটা দস্যুভাবাপন্ন।ভারতবর্ষ থেকে লুটের নেশা ছিল তার মনে। ফলে ভারতবর্ষের সুরাট বন্দরে নেমে তার নজর ছিল গ্রামের দিকে।এখানে রাজা-বাদশারা যুগের পর যুগ শাসন করেছে। এখনো করে যাচ্ছে। সুতারাং হীরা চুনি পান্নার অভাব নেই। হকিন্স এর নজর ছিল এসব পণ্যর উপর। গ্রামে গঞ্জে ঢুকে কবুতরের ডিমের মতোন হীরা, চুনি ,পান্না খুজতে হণ্য হয়ে ঘুরতে লাগলো হকিন্স। একই সাথে ভারতবর্ষের জমিনে মরিচ, আদা, দারুচিনি গাছের সমারোহ দেখে মুদ্ধ তিনি। তাছাড়া হকিন্স শুনেছেন, এ দেশের মস্ত বড় বড় হাতিদের অন্ডকোষ থেকে এক ধরনের রস বের হয়, যা একচুমুক পান করলে চিরযেৌবন লাভ করা যায়। হকিন্স বৃটেনে থাকতে এসব গল্প শুনে ভারতবর্ষের প্রতি মোহগ্রস্ত ছিলেন। কিন্ত সুরাট থেকে নেমে আগ্রার পথে প্রান্তরে ঘুরে তার কিছুটা নিদর্শন পেয়েছে সত্যি মন ভরে নি।
তার ইচ্ছে হলো সম্রাট জাহাংগিরের সাথে দেখা করার। পথে পথে সম্রাটের কাহিনী শুনে তার মনের ভেতরের ইচ্ছে দমন করতে পারছিলেন না। মোগল বাদশা কৃপার জন্য দরবারে ধর্না দিতে থাকে। প্রথম বার ভারতবর্ষে নেমে বাদশার দর্শন না নিয়ে তিনি যাবেন না। তিনি শুনেছেন বাণিজ্যের জন্য আসা বিদেশী বণিকদের বাদশা বেশ সমীহ করেন। দিন গুনতে গুনতে একদিন তার ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলো। মোগল বাদশা তার সাথে সাক্ষাত করতে রাজি হয়েছেন।
ইংল্যান্ডের রানির কথা সম্রাট জাহাংগির শুনেছেন। মোগল সম্রাটের কাছে তার উজির বৃটিশদের বাণিজ্য, জাহাজ আসা এবং কোম্পানির
কথা দরবারে তুলে ধরলেন। সম্রাট জাহাংগির শুনলেন, বৃটিশ বাণিজ্য জাহাজ সুরাটে নোংগর করেছে। এ জাহাজের নাবিক উইলিয়ম হকিন্স একজন সম্মানিত নাবিক। তাকে বৃটেনে সম্মানের চোখে দেখেন।তাই তার উপস্থিতি যাতে সাদামাটা না হয় সে নির্দেশ দিলেন। মোগল সম্রাটের আদেশ পেয়ে হকিন্সকে নিতে সম্রাট উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গকে পাঠালেন। হকিন্স নিজেকে সম্রাটের সামনে যাতে সুন্দর দেখায় তার সব প্রস্ততি সম্পন্ন করেছেন। তার সাথে রানি এলিজাবেথের শুভেচ্ছা পত্র। সাথে নিলেন বাণিজ্য করার ফরমান। মোগল সম্রাটের বিশাল সৈন্যবহর তাকে যেভাবে সম্বর্ধনা দিলো তা তিনি কল্পনা করতে পারেনি। তার আগমন সার্থক হয়েছে। মোগল সম্রাট জাহাংগির তাকে দাড়িয়ে সম্মান করে অভিভাধন জানান। সম্রাটের আসন আর চর্তুদিকে তার অসাধারণ চাকচিক্য দেখে কিছুটা বিস্মিত হন হকিন্স। মোগল সম্রাটের আসন আর তার চর্তুপাশ দেখে হকিন্স এর মনে প্রথম যে ধারণাটি এলো তা হলো, সম্রাটের পাশে রানি এলিজাবেথকে ভারতবর্ষের অন্য দশজন জমিদারনী ছাড়া কিছুই মনে হবে না। সম্রাট জাহাংগিরের বিশাল রাজকীয় বৈভব দেখে হকিন্সএর মনে এলো, সাত কোটি মানুষের সম্রাট নন তিনি সারা বিশ্বের রাজা। সম্রাটের আপ্যায়নে মুগ্ধ হকিন্স মোগল সাম্রাজ্যর বিভিন্ন মহল ঘুরে দেখার বায়না ধরলেন। সম্রাট তাকে বঞ্চিত করলেন না। ক্যাপ্টেন হকিন্সকে মোগল ভবনের যে বিষয়টি পাগল করে দিলেন তা হলো হেরেমখানা। হকিন্সকে হেরেমখানার প্রধান আমন্ত্রন জানান। সম্রাটের আদেশে হেরেমের অভ্যন্তরে ঘুরে সুন্দরীদের সাথে পরিচিত হন হকিন্স। একজন সম্রাট তার ইচ্ছে মতোন হেরেমের যে কোন সুন্দরী রমনীকে গ্রহণ করতে পারেন। যখন খুশি তারা সম্রাটের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত হন এ ছিল হকিন্স এর অজানা। মোগল সম্রাট হকিন্স এর মনোভাব কিছুটা বুঝতে পারলেন। তাকে অতিথি হিসেবে রাত কাটানোর প্রস্তাব দিলেন স্বয়ং সম্রাট। এমন প্রস্তাবে অভিভুত হকিন্স আরো বিস্মিত হলেন যখন শুনলেন তার মনোরঞ্জনের জন্য হেরেমের সেরা সুন্দরী নারীকে ভোগের জন্য দান করেছেন সম্রাট। এমন অভ্যথর্না হকিন্স পাবেন মোটেই আশা করেন নি। তার জন্য আরো চমক অপেক্ষা করছিল। মোগল দরবারে ভারতবর্ষে বৃটিশ বণিকদের বাণিজ্য করার আবেদনটি মঞ্জুর করেছেন সম্রাট। সম্রাট ফরমান জারীর মাধ্যমে ভারতের বোম্বাই এর উত্তরে সুরাট বন্দরের সাথে বৃটিশ বাণিজ্য উম্মুক্ত করে দিল। এর ফলে বৃটিশদের জাহাজ সুরাট বন্দরের আসা শুরু করলো। জাহাজ ভরে ভারত থেকে মূল্যবান সামগ্রি বৃটেনে যেতে থাকলো। মসলা থেকে শুরু মসলিন কোন কিছুই বাদ যাচ্ছে না। কোম্পানি লাভে লালে লাল হতে থাকলো।কেন সম্রাট সামান্য একজন বৃটিশ ক্যাপ্টেনকে এভাবে রাজকীয় অভ্যথর্না দিলেন তা ছিল অনেকটা অজানা।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মার্চ, ২০১৭ রাত ৮:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


"সামান্য ঘটনা থেকে ভারতবর্ষ চলে যায় বৃটিশদের দখলে..১ "

-সামান্য ঘটনাটা কি ছিল?

২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:০৬

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: চালিয়ে যান...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.