নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিদ্ওয়ান মাহমুদের ব্লগ

রিদ্ওয়ান মাহমুদ

নাম রিদওয়ান। পিউর আকীকা দেওয়া নাম। অনেক বড় বড় স্বপ্ন দেখি। খেতে পছন্দ করি। গানও ভালবাসি। একটু অলস,বেশি না। ইচ্ছা হলেই লিখি। পছন্দের তালিকাটা বিশাল। অপছন্দের তালিকাটা খুব ছোট। খামাকা ত্যানা প্যাচান যারা তাদের অপছন্দ করি। অপছন্দ করি যারা যুক্তির বাইরে এরোগেন্স বা ওদ্ধত্যকে প্রকাশ করেন। আমার ব্লগে আসতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে পিলাস মাইনাস দেওয়ার আগে পোষ্টটা পড়তে হবে, এটা দাবি।\nফি আমানিল্লাহ।

রিদ্ওয়ান মাহমুদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভোটের আগে ফিস করে।

০১ লা মে, ২০১৫ রাত ১১:১৯

অজপাড়া এক গাঁয়ে নির্বাচন।
ফুলানা মার্কার অমুক চেয়ারম্যানপ্রার্থীর নির্বাচনী জনসভা।
জনসভার প্রধান আকর্ষণ, সবাইকে কোকাকোলা বিলানো হবে।
গ্রামের মানুষ, এর আগে কোকাকোলা তো দুরের কথা, লেবু শরবতের কথা চিন্তা করাও তাদের জন্য স্বপ্ন। তার উপরে, এরা শুনেছে, এই কালো রংয়ের শরবতটা ফিস করে আওয়াজ করে।
জনসভা শুরু হলো। চেয়ারম্যান সাহেব বক্তৃতা করেন, আর উনার সাঙ্গপাঙ্গরা কোকের বোতল খুলেন। একটা বোতল খুলেন, গেরামের লোকজন চোখ দুইটা গোল গোল করে তাকিয়ে থাকেন।
আজব জিনিস, বোতলের ছিপি খুললেই ফিস ফিস করে উঠে। ফিসসসসসসসসসসসস............................
বোতল হাতে আসলেও অনেকে না খেয়ে হাতে রেখে দিলেন। যাইহোক, এমন আশ্চর্য জিনিস, বাড়ির সবাইকে দেখাতে হবে তো!
চেয়ারম্যান সাহেব বক্তৃতায় বলছেন, ভাইসব, আপনাদের হাতে নিশ্চয় ফিস করা পানি পৌছেছে। এই পানির বহুবিধ গুণ আছে। এটা খুললেই ফিস করে। খেলে ঢেকুর আসে। তখন বড় করে ফিস করে । আপনারা যদি আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন, তাহলে আমি আপনাদের এই ফিস করা পানি খাওয়াবো।
লোকজন তো খুব খুশি, হেভি মোটিভেটেড। এই লোককে ভোট দিতে হবে, আফটার অল , ফিস করা পানি বলে কথা।
যথারীতি নির্বাচন শুরু হলো, চেয়ারম্যান সাহেবের বাক্সে ভোটের বন্যা বয়ে গেলো।
রাতে, নির্বাচনী ফলাফলে চেয়ারম্যান সাহেব ৯৮% শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী।
পরেরদিন ,চেয়ারম্যানের কাচারী ঘরে প্রচুর মানুষের ভীড়। সবার টার্গেট একটা। আজকে ফিস করা পানি খেয়েই যাবে। গতবারে তো আসা হয় নি, শুনেছে নির্বাচনে জিতলে চেয়ারম্যান আবারো সেই ফিস করা পানি খাওয়াবে। আজকে আর মিস দেওয়া যাবে না।
চেয়ারম্যান সাহেব তার বাড়ির এতো গুলো লোকের জন্য আজকে রংচায়ের ব্যবস্থা করেছেন। সবাইকে রং চা খাওয়ানো হবে।
হাতে হাতে, চায়ের কাপ পৌছাইতে, ভীড়ের মধ্যে গুঞ্জন উঠে গেলো। চাপা গুঞ্জন।
কয়েকজন তো খুব ক্ষেপে গেলো।
হট্টগোল হবে এমন অবস্থা।
“ফিস করা পানি দেয় না”
কতবড় বেঈমানী।
চেয়ারম্যান সাহেব হট্টগোলের আওয়াজ শুনে বাড়ি থেকে বের হলেন।
হুংকার দিয়ে উঠলেন, কী হলো, সবাই এভাবে হট্টগোল করছে কেন?
চেয়ারম্যান সাহেবকে দেখে উপস্থিত জনতা ঠান্ডা হলো। চেয়ারম্যান সাহেব এসেছেন। এবার তাদের প্রাপ্য মিলবে।
চেয়ারম্যান সাহেবের আন্তরিকতা দেখে, একজন সাহস করে বললেন, “হুজুর, নির্বাচনের আগে আমাদেরকে ফিস করা পানি খাওয়াবেন কথা দিয়েছেন। কিন্তু আপনার লোকজন আমাদেরকে রংচা খাওয়াচ্ছে। এরা আপনার কথার বাইরে গিয়ে আমাদের সাথে বেঈমানী করছে, আপনার সাথে বেঈমানিী করছে।”
এবার উৎসুক জনতার ভিতর একটা স্বস্তির পরশ বয়ে গেলো। তাদের দাবী তারা চেয়ারম্যানের কাছে পৌছাতে পেরেছে। চেয়ারম্যান সাহেব এবার তাদের প্রাপ্র্য ফিরিয়ে দিবেন।
চেয়ারম্যান সাহেব, জনতার উৎসুক মুখ দেখে আশান্বিত হলেন। উনাকে তখন পায় কে? মনটা এখন উড়ো উড়ো।
চেয়ারম্যান সাহেব বলা শুরু করলেন। “ ভাই সব, আমি আপনাদের কথা দিয়েছিলাম, যদি আমি আপনাদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই তাহলে আপনাদের ফিস করা পানি খাওয়াবো। এই পানি আজ আমি আপনাদের সবা্র হাতে তুলে দিলাম।আপনারা আমাকে সমর্থন দিলে এরকম আমি খাওয়াতে থাকবো “
ভীড়ের মধ্যে একজন বলে উঠলো, “কিন্তু এই পানি তো ফিস করে না?”
চেয়ারম্যান মুচকি হেসে জবাব দিলেন, “বেটা, ভোটের আগে ফিস করে, ভোটের পরে ফিস করে না”
জনতা হাসিমুখে মেনে নিলো। আসলেই তো, ভোটের আগে ফিস করে , ভোটের পরে করে না। আমরা কত বোকা ছিলাম। আল্লাহ আমাদেরকে এরকম চেয়ারম্যান দেওয়ায় আমরা আজকে চালাক হয়ে গেলাম।
আফটার অল ফিস করা পানি বলে কথা, যেটা ভোটের আগে ফিস করে, ভোটের পরে করে না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০১৫ সকাল ৯:২৭

ক্থার্ক্থা বলেছেন: সঠিক বলছেন এরকম রাজনীতি শুধু মনে হয় আমাগো দেশেই । :)

২| ০৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯

রিদ্ওয়ান মাহমুদ বলেছেন: মহারাণী ভিক্টোরিয়ার দেশে আমরা সবাই স্বাধীন।।।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.