নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুস্বাস্থ্যই পৃথিবী

সুস্বাস্থ্য জনগণের মৌলিক অধিকার

ডাঃ নূর রিফফাত আরা

সুস্বাস্থ্য জনগণের মৌলিক অধিকার

ডাঃ নূর রিফফাত আরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

যোনি ক্যান্সার

১৩ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১:১৭

যোনি ক্যান্সার একটি মারাত্মক টিউমার যা যোনি থেকে উদ্ভূত। যোনি ক্যান্সার সার্ভিকাল ক্যান্সার, এন্ডমেট্রিয়াল ক্যান্সার, ওভারিয়ান ক্যান্সার এবং কোড়িওফেরছিনোমা থেকে ছড়িয়ে পরতে পারে। এছাড়াও ক্যান্সার কোষ মূত্রস্থলী, মূত্রনালী, অথবা রেকটাল থেকে উত্পন্ন কোষ প্রায়ই যোনি থেকে ছড়িয়ে পড়ে।



যোনি ক্যান্সার এর লক্ষণগুলো কি কি ?



1. যোনি থেকে রক্তপাত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় সঙ্গম এর পর এবং রজোবন্ধ হবার পরও যোনি থেকে রক্তক্ষরণ হয়।

2. স্রাব । এটি সাধারণত কলাবিশিষ্ট এবং সংক্রমনের সাথে সম্পর্কিত । রেচন স্বাদহীন এবং কখনও কখনও ভাতের মাড়ের মতো ( সামান্য চটচটে এবং দুধের মতো সাদা তরল ) অথবা রক্তের সাথে মিশে যেতে পারে।

3. কম্প্রেশন উপসর্গ। যখন পরিমিত টিউমারের সন্নিহিত অঙ্গে চাপ দেয়া হয় তখন অনুরুপ চাপের উপসর্গ দেখা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, যখন মূত্রাশয় এবং মূত্রনালীতে চাপ দেয়া হয় তখন জরুরী প্রস্রাব করা, ঘন ঘন মূত্রত্যাগ, প্রস্রাব এর সাথে রক্ত যাওয়া এসব ঘটতে পারে। মলদ্বারে চাপ দিলে মলত্যাগে অসুবিধা হতে পারে। পরিণত টিউমারের রোগীর ক্ষেত্রে মলের সাথে রক্ত যেতে পারে ইত্যাদি ।



কারা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ?



1. যোনি ক্যান্সার রুগীদের বয়সের গড় ৬০ থেকে ৬৫ বছর।

2. অল্পবয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় যদি হরমোন সংযোজিত হয় তাহলে যোনিকোষ কান্সারে আক্রান্ত হতে পারে

3. বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে বাচ্চা প্রসব, ঘন ঘন বাচ্চা প্রসব প্রাথমিক যোনিকান্সারের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সম্পন্ন।



যোনিকান্সারের বিভিন্ন ধাপ বা পর্যায় -



পর্যায় ০ – পূর্ব বা স্বাভাবিক পর্যায় ।

পর্যায় ১- যোনি প্রাচীরে ক্যান্সার সনাক্ত ।

পর্যায়২- যোনির চারপাশের টিস্যু আক্রান্ত কিন্ত তখনো যোনির শ্রোণি প্রাচীর আক্রান্ত হয়নি ।

পর্যায়৩- কান্সার যোনির শ্রোণি প্রাচীরে পৌঁছে যাওয়া।

পর্যায়৪-কান্সার ইতিমদ্ধে যোনির শ্রোণি প্রাচীরে ছড়িয়ে পড়ে অথবা এটি মূত্রাশয় , মলদ্বার এর মলদ্বার শ্লৈষ্মিক ঝিল্লী আক্রান্ত হবে।

পর্যায়৫- টিউমারের সন্নিহিত অঙ্গ আক্রান্ত হওয়া ।

পর্যায়৬- কান্সার অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে।



যোনি ক্যান্সার নির্ণয়ের পদ্ধতিঃ-



1. প্যপস্মেয়ার

2. শ্রোণী পরিক্ষা

3. বাইওপ্সি, কোষ পরিক্ষা



যোনি ক্যান্সারের চিকিত্সার কি কি ?



(ক) অপারেশন

অপারেশন এর মাধ্যমে যোনিকান্সার পুরোপুরি অথবা কিছু অংশ পূর্বের ভালো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এছাড়াও “এঞ্জিওপ্লাসটি”এর মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ের যোনি কান্সার এর রোগীদের জরায়ুর কিছু অংশ অপশারন করে চিকিৎসা দেয়া যেতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে যোনির নিম্নভাগে কোন ধরণের ক্ষত থাকলে যোনি এবং ভল্বারের রিজেকশন এবং কুচকির লসিকাগ্রন্থি ব্যবচ্ছেদ করা

(খ) কেমোথেরাপি ঃ

শুধুমাত্র কেমোথেরাপি যোনি ক্যান্সারের জন্য সুস্পষ্ট চিকিৎসা নয়। সুতরাং প্রতিটি যোনি ক্যান্সার চিকিত্সায় কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি দ্বারা চিকিত্সা প্রভাব উন্নতি করা যায়।

(গ)রেডিওথেরাপি

যোনি কান্সার চিকিৎসায় দুই ধরণের রেডিওথেরাপি দেয়া হয়। তাহলো অভ্যন্তরীণ রেডিওথেরাপি (brachytherapy) এবং বাহ্যিক রেডিওথেরাপি (teletherapy) । Brachytherapy এর প্রধান লক্ষ্যমাত্রা যোনির প্রাথমিক ক্ষত এবং সন্নিহিত অঞ্চলে অনুপ্রবেশ। teletherapy এর লক্ষ্য হল টিউমারের আশেপাশের অনুপ্রবেশ অঞ্চল এবং লশিকাগ্রন্থি স্তানান্তর অঞ্চল।

সর্বনিম্ন অক্ষত চিকিৎসা ঃ

যোনি কান্সারের অক্ষত চিকিৎসা অল্প ক্ষত এবং দ্রুত আরোগ্য ছারাও বেশিদিন হাসপাতালে থাকা এবং বেশী টাকা খরচ থেকেও রক্ষা পাওয়া যায়। তাই এই চিকিৎসা রোগীর কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য হয়।

ট্র্যাডিশনাল চইনিজ ওষুধ থেরাপিঃ

ট্র্যাডিশনাল চইনিজ ওষুধ খুব দ্রুত কান্সারের কোষ বিভাজন ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে এবং প্রজনন প্রতিরোধ করতে পারে। এর মাধ্যমে টিউমার ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে । ট্র্যাডিশনাল চইনিজ ওষুধ সাধারণত অপারেশন, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির সঙ্গে দেয়া হয়। এতে কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।



যোনি ক্যান্সার অপারেশন পরবর্তী যত্ন সতর্কতা কি ?



1. যোনিপথে স্পেকট্রাম ঢুকানোর সময় সতর্কতার সাথে আস্তে আস্তে নড়াচড়া করতে হবে যেন কান্সার টিস্যু নষ্ট না হয় এবং রক্ত না বের হয় ।

2. মাসিক এর সময় এবং যোনি থেকে রক্ত বের হলে তখন ডুশ দেয়া যাবে না। এতে সংক্রামন থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

3. ডুশ এর জন্য সমাধান ঘনত্ব সঠিক হতে হবে এবং তাপমাত্রা উপযুক্ত হতে পারে, সাধারণত 38 ~ 41 উচিত ℃।

4 . পরিষ্কার করার সময় চাপ উপযুক্ত হতে হবে । চাপ বেশি হলে তা জরায়ু তে আঘাত করবে এবং চাপ কম হলে তা ভালভাবে পরিষ্কার হবে না।

5. রোগীর পরিবর্তন অবস্থা লক্ষ্য রাখতে হবে। যদি দেখা যায় রক্ত পরা বন্ধ হচ্ছে না এবং বেশি রক্ত পড়ছে তাহলে ধোঁয়া বন্ধ করতে হবে এবং যোনির ভিতর কাপড়ের গজ দিতে হবে এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

6. যদি যোনির বাহিরে ফুলে যায়, অধিক রক্তপাত হয় চুলকায় এবং যোনি সংকোচিত হয় তাহলে চোট স্পেকট্রাম দিয়ে যোনি ধুতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন রোগী ব্যথা না পায় ।

7. প্রতিদিন ধোয়ার পানি পরিবর্তন করতে হবে এবং সপ্তাহে একদিন ব্যবহৃত বালতি পরিস্কারক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.