![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছবির এই লোকটির নাম নুরুল্লাহ। পেশায় একজন রিক্সা চালক। লোকটির বাম হাত এবং ডান পা নেই। জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই লোকটি বলতে গেলে একেবারেই পঙ্গু। পাশেই যে মেয়েটি সে তারই ছয় বছরের মেয়ে যার এক পা নেই এবং জন্মের পর থেকেই কোন কথা বলতে পারে না মানে শারীরিক প্রতিবন্দী। জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই লোকটি একসময় মাদ্রায় পড়তো। বাড়ি জামাল পুরের মালন্দা নামক কোন স্থানে। মাদ্রাসার প্রাথমিক পর্ব শেষ করে যখন হাফেজ হওয়ার জন্য সময়ের অপেক্ষা করছিলো ঠিক তখনই তার জীবনে নেমে আসে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা! নীলক্ষেত গাউছুল আজমে সন্ধার পর যখন আড্ডা দিচ্ছিলাম ঠিক তখনই এই রিক্সা চালক কে আমার চোখে পড়লো। আমার ই এক বন্ধু ওকে কিছু টাকা দেবে বলে ডেকে নেয়। সেই সময় নুরুল্লাহর মুখ থেকে শুনলাম তার জীবন কাহিনী।
জামাল পুরের কোন এক ট্রেন এক্সিডেন্ট এ তার এক হাত ও একপা কাটা পড়ে। তার স্বপ্ন ছিলো অনেক বড় হওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন তার ধূসর করে দেয় একটা ট্রেন এক্সিডেন্ট! অসচ্ছল পরিবারে জন্ম নেয়া কোন ছেলে স্বপ্ন ও পুরন হয় না সেটা নুরুল্লাহ একটি জলজ্যান্ত প্রমান। দির্ঘ দিন হাতপাতালে কাতরাতে কাতরাতে কোন ভাবে বেঁচে যায় নুরুল্লা। নিয়তির নিষ্ঠুরতা যে কতটা ভয়াবহ তা টের পেতে থাকে এই নুরুল্লাহ। পেটে দুবেলা খাবার না জুটলে কোন মানুষ বেসি দিন বেঁচে থাকতে পারে না তােই একটু সুস্থ হয়েই এক হাত আর এক পা নিয়ে নেমে পড়ে জীবনের নতুন এক যুদ্ধে যেখানে ওকে সহযোগিতা করার মত কেউ ছিলো না। এক বেলা ঠিকমত পেটে ভাব জুটানোর জন্য এক হাত আর এক পা নিয়েই ধরে বসে রিক্সার হাতল! তবুও কারো কাছে হাত পাতেনি। এটা দশ বছর আগের ঘটনা।
এরই মাঝে নুরুল্লাহ বিয়ে করেন। নিজে পড়ালেখা করে মানুষ হতে পারেনি বলে নিজের সন্তানকে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলবে এই প্রত্যাশায় বিয়ের পর তার ঘরে একটা সন্তান কামনা করে। স্বপ্ন তার সন্তান কে মানুষ করে গড়ে তুলবে। কিন্তু ভাগ্য আর নিয়তি তাকে নিয়ে আবার নতুন দুস্বপ্নে জাল বোনে। তার একটি প্রতিবন্ধি সন্তান জন্ম নেয়! সব স্বপ্নই যেনো ভেঙ্গে চুরে শেষ হয়ে যায় আবার। নিয়তি কতটা নিষ্ঠুর তা নুরুল্লাহ হাড়ে হাড়ে টের পায়। তার মেয়েটি জন্মের পর থেকেই কথা বলতে পারে না এবং মেয়ের এক পা নেই!
নুরুল্লাহ সব কিছু মেনে নিয়েই আবার রিক্সার হাতল ধরে বউ সন্তানদের খাবার জোটাতে শুরু করে জীবনের আর এক নতুন যুদ্ধ। জীবনের এত ট্রাজেডির পর ও নুরুল্লাহ সে ভাবে কারো কাছে হাত পাতেনি। এক হাত আর এক পা দিয়ে সে এখনো রিক্সার হাতল ধরে সংসার আর বউ বাচ্চা কে কোন ভাবে দুবেলা দুমুঠো ভাত মুখে তুলে দেয়। কিন্তু জীবনের এটাই কি শেষ কথা!?
ঢাকার রাস্তায় চলতে গেলে আপনার চোখে পড়বে অসংখ্য ভিক্ষুক যারা সুস্থ এবং স্বাভাবিক মানুষ। কর্ম করে খুব ভালোভাবে জীবন চালাতে পারে। এই মানুষ গুলো সাথে যখন আমি নুরুল্লাহ কে মেলাতে যায় তখন ঘৃনা হয় ওই সব ভিক্ষুকদের প্রতি আর ঘৃনা হয় নিয়তির এই নিষ্ঠুরতাকে।
একটা মানুষের জীবন কি এখানেই সীমাবন্ধ থাকবে। মানুষ হিসেবে তার কি আর কোন চাহিদা থাকতে পারে না! শত কষ্ট আর লজ্জায় কখনো কারো কাছে হাত পাতেনি এই নুরুল্লাহ কিন্তু একমাত্র নুরুল্লাই জানে কি কষ্ট করে তার সংসার চলে, কি মানবেতর জীবন যাপন করে একজন হাত পা বিহিন এই রিক্সা চালক। আপনি কি কখনো খবর রাখেন এইসব মানুষ কি ভাকে বেঁচে থাকে!? মানুষ হিসেবে কি আপনি আপনার দায়িত্ব ঠিক ভাবে পালন করেন কখনো? জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই রিক্সা চালক নুরুল্লাকে সহযোগীতা করা কি আমাদের দায়িত্ব নয়!
01952210185 এই নাম্বারটি নুরুল্লাহ’র। যে মানুষটি শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও কারো কাছে লজ্জায় কারে কাছে হাত পাতে না সেই মানুষটিকে সহযোগিতা করা কি আপনার দায়িত্ব নয়? যদি কারো মনে দয়া হয় তাহলে এই নাম্বারে যোগাযোগ করে তার পাশে দাড়ানোর অনুরোধ টুক রাখছি।
২| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৪৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ রাফি ভাই । একজন প্রতিবন্ধির জীবন কাহিনী তুলে ধরার জন্য । দোয়া করছি সে ও তার পরিবারের জন্য । বেশী আসহায় তার প্রতিবন্ধী মেয়েটি । তাদের জন্যে বুকে কষ্ট অনুভব করছি । অাপনার দেয়া নম্বরে তার সাথে যোগাযোগ করব ইনশাল্লাহ ।
আল্লাহ আপনার ভাল করুন ।
৩| ০৩ রা জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:২০
আহলান বলেছেন: পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুলাই, ২০১৬ ভোর ৪:৪৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ রাফি ভাই । একজন প্রতিবন্ধির জীবন কাহিনী তুলে ধরার জন্য । দোয়া করছি সে ও তার পরিবারের জন্য । বেশী আসহায় তার প্রতিবন্ধী মেয়েটি । তাদের জন্যে বুকে কষ্ট অনুভব করছি । অাপনার দেয়া নম্বরে তার সাথে যোগাযোগ করব ইনশাল্লাহ ।
আল্লাহ আপনার ভাল করুন ।