নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার উপরে মানুষ সত্য

রাফি বাংলাদেশ

আমার পরিচয় আমি একজন বাঙ্গালী

রাফি বাংলাদেশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন মিয়ার বাড়িতে হামলা, লুটপাট আর আমাদের লজ্জা!

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪


খুব বেসি কষ্ট পাইনি। শুধু ঘটনাটি শোনার পর আচমকা ইলেক্ট্রিক শকের মত আমার শরীরটা দারুণ ভাবে ঝাকুনি দিয়েছিলো এই আর কি। পরোক্ষনেই ব্যাথাটা ভূলে গিয়েছিলাম। বিষয়টা ঠিক ভুলে যায়নি সহ্য করে নিয়েছিলাম। প্রতিদিন এ দেশে থেকে এমন এত ঘটনার সম্মুখিন হতে হয় যে আমাদের সহ্য হয়ে গেছে

জন্মের পর যখন সামান্য বোঝা শিখেছি বা যখন নিজের পায়ে হাটতে শিখেছি ঠিক তখন থেকেই কানে বাজতো ৭১ সালের ঘটনাপ্রবাহ। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান হওয়া সেই সুযোগটা হয়তো আরো আগে পেয়েছিলাম। ৭১ রাজাকার নামক একদল সংঘবদ্ধ হিংস্র হায়েনার জন্ম হয়েছিলো যাদের জন্ম পরিচয়ই ছিলো খোদ বাংলাদেশী! মুক্তিযুদ্ধের এতবছর পরেও যখন তাদের বিচরণ চোখে পড়া মত তখন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সবার সামনে অপমানিত হবে, মার খাবে এটাই তো স্বভাবিক! এতে কষ্ট পাওয়ার কি আছে! ঘটনাটি শুনে আমি মোটেও কষ্ট পাইনি সত্যি বলছি। শুধু প্রতিদিন শরীরের নতুন নতুন ক্ষতগুলোকে পাহাড়া দিই মাত্র।

৭৫ এর ১৫ আগষ্ট বাংলাদেশে কালের বিক্ষিপ্ত এক নোংড়া ও জঘন্য ইতিহাস। যে দেশের মানুষ এতবড় হত্যাকান্ড চালাতে পারে শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে সে দেশের মানুষ চাইলেই একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা করতে পারে লুট করতে পারে অথবা তার পুরো পরিবারকে ধুলায় মিশিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকতে পারে এটাই স্বাভাবিক ঘটনা

আচ্ছা আপনি কি বিরক্ত হচ্ছেন! আমার এই ফালতু প্যাচাল পড়ে সময় নষ্ট হচ্ছে ভেবে আমাকে মনে মনে গাল মন্দ করছেন? হতেও পারে। কেনই বা আপনি সময় নষ্ট করে আমার এই আবেগি মার্কা কথা শুনবেন! আপনার কি দায় পড়েছে! দেশের এতবড় একজন বীরের বাড়িতে হামলা হবে লুটপাট হবে ভাংচুর হবে এবং সেই পরিবার ভয়ে পালিয়ে বেড়াবে একদল হিংস্র মানুষের রোষানলে পড়ে! তাতে আপনার বা আপনাদের কি! আসলেই তো! এ দেশ তো হায়নাদের জন্য স্বাধিন করা হয়েছিলো! আপনার তো কোন দায়বদ্ধতা থাকার কথা নয়!

২০১৩ সালের এই ফেব্রোয়ারি মাসে বাংলাদেশে বিশাল এক জনবিস্ফোরণ ঘটেছিলো মুক্তিযুদ্ধ বিরোধীদের ফাঁশির দাবিতে। জনতার সেই জোয়ার কোন একটা অদৃশ্য যাদুবিদ্যার প্রভাবে থমকে যেতে লাগলো এবং এক সময় থমকেও গেলো। পেছনের সেই অদৃশ্য শক্তিটি কি! এটা কি ভীনগ্রোহের কোন শক্তি ছিলো এই গনজোয়ার কে আটকে দেয়ার!
আপনি মনে হয় এবার বেসি বিরক্ত হচ্ছেন তাই না! কি করবো বলেন কথা বলতে গেলে চরিত্র বিশ্লেষণ না করলে তো আবার সিনেমা হিট হয় না! হ্যাঁ আমি সেই চরিত্রের কথা বলছি যারা শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে হিংস্র পশুতে রুপান্তর হতে পারে!
তবে এখন আমার মনের ভেতরে খুব কষ্ট অনুভুত হচ্ছে! লজ্জায়, ঘৃনায় নিজের চোখ উপড়ে ফেলতে হচ্ছে অথবা ইচ্ছে হচ্ছে হিটলার রুপে আর্বিভাব হয়ে নতুন ধংশযজ্ঞের খেলায় মেতে উঠি।

খুব সকাল বেলায় এলাকার একদল সংঘবদ্ধ লোক দেশীয় অস্ত্র সস্ত্রসহ হামলা করলো মরহুম আকবর হোসেন মিয়ার বাড়িতে। ভাংচুর করলো লুট করলো গাড়ি পোড়ালো! শুধু তার বাড়িতে নয় হামলা করা হলো তার রক্তের আরো অনেক বাড়িতে। আচ্ছা কে এই আকবর হোসেন মিয়া? বা এই লোকগুলো কারা বা কেন হামলা চালালো!?
১৫ আগষ্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হলো। জাতির পিতার অপরাধ তিনি সমস্ত বাংগালির অধিপতি হয়েছিলেন, জাতির পিতার অপরাধ তার নির্দেশে সমস্ত বাঙ্গালি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো মৃত্যুভয় না করে। জাতির পিতার অপরাধ তাকে সমস্ত বাঙ্গালি প্রানের থেকেও বেসি ভালোবাসতো!
তার পরিবারকে বিনাস করতে পারলেই কেল্লা ফতে!
মরহুম জনাব আকবর হোসেন মিয়া মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন শ্রীপুর বাহিনী তথা আকবর বাহিনীর প্রধান যার ভয়ে ৭১ এ পাকি বাহিনী ভয়ে কাঁপতো! যিনি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এক বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন এবং যার নেতৃত্বে মাগুরা শত্রুমুক্ত হয়। মরহুম জনাব আকবর হোসেন মিয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন প্রতিষ্ঠাতা। যিনি তিনবার সমস্ত জনগনের ভালোবাসায় চেয়ারম্যান মনোনিত ছিলেন। শ্রীপুরের বেসির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মিয় প্রতিষ্ঠান তার নিজের হাতে গড়া!
অপক্ষমতা তারাই প্রয়োগ করার চেষ্টা করে যাদের নুন্যমত জনসমর্থন থাকে না।
গত দুবছর হলো আকবর হোসেন মিয়া পরোপারে চলে গেছেন। তার আর এক সন্তান তার আদর্শকে বুকে লালন করে যখন এলাকার সমস্ত মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছিলো তখন সহ্য হচ্ছিলো না সেই বংশধরদের যারা শুধুমাত্র হিংস্রতা আর অপক্ষমতাকে সম্বল করে নিজেদের কে পশুরুপে জানান দিতে চায়!
মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানায় জন্ম নেয়া সেই মহামানুষটির বাড়িতে খুব সকালে হামলা করলো, ভাংচুর করলো, লুটপাট করলো! আর যারা এ কাজটি করলো তারাই এক সময় এই মহামানবের আশ্রয়ে থেকে বড় হয়েছে। তারাই এই কাজটি করেছে যারা খুব ভালো করে জানে তিনি বা তার সন্তান কুতুবুল্লাহ কুটি মিয়া বেঁচে থাকলে তারা কখনো ক্ষমতায় আসতে পারবে না! জনগনের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকা হচ্ছে এ দেশে সব থেকে বড় অপরাধ!
আপনি যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করেন তাহলে দেখবেন আর্য জাতি থেকে লাষ্ট ব্রিটিস বা পাকিস্থান এদেশ শাষণ করেছে। শাষণ বলতে নিপিড়ন ও ধর্ষণ! আর এই শাষক শ্রেনীর রক্ত বাঙ্গালীর শরীরে প্রবাহিত। আমি না হয় এই বর্ণনায় নাই বা গেলাম
পলাশীর যুদ্ধে মীর জাফরকে আমরা পেয়েছিলাম! ৭১ এ রাজাকার আর ৭৫ এ!
ছোটবেলায় না বুঝে বাঙ্গালী হিসেবে নিজেকে খুব গর্ব করতাম। মনে হতো আমাদের মত এত ভালো জাতি পৃথিবীর আর কোথাও নেই!
যে জাতি নিজের পিতা, মা ও মাতৃভূমিকে খুন ও ধর্ষণের বরশীতে গেথে রক্তের হলি খেলায় মত্ত হয়ে শ্রেষ্ঠ কলংকিত ইতিহাস লিখতে পারে সে জাতি কোনদিন ভালো হতে পারে না!
আমি যে ঘটনাটির কথা বলছি এটা এখন বাংলাদেশের সর্বত্র প্রতিনিয়তই ঘটছে। সবখানে অপশক্তিদের দৌরাত্ব!
তাই আমি ঘটনাটি শুনে খুব বেসি কষ্ট পাইনি। শুধু ইলেক্ট্রিক শকের মত আমার শরীর আচমকা কেঁপে উঠেছিলো! যখন শুনলাম মরহুম বীর মুক্তিযুদ্ধা কমান্ডারের বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট করেছে এলাকার একদল বেঈমান ও সুবিধালোভী হিংস্র মানুষেরা, যাদের কে সহযোগিতা করেছে সয়ং পুলিশ! যাদের নুন্যতম জনসমর্থ নেই, যারা অপশক্তি ও অপক্ষমতার বলে জনপ্রতিনিধি সাজতে চায়। যাদের রক্তের ইতিহাস শুধু বেঈমানের শব্দই প্রবাহিত হয়।
আপনারা চুপচাপ করে বসে থাকেন ঘরের মধ্যো। কোন প্রতিবাদ করার দরকার নেই। একজন বীরের বাড়িতে হামলা করবে এজিদের দল আর আপনারা ঘরের ভেতরে বসে বসে ডিমে তা দিবেন। স্বাধিনতা যুদ্ধের এটাই হচ্ছে ফল!

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০০

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: বিরক্ত হচ্ছেন এই হচ্ছেন সেই হচ্ছেন কথা গুলো বাদ দিতেই পারতেন। আমাদের দেশে এমন ঘটনা ঘটা অস্বাভাবিক না, দেশ নষ্ট হয়ে গেছে। /:)

২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৫

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: বিরক্ত হইনি, পড়েছি মনোযোগী হয়েই। স্বাধীনতার পর স্বাধীনতার বিপক্ষ জানোয়ারদের নিশ্চিহ্ন করতে পারলে এমন ঘটনা দেখতে হতো না।


"যে জাতি নিজের পিতা, মা ও মাতৃভূমিকে খুন ও ধর্ষণের বরশীতে গেথে রক্তের হলি খেলায় মত হয়ে শ্রেষ্ঠ কলংকিত ইতিহাস লিখতে পারে সে জাতি কোনদিন ভালো হতে পারে না!" বড় কষ্টেই বেরিয়েছে কথা বুঝতে পেরেছি।

দুর্বৃত্তদের প্রতি চির ঘৃণা

৩| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:



আওয়ামীদের বালচালের ভেতর "মুক্তিযোদ্ধা" লাগায়েছেন কেন?
আপনার পোস্ট হিবিজিবি, আপনার সমস্যা আছে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.