নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে আমি কোন ব্লগার নই মন চায় তাই লিখি তথ্য-উপাত্ত সবার সাথে শেয়ার করি ।\nজব এর পাশাপাশি এয়ার টিকেট ও ট্রাভেল ভিসার ব্যাবসা করি ।\nধন্যবাদ\n

তানজীর আহমেদ সিয়াম

তানজীর আহমেদ সিয়াম

তানজীর আহমেদ সিয়াম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুড়ানো ( পর্ব-৪১ )-উল্লাসকর দত্ত/আমারাই প্রথম

২৫ শে মে, ২০১৯ সকাল ১১:০৭


২য় পর্ব



বঙ্গভঙ্গ আন্দলোনকে কেন্দ্র করে, সারা বাংলায় গড়ে উঠে বিভিন্ন সংগঠন। ঢাকায় 'অনুশীলন', ময়মনসিংহে সুহৃদ' ও সাধনা', ফরিদপুরে ব্রত'। জেলায় জেলায় ঢাকা অনুশীলন সমিতির শাখা ছড়িয়ে পরে। কলকাতায় অনুশীলন সমিতি ভেঙ্গে 'যুৃগান্তর' নামে একটি উপদল গঠিত হয়।

মেধা ও মনন

পাঠ্য বইয়ে মন নেই, শিখছেন রবীন্দ্র সংগীত। বন্কিম চন্দ্রের 'অনুশীলন ও ধর্মতত্ব', কার্লিয়ের 'Heroes and Hero Warshi, পিটার-ক্রোপোটনিকের 'Memories of a Revolutionists'In Russian and French Prison.
এসব পড়ে উল্লাসের জীবন বোধে বদলে গেলো। দেশকে মুক্ত করতে হলে, চরমপন্থী হতে হবে।

আবার রসায়ন

সেইসময় স্বদেশী আন্দোলনের চরম পন্থীদের, মূল হাতিয়ার ছিলো, পিস্তল, রিভলবার বাংগালীরাই প্রথম বোমার অনুপ্রবেশ ঘটায়। যুগান্তরের সদস্যরাই এর মুল হোতা, আগেই নিয়েছেন অনুশীলন, অরিবিন্দ ঘোষ এর উদ্যোক্তা, এই সমিতি, হেমচন্দ্র কানণগো নামে এক জনকে বিদেশে পাঠানো হয় বোমা বানানোর দিক্ষা নিতে। তিনি সুইজারল্যান্ড, লন্ডনে ব্যর্থ হয়ে প্যারিসে আসেন, সেখানে ফরাসী সমাজতান্ত্রিক দলের নেতাদের কাছে দীক্ষা নেন। ১৯০৮ সালে কলকাতায় ফিরে আসেন।
হেমচন্দ্র নির্মিত প্রথম বইবোমা' কিংসফোর্ডকে পাঠনো হয়েছিলো, যা বিস্ফোরিত হয়নি। তারপর, ৫ জনকে নিয়ে তৈরী করেন বোমা তৈরীর কারখানা।

উল্লাসের রসায়ন ক্লাশটাই ভালোলাগে, এক্সপ্লোসিভ বানানোর বিভিন্ন পর্যায় গুলি রপ্ত মেলা করেছেন, কলেজেই, একজন দক্ষ বোমার কারিগর হয়ে উঠলেন।
হেমচন্দ্র ফিরে এলে উল্লাসকর যোগদিলেন হেমচন্দ্রের সাথে।

প্রতিবাদ

মাদারীপুর এক স্কুলে বাচ্চারা 'বন্দে মাতরম' গান গাওয়ার অপরাধে, পূর্ব বাংলার ছোট লাট, ব্যমফিল্ড ফুলারের নির্দেশে ছোট ছোট বাচ্চাদের চাবুক মারার খবরটা গণ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে, শিক্ষক কালীপ্রসন্ন দাশকে পুলিশ লাঞ্ছিত করেছে। নিজে শিক্ষকের ছেলে, ব্যাগের মাঝে পুরনো চটি জুতা নিয়ে, এলেন কলেজে, সাথে যুগান্তরের বন্ধুরা।
ব্যাগ থেকে চটিজুতা বের করে, স্বদেশী আন্দোলন বিরোধী প্রফেসার রাসেলের গালে ও পিঠে, উল্লাসকর বন্দেমাতরম' বলে প্রহার করেন, সেদিনই চুকে গেলো কলিকাতা প্রেসিডেন্সিতে পড়ার পাঠ।
পিতা দ্বিজদাশ দত্ত, পলুর আচরণে উদ্বিগ্ন। বিলেত পাঠিয়ে দেবার আয়োজন চলছে।
কোথায় বেনিয়াদের বিদায় করবো, আমি যাবো ওখানে পড়তে?
বিপিনচন্দ্র সমাধান করে দিলেন, বোম্বে 'ভিক্টোরিয়া জুবলি ইনিষ্টিটিউটে' টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে পাঠিয়ে দিলেন, উল্লাসকরকে।

লীলাকে ছেড়ে উল্লাসকর চলে এলেন বোম্বে, সেখানে উল্লাসের মন ভালো নেই।

লীলার বড়বোন শোভনার সাথে বিয়ে হয়েছে, উল্লাসকরের কাজিনের, এখন নিকট আত্মীয়, কলকাতার সুকিন ষ্ট্রীটে, বিপিনচন্দ্রর বাড়ির ছাদে নিয়মিত বসে গানের আড্ডা। রবীন্দ্রনাথ বঙ্গভঙ্গের পর লিখে যাচ্ছেন স্বদেশী গান। উল্লাসের সব গানই কন্ঠস্থ, শোভনা ও লীলার সাথে, বাড়ির ছাদের আড্ডাটা ভীষণ টানছে।

নিয়মিত বোম্বেতে পাচ্ছেন, যুগান্তরের খবর। কলিকাতায় স্বদেশীদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ, মন পড়ে আাছে কলকাতা।
স্বদেশী দের সাথে পুলিশের অত্যাচার বেড়েই চলছে। এদিকে কংগ্রেস নেতারা ইংরেজদের তোয়াজ নিয়ে ব্যস্ত। এসব উল্লাসের ভালোলাগছে না।

প্রথম বিস্ফোরণ

বারীন বাবুর অনুরোধে, বিভুতি চক্রবর্তী ১০ দিনের মাথায় ভারতে প্রথম বোমা তৈরী করলেন।
২৭, কানাইলাল লেনে, যুগান্তর অফিসে এসে জমা হলো সেই বোমা। বোম্বে বসে এতো সব জানার পর। একদিন আবর সাগরে সব ফেলে দিয়ে, উল্লাসকর কলিকাতার ট্রেনে উঠে গেলেন। শরীর ভালো না, ইনফেকটিভ হেপাটাইসিসে ভুগছেন।
শিবপুরে চলে এলেন, পিতার লাইব্রেরীতে কেমেষ্টি বইয়ে ঠাসা। নাইট্টো গ্লিসারিন হলো বোমার আসল উপাদান, যা দিয়ে, এলফড নোভেল, ডিনামাইট বানিয়ে ছিলেন। সেখানেই গড়ে তুলেন প্রথম গবেষণাগার, বনিয়ে ফেললেন বোমা।
প্রথমেই খবর দিলেন সত্যানন্দকে, বাড়ির পাশে মাঠে ফাটিয়ে দেখিয়ে দিলেন, সত্যানন্দ অভিভুত হয়ে নিয়ে এলেন, মুরারিপুকুর থেকে বারীনকে, শিবপুরে।

আশ্রম

বারীন নিজবাড়ি ৩২, মুরারিপুকুরে খুলেছেন আশ্রম', সবাই জানে সেখানে ধর্ম শিক্ষার ক্লাশ হয়। অাসলে আশ্রমের আড়ালে ছিলো, একটি বিপ্লবীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। উল্লাসকরকে নিয়ে আসেন এবং এক্সপ্লোসিভ বিভাগের দায়িত্ব অর্পণ করেন, সময়টা ছিলো ১৯০৭ সাল।
শিবপুর আর মুরারিপুকুরের যোগাযোগটা বেড়ে গেলো। একদিন শিবপুরে, সুখসাগরের অসতর্কতাবশত একটি বোমা বিস্ফোরিত হলে, উল্লাসের আর শিবপুর থাকা সম্তব হলো না। চলে এলেন স্থায়ী ভাবে মুরারিপুকুর।

বোমাতে পেরেক, লোহার টুকরা দিয়ে স্পিন্টার বানিয়ে ফেললো, ১৭ দিনের মধ্যো মাইন বানিয়ে, সবাইকে অবাক করে দিলো। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, এবার এ্যটাক।

নারায়নগড়

সবাই উচ্ছাসিত, মাইন দিয়ে ট্রেন উড়িয়ে দেয়া যাবে। প্রথম টার্গেট, এন্ডু ফ্রেজারকে হত্যা। ঠিক হলো মানকুন্ডতে মাইনটি পোঁতা হবে। মাইন পোঁতা হলো, সেই রাতে ট্রেন এলো না। ফ্রেজার ত্রান কার্যে ঔরিষ্যায় চলে গেছেন। এবার খবর পাকা, খড়গপুরের কাছে নারায়নগড়ে, একটি নির্জন জায়গায় মাইন পোঁতা হলো।
বিস্ফোরণে রেলের ইঞ্জিন উড়ে গেলেও বগির কিছুই হয়নি। সারা ভারত তোলপাড়। খবর রটলো, রাশিয়া থেকে আগত কমিউনিস্টদের কাজ এটা, সময়টা ছিলো ১৯০৭ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে।
নারায়নগড়ের ঘটনায় পর, পুলিশের তৎপরতা বেড়ে গেলো।
অনেক গোপন আস্তানার খবর, গোয়েন্দা বিভাগের কাছে উন্মোচিত হলো।

হৃষিকেশ বললো চলো দেশ ভ্রমনে বেড়িয়েপড়ি, কলকাতা এখন আমাদের জন্য কিছুদিন নিরাপদ নয়।



চলবে...
শওকত
#যে_স্মৃতি_ধূসর_হয়নি

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: সাথে তথ্যসুত্র দিয়ে দিবেন। তাহলে নিশ্চিত হই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.