![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দ্বন্দ্ব থাকবেই কিন্তু তাই বলে সমাধান থাকবে না এমন তো কথা নেই। যে কোনো দ্বন্দ্বেরই একটা পরিণতি আছে। হকে পারে সেটা ভাল, আপাতদৃষ্টিতে ভাল বা চূড়ান্ত বিচারে খারাপ। অতএব দ্বন্দ্ব থাকলে তার পরিণতির জন্য অপেক্ষা করতে হবে সকলকে।
বর্তমানে দুই প্রধান দলের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলছে এবং তার পরিণতি কি হবে সেটা অনিশ্চিত। জ্ঞানীরা বলছেন- আলোচনা করে একটা সমাধানে পৌছাতে হবে। কিন্তু বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার এরকম একটা অবস্থান থেকে আলোচনায় বসে কোনো লাভ নেই। আলোচনায় বসে একটি বিকল্প সমাধান খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করাই সবচেয়ে সঠিক কাজ। কিন্তু সঠিকতার সংজ্ঞা তো একে জনের কাজে একেক রকম। কেউ বিকল্প অনুসন্ধান করে দ্বন্দ্ব নিরসনকে সঠিক মনে করেন আবার কেউ অপরকে হারিয়ে দিতে পারাটাকেই সফলতা মনে করেন। অপরকে হারিয়ে দিতে পারার মধ্যে যে আনন্দটা পাওয়া যায় সেটা বিকৃত আনন্দ। এই আনন্দ কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয় না।
আলোচনার কিছু পূর্বশর্ত আছে যা উভয় পক্ষেরই মানা জরুরি। এক্ষেত্রে পরস্পরের মতকে গুরুত্ব দিতে হবে এবং পরস্পরের প্রতি ন্যূনতম আস্থা রাখতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই দুইটির কোনোটিই উভয় দলের মধ্যে নেই। দ্বন্দ্বটা এখন আর দ্বন্দ্বের মধ্যে নেই, এটি শত্রুতায় রূপান্তরিত হয়েছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে তাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান পাওয়াটা খুবই কঠিন।
সেক্ষেত্রে কি হবে?
সেক্ষেত্রে অনিবার্য পরিণতি হবে তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব, বা স্থায়ী সংঘাতের পথে অগ্রসর হওয়া। যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে এমনিতেই একটি সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। জাতি এই জায়গায় আপোস করতে পারে না। কারণ এটা জাতির অস্তিত্বের প্রশ্ন। ধর্ম বা নাস্তিকতা নিয়েও একটি ভিন্ন ধারা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়টিও সংবেদনশীল। এই সমস্যা বেশিদিন জিইয়ে রাখা যাবে না। আর নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে দুই প্রধান দলের মধ্যে মত পার্থক্য এখনই সমাধান করা প্রয়োজন। দায়িত্বশীল আচরণ না করলে এক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধী, নাস্তিকবিরোধী আন্দোলন এবং বিরোধীদলের মধ্যে লিখিত বা অলিখিত ঐক্য গড়ে উঠবে ( ইতোমধ্যেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়) সেক্ষেত্রে সরকার বা রাষ্ট্র চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়বে।
এই চ্যালেঞ্জে হয়তো বিরোধী দল জিতবে, কিংবা সরকারি দল জিতবে, কিন্তু হেরে যাবে দেশের জনগণ। কারণ এর মধ্য দিয়ে বাড়বে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা, বাড়বে হানাহানি, বাড়বে গুপ্তহত্যা। আবার তৃতীয় কোনো পক্ষ এলে তারা কোনভাবে দেশকে নিয়ে যাবেন সেটা নিয়ে সন্দেহ থাকতেই পারে। কারণ সব পক্ষই তো ওত পেতে আছে শিকারের লোভে। আর সেই শিকারের টোপ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ধর্ম, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রতা ইত্যাদি।
আমরা যদি স্বাধীনতার ধারা বা চেতনাকে উর্ধে তুলে ধরতে চাই, তাহলে আলোচনা হতে হবে।
আমরা যদি উগ্রতা ও ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দিতে না চাই তাহলে আলোচনা হতে হবে।
আমরা যদি দলমত নির্বিশেষে দেশকে এগিযে নিতে চাই তাহলে আলোচনা হতে হবে।
দেশটা তো জনগণের। কারো কাছে তো চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। যারা ক্ষমতায় আছেন তাদেরও না, যারা ক্ষমতায় নেই তাদেরও না। অতএব মানুষের প্রত্যাশাকে মাথায় নিয়েই কাজ করতে হবে।
©somewhere in net ltd.