নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নময় পথিক। দেখা, শোনা ও জানাগুলিকে ব্লগের পাতায় রেখে যেতে চাই।
৫ম পর্ব পড়তে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস (৫ম পর্ব-আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে নতুন যুদ্ধক্ষেত্র)
আনোয়ার পাশা ১ মিলিয়ন তুর্কি বাহিনীর নেতৃত্বে আছেন আর এই বাহিনীকে উন্নত প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিয়ে জার্মানরা সাহায্য করছে। আনোয়ার পাশা ককেশাস অঞ্চল দিয়ে রাশিয়া আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি ঐ অঞ্চলের মুসলিমদের সাহায্য পাবেন আশা করে এই যুদ্ধকে হোলি ওয়ার বলে ঘোষণা দেন। রাশিয়ান জেনারেলরা এই অঞ্চল দিয়ে কোন পাগল ছাড়া অন্য কেউ আক্রমণ করবে না বলে ধরে নিয়েছিলেন। সত্যিকার অর্থেই এ অঞ্চল খুবই দুর্গম আর রাশিয়ানরা অপেক্ষাকৃত উঁচু পার্বত্য এলাকায় অবস্থান নিয়ে রেখেছে। কিন্তু ২২ ডিসেম্বর, ১৯১৪ আনোয়ার পাশা তার ৩য় আর্মিকে ককেশাস আক্রমণে নিয়োজিত করে। রাশিয়ান জেনারেলদের কথাই সত্য প্রমাণিত হয় যুদ্ধ শুরুর কয়েকদিনের মধ্যে। প্রচন্ড ঠান্ডা এবং রাশিয়ানদের প্রতিরোধে ৭০০০০ তুর্কি সৈন্য ককেশাসের গিরিপথগুলিতে নিহত হয়। ঐ অঞ্চলের মুসলিমদের সাহায্য পাবেন বলে আনোয়ার পাশা যে আশা করেছিলেন তাও ব্যর্থ হয়। এই পরাজয়ের ফলে আনোয়ার পাশার নেতৃত্ব প্রশ্নের সম্মুখীন হয়। এই অবস্থায় আনোয়ার পাশার নিজের নেতৃত্ব ধরে রাখতে প্রয়োজন হয় কোন নতুন একটি ইস্যু তৈরীর। এ অবস্থায় বলির পাঁঠা হয় তুর্কিতে বসবাসরত আর্মেনিয়ানরা। আর্মেনিয়ানরা খ্রিস্টান ধর্মানুসারী এবং সংখ্যায় ১ মিলিয়নের বেশী যারা তুর্কিতে বসবাসরত। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আর্মেনিয়ানদেরকে অটোম্যান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী আখ্যা দিয়ে গণহত্যা চালানোর নির্দেশ দেয়।
আর্মেনিয়ান গণহত্যা
প্রথম দফায় হত্যা করা হয় আর্মেনিয়ান বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে। দ্বিতীয় দফায় সাধারণ আর্মেনিয়ানদেরকে বাধ্য করা হয় শত শত মাইল দূরে সিরিয়ার মরুভূমিতে নির্বাসনের। কিন্তু এটা ছিল মূলত তাদেরকে হত্যা করার নীলনকশা। এই দীর্ঘ মরুপথে কোন খাদ্য-পানি ছাড়া অধিকাংশ আর্মেনিয়ান মৃত্যুবরণ করেন,নারীদের উপর চালানো হয় ধর্ষণ। ১ মিলিয়নের বেশী আর্মেনিয়ান এই গণহত্যায় মারা যান।
ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের ১৮ টি যুদ্ধজাহাজ ১৫ মার্চ, ১৯১৫ ইস্তাম্বুল আক্রমণের জন্য অগ্রসর হয়। তাদের লক্ষ্য ছিল দার্দানেলিস প্রণালী দখল করা এবং বুলগেরিয়াকে অটোম্যানদের থেকে যুক্ত হওয়া থেকে দূরে রাখা। কিন্তু তুর্কি বাহিনীর শক্তিশালী কামানের শেলিং ও জল-মাইনে ১৮ টি যুদ্ধজাহাজের ১০ টি জাহাজই ধ্বংস হয়।এই বিফল আক্রমণের কারণে লর্ড অফ এডমিরালিটি চার্চিলকে পদত্যাগ করতে হয়।
ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের যুদ্ধজাহাজ
এর কিছুদিন পরে ব্রিটিশ ও ফ্রান্সের সৈন্যবাহিনীর সাথে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরা ২৫ এপ্রিল,১৯১৫ তুরস্কের গ্যালোপলিতে অবতরণ করে। তাদের লক্ষ্য ভূমিদখল করে ইস্তাম্বুলের দিকে অগ্রসর হওয়া।
গ্যালোপলিতে অবতরণ
কিন্তু তুর্কি সৈন্যরা দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তুলে। তাদের নেতৃত্বে ছিল দক্ষ অধিনায়করা, এর মধ্যে একজন ছিলেন মোস্তফা কামাল পাশা। যিনি পরবর্তীতে হবেন আধুনিক তুরস্কের কারিগর।
মোস্তফা কামাল পাশা
প্রায় তিন মাস যুদ্ধ করেও ব্রিটিশ, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সৈন্যরা এক একর মাটিও দখল করতে পারেনি। উল্টো প্রায় ১৫০০০০ ব্রিটিশ, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের সৈন্য এই ফ্রন্টে মৃত্যুবরণ করে। অন্যদিকে বুলগেরিয়াও অটোম্যান ও জার্মানীর সাথে মিত্রতা স্থাপন করে।
০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬
র ম পারভেজ বলেছেন: সাথে থাকার জন্য আপনাকে ও ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৭
কাজী আবু ইউসুফ (রিফাত) বলেছেন: জানার আছে অনেক কিছু ; লিখা চালিয়ে যান; ইতিহাস পড়তে আমার ভাল লাগে। ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য।