নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রাসেল মেহেদী পারভেজ। পরিচিত হতে: web.facebook.com/rmparves

র ম পারভেজ

স্বপ্নময় পথিক। দেখা, শোনা ও জানাগুলিকে ব্লগের পাতায় রেখে যেতে চাই।

র ম পারভেজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জনগণের স্বার্থ সুরক্ষায় স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস অতীব জরুরী

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:১৪



স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা করে আসছে। এসব মামলার প্রায় ৯০ ভাগই রাষ্ট্রপক্ষ হেরে যায়। এর মধ্যে অধিকাংশই ভূমিসংক্রান্ত মামলা রয়েছে। অধিকাংশ মামলায় বাদি প্রভাবশালী হওয়ায় তারা সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলে রাখে। আর এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে সরকার অভিযান চালালে প্রতিপক্ষ আদালতে মামলা ঠুকে দেয়। তখন তা চলতে থাকে অনন্তকাল। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তথ্যপ্রমাণ আদালতে যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার পক্ষ হেরে যায়, ফলে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেহাত হয়ে যায়। দেশের আদালতগুলোতে সরকার নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের এসব পদে নিয়োগ দেয়ার ফলে এই ধারা চলমান রয়েছে। যে সরকার ক্ষমতায় আসে তারাই তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের ওই সব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। আবার এক সরকারের মেয়াদ শেষ হলে তাদেরও নিয়োগ বাতিল করে দেয় পরবর্তী সরকার। এই অপসংস্কৃতি রোধে প্রয়োজন স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস।

২০০২ সালে প্রথম অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর এ সার্ভিস গঠনে পুলিশ ও আইন কমিশনের মতামত নিয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু অজানা কারণে মন্ত্রিসভার বৈঠক থেকে এ প্রস্তাব ফেরত পাঠানো হয়। পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই সার্ভিস গঠনের পুনরায় উদ্যোগ নেয়। এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন করে অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হয়। কিন্তু সে সময়ে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এই অধ্যাদেশ অনুমোদন সম্ভব হয়নি। পরবর্তী মহাজোট সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ৩০ সংসদ অধিবেশনের মধ্যে এই অধ্যাদেশ অনুমোদন না করায় এটি বাতিল হয়ে যায়। পাশাপাশি এ অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবীরা। এই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট অ্যাটর্নি সার্ভিস অধ্যাদেশের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন। এর পর থেকেই থমকে দাঁড়ায় অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠন প্রক্রিয়া।

বর্তমান সরকার প্রসিকিউটর অ্যান্ড অ্যাটর্নি সার্ভিস আইন -এর খসড়া তৈরি করে। খসড়া আইনে বলা হয়েছে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি অনার্স, এলএলএম ডিগ্রিধারী ও বার অ্যাট ল' ডিগ্রি অর্জনকারীরাই অ্যাটর্নি সার্ভিসে নিয়োগে পরীক্ষা দিতে পারবেন। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে তাদের পরীক্ষা দিতে হবে। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা প্রথমে সহকারী জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ পাবেন। এ পদে পাঁচ বছর চাকরি করার পর তারা যুগ্ম জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে পদোন্নতি পাবেন। এ পদে তাদের চাকরির বয়স তিন বছর পূরণ হওয়ার পর অতিরিক্ত জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ পাবেন। পরে তারা পদোন্নতির মাধ্যমে জেলা অ্যাটর্নি হিসেবে নিয়োগ পাবেন। মামলার ভিত্তিতে তাদের কোনো টাকা দেওয়া হবে না। সরকারি কর্মকর্তাদের মতোই তারা বেতন-ভাতা, ছুটি, ভবিষ্যৎ তহবিল, আনুতোষিক, পেনশন ও চাকরির অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এই সার্ভিসের যে কোনো সদস্যকে সরকার অন্যত্র সমপর্যায়ভুক্ত পদে সাময়িকভাবে প্রেষণে নিয়োগ করতে পারবে। তাদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বদলি করারও বিধানও ছিলো এ আইনে। এ সার্ভিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির অবসরের বয়সসীমা হবে ৬০ বছর।

সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের আইন প্রণয়নকারী বিভাগ প্রস্তাবিত খসড়াটি তৈরি করেছিল। এরপর গত বছর সেটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ফের মন্ত্রণালয়ে ফেরত পাঠানো হয়। এরপর থেকে থমকে গেছে সেই আইন তৈরির কাজটি। কবে নাগাদ এই আইনটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে তা অনিশ্চিত। জনগণের স্বার্থ সুরক্ষায় প্রসিকিউটর অ্যান্ড অ্যাটর্নি সার্ভিস আইন -এর দ্রুত বাস্তবায়ন অতীব জরুরী।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.