নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নময় পথিক। দেখা, শোনা ও জানাগুলিকে ব্লগের পাতায় রেখে যেতে চাই।
(ছবি : অন্তর্জাল)
আগের পর্বগুলি :
আইনের সহজ পাঠ - ১ : যৌন হয়রানি বন্ধে হাইকোর্টের দিকনির্দেশনা
আইনের সহজ পাঠ - ২ : রিটঃ মৌলিক অধিকারের রক্ষাকবচ।
কিছুদিন আগে কাছের এক বন্ধু ব্যাংক চেক ডিস্অনার সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে এই বিষয়ে করণীয় জানতে চায়। বন্ধুকে মৌখিকভাবে পরামর্শ দিয়েছিলাম। এরপর মনে হলো পরামর্শগুলিকে লিখিতভাবে ব্লগে দেই, যাতে করে পরবর্তীতে অন্যকেউ পরামর্শ চাইলে ব্লগের লিঙ্ক দিয়ে দিবো এতে করে অামার ব্লগের ট্রাফিকও বাড়বে আর অন্যরাও সহজভাবে ব্যাংক চেক ডিস্অনার হলে কি করতে হবে তা জানবে।
কোন ব্যক্তি তার ব্যাংক একাউন্ট হতে অন্য এক ব্যক্তিকে ৫,০০,০০০/=টাকা পরিমাণ অর্থ পরিশোধের জন্য একটি চেক দিয়েছেন। কিন্তু একাউন্টে যদি ঐ পরিমানের চেয়ে কম টাকা থাকে এবং চেকটি যদি ব্যাংক অপরিশোধিত অবস্থায় ফেরত দেয় তাহলে চেকদাতা একটি অপরাধ সংঘটিত করেছেন বলে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য তিনি এক বৎসর মেয়াদ পর্যন্ত দন্ডে দন্ডিত অথবা চেকে বর্ণিত অর্থের তিনগুন পরিমাণ অর্থ দন্ডে দন্ডিত হবেন অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্টের (এনআই অ্যাক্ট) ১৩৮, ১৪০ ও ১৪১ ধারায় তহবিল অপর্যাপ্ততার কারণে ব্যাংকের চেক প্রত্যাখ্যাত হওয়ার অপরাধের জন্য আইনি প্রতিকারের বিধান রাখা হয়েছে।প্রতিটি চেকের মেয়াদ থাকে ৬ মাস অর্থাৎ চেকে যে তারিখটি বসাবেন, সেই তারিখ থেকে পরবর্তী ৬ মাস পর্যন্ত উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি ব্যংক থেকে টাকা তুলতে পারবেন। মনে করুন ৫,০০,০০০/=টাকার এই চেকটিতে তারিখের স্থানে লেখা আছে ১/৪/২০১৮ তাহলে এই চেকটি দিয়ে আপনি ৩০/১০/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত টাকা তুলতে পারবেন। আর এই ৬ মাসের মধ্যে যদি আপনি চেকটি ব্যংকে জমা না দিতে পারেন, তবে উক্ত চেকটি দিয়ে আপনি আর টাকা তুলতে পারবেন না । আপনি চেকটি ৬ মাস মেয়াদের মধ্যেই অর্থাৎ ১/৫/২০১৮ তারিখে ব্যংকে জমা দিলেন। কিন্তু ব্যংক থেকে আপনাকে বলা হলো উক্ত ব্যংক একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই এবং তারা আপনাকে চেকটি ফেরত দিয়ে দিল। এখন আপনি নিম্নোক্তভাবে ব্যবস্থাগ্রহণ করবেন-
প্রথমে উক্ত ব্যাংক থেকে একটি চেক ডিস্অনার রসিদ নিবেন। উক্ত ডিস্অনার রসিদে চেকটি ডিস্অনার হওয়ার তারিখ এবং ডিস্অনার হওয়ার কারন উল্লেখ থাকবে এর পরে আপনাকে উক্ত ডিস্অনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদান কারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে। উক্ত নোটিশে আপনি তাকে অবহিত করবেন যে, তার প্রদত্ত চেকটি ব্যংক থেকে ডিস্অনার হয়েছে এবং উক্ত নোটিশে তাকে আল্টিমেটাম দিতে হবে যেন সে আপনার পাওনা টাকা নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করে দেয় অন্যথায় আপনি তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। ধরুন আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৮ তারিখে অর্থাৎ চেকটি ডিস্অনার হওয়ার ১০ দিন পরে আপনি চেক দাতার বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠালেন। লিগ্যাল নোটিশ পাঠানের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত চেক প্রদানকারীকে আপনার পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য সময় দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে আপনি তার বিরুদ্ধে চেকের মামলা করতে পারবেন না। অর্থাৎ ১০/৬/২০১৮ তারিখ পর্যন্ত আপনাকে অবশ্যই চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের জন্য সময় দিতে হবে এবং অন্তত ৩০ দিন অপেক্ষা করতে হবে। ৩০ দিন সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও যদি, চেক প্রদানকারী আপনার পাওনা টাকা পরিশোধ না করে তবে এবার আপনি চেক প্রদানকারীর বিরুদ্ধে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন।যে দিন থেকে আপনার চেকটি মামলা করার অধিকারী হলো সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে অবশ্যই মামলাটি করতে হবে অন্যথাই আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না। আপনি লিগ্যাল নোটিশটি পাঠিয়েছেন ১০/৫/২০১৮ তারিখে আর চেকটি মামলা করার অধিকারী হল ১০/০৬/২০১৮ তারিখে। আপনাকে ১০/০৭/২০১৮ তারিখের মধ্যে অবশ্যই নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে চেক ডিজনারের জন্য মামলা করতে হবে। আর যদি এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি মামলা না করতে পারেন তবে আপনি আর নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে আপনি চেকের মাধ্যমে টাকা আদায়ের জন্য মানি স্যুটের মামলা করতে পারবেন। এই মামলা অনেক দুর্বল একটি মামলা এবং এই মামলা করে টাকা আদায় করা অনেক সময় সাধ্য ব্যপার।
তাহলে সংক্ষেপে যদি বলি একটি চেক দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হলে প্রথমে আপনাকে ব্যাংক থেকে চেকটি ডিস্অনার করাতে হবে । উক্ত ডিস্অনারের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আপনাকে চেক প্রদানকারীর বরাবর একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাতে হবে । লিগ্যাল নোটিশ যেদিন পাঠাবেন সেই দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিন আপনি চেক প্রদানকারীকে টাকা পরিশোধের সময় দিতে হবে । এবং যদি এই ৩০ দিনের মধ্যে চেক প্রদানকারী আপনার টাকা পরিশোধ না করতে পারে তবে ৩০ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে অবশ্যই আপনি চেকটি দিয়ে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট আইনে মামলা করতে হবে।
১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০১
র ম পারভেজ বলেছেন: মৃত ব্যক্তির চেক দিয়ে মৃত ব্যক্তির ভাই বোনদের উপর মামলা করার বিষয়টি অস্পষ্ট।
যাই হোক, যেহেতু চেকের মালিক ৮ মাস আগেই মারা গেছেন সুতরাং, ঐ চেক দিয়ে এনআই এ্যাক্টে মামলা করার পথ বন্ধ।
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪৭
কাওসার চৌধুরী বলেছেন:
উপকারী পোস্ট। +++
১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০২
র ম পারভেজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৭
জুজুগাগা বলেছেন: ধন্যবাদ র ম পারভেজ সাহেব।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৭
র ম পারভেজ বলেছেন: ধন্যবাদ, জুজুগাগা ভাই।
আমি কিন্তু সাহেব না, বাঙ্গালী কৃষকের উত্তরসূরী।
৪| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।
১৩ ই নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:০৮
র ম পারভেজ বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:২২
জুজুগাগা বলেছেন: মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া স্বাক্ষরিত চেক দিয়ে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী তার এক আতিয় দিয়ে আত্মসাদের উদ্দেশ ৮ মাস পর মামলা করতে চায় মৃত ব্যক্তির ভাই বোনদের উপর।
মৃত ব্যক্তি ব্যবসায়ী হওয়া সব সময় স্বাক্ষরিত চেক থাকত।
মৃত ব্যক্তির নিরিহ ভাই বোন চিন্তিত বিষয়টি নিয়ে
ভাল পরর্মশ দিলে খুশি হব।