নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্নময় পথিক। দেখা, শোনা ও জানাগুলিকে ব্লগের পাতায় রেখে যেতে চাই।
”জানি- তবু জানি
নারীর হৃদয়- প্রেম- শিশু- গৃহ- নয় সবখানি;
অর্থ নয়, কীর্তি নয়, স্বচ্ছলতা নয়-
আরো-এক বিপন্ন বিষ্ময়
আমাদের অন্তর্গত রক্তের ভিতরে
খেলা করে;
আমাদের ক্লান্ত করে;
ক্লান্ত-ক্লান্ত করে ;
লাশকাটা ঘরে
সেই ক্লান্তি নাই;
তাই
লাশকাটা ঘরে
চিৎ হ’য়ে শুয়ে আছে টেবিলের ’পরে।”
স্কুলে এক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়ে জীবনানন্দ দাশের কবিতা সংগ্রহ উপহার পেয়েছিলাম। কবিতাগুলি নিয়ে নাড়া-চাড়া করতে গিয়ে উপরের পংক্তিগুলি মাথাতে গেঁথে যায়। এরপরে সময়ের সাথে সাথে তাঁর আরোও কতগুলি কবিতা আমার নিত্যপাঠ্য হয়ে যায়, আজ কবির মৃত্যুদিনে তাঁকে স্মরণ করছি। ১৪ই অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে এক ট্রাম দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন এবং ২২শে অক্টোবর, ১৯৫৪ তারিখে তাঁর মৃত্যু হয়। অনেকে ধারণা করেন আত্মহত্যা স্পৃহা ছিল দুর্ঘটনার মূল কারণ। তিনি প্রায়ই ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা ভাবতেন। ট্রাম দুর্ঘটনায় কোলকাতায় মৃত্যুর সংখ্যা এখন অবধি মাত্র একটি। তিনি আর কেউ নন, কবি জীবনানন্দ দাশ। জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু এবং তাঁর ‘আট বছর আগে একদিন’ কবিতাটির মধ্যে কেমন জানি একটি মিল রয়েছে –
শোনা গেল লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে;
কাল রাতে- ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ
মরিবার হ’লো তার সাধ।
বধু শুয়েছিলো পাশে- শিশুটিও ছিলো;
প্রেম ছিল, আশা ছিল- জ্যোৎস্নায়,- তবু সে দেখিল
কোন ভূত? ঘুম ভেঙে গেলো তার?
অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল- লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার ।
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি !
রক্তফেনামাখা মুখে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড় গুঁজি
আঁধার ঘুঁজির বুকে ঘুমায় এবার;
কোনোদিন জাগিবেনা আর।
রূপসী বাংলার কবি ১৮৯৯ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি বরিশাল জেলায় জন্মগ্রহন করেন, জীবনানন্দকে ছাড়া বাংলার প্রকৃতি অধরা। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শক্তিশালী এই লেখক একাধারে কবি, অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক, গল্পকার, উপন্যাসিক, গীতিকার। তার কবিতায় বাংলার রূপ, প্রকৃতি, মানুষের জীবনধারা, মাটি, তাদের কর্ম, দুঃখ-কষ্ট উঠে এসেছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবি ততটা জনপ্রিয়তা না পেলেও মৃত্যুর পর তার সৃষ্টিশীলতাই তাকে শ্রেষ্ঠ কবির মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে। তাঁর লেখা আমার প্রিয় কবিতা দিয়ে কবিকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি –
হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর কেঁদো নাকো উড়ে-উড়ে ধানসিড়ি নদীটির পাশে!
তোমার কান্নার সুরে বেতের ফলের মতো তার ম্লান চোখ মনে আসে;
পৃথিবীর রাঙা রাজকন্যাদের মতো সে যে চ’লে গেছে রূপ নিয়ে দূরে;
আবার তাহারে কেন ডেকে আনো? কে হায় হৃদয় খুঁড়ে
বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
হায় চিল, সোনালি ডানার চিল, এই ভিজে মেঘের দুপুরে
তুমি আর উড়ে-উড়ে কেঁদোনাকো ধানসিড়ি নদীটির পাশে।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৩
র ম পারভেজ বলেছেন:
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১০
অধীতি বলেছেন: ওনার কবিতাগুলো আমাকে মোহবন্ধ করে ফেলে।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৪
র ম পারভেজ বলেছেন: আমাকেও!!!
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: জীবনানন্দ আমার প্রিয় কবি।
একসময় তার অনেক কবিতা আমার মুখস্ত ছিলো।
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৫
র ম পারভেজ বলেছেন: তাঁর ২-৩টি কবিতা আমার মুখস্থ।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৩:৪০
নেওয়াজ আলি বলেছেন: শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা । বর্তমান বাংলার রূপ দেখে কষ্ট পেতেন
১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৪৬
র ম পারভেজ বলেছেন: সহমত।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:০১
একাল-সেকাল বলেছেন:
উনার প্রয়ানে আমরা ধর্ষিতা বাংলার কবিতা থেকে বঞ্চিত হলাম।