![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ভাল কিনা জানি না তেব আমি মন্দ নই।
এইটি কোন গল্প নয় (আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে)। গত ১০-০১-২০১৩ ইং সকাল বেলা ৮ ঘটিকার পূর্বেই অফিসে আসি। প্রচন্ড ঠান্ডা যা সরনকালের রেকর্ড ভেঙ্গেছে দীর্ঘ ৫০ বছরের অধিক সময়কে। আমি চা খাওয়ার জন্য বলি এমনি সময় আমার মোবাইল ফোনটি বেজে উঠে পকেট থেকে বের করে দেখি আমার ইউনিয়ন এর চেয়ার ম্যান সাহেবের ফোন। খোব বেশি কথা না বলে ছোট্ট দুটি কথা বলেন "আব্বা মারা গেছে সবাইকে জানাই দিস" তখনই আমার শরির শীতল হয়ে আসে। কারন আমি আমার বাবাকে অতি অল্প সময়ে হারিয়েছি যা আমার বাবাকে কোনদিনই মনে পড়েনা। কিন্তু বড় হয়ে মার কাছে শুনেছি মৃত এই ব্যাক্তিটি আমার বাবার অতি কাছের লোক ছিলেন। আজ আমার মাও বেচে নেই। মা গত হয়েছেন দীর্ঘ ৩.৫ বছর (১৪ আগষ্ট ২০০৯) পূর্বে। উল্লেখ্য চেয়ারম্যানের বাবা আমার বাবা তারা ছিলেন মামাত ফুফাত ভাই। শুধু যে ভাই ছিল তাই নয় তাদের অন্তরঙ্গ ভাব দেখলে অনেকেই হিংসায় ফেটে পড়তেন। সেই ভদ্র লোকের নাম 'মাতু মিয়া' আমরা মাতু কাকা বলে ডাকতাম। ছোট সময় ততটা বুঝিনি যখন বুঝতে শিখেছি আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় দূরত্ব বেড়েছে তখন খোব কম দেখা হতো যখন দেখা হতো আমারবাবা আর মাতু কাকার নিজের গল্প বলে এক পর্যায়ে কেদে ফেলতেন চোখের পানি গড়িয়ে পড়ত অবলিলায়। এই কাকার কাছে বুঝতে শিখেছি আমার বাবা কতটা মহান ছিলেন। আমি স্যালুড জানাই মাতু কাকাকে আমার বাবার গুনাগুনের কথাগুলো স্বীকার করে আমাকে জানিয়ে যাওয়ার জন্য। হয়তো কোনদিন বাবার সম্পর্কে জানতেই পারতাম না এই কাকার মুখে না শুনলে। সত্যিকার অর্থে আমি আবেগে অনেক কিছুই বলে ফেলেছি। চলেগেছি অন্য একদিকে। যা বলতে চেয়েছিলাম তা হলো- যখন শুনলাম মাতু কাকা মারা গেছেন তখন বাজে ৮.৪৫ মিঃ আমি যখন অফিসে অনুমতি চাইলাম যে বাড়ি যাব তখন কর্তৃপক্ষ বলেন, হাতে অতি জরুরী কাজ যা আছে সেরে চলে যাও। আমি ঠিক তাই করলাম। অফিস থেকে যখন বের হই তখন বাজে ১০.৩০ মিঃ গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতেই গাড়ী পেয়ে গেলাম। দুঃখের বিষয় হলো রাস্তায় এত জ্যাম ছিল যে আমাকে সায়দা বাজ পৌছতে অনেক সময় লেগে যায় তখন প্রায় ১.০০ বাজে কুমিল্লার বাসের জন্য অপেক্ষায় থাকতেথাকতে অবশেষে গাড়ী ছাড়ে ২.০০ ঘটিকায় সারাটা রাস্তা উপর অলাকে স্বরন করতে করতে যেতে থাকি। অতি দুঃখের বিষয় জায়নামাজের সময় পার হয়ে যায় আমাদের উপশহরে পৌছতে পৌছতেই অবশেষে নামাজে অংশগ্রহন করতে পারিনি। শেষবারের মতো একবার দেখতে পারিনি। সারাটা রাত নিজের কাছে মনে হয়েছে আমি যেন একটা বিরাট অন্যায় করেছি আর ভাবছিলাম আমরা কোন দেশে বসবাস করছি। আমার কর্মস্থল এবং আমার গ্রামের বাড়ীর দূরত্ব মাত্র ১৩০ কিলোমিটার যা বাসে গেলে সময় লাগার কথা যদি ঘন্টায় ৪০ কিঃমিঃ চলে তবে লাগার কথা ৩.১০ মিনিট অথচ আমার সময় লেগেছে ৮.১৫ মিনিট। শুক্রবার দিন (১১-০১-১৩ তারিখে) যখন ঢাকায় ফিরি বাড়ি থেকে বের হই ৩.০০ সায়দাবাজে আসতে সময় লেগেছে ৮.১০ মিনিট এই যদি হয় আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থা তবে আমরা কিভাবে যাতায়াত করব। অথচ বহিবিশ্বে মানুষ তার কার্যালয়ের এবং অফিসের দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার এর চেয়েও বেশী হয়ে তাকে তারা এই দূরত্ব যেতে সময় লাগার কথা ১.২০ থেকে ১.৪০ মিনিট। বহিঃবিশ্বে যদি সম্ভব হয় তবে বাংলাদেশে কেন সম্ভব নয়? এই বাংলাদেশটা একজনের বাপের দেশ আরেকজনের তার স্বামীর দেশ তবে কেন তাদের এত সমস্যা থাকার নয়। দেশটা গড়ে তুলোক তাদের বাপের কিংবা তাদের স্বামীর মতো করে। আমরা একটু নির্বিগ্নে চলাচল করতে চাই, শান্তিমতো যাতায়াত করতে চাই সেই জন্য সাধারন জনতার কতটুকু মূল্য দিতে হবে। আজ বাঙ্গালী প্রস্তুত আছে যে কোন মূল্যে নির্বিগ্নে বাড়ি ফিরতে, আমরা আমাদের বাবা-মা, ভাই-বোনদের সঠিক সময়ে নিয়ে যেতে চাই চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা সেবাদান কেন্দ্রে। আমরা চাইনা কোন মানুষ যেন হাসপাতালে পৌছার আগেই অসুস্থ ব্যক্তিটির মৃতু্য হউক রাস্তায় এম্বুলেন্স কিংবা যত্রতত্র।
©somewhere in net ltd.