![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে , আমি ও সেই দলের সমর্থক হয়ে যাই ।
একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় কঠোর ভাষায় সমালোচনা করা হইয়াছে সরকারি ও বিরোধী দলের। রক্ষা পান নাই এই দুইটি দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দও। সভায় বলা হইয়াছে যে, দেশে এখন রাজনীতির নামে অপরাজনীতি চলিতেছে। এই অপরাজনীতির কারণে দেশের মালিক জনগণ 'প্রজা' হইয়া গিয়াছেন, আর যাহাদের সেবক হইবার কথা তাহারা 'রাজা' বনিয়া গিয়াছেন। এই অবস্থার অবসান ঘটাইবার জন্য 'তৃতীয় শক্তির' উত্থানের আহ্বান জানানো হইয়াছে। সমালোচনা দোষণীয় নহে। বরং ইহাকে গণতন্ত্রের অন্যতম চালিকাশক্তিও বলা যাইতে পারে। কিন্তু সেই সমালোচনা যখন গণতন্ত্রের সীমা লঙ্ঘন করিয়া গণতন্ত্রকেই বধ করিতে উদ্যত হয়, তখন উদ্বিগ্ন না হইয়া উপায় থাকে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সভায় উপস্থিত রাজনীতিক ও সুশীল সমাজের কোনো কোনো সদস্য শুধু 'তৃতীয় শক্তি'র উত্থানের আহ্বান জানাইয়াই ক্ষান্ত হন নাই, একই সাথে ওয়ান-ইলেভেনের চাইতে ভয়ঙ্কর পরিণতির কথাও স্মরণ করাইয়া দিয়াছেন। বলা বাঞ্ছনীয় যে, তৃতীয় শক্তি বলিতে যাহাদের বুঝানো হইয়া থাকে, তাহারাইতো আসলে বিশ্বব্যাপী বিশেষ করিয়া স্বল্পোন্নত দেশসমূহে প্রথম শক্তি। রাজনীতিতে এই শক্তি কখনই জনগণের অভিপ্রেত নয়। অন্যদিকে, দেশে সক্রিয় রাজনৈতিক ধারার মধ্যেই তৃতীয় শক্তি রহিয়াছে। তাহা সত্ত্বেও এখনকার মত নিকট অতীতেও জনগণের ভোটে নির্বাচিত নেতৃত্বের বিপরীতে নানাভাবে প্ররোচিত করা হইয়াছে অগণতান্ত্রিক ও অরাজনৈতিক শক্তিকে। ইহার মারাত্মক কুফলও ভোগ করিতে হইয়াছে জাতিকে। যতো সীমাবদ্ধতাই থাকুক, গণতন্ত্রহীনতা যে কখনই গণতন্ত্রের বিকল্প হইতে পারে না— তাহা এই ধরনের প্ররোচনা যাহারা দেন তাহাদের অজানা থাকিবার কথা নহে। সর্বোপরি, ভুলিয়া গেলে চলিবে না যে, যাহাদের সমালোচনা করা হইতেছে, তাহারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করেন নাই। বরং জনগণই বারবার তাহাদের নির্বাচিত করিয়াছে। যাহারা কথায় কথায় জনগণের দোহাই দেন, কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করেন জনগণের অধিকারের জন্য— জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতি তাহাদের এই অবজ্ঞা কেন— তাহা আমরা বুঝিতে অক্ষম।
জাতি হিসাবে আমরা যে একটি সংকটকাল অতিক্রম করিতেছি তাহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। এই সংকটের মূলে রহিয়াছে আসন্ন নির্বাচন লইয়া অনিশ্চয়তা। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণ উপায়ে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের বিকল্প নাই। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়াছে নির্বাচন কাহার অধীনে অনুষ্ঠিত হইবে তাহা লইয়া। এই সমস্যাও নূতন নহে। বস্তুত নব্বইয়ে নবপর্যায়ে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা শুরু হইবার পর হইতেই এই সংকট চলিয়া আসিতেছে। নব্বইপরবর্তীকালে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনে বিজয়ী হইয়া পর্যায়ক্রমে যাহারা সরকার গঠন করিয়াছে এবং বিরোধী দলের আসন অলঙ্কৃত করিয়াছে, নির্বাচনের প্রশ্নে সেই প্রধান দুইটি দল একে অপরের উপর আস্থা রাখিতে পারিতেছে না। পারস্পরিক আস্থার এই সংকটই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে অনিবার্য করিয়া তুলিয়াছিল। আবার অনির্বাচিত এই সরকারের ভূমিকা ব্যাপক বিতর্ক ও ক্ষোভেরও জন্ম দিয়াছে। মূলত এই অজুহাতে ইতিমধ্যে সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হইয়াছে। এখন আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রাখিয়া একপক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে জোরালো অবস্থান গ্রহণ করিলেও অন্যপক্ষ ইহার বিরুদ্ধে অনড় অবস্থান গ্রহণ করিয়াছে। ফলে দেখা দিয়াছে অনিশ্চয়তা। ইহা লইয়া জনমনে হতাশা আছে। আছে উদ্বেগ-উত্কণ্ঠাও। বাংলাদেশের মতো নবীন গণতন্ত্রের জন্য ইহা যে অস্বাভাবিক কিছু নহে— গণতন্ত্রের ইতিহাস ও বিকাশ সম্পর্কে যত্সামান্য ধারণা আছে এমন ব্যক্তিমাত্রই তাহা জানেন।
লক্ষণীয় যে, ব্যক্তিগত হতাশা কিংবা অন্য কোনো কারণে জনগণের নামে যাহাদের কঠোর ভাষায় সমালোচনা ও গালমন্দ করা হইতেছে, জনগণ বরাবরই তাহাদের ভোট দিয়াছে। ক্ষমতার পালাবদল ঘটিলেও সিংহভাগ ভোটই পড়িতেছে এই দুইটি দলের বাক্সে। নব্বইপরবর্তী গত দুই দশকের উপর্যুক্ত বাস্তবতার নিরিখে ইহা সহজেই অনুমেয় যে, নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে অরাজনৈতিক শক্তির উত্থানের কোনো অবকাশ নাই। তবে কেহ যদি তাহা আমদানি করেন কিংবা ছলে-বলে-কৌশলে চাপাইয়া দেন জনগণের উপর— তাহা ভিন্ন কথ
Click This Link
©somewhere in net ltd.