নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গনতন্ত্র ও সুশাসনের পক্ষে ।

শাসক দল ।।

ক্ষমতাসীন দল

যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে , আমি ও সেই দলের সমর্থক হয়ে যাই ।

ক্ষমতাসীন দল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামে বিয়ের পূর্বে কনে দেখার প্রয়োজনীয়তা

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯

বিয়ে ও দাম্পত্য জীবন মুসলিম নর-নারীর জন্য একটি পবিত্রময় বিষয়। দাম্পত্য জীবনে পারস্পরিক মিলমিশ, প্রেম-ভালবাসা ও সতীত্ব বজায় রাখা মুসলিম নর-নারীর জন্য অত্যাবশ্যকীয়। আর একাজ বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এবং পার্থিব জীবনে সুখ-শান্তি ও সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য বিয়ের পূর্বে কনে দেখা, সার্বিক খোঁজখবর নেয়া জরুরী। কেননা, নিছক ভোগ-চাহিদা পুরণের জন্য বিয়ে নয়; এটি একটি অমূল্য বাঁধন। যা দু’টি হৃদয়কে একই সূত্রে গ্রথিত করে নতুন একটি জীবনধারা উপহার দেয় এবং সমাজে স্বীকৃত মর্যাদা প্রাপ্ত হয়ে প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পায়। এজন্য সভ্যতা ও শালীনতা সহকারে বিয়ের পূর্বে কনে দেখা প্রয়োজন। যাতে জীবন শুরুর পূর্বেই জীবন সঙ্গিনী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় ধারণা উপলব্ধি করা যায়। কনে সম্পর্কে মনের খুঁতখুঁতে ভাব ও সন্দেহ দূর হয়ে যায়, দ্বিধা-দ্বন্দ্বের অবসান ঘটে। জীবনের এই অমূল্য অধ্যায় সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘মেয়েদের ৪টি গুণের প্রতি বিবেচনা করে বিয়ে করা হয়, (১) তার সম্পদের প্রতি, (২) তার বংশ মর্যাদার প্রতি, (৩) তার রূপ ও সৌন্দর্যের প্রতি এবং (৪) তার দ্বীনদারীর প্রতি বিবেচনা করা হয়। কিন্তু তোমরা দ্বীনদার মেয়েকেই প্রাধান্য দাও। তোমার হাত ধূলায় ধূসরিত হোক।’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৩০৮২)।

অত্র হাদীছে দ্বীনদার মেয়ে বিয়ে করার আদেশ দেয়া হয়েছে। এজন্য কনে দেখার আগে পাত্রীর দ্বীনদারী জীবনযাপন সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া উচিৎ। খবর আশাব্যঞ্জক হলে কনে দেখার পয়গাম পাঠাতে হবে। যদি পাত্রীপক্ষ সম্মতি প্রকাশ করে তখন কনে দেখতে যেতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিবে, তখন তাকে দেখতে কোন গুনাহ হবে না। তবে কেবল বিয়ে করার উদ্দেশ্যেই দেখতে হবে, যদিও মেয়ে জানতে না পারে।’ (মুসনাদ আহমাদ হা/২৩৬৫০)। রাসূল (সা) অন্যত্র বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন যদি তার পক্ষে তার এমন কোন অঙ্গ দেখা সম্ভবপর হয় যা তাকে বিয়ের দিকে ডাকে, তখন সে যেন তা দেখে।’ (আবু দাউদ, মিশকাত, হা/৩১০৬)।

উপরোক্ত হাদীছদ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, বিয়ের আগে কনে দেখা কর্তব্য। বিয়ের আগে কনে দেখার কাজ করা হলে ছেলে বিয়ের প্রতি আগ্রহী হয়ে থাকে। বিশেষ প্রয়োজনে কনেকে না জানিয়ে অগোচরে বা সামনাসামনি কনে দেখানো যেতে পারে। তবে জানিয়ে বা না জানিয়ে কনে দেখানোর উদ্যোগ নিলে কয়েকটি বিষয়ের প্রতি সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, পাত্র-পাত্রী দু’জন দু’জনের জন্য উপযুক্ত কিনা এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক হতে পারে কিনা। সম্ভাবনা বিবেচিত হলে, পাত্রী দেখার প্রস্তাব দেয়া বা পাত্রী দেখানোর উদ্যোগ নিতে হবে। পাত্র-পাত্রী কারোর পক্ষে সম্ভাবনা না থাকলে সেক্ষেত্রে কনে দেখানোর আয়োজন করা উচিৎ নয়। আমাদের মনে রাখা দরকার পাত্র-পাত্রীর বিস্তারিত খোঁজখবর নেয়া ও কনে দেখানোর ব্যবস্থা করা ইসলামের বিধান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য খুবই উপকারী। মুগীরা ইবনু শু’বা (রা) বলেন, ‘আমি একটি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলাম। রাসূল (সা) আমাকে বললেন, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাকে দেখে নাও। কারণ এই দর্শন তোমাদের মধ্যে প্রেম-ভালবাসা সঞ্চার করবে।’ (আহমদ, তিরমিযী, নাসাঈ, দারেমী, মিশকাত হা/৩১০৭)। রাসূল (সা) আরও বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ কোন নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তখন যদি তার পক্ষে তার এমন কোন অঙ্গ দেখা সম্ভবপর হয় যা তাকে বিয়ের দিকে ডাকে, তখন সে যেন তা দেখে।’ (আবু দাউদ, মিশকাত হা/৩১০৬)।

উপরোক্ত হাদীছ সমুহে শুধু কনে দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কনে দেখার সময় কোন কোন অংশ দেখা যাবে, তার পরিমাণ, মাত্রা বা সীমা নির্দেশ করেনা। এনিয়ে সামান্য মতভেদ থাকলেও এব্যাপারে সবাই একমত যে, কনে সম্পর্কে সম্যক ধারণা করা এবং বিয়ে করা না করা সম্পর্কে যতখানি ও যেভাবে দেখলে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব হয় ততখানি ও সেভাবে দেখা জায়েজ আছে। আর তা হলো মুখমণ্ডল, হস্ত ও পায়ের পাতা; এর থেকে বেশী নয়। আমাদের সমাজে পাত্রীকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা, হাঁটতে বলা, হাসতে বলাসহ নানান অহেতুক প্রশ্ন করে হাস্যকর পরিবেশের সৃষ্টি করার রেওয়াজ প্রচলিত আছে। কোন কোন ক্ষেত্রে পাত্রীকে বিয়ের পণ্যের মত জ্ঞান করে সবার সামনে অনেক কিছু করতে বাধ্য করা হয়ে থাকে। যা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। অনেক ক্ষেত্রে পাত্রকেই কেবল পাত্রী দেখানোর গরজ মনে করা হয়, পাত্রীও তার পাত্র দেখে নিতে পারবে এটি ভাবা হয়না। এব্যাপারে পাত্রীকে অভয় দেয়া বা বুঝিয়ে দেয়া প্রয়োজন।

পিতা-মাতা তথা অভিভাবকদের জন্য দু’টি দিক খুবই দায়িত্ববান হওয়া দরকার। সন্তান লালন-পালনে সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। সন্তানকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে হবে। বিয়ের উপযুক্ত বয়স হলেই বিয়ে দিতে হবে। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘যার কোন সন্তান জন্ম লাভ করে সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব-কায়দা শিক্ষা দেয়। যখন সে বালেগ হয় তখন যেন তার বিবাহ দেয়। যদি সে বালেগ হয় এবং তার বিবাহ না দেয় তাহলে সে কোন পাপ করলে, সে পাপ তার পিতার উপর বর্তাবে।’ (বায়হাকী, মিশকাত হা/৩১৩৮)।

আরেকটি বিষয় সম্পর্কে আমরা সচেতন নই, বরং অনেক ক্ষেত্রে জেদাজেদি বা অবুঝের কারণে ভুলটা করে থাকি। কোন মেয়ে বা ছেলের কোথাও বিয়ের কথাবার্তা চলছে বা কেউ বিয়ের প্রস্তাব পেশ করেছে, জেনেও আমরা নতুন প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়ে থাকি। যা ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। রাসূল (সা) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন, অপর ভাইয়ের দেয়া প্রস্তাবের উপর নতুন প্রস্তাব পেশ না করে, যতক্ষণ পর্যন্ত সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান না করে কিংবা অনুমতি প্রদান না করে।’ (বুখারী, মুসলিম)।

অন্য হাদীছে আছে, ‘কেউ যেন তার ভাইয়ের প্রস্তাবের উপর নতুন প্রস্তাব না করে, তবে সে তাকে অনুমতি দিলে প্রস্তাব পেশ করতে পারে।’ (মুসলিম, মিশকাত হা/২৮৫)



Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.