নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কল্পনার রাজত্ব(Realm of imagination)

A journey of a thousand miles begins with a single step.

ধলা বিলাই

নিজের ভেতর নিজেকে হারাই, নিজের ভেতর নিজেকে খুজি, নিজের ভেতর নিজেকে আবিস্কার করি, প্রতিদিন নতুন করে।।।

ধলা বিলাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীল জোছনা

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:১৬

নীল জোছনা

রাত ১১.০৩

নিউ মার্কেট থেকে উত্তরার দিকে যাব। বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ ফোন এ রিং বেজে উঠল।

ঃ হেলো।

ঃ কই মামা তুই?

ঃ আর কইসনা নিউ মার্কেটের সামনে দাঁড়াইয়া রইছি আধা ঘণ্টা দইরা কোন বাস নাই।

ঃ বাসায় আয় তারাতারি ফাহিম আইছে সবই মিল্লা কার্ড খেলুম।

ঃ আইতাছি।

একটা বাস আসছে। কাল বিএনপির হরতাল তাই রোডে বাস তেমন নেই। তাই চট করে বাস এ উঠে পরলাম। বাস ছেরে দিলো। জানালার পাশে একটা সীট নিয়ে বসলাম। পুরা বাসই খালি। বাসের হেল্পার অলস ভঙ্গিতে পিছনের সীটএ হেলান দিয়ে বসে আছে।

মনে হয় ঘুমিয়ে পরেছিলাম। হাল্কা বাতাসের ঝাপটায় ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। বাতাসে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ভাব। মনে হয় গুরি গুরি বৃষ্টি পরছে। আমার বৃষ্টি ভাল লাগে না। তাই মোবাইলে হেড ফোন লাগিয়ে " ভালবাসি ভালবসি " গানটা প্লে করে চোখ বন্ধ করলাম।

রাত ১১.২৭

বাস বনানী এ থেমে রয়েছে। রাস্তার ফুটপাতে কাথা মুড়ি দিয়ে কিছু মানুষ ঘুমিয়ে রয়েছে। একটা সাত আট বছরের একটা ছেলে চা পান বিক্রি করছে। রাস্তার মানুষ গুলো কে দেখে বুকের ভিতর এক ধরনের হাহাকার তৈরি হয়। ছেলে টাকে ডাক দিলাম। একটা "বেনসন অ্যান্ড হেডস" কিনলাম। বেনসন টা জ্বালিয়ে মাত্র ধুয়া টা ছাড়লাম আর ওই পাস থেকে কেও বলে উঠল

ঃ ভাইয়া সিগারেট টা একটু ফালাবেন। আমার সিগারেটের ধুয়া টায় মাথা ব্যাথা করছে।

আমি না তাকিয়েই বললাম, সিগারেটের ধুয়ায় মাথা ধরলে পিছনের সীট এ গিয়ে বসেন। আমি সিগারেট ফেলব কেন? টাকা দিয়ে কিনেছি না?

ঃ পিছনের সীট গুলোর গ্লাস ভাঙ্গা। বৃষ্টির জাপটা আসছে।

আসলেই তো বাইরে ভীষণ বৃষ্টি হচ্ছে। আমি পাশে তাকালাম। আমার হাত থেকে সিগারেট টা পরে গেল আপনা আপনি। আমার পাশের সীট এ কেউ একজন বসে আছে। সে কি মানুষ...নাকি পরী! এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। মেয়েটি মনে হয় লজ্জা পাচ্ছে। তবু আমি চোখ নামালাম না তাকিয়ে ই থাকলাম। ভীষণ বলতে ইচ্ছে হচ্ছে, মেয়ে তোমার নাম কি পরী?

মেয়ে টি আমাকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললঃ রাস্তায় অনেকে আমাকে দেখে এভাবে তাকিয়ে থাকে।

আমি লজ্জা পেয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। ভীষণ ছোট লাগছে নিজেকে। আমি একটা মেয়ের দিকে কেন এভাবে তাকিয়ে ছিলাম। নিজেকে বড় অসহয় মনে হচ্ছিল।

হঠাৎ মেয়েটি বলে উঠলঃ আপনি কোথায় যাচ্ছেন ?

সম্ভবত মেয়েটি আমার অবস্থা বুজতে পেরেছে। আমি কিছু বললাম না। আমার খুব অভিমান হচ্ছে মেয়েটির উপর। কেন জানিনা।

আমি কিছু বলছি না দেখে মেয়েটি বললঃ আমার নাম পরী।

আমি ভীষণ চমকে উঠলাম। মেয়েটি আবার বলে উঠলঃ আমার ভাল নাম হৃদি আহসান। ছোট বেলায় দেখতে নাকি পরীর মত ছিলাম তাই মা আদর করে ডাকত পরী।

আমি বলতে চাইলাম তুমি তো আসলেই পরী। কিন্তু আমার মুখ দিয়ে একটি শব্দ ও বের হল না।

মেয়ে টি আবার বললঃ আমি উত্তরা যাচ্ছি। আমার এক বান্ধুবির বাসায়। সে কাল কানাডা চলে যাবে তাই। মনটা ভীষণ খারাপ লাগছে তার জন্য।

আমার খুব বলতে ইচ্ছা হলোঃ তুমি মন খারাপ করো না মেয়ে আমি তোমার পাশে আছি। আমি তোমার মন ভাল করে দিব। কিন্তু কিছুই বললাম না। শুধু তাকিয়ে রইলাম অপলক চোখে।

মেয়ে টি কিছু ক্ষণ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললঃ আপনি কিছু বলছেন না কেন? মনে হচ্ছে আপনি বিরক্ত হচ্ছেন। আসলে আজ আমার মন খারপ তো তাই কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছে। আপনি প্লীজ রাগ করবেন না।

আমি বলতে চাইলামঃ আমি কি তোমার কোন কথায় বিরক্ত হতে পারি? আমার তোমার কথা শুনতে খুব ভাল লাগছে। কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না।

রাত ১১.৪৩

বাইরে থেকে হাল্কা বৃষ্টির ফোঁটা আসছে। সমান্য মুখ ভিজিয়ে দিচ্ছে। ভীষণ ভাল লাগছে।

পরী নামের মেয়েটি পাশের সীটে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। আর আমি মুগ্ধ দৃষ্টি তে তাকে দেখছি।

চোখ বন্ধ করেই সে গান ধরলঃ "ভালবাসি ভালবাসি এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজাই বাশি ভালবসি।"

এইটা আমার সবচে পছন্দের গান। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। আমি যেন অদ্ভুত এক মায়ার টানে জড়িয়ে গিয়ে ছিলাম।

রাত ১১.৫২

এখনও হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। মেয়েটি বাস থেকে নামে গেল। আমি ও নামলাম। আমার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে মেয়েটি বললঃ আপনাকে অনেক বিরক্ত করলাম। সেজন্য দুঃখিত। আপনাকে এতক্ষণ বিরক্ত করলাম অথছ আপনার নাম টাই জানা হল না। আপনার নাম তা কি?

আমার খুব ইচ্ছা হল বলতেঃ তুমি যেও না। তুমি চলে গেলে আমি কে করে থাকব? কিন্তু আমি এবার ও কিছুই বলতে পারলাম না।

সে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে রইল। আমি নিস্তব্দ হয়ে রইলাম।

সে বলল আমি চলে যাচ্ছি। আমি শত চেষ্টা করেও বলতে পারলাম না, প্লীজ তুমি যেও না। চল না আমরা পাশাপাশি কিছুক্ষণ হাটি,হাতে হাত রাখে।

সে চলে যাচ্ছে আর আমি নিঃচুপ দাড়িয়ে তার পথের পানে তাকিয়ে আছি।

না পরী না।

আমি তার কাছে পৌছাবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু তার আগেই রাস্তার ওই দিক থেকে একটি ট্রাক......

আমি একটি পরীর নিথর দেহ নিয়ে বসে আছি।

পরী কিছু বলে না। চুপ করে শুধু আমার কথা শোনে।

কেন পরী চুপ করে আছে।

কেন আমার পরী কথা বলে না?

রাত ২.১৪

বৃষ্টি থেমে গেসে।

আকাশে চাঁদ উঠেছে।

সাদা রাস্তায় আমি হাঁটছি সাথে আছে আমার ছায়া আর নীল জোছনা।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ২:২৪

পরোবাশি২০১৩ বলেছেন: Nice writing, but very very imaginative .. unrealistic indeed

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৩৪

ধলা বিলাই বলেছেন: ধন্যবাদ...

২| ২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:০৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভাল লিখা

২০ শে নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৪:৩৩

ধলা বিলাই বলেছেন: ধন্যবাদ...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.