নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রোমেল রহমান এর ব্লগ

রোমেল রহমান

রোমেল রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনঃ প্রদান ও পরিণাম

২৯ শে জুন, ২০১৪ ভোর ৬:২৫

সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদ ও মর্যাদা স্তরে স্তরে বিন্যস্ত। পদমর্যাদা অনুসারে নিম্নস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ তাদের উচ্চতর স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অধীনে থেকে দায়িত্ব ও কর্তব্য সমূহ পালন করে থাকেন। সেই সাথে উর্ধতন স্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিদের্শনাবলী যথাযথভাবে অনুসরন করতে নিম্নস্তরের কর্মকর্তাগণ বাধ্য। এর অন্যথা হলে শৃঙ্খলাভঙ্গ হয় এবং সে ক্ষেত্রে নির্দেশাবলী লঙ্ঘনকারী কর্মকর্তা কর্মচারীকে বিধি মোতাবেক ভোগ করতে হয় শাস্তি। একজন কর্মকর্তা কর্মচারী তার উপর অর্পিত দায়িত্বপালনে কতটুকু আন্তরীক , দক্ষ , কর্মতৎপর ও শৃঙ্খলাপরায়ণ সে দিকে দৃষ্টি রাখেন তার উর্ধতন কর্মকর্তা। এভাবে ঐ কর্মকর্তা কর্মচারীর কাজের মূল্যায়ন লিপিবদ্ধ করা হয়। এটা করার জন্য প্রত্যেক কর্মকর্তা কর্মচারীর বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব পালন করেন তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা। এই অনুবেদনের মন্তব্য এবং নম্বর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর চাকুরী জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ইতিবাচক মন্তব্য ও পর্যাপ্ত নম্বর উক্ত কর্মকর্তা বা কর্মচারীর পদোন্নতি ও চাকুরী ক্ষেত্রে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা অর্জনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করে। একই ভাবে নেতিবাচক মন্তব্য ও কম নম্বর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর চাকুরী জীবনে উন্নতির রশি চরমভাবে টেনে ধরে। ইনাদের চাকুরী ক্ষেত্রে অগ্রগতির পথ হয় রুদ্ধ। তাই সরকারী কর্মে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকুরী জীবনে বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনের গুরুত্ব অপরিসীম।



অফিস-আদালতের কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নিয়ম-শৃঙ্খলার অধীনে নিয়ে আসা অপরিহার্য। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ম-শৃঙ্খলার বন্ধন ছিন্ন করা । অফিস-আদালতে যখন নিয়ম-শৃঙ্খলার বন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ছিন্ন করে তখনই ঐ সকল দফতরের কার্যক্রম সমূহ বিপন্ন হয়। সরকারের সেবা থেকে জনগণ বঞ্চিত হয়। তাই নিয়ম-শৃঙ্খলা যাতে যথাযথভাবে অনুসৃত হয় সেজন্য সকল সরকারী অফিস-আদালতে নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে তাঁরা নিজ নিজ অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বার্ষিক ‘ গোপনীয় অনুবেদন ’ লিখে থাকেন। অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকুরী অত্যন্ত স্পর্শকাতর , ‘দেওয়ানী নিয়ম ও আদেশাবলী’র পয়ত্রিশ অধ্যায় অনুসারে জেলা জজ তাঁর অধীনস্থ বিচারকদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন লিখে থাকেন। ‘ফৌজদারী নিয়ম ও আদেশাবলী’ অনুসারে বিচারিক ম্যাজিষ্ট্রেটদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনের অংশ বিশেষ লিপিবদ্ধ করার দায়িত্ব দায়রা জজের। বর্তমান পদ্ধতিতে একই ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট জেলায় ‘ জেলা ও দায়রা জজ ’ পদে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।



কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে কেউ কেউ পূর্বাহ্নে নির্ধারিত সময়ের পরে অফিস-আদালতে আসেন , আবার অপরাহ্নে নির্ধারিত সময়ের আগেই দফতর ত্যাগ করেন। কেউ কেউ দুপুরে ১২-০০ মিনিটের সাথে সাথেই নামাজের জন্য খাস-কামরা ত্যাগ করেন , ফিরে আসেন বেলা ০৩-০০মিনিটের পর। কেউ কেউ দুপুরে নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য দফতর ত্যাগ করেন , তারপর ঐ দিন আর দফতরেই আসেন না। কেউ কেউ আবার দুপুরে মধ্যাহ্নভোজের জন্য বাড়ি গিয়ে টেনিস খেলার পোষাকাদি ব্যাগে করে নিয়ে দফতরে আসেন এবং তড়িঘড়ি করে দাফতরিক কিছু কাজ সম্পন্ন করে টেনিস খেলার জন্য বেলা ৩-৩০ মিনিটেই দফতর ত্যাগ করেন। বৃহস্পতিবারে ঘটে আরো আরো মজার ঘটনা। দুপুরের পর পরই দলবদ্ধভাবে এই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই ঢাকাগামী বাসে চড়ে বসেন। তারা ফিরে আসেন রোববার দুপুরে বা অপরাহ্নে। যে সকল জেলায় অফিস-আদালত মহাসড়কের সামনে অবস্থিত সেসব স্থানে রাস্তার ধারে আর্দালীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় , ঢাকাগামী বাস তারা থামায় এবং আসনের নিশ্চয়তা বিধান করে তাদের কর্মকর্তাদের জন্য। এসব কর্মকর্তাগণ দুপুর হবার সাথে সাথেই একই সাথে মধ্যাহ্নভোজ সম্পন্ন করেন , তারপর আর্দালীর সংকেতের অপেক্ষায় থাকেন। সংকেত পেলেই তারা খাস-কামরা থেকে বের হয়ে দফতরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ঢাকাগামী বাসে চেপে বসেন। এভাবেই দফতর হয়ে যায় ফাঁকা , কিন্তু প্রতিকার প্রার্থী জনগণ অপেক্ষায় থাকেন। দিন শেষে বিফল মনোরথ হয়ে ফিরে যান বাড়িতে। দোষ আর কাকে দেবেন নিজের ভাগ্যকে ছাড়া ! নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা যদি দফতরের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চান তাহলে তাঁকে এসব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উক্তরূপ কার্যক্রম বন্ধ করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তা করতে গেলেই তিনি ঐ সব কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাছে হয়ে পড়েন ঝামেলাকারী লোক। এসব কর্মকর্তা কর্মচারীদের কেউ কেউ তখন অভ্যাস পরিত্যাগ করে দাপ্তরিক নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে থাকে , আবার কেউ কেউ নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জোট বেধে শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়। পরিণামে নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তাকে কলম তুলে নিতে হয়। সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা , ১৯৮৫ এর ২(চ) বিধিতে ‘অসদাচরন’এর সংঞ্জা ও সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য বর্জনীয় আচরণের নীতিমালা মতে উল্লিখিত কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য বলেই বিবেচিত হবে। এইরূপ আচরনকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা মূলক কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি তাদের বার্ষিক গোপনীয অনুবেদনে লিপিবদ্ধ করতে হয় বিরূপ মন্তব্য।



কোন কোন সময় কোন কোন কর্মচারী বা কর্মকর্তা কর্মস্থলে এমন কিছু কাজ করেন যার দ্বারা সংশ্লিষ্ট দফতরের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়। যেমন একজন কর্মকর্তার কর্মস্থলেই ছিল শ্বশুরবাড়ি। শ্বশুর ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার , এই শ্বশুর মহাশয়ের ছিল দুই স্ত্রী। শ্বশুরের ঠিকাদারী ব্যবসার আর্থিক দিকটা ঐ কর্মকর্তাই দেখতেন। আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে দুই শাশুরীর মধ্যে প্রায়ই বিরোধ হতো। এর প্রভাব পড়তো কর্মকর্তার পারিবারিক জীবনে। এই বিরোধের কারণে কর্মকর্তার স্ত্রী একদিন মধ্য রাত্রিতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান ,এক কাপড়ে। কর্মকর্তাকে বাড়িতে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে দেয় তার স্ত্রী। টহলরত পুলিশ রাস্তায় অবিন্যস্থ পোষাকে ভদ্র মহিলাকে দেখে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় । পুলিশের ভ্যানে উঠার পর জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে মহিলা নিজের পরিচয় দেন। পুলিশ যারপরনাই লজ্জিত হয়। ঐ কর্মকর্তা সরকারী ফ্লাটে থাকতেন। ভদ্র মহিলাকে সসম্মানে সরকারী সংশ্লিষ্ট ফ্লাটে নিয়ে হাজির হয়। ঐ একই ভবনে কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ/ সহকারী জজও থাকতেন। পুলিশ তাদেরকে ঘুম থেকে তুলে ঘটনা বর্ণনা করে এবং তাদের সহায়তায় ভদ্র মহিলাকে নিজ স্বামীর ঘরে পৌছে দেয়। ঘটনার এখানেই শেষ হয় নাই। কয়েকদিন পর ঐ ভদ্রমহিলা আবার তার কর্মকর্তা স্বামীর সাথে বিরোধের সূত্র ধরে মধ্যরাত্রিতে স্বামীগৃহ ত্যান করেন। নিকটেই ছিল জেলা ও দায়রা জজের বাঙলো। ভদ্র মহিলা এবার সরাসরি ঐ বাঙলোতে ঢুকে পড়েন। নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বেরত পুলিশদের ডাকে জেলা ও দায়রা জজ মহোদয়ের ঘুম ভাঙে। সুপ্তোত্থিত জেলা ও দায়রা জজ এবং তাঁর স্ত্রীর কাছে এবার ভদ্র মহিলা তার স্বামীর বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ করেন। খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও ঐ বাঙলোতে হাজির হন। পরিস্থিতিটি ছিল জেলা ও দায়রা জজের জন্য অত্যন্ত অস্বস্থি ও বিব্রতকর। কর্মকর্তার শ্বশুরালয়ের স্বজনদের ডেকে তাদের কাছে কর্মকর্তা ও তার গৃহত্যাগী স্ত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় ; সেই সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিজ পদমর্যাদার প্রতি খেয়াল রেখে আত্মসম্মানবোধ ও শালীনতা বজায় রেখে ভদ্রোচিতভাবে কর্মস্থলে বসবাস করার নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মহোদয়। তাকে এ ব্যাপারে কার্যকরীভাবে সহায়তা করার জন্য তার শ্বশুরকূলের স্বজনদেরও নির্দেশ দেওয়া হয়। আরেকজন কর্মকর্তা নিজ কর্মস্থলে ছুটির দিন হলেই ছিপ নিয়ে বের হতেন। ইজারা দেওয়া সরকারী বা আধা সরকারী বা স্বায়ত্বশাসিত কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন অথবা ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা মালিকের অনুমতি ছাড়াই মাছ ধরতেন। কর্মকর্তার পদমর্যাদার কারণে তাকে কেউ কিছু বলার সাহস করতো না , তবে মনে মনে তারা যারপরনাই বিরক্ত এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতেন। ঐ কর্মকর্তা বড় বড় অনেক মাছ ধরতেন , এগুলো আবার প্রায় চারশত কিলোমিটার দূরে অবস্থিত স্বজনদের বাড়িতেও পাঠাতেন। তিনি বাস করতেন চার ইউনিট বিশিষ্ট সরকারী ফ্লাটের নিচ তলার একটি বাসায়। এই বাসার ঠিক উপর তলাতে থাকতেন একজন অতিরিক্ত ডেপুটি কমিশনার । বাসার সামনে সরকারী জায়গাতেই ছিল একটি বাতাবী লেবুর গাছ । গাছে অনেক বাতাবী লেবু ধরেছিল । একদিন ‘এডিসি’ পতœী তাঁদের আর্দালীকে দিয়ে একটি পাকা বাতাবী লেবু পারিয়ে নিলেন। কর্মকর্তা তখন গোসলের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। খবর শুনে তৎক্ষণাৎ তিনি বের হলেন খালি গায় লুঙ্গি পড়ে ; বাতাবী গাছের নিচে দাঁড়িয়ে দোতালার দিকে মুখ ফিরিয়ে ‘এডিসি’ পত্নীকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে কটু কথা বলতে লাগলেন। চিৎকার শুনে ‘এডিসি’ পত্নী বারান্দায় বের হলেন। তখন তার সাথে ঐ কর্মকর্তা ঝগড়ায় লিপ্ত হলেন। প্রতিবেশী এবং পথচারীরা ঘটনা দেখে লজ্জিত হলো। ঘটনাটি ‘কোর-অফিসার’দেরকেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে।



কর্মকর্তাদের এরূপ কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকান্ড সংশ্লিষ্ট বিভাগ সম্পর্কে জনমনে বিরূপ ধারণার সৃষ্টি করে। তাই এদেরকে কঠোরভাবে শাসন করা নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার জন্য অবশ্য কর্তব্য হয়ে যায়। প্রয়োজনে এদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করতে হয়। নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা যখন এই কর্তব্য পালন করেন তখন তিনি এই সব কান্ডজ্ঞানহীন কর্মকর্তাদের বিরাগভাজন হয়ে যান। অনেক সময় দেখা যায় এই সব কর্মকর্তা মন্ত্রণালয় বা কমিশনে পদায়ন লাভ করেন । তাদের জন্য তখন সুযোগ সৃষ্টি হয় তার সাবেক নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উর্ধতন কর্মকর্তার কাছে কল্পিত কান কথা লাগানোর।



একজন নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার কথা এবার বলি। নিয়মকানুন অনুসরণে তিনি অত্যন্ত আত্মনিবেদিত প্রাণ। তা তিনি নিজেও অনুসরণ করেন , সেই সাথে তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকেও অনুসরণ করতে বাধ্য করেন। প্রত্যেক কর্মকর্তা , কর্মচারী , নায়েব কর্মচারীর প্রতি তার সার্বক্ষণিক তীক্ষ্ণ নজরদারীর কারণে তার দফরের সকল কার্যক্রম সুষ্ঠ ও সুচারুভাবে চলতে থাকে। প্রতিকার প্রার্থী জনগণ এই দফতরে এসে কোনরূপ হয়রানি বা উৎকোচ প্রদান ছাড়াই প্রতিকার পেতে থাকে। জনগণ এতে খুশী হয়। কিন্তু উৎকোচজীবীরা এই কর্মকর্তার বিদায়ের দিন গুনতে থাকে। যথা সময়ে এই কর্মকর্তা অন্যত্র বদলী হয়ে যান। ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষে’র কতিপয় কর্মকর্তার রোষানলে পড়েন এই কর্মকর্তা। তখন ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষে’র ঐ কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট জেলার বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরণাপন্ন হয়। কাজও হয় । এরা সবাই মিলে তাদের সাবেক ‘নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা’র বিরুদ্ধে কুৎসিত ও জঘন্য অভিযোগ দায়েরের বানোয়াট উপাদান সংগ্রহ করে দেয় এবং বিষয়টা পত্রিকায় ছাপানোরও ব্যবস্থা করে। এরফলে ঐ ‘নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা’কে মাঠ পর্যায় থেকে প্রত্যাহার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সুযোগের সৎব্যবহার করতে ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষে’র ঐ কর্মকর্তাগণ এতটুকু দ্বিধা করে নাই।



এই পরিস্থিতি দেখে অন্যান্য ‘নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা’গণও সতর্ক হয়ে যায়। ‘আপনি বাঁচলে বাপের নাম’ নীতি অনুসরণ করে তারা তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তা কর্মচারীদের শৃঙ্খলা বিধানের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন। তাই দেখা যায় অফিস-আদালতে কেউ সময়সূচী মেনে চলছেন না। প্রতিকার প্রার্থীদের যাতায়াত হোটেল খরচসহ গুনতে হচ্ছে উৎকোচের টাকা। কণিষ্ঠ কর্মকর্তা , কর্মচারী , নায়েব কর্মচারীগণ যতদিন পর্যন্ত অনায়াসে ‘নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষে’র কর্মকর্তাদের কাছে গিয়ে তাদের ‘নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা’র বিরুদ্ধে কান কথা বলার সুযোগ পাবেন এবং কোনরূপ যাচাই বাছাই ছাড়াই এই কান কথার ভিত্তিতে জেলা পর্যায়ের ‘নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গৃহীত হতে থাকবে ততদিন পর্যন্ত অফিস-আদালতের এই হাল চলতেই থাকবে। বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন লিখে যদি নিজেই বিপদে পড়তে হয় , এই প্রতিবেদনের গোপনীয়তা যদি রক্ষিত না হয় তাহলে যথাযথভাবে কেন তা লেখা হবে ?



লেখকঃ সাবেক জেলা ও দায়রা জজ । বর্তমানে এ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট , হাইকোর্ট বিভাগ , ঢাকা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.