![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টির পর তাদের চলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।এ জন্য যুগে যুগে নবী পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে আল্লাহ প্রেরিত নবীর সংখ্যা এক লাখ চব্বিশ হাজার, ভিন্ন মতে দুই লাখ চব্বিশ হাজার। কেতাবীদের এটাই বিশ্বাস। মুসলমান, ইহুদী ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদেরকে বলা হয় কেতাবী। কারণ তারা বিশ্বাস করে আল্লাহ মানুষকে পৃথিবীতে জীবন যাপনের নিদের্শনা দিয়ে কেতাব পাঠিয়েছেন। আল্লাহ ফেরেশতা আসমানী কিতাব ও নবী রসুলদের প্রতি তারা বিশ্বাস করে। মূলত এই বিশ্বাসকেই বলা হয় ঈমান। তাওরাত যবুর ইঞ্জিল ও কোর-আন এই চারটি হচ্ছে আসমানী কেতাব। ইঞ্জিলকে বাইবেলও বলা হয়। পবিত্র পৃথকভাবেই মুদ্রিত প্রকাশিত ও বিতরিত হয়। বাইবেল এ সাধারণত দুটি ভাগ থাকে একটি new testament এতে আছে ইঞ্জিল, অপরটি old testament / এতে আছে তাওরাত ও যবুর। ধর্ম নিয়ে পৃথিবীতে অনেক মত প্রচলিত আছে। আমাদের উপমহাদেশেও রয়েছে এরূপ অনেক ধর্ম। রাজা রামমোহন রায় এবং তাঁর অনুসারীরা ‘ব্রাক্ষ্ম সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই ‘ব্রাক্ষ্ম সমাজ’ একশ্বরবাদী । সৃষ্টি জগতের ¯স্রষ্টা একজন তাঁরা এই মতে বিশ্বাস করেন। তাদের এই বিশ্বাসের সাথে কেতাবীদের এতদসংক্রান্ত বিশ্বাসের মিল আছে। তবে স্রষ্টা যে নবী প্রেরণ করেন এটাতে তারা বিশ্বাস করে না। এদের সম্পর্কে অধ্যাপক আবু তালিব বলেন :“ ‘ তুহফাতÑউলÑ মোয়াহইহদীন’ ( একেশ্বর বিশ্বাসীদের প্রতি উপহার) রাজা রাম মোহন রায় প্রণীত গ্রন্থ (রচনা ১৮৩০ খ্রীঃ)। তুহফা (আ) , অর্থ উপহার । বাংলাদেশের ব্রাক্ষ্ম সমাজের আদি গ্রন্থ। পরে এরই ভিত্তিতে ব্রাক্ষ্ম ধর্ম গ্রন্থ রচিত হয়। ব্রাক্ষ্মগণ মুসলিম সম্প্রদায়ের আদর্শে একেশ্বর/ আল্লাহ্য় বিশ্বাসী, তবে নবীবাদে বিশ্বাসী নন। বলাবাহুল্য নবীবাদে বিশ্বাসী না হলে জগতের সকল বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হতে পারা যায় না।কথাটি আরও একটু স্পষ্ট করে বলা যায়,রামমোহন মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত ছিলেন না । তবে বিশ্বে মুসলমানী / ইসলামী আবহ এনেছিলেন। তাঁর ভাষাটাও মুসলমানী। যেমন তিনি ‘ওঁ তৎসৎ দিয়ে কাজ শুরু করতেন। এটি কুরআনিক ‘বিসমিল্লাহর’ সমতালীয়। বৈদিক ভাষায় এর অর্থ ছিলÑ ‘সত্যম শিবম সুন্দরম’ / সত্যম/ ¯্রষ্টা , শিবম / মঙ্গলময় , সুন্দরম / পরম সুন্দর। বিসমিল্লাহতেও এই তিনটি নাম আল্লাহ, যিনি রহীম ও রহমান/ দয়ালু ও দাতা । বলা যেতে পারেÑপবিত্র কুরআন থেকেই জগতে পৌত্তলিকতা বর্জিত ভাবধারা চালু হয়েছে।”{তথ্য সূত্রঃ আমার সম্পাদনায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রজেক্ট কমিটি কর্তৃক প্রকাশিত ‘ হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (রহঃ) দরগাহ্ পাবলিক ওয়াকফ্ এষ্টেট , ইতিহাস ও ঐতিহ্য ’ ; প্রকাশকাল ঃ শ্রাবণ ১৪০২ বঙ্গাব্দ, আগষ্ট ১৯৯৫ খ্রিঃ, রবিউল আউয়াল ১৪১৬ হিজরী ;পৃষ্ঠাঃ ১৯}। এখানে প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ব্রাক্ষ্ম সমাজভুক্ত ছিলেন। সকল কেতাবীর বিশ্বাস মতে হযরত ইব্রাহীম (আলাইহেস সালাম ) ছিলেন একজন নবী। তাঁর কথা সকল আসমানী কিতাবে প্রায় একইরূপভাবে বর্ণিত আছে। তাঁকে বলা হতো ‘সকলের পিতা’। তাওহিদ তথা আল্লাহ্র একত্ববাদে বিশ্বাসীদেরকে তিনি ‘মুসলমান’ বলে অভিহিত করেছেন। মুসলমান বা মোসলেম অর্থ অনুগত অথবা আত্মসমর্পণকারী। যারা আল্লাহ্তালার পূর্ণ-আনুগত্য স্বীকার পূর্বক তৎপ্রতি সর্বতোভাবে আত্মসমর্পণ করে, তাদেরকেই ‘মোসলেম’ বা মুসলমান বলা হয়।(তথ্য সূত্র ঃ কোরান শরীফ, মোহাম্মদ আবদুল হাকিম কর্তৃক অনুদিত ও সঙ্কলিত এবং ওসমানিয়া বুক ডিপো, ১৬/১৮ বাবুবাজার ঢাকা থেকে ১৩৬৪ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাসে প্রকাশিত, সুরা বকর, আয়াত : ১৩০ থেকে ১৩২ ; পৃষ্ঠা : ৫৬)। আল্লাহ্র একত্ববাদ প্রচার করতে গিয়ে তিনি বহু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। নমরুদ তাঁকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করে কিন্তু আল্লাহ্র অসীম কুদরতে ঐ আগুন শীতল হয়ে যায়। সবাই দেখতে পায় হযরত ইব্রাহীম (আ) ফুলের বাগানে বসে আছেন। এই ইব্রাহীম (আঃ) একদিন স্বপ্নে দেখলেন আল্লাহ্ তাঁকে হুকুম করছেন ‘প্রিয় বস্তু’ কোরবানী করার। তিনি অনেক উট দুম্বা কোরবানী করলেন। দ্বিতীয় রাতে তিনি আবার একই স্বপ্ন দেখলেন। পরদিন তিনি আবার আরো বেশী সংখ্যক উট দুম্বা কোরবানী করলেন। তৃতীয় রাতেও তিনি একই স্বপ্ন দেখলেন। এবার তিনি তিনি স্বপ্নের আদেশ সম্পর্কে চিন্তান্বিত হলেন এবং উপলব্ধি করলেন যে আল্লাহ্র নির্দেশিত মতে তাঁর কোরবানী হয় নাই। পালিত পশু নয়, তার সবচেয়ে প্রিয় পাত্র হচ্ছে তাঁর পুত্র ইসমাইল। তিনি তখন স্ত্রী হাজেরা ও পুত্রকে সব কথা বললে তাঁরা উভয়েই রাজি হয়ে গেলেন। তিনি নিজ পুত্রকে কোরবানী করার উদ্দেশ্যে আরাফাত ময়দানের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। পথিমধ্যে শয়তান ধোঁকা দেবার চেষ্টা করে। এই ধোঁকার প্রেক্ষিতে হযরত ইসমাইল (আঃ) বললেন ‘আল্লাহু আকবার’ অর্থাৎ আল্লাহ মহান। শয়তান আবারো ধোঁকা দিতে চাইলে তিনি একই ধ্বনি দিলেন। এই সময়ই শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করে তাঁরা তাড়িয়ে দেন। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) পুত্রের প্রতি মায়া হবার কারণে ঠিকমতো কোরবানী করতে পারবেন না এই কারণে পুত্রের অনুরোধে তিনি নিজের চোখও বেঁধে নিলেন। কোরবানী করে তিনি বললেন ‘ওয়া লিল্লাহিল হামদ’। কোরবানী করার পর তিনি দেখলেন পুত্র পাশে দাঁড়িয়ে আছে আর কোরবানী হয়েছে একটি দুম্বা। আল্লাহ্র তরফ থেকে তাঁকে তার কোরবানী কবুল হয়েছে মর্মে জানিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁকে আরও জানিয়ে দেওয়া হয় পরীক্ষায় তিনি উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এ থেকেই মুসলমানদের মাঝে ঈদুল আজহা বা কোরবানীর ঈদের প্রচলন হয়। সেই স্মৃতি স্মরণ করে মুসলমানেরা হজ্জ পালন করতে গিয়ে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করে। ঈদগাহে যাবার সময় উচ্চস্বরে বলেঃ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইলল্লাহু ; আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহুল হামদ। বলা প্রয়োজন পরিণত বয়সে হযরত ইসমাইল (আঃ)ও নবী হয়েছিলেন। তাঁদের প্রতি কোন কেতাব নাজিল হয় নাই। নাজিল হয়েছিল ছহিফা। এই ঈদে পুত্রকে নয় পশু কোরবানীর বিধান দেওয়া হয়েছে। নেসাব পরিমান মালের অধিকারীর জন্য কোরবানী করা ওয়াজিব। সাধারণত গরু উট দুম্বা ভেড়া ছাগল ইত্যাদি হালাল পশু কোরবানী দেওয়া হয় । কিরূপ পশু কখন কিভাবে কোরবানী করতে হবে সেটাও পবিত্র কোরান ও হাদিসে বর্নিত আছে। হযরত মুসা (আঃ) এর উপর নাজিল হয় প্রথম আসমানী কেতাব তাওরাত। এ জন্য তাঁকে যেতে হয়েছিল তুর পাহাড়ে। সেখানে তিনি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত্রি অবস্থান করেন। তাঁর অনুপস্থিতির সময়ে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা আল্লাহ্র একত্ববাদ ত্যাগ করে এবং গো-বৎসের আরাধনা করতে থাকে। মুসা (আঃ)এর সম্প্রদায়কে বলা হয় বনি-ইসরাইল। হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর আরেক পুত্র হযরত ইসাহাক(আঃ), তাঁরপুত্র হযরত ইয়াকুব (আঃ)। হযরত ইয়াকুব(আঃ)এর আরেক নাম ছিল ইসরাইল। সেই সূত্রে হযরত ইয়াকুব(আঃ) এর বংশধরদেরকে বলা হয় বনি-ইসরাইল। এ থেকেই ইহুদীরা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের রাষ্ট্রের নাম রেখেছে ইসরাইল। মূল কথায় ফিরে আসি। হযরত মুসা (আঃ) তুর পাহাড়ে গেলে বনি-ইসরাইলেরা অধৈর্য হয়ে পড়ে। সামেরী নামে একব্যাক্তি এই সময় নিজেদের উপাস্য নির্ধারণের জন্য বনি-ইসরাইলের মেয়েদের কাছ থেকে স্বর্ণালংকার চেয়ে নেয়। হযরত মুসা (আঃ) এর কাছে যে ফেরেশতা আসতেন তাঁর অশ্ব যে সব স্থানে পা রেখেছে সেই সব স্থানের মাটি সামেরী সংগ্রহ করে রেখেছিল গোপনে। উক্ত স্বর্ণালংকার গলিয়ে তার সাথে ঐ মাটি মিশায় সামেরী। এ দিয়ে সে তৈরী করে গো-বৎস। এই গো-বৎস হাম্বা রবে ডাক দিত। বনি-ইসরাইলরা এই গো-বৎসের পূজা শুরু করে। হযরত মুসা (আঃ) তুর পাহাড় থেকে তাওরাত কেতাব নিয়ে ফিরে এসে তাঁর কওমের এই অবস্থা দেখে খুবই রাগান্বিত হন। সামেরীকে অভিশাপ দিয়ে বিতাড়িত করেন। তাঁর অনুপস্থিতকালীন সময়ে বড় ভাই হারুনকে তিনি দায়িত্ব দিয়েছিলেন বনি-ইসরাইলদের দেখভাল করার। হারুন এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করায় ভাইকেও তিনি মারতে উদ্যত হন। হারুন ব্যাখ্যা দিয়ে জানান যে বনি-ইসরাইলদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি যাতে না হয় সেজন্যই তিনি তাদেরকে গো-বৎস নির্মাণ ও পূজায় বাধা দেন নাই। তাঁর এই ব্যাখ্যায় হযরত মুসা(আঃ) সন্তুষ্ট হন। হযরত মুসা (আঃ)এর প্রার্থনায় হযরত হারুন(আঃ)কেও আল্লাহ্ নবী করেছিলেন। বনি-ইসরাইলেরা গো-বৎস পূজা করায় তাদেরকে গো-কোরবানীর আদেশ হয়। এ প্রসংগে পবিত্র কোরানে বলা হয়েছে : ৬৭। এবং যখন মুসা নিজ সম্প্রদায়কে বলিয়াছিল , নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে আদেশ করিয়াছেন যে, তোমরা একটি গরু ‘জবেহ’ কর । তাহারা বলিয়াছিলÑতুমি কি আমাদিগকে উপহাস করিতেছ ? সে বলিয়াছিল, আমি আল্লাহ্র আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছিÑযেন আমি মূর্খদের অন্তর্গত না হই। ৬৮। তাহারা বলিয়াছিল, তুমি আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি আমাদিগকে উহা কিরূপ তাহা বর্ণনা করেন ; সে বলিয়াছিলÑতিনি বলিতেছেন যে, নিশ্চয়ই সেই গরু বয়োবৃদ্ধ নয় এবং শাবকও নয় ,এই দুইয়ের মধ্যবর্তী ; অতএব তোমরা যেরূপ আদিষ্ট হইয়াছ তাহা কর।৬৯। তাহারা বলিয়াছিল, তুমি আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি আমাদিগকে উহার বর্ণ কিরূপ তাহা বর্ণনা করেন ; সে বলিয়াছিলÑতিনি বলিতেছেন, নিশ্চয়ই সেই গরুর বর্ণ গাঢ় পীত, উহা দর্শকগণকে আনন্দ দান করে। ৭০। তাহারা বলিয়াছিলÑতুমি আমাদের জন্য তোমার প্রতিপালকের নিকট প্রার্থনা কর যে, তিনি আমাদিগকে উহার প্রকৃতি কিরূপ তাহা বর্ণনা করেন; নিশ্চয়ই আমাদের নিকট সকল গরুই সমতুল্য; এবং আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে নিশ্চয়ই আমরা সুপথগামী হইব। ৭১। সে বলিয়াছিলÑনিশ্চয়ই তিনি বলিতেছেন যে, অবশ্যই সেই গরু সুস্থকায় নিষ্কলঙ্ক , উহা ভূÑকর্ষণের জন্য জোড়া হয় নাই এবং ক্ষেত্রে জলসিঞ্চনে নিযুক্ত হয় নাই; তাহারা বলিয়াছিল এক্ষণে তুমি সত্য আনিয়াছ ; অতঃপর তাহারা উহা ‘জবেহ’ করিলÑযাহা তাহাদের করিবার ইচ্ছা ছিল না। ।(তথ্য সূত্র ঃ কোরান শরীফ, ঐ, সুরা বকর, পৃষ্ঠা : ৩৪ থেকে ৩৬)। পবিত্র কোরানের এই নির্দেশনা মোতাবেক কোরবানীর গরু / পশু বাছাই করা হয়। জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়। ১০ই জিলহজ্জ থেকে ১২ই জিলহজ্জ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত কোরবানী করা যায়। ঈদের নামাজ পড়া ১০ই জিলহজ্জ তারিখে। (৮৯৭) হযরত বার‘আ (রাঃ) বলেন আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ আঃ) কে ভাষণ দিতে শুনেছি , তিনি বলেছেন : ‘আজকের এ দিনকে যে ক্জা দিয়ে শুরু করা উচিত , তা হল প্রথমে আমরা নামায আদায় করব। তারপর ফিরে আসব এবং কোরবানী করব। কাজেই যে এরূপ করবে , সে আমাদের রীতি সঠিকভাবে পালন করল।’ (৮৯৮) হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন একবার ঈদের দিনে আবু বকর (রাঃ) আসলেন, তখন আনসারদের দুটি মেয়ে আমার নিকট বসে বুআছ যুদ্ধের দিনে আনছাররা পরস্পর যা বলেছিল সে সম্পর্কে গীত গাইছিল। তারা পেশাগত গায়িকা ছিল না। আবু বকর (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ আঃ)্র গৃহে শয়তানী বাদ্যযন্ত্র ! রাসুলুল্লাহ (সাঃ আঃ) বললেন: ‘হে আবু বকর! প্রত্যেক কওমের জন্য ঈদ রয়েছে । আর এটি হল আমাদের ঈদ।’ (৯২৭) হযরত আনাস ইবনে মালেক(রাঃ) বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ (সাঃ আঃ) কোরবানীর দিন প্রথমে নামায পড়লেন, তারপর খুৎবাহ দিলেন , যে ব্যক্তি নামাযের পূর্বে জবেহ করেছেন , তাকে তিনি পুনরায় জবেহ করার হুকুম দিলেন। তখন আনসারদের মধ্য হতে এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল , হে আল্লাহ্র রাসুল! আমার প্রতিবেশীরা ছিল উপবাসী অথবা (রাবীর সন্দেহ ) দরিদ্র । তাই আমি নামাযের আগেই কোরবানীর পশু জবেহ করে ফেলেছি। তবে আমার নিকট এখন এমন একটি মেষ শাবক আছে , যা দুটি গোশত খাওয়ার বকরী হতেও আমার নিকট অধিক প্রিয় । রাসুলুল্লাহ (সাঃ আঃ) তাকে সেটা কোরবানী করার অনুমতি দিলেন। {তথ্য সূত্র ঃ সহীহ্ বোখারী শরীফ , ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইসমাইল বোখারী(রহমতুল্লাহ আলাইহে) আগষ্ট ২০০৮ খ্রিঃ এ আলহাজ মুহাম্ম আবু জাফর কর্তৃক প্রকাশিত, পৃষ্ঠা ঃ ১৭৭ থেকে ১৭৮ } । বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বে মুসলমানরা এভাবেই এই ঈদ উদযাপন করে আসছে।বাংলাদেশে এই উৎসবের দিনে প্রতিটি সরকারী ও বেসরকারী ভবনের শীর্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রাষ্ট্রপতি প্রদানমন্ত্রী বানী প্রদান করেন। এই উপলক্ষ্যে তিন দিন সরকারী ছুটি থাকে। সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে একমাসের মূল বেতনের সম পরিমাণ অর্থ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়। এই দিনে সারা দেশে বিরাজ করে আনন্দ মুখরিত পরিবেশ। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘অগ্নি-বীণা’ বইয়ের কোরবানী কবিতায় বলেন :.....ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্ বোধন।/ এই দিনই ‘মীনা’-ময়দানে/ পুত্র-¯েœহের গর্দানে / ছুরি হেনে খুন ক্ষরিয়ে নে’/ রেখেছে আব্বা ইব্রাহীম্ সে আপনা রুদ্র পণ! / ছি ছি ! কেঁপো না ক্ষুদ্র মন ! / আজ জল্লাদ নয় , প্রহ্লাদ-সম মোল্লা খুন-বদন!/ ওরে হত্যা নয় আজ ‘সত্য-গ্রহ’ শক্তির উদ্ বোধন।
আমাদের জীবনে এই ঈদের ত্যাগ, মহিমা ও শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। ঈদ মোবারক।
লেখক: সাবেক জেলা ও দায়রা জজ। বর্তমানে এ্যাডভোকেট বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগ ঢাকা এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপক। [email protected]
©somewhere in net ltd.