![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমার খাতার প্রথম পাতায় লিখে দিলাম আলপনা আমার ছবি কইবে কথা যেদিন আমি থাকবোনা ।
শ্যামলা লম্বা মেয়েটি লাজুক দৃষ্টিতে মেঝের দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছে ।
কী ভাবছে ও ?
সদ্য ফেলে আসা বাডির কথা নাকি ওর মায়ের কথা ?
বোধহয় নতুন জিবনের স্বপ্ন সাজাচ্ছে খোলা চোখে । ওকে দেখে কেউ বলতেই পারবেনা যে আধঘন্টা আগে সে বাডি থেকে পালিয়ে এসেছে । বড বড ডাগর চোখে মায়াবী চাহনি । কথা ও বলছে সাবলীল ভাবে । যেন কত বার এসেছে এই বাডিতে । আমি কিছুটা অবাক কিন্তু বাদলের কথা ভেবে বেশ খুশি হলাম । যাক এতদিনে ছেলেটার গতি হলো । নিজেরা সংসার গুছিয়ে নিবে ।
ঘর পালানো বিয়ে যেমন হয় আরকি তেমন ই হলো । সাদামাটা ভাবেই বিয়েটা মিটল । সুমির বাবা নেই । মা , খালা, নানী সবার খুব আদরের মেয়ে ।
প্রথমে নানী খালা রা গাইগুই করলেও শেষ মেষ মেনেই নিল । তাছাডা বাদল ছেলে হিসেবে ভালো । পরিশ্রমী, ভাল ইনকাম করে । গ্রামে জমা জমি ও একেবারে কম না ।
এভাবেই ভালো মন্দে দিন গুলো কাটছিল ।
বছর পেরোতেই কোল জুডে ছেলে এল । কখনও সখনও বেডাতে আসতো আমার কাছে । গল্প করতো , দিলখোলা হাসিতে ভরে যেত চারদিক । যাবার বেলা অনুরোধ করতো ও যে এসেছে সেটা যেন বাদল না জানে । আমি সন্দিহান মনে প্রশ্ন করতাম - কেন ? আমার কাছে এসেছ তাতে সমস্যা কি ?
না মানে আমি কোথাও বাইরে যাই এটা সুমনের বাপ পছন্দ করেনা ।
সুমি হেসে কথা লুকোবার চেষ্ঠা করে ।
দু বছর পর সুমির আরেকটা বাচ্চা হলো । দুদুটোকে সামলাতে হিমশিম খায় সে । এক বিকেলে ভয়ংকর ঘটনার খবর এল ।
সুমি গ্যাসের চুলার আগুনে পুডে গেছে । বাচ্চা টাকে ভাডাটিয়া র কোলে দিয়ে নিজে চুলার আগুনে সেক দিচ্ছিল । বাচ্চাটার বয়স চল্লিশ দিন ও পার হয়নি । পা ও পেট কোমড সেক দেবার জন্য চুলার কাছে দাডিয়েছিল । অসাবধানে গায়ে আগুন লেগে গেল । এঘর ওঘর দৌডাতে দৌডাতে পা থেকে বুক পর্যন্ত পুডে গেল ।
খবর টা শুনেই বুকের ভেতর হিম হয়ে গেল ।
ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে যখন ওকে দেখতে গেলাম খুব কষ্ট হচ্ছিল ওকে দেখে ।
সারা গায়ে ব্যান্ডেজ বাধা । ব্যাথায় কোকাচ্ছে । হা করে খেতে পারে না বলে স্ট্র দিয়ে লিকুইড খাবার বৃথা চেষ্ঠা করে যাচ্ছে । গিলতে পারছিল না । শুধু বলছে যত কষ্টই হোক না কেন আমি আমার বাচ্চা দুটোর জন্য বেচে থাকতে চাই ।
ওর সামনে আর দাডাতে পারছিলাম না । দৌডে চলে আসলাম । ওকে কি বলবো আমি ।
পনের দিন নরক জ্বালা ভোগ করে বিদায় নিল হতভাগী । সব ব্যাথা , কষ্ট , জ্বালা সব শেষ । সবাইকে নিস্তার দিয়ে পরপারে পাডি জমালো সুমি ।
অবুঝ বাচ্চা গুলো বুঝতেই পারলো না কি হয়ে গেল । বড বাচ্চাটা কিছুদিন কান্নাকাটি করতো আর ছোট টা তো দুধের শিশু ।
সময় গডিয়ে দিন বছরে পরিনত হয় । জীবনের তাগিদে বাদল আবার বিয়ে করে ।
নিয়ম করে প্রতিবছর সুমির মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে । প্যান্ডেল করে তেহারি রান্না করে মিসকিন খাওয়ায় ।
মিলাদের মোনাযাতে বাদল যখন চোখের পানি ফেলে তখন আমার ভেতরে এক অন্য আমি চিৎকার করে বলে উঠে ভন্ড, ভন্ড, ভন্ড ।
সুমি মরে গিয়ে বেচে গেছে । তোর ভন্ডামি তাকে দেখতে হচ্ছে না । কারনে অকারনে মার খেয়ে নীল হতে হচ্ছেনা ওকে । বেল্ট এর বাডি খেয়ে দাগ লুকোতে হয় না আর । শরীর এর এমন সব জায়গায় মারের দাগ যা কাউকে দেখানোও যায় না সেগুলো সঃহ্য করতে হয় না ওকে । বড বাচা বেচে গেছে সে । বউ বাপের বাডি গেলে খালি ঘরে দুদিনের ভাডা করা মেয়ে মানুষ এর কথা এখন আর সুমিকে লুকোতে হয় না ।
খালি কষ্ট লাগে ওর বাচ্চা দুটোর জন্য । ভীষন ভীষন কষ্ট ।
সত্য সব সময় সুন্দর হয় না । অপ্রিয় সত্য গুলো না জানলেই ভালো হতো । এতটা খারাপ লাগতো না । মেয়েটা মারা যাবার কয়েকদিন আগেই এসেছিল । কোন এক বিয়েতে বেডাতে যাবে বলে আমার কাছে এক সেট গয়না নিতে । বলে ভাবি খালি হাত গলা দেখে আমার মামাতো খালাতো বোনেরা বলবে তোর স্বামী এত কামাই করে অথচ বউকে এক সেট গয়না দেয়নি । স্বামী অন্যর কাছে যাতে ছোট না হয় সেজন্য কি চিন্তা ।
মেয়েটা কাউকেই কিছু বলতে পারেনি । ঘর পালিয়ে বিয়ে করেছিল বলে মা খালার কাছে নিজের বেদনা প্রকাশ করতে পারেনি । তার উপর বাবা নেই । একটা কিছু হলে কোথায় গিয়ে দাডাবে ।
শশুড বাডির কথা নাই বা বললাম । বাদলের অপকর্ম নিয়ে সুমির মুখ খোলার উপায় ছিল না ।
কিছু বললেই মারধর । যেন মুখ বুজে থাকতে পারলে থাক না পারলে যাও ।
সেজন্যই মনে হয় ও যেন মরে গিয়েই বেচে গেছে ।
প্রতিদিন তিল তিল করে মরার চাইতে একবার মরা অনেক সুখের ।
শরীরের পোডা ক্ষত গুলো যে কষ্ট দিয়েছে তার চাইতে বুকের ভেতর জ্বলতে থাকা আগুন ওকে অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছে ।
ভালো থেকো সুমি ভালো থেকো ।যেখানেই থাক খুব ভালো থেকো ।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৩১
নীল জোসনা বলেছেন: গল্প নয় । হতভাগীর করূণ কাহিনী ।
ঘটনার শৈল্পিক উপস্থাপনা শেখার জন্য আপনার ব্লগে নিয়মিত ক্লাস করতে যাচ্ছি তো ! ! !
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪২
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: বেদনাদায়ক। কেমন জানি লাগে এই সব গল্প পড়লে। কারো ভাগ্য যেনো এমন না হয়।
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৫১
নীল জোসনা বলেছেন:
আমাদের সমাজে নারীর অবস্থানটাই এমন জা্যগায় যে পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক কাজ টাও সবসময় করা যায় না ।
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:২৭
নীল ভোমরা বলেছেন: ''ঘটনার শৈল্পিক উপস্থাপনা শেখার জন্য আপনার ব্লগে নিয়মিত ক্লাস করতে যাচ্ছি তো ! ! !''....তাই?!.....ঝানতামনা! কিন্তু আপনি আমার লাস্ট পোস্ট-টা পড়েন-ই নাই!
আপনি নিরাপদ হলে প্রথম কমেন্ট-টা নিশ্চয়ই আপমার পোস্টেই করবেন?!......
শুভকামনা রইল!
৪| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:১৯
নীল ভোমরা বলেছেন: অপনি সর্বশেষ গত ২৩/২ তারিখ রাত ২২:৫৭:৫৬ টায় আমার ব্লগ পেজে ঢুঁ মেরেছেন! তবে হ্যাঁ..... রেকর্ড বলছে আপনি আমার লাস্ট পোস্টটা হয়তো পড়েছেন!
ভাল থাকুন.....শুভকামন!
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:০৮
নীল জোসনা বলেছেন: শুধু রেকর্ড নয় আমিও বলছি আপনার লাস্ট পোষ্ট পড়া হয়েছে ।
মাঝে মাঝে আপনার পুরোনো পোষ্ট ওপাজল গুলো দেখি ।
আপনার গল্প পড়ার পর বাবু ভাইকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে । ওনার একটা ছবি পোস্ট করবেন কি? যদি অসুবিধা না থাকে ।
হ্যা , পাজল গুলো ও মিলাতে চেষ্ঠা করি । কিছু কিছু পারি কিন্তু কমেন্ট তো করতে পারি না ।
৫| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৪
নীল ভোমরা বলেছেন:
ওহ্....ভাল কথা....ড-এ শুন্য ড়-টা কিভাবে লিখেতে হয় একটু কষ্ট করে শিখে নিন।
আমি আছি আপনার সাথে...নিঃস্বার্থভাবে!...শুভকামনা!
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:১৭
নীল জোসনা বলেছেন:
" ড় " শিখে নিলাম । আসলে এ- কার দেবার পর ড় এর . ে এর সংগে লেগে যায় ।
ভালো থাকবেন ।
৬| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৫৯
নীল ভোমরা বলেছেন: কি হলো?......কমেন্টের রিপ্লাই মুছে দিলেন কেন?!
২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২০
নীল জোসনা বলেছেন: পড়া নিয়া লেখার অসুবিধায় ছিলাম বলে ।
মনে হচ্ছে আবার নার্সারী ক্লাসে ভর্তি হই ।
৭| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ৮:৩০
দালাল০০৭০০৭ বলেছেন:
১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০০
নীল জোসনা বলেছেন:
আপনার প্রোপিক টা দারুন । স্বাগতম ।
৮| ১১ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০১
দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: ও তাই নাকি আপু
১২ ই মার্চ, ২০১৪ সকাল ৮:২৪
নীল জোসনা বলেছেন:
হ্যা, তাই । প্রোপিক এর সংগে নিকটা তো মিল মতো হলো না ভাইয়া ।
৯| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১১
অর্থনীতিবিদ বলেছেন: ঘর থেকে পালিয়ে বিয়ে করার পরিণতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মেয়েদের জন্য সুখের হয় না। ব্যতিক্রমও আছে। তবে দুর্ভাগ্য যে সুমির ক্ষেত্রে সেই ব্যতিক্রমটা ঘটল না। বেচারী আসলেই মরে গিয়ে বেঁচে গেছে।
১৭ ই মার্চ, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১
নীল জোসনা বলেছেন: ভাগ্য দেবী সকলের প্রতি সহায় হন না ।
আপনাকে স্বাগতম ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৪
নীল ভোমরা বলেছেন:
গল্প...নাকি সত্যি?!......ট্র্যাজেডি!
গল্প পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেল। খুবই সাদা-মাটা উপস্থাপনা!.... তবু্ও কাহিনীর মূল উপজীব্য অনুধাবনে অসুবিধা হয়নি।