নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছামানুষ রনি

ইচ্ছামানুষ রনি

আমি চাই মানুষ বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু।

ইচ্ছামানুষ রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফেসবুক স্ট্যাটাস সংগ্রহ: ৪০ (নভেম্বর)।

১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫১

২ নভেম্বর, ২০১৩:



# বন্ধুরা বলে মানিকজোড়, এক বড় ভাই জোড়া কলার সাথে তুলনা করে ডাকে 'ব্যানানাস্ִ'। এক ক্লাসমেট আজকেও ফোনে বলেছে, তোরা দুই দেহ, এক প্রান। এত বছরে ময়মনসিংহের মাত্র দুইটা মানুষ 'ভালা পাই'। এক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর আরেকটা @[100000824406564:অমিত]। মা-বাপি-রূপলের পর একসাথে সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছি ওর সাথেই। নিজের মায়ের রান্না আর হোস্টেলের বাবুর্চির রান্নার পর সবচেয়ে বেশি খেয়েছি ওর বাসাতেই। হলফ করে বলতে পারি ময়মনসিংহ ছেড়ে চলে গেলে একটা জিনিস মিস করলে সেইটা হবে ও। শুভ জন্মদিন পুটুশ!



৩ নভেম্বর, ২০১৩:



# বাংলাওয়াশ না, সবচেয়ে বড় তৃপ্তি ৩০০ প্লাস রান চেজ করার পথে, ফতুল্লার এমন একটা স্লো আউটফিল্ডে, সাকিব-তামিম ছাড়াও একটা মুহূর্তের জন্যেও মনে হয়নি বাংলাদেশ হারতে পারে! টোটাল ডোমিনেশন। কমপ্লিট প্রফেশনাল। বাই দ্যা ওয়ে, থ্রি জি'র মত বাংলাওয়াশও ছিলো বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন। এতবছর পর আজ তা পূরণ হলো!



# ১) বুদ্ধিজীবী হত্যা মামলায় চৌধুরী মুঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খানের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। জয় বাঙলা।







২) পরীক্ষার কারণে সবকিছুই খুব লেটে হয়। খালেদা জিয়া-শেখ হাসিনার কথোপকথন শুনলাম। অন্য কিচ্ছু নিয়ে আমার কোনো কথা নেই। শুধু একটাই কথা, খালেদা-হাসিনা বাদ, দুইটা মেয়ে ফোনে কথা বলে কিভাবে?! কেউই তো কথার মাঝে ন্যূনতম বিরতিটুকু দেয়না। কথার ঝাপটায় কিছু কথা বোঝাই যায়না। আরও মজার ব্যাপার কথা পুরোটুকু না শুনেই একজন আরেকজনকে উত্তর দেয়। বিসাইড পলিটিকস্ִ, ইটস্ִ লটস্ִ অফ ফান!



৩) জয়নাল আবেদিন ফারুকের ফোন স্ক্যান্ডাল আগেই শুনেছিলাম। এবার বাংলা লিকসের সৌজন্যে শুনলাম এম কে আনোয়ার এর স্ক্যান্ডাল। বিএনপির বড় বড় নেতাদের স্ক্যান্ডাল বের হচ্ছে। এমন না যে আওয়ামীলীগের কারও কখনওই হবে না। কিন্তু যে জিনিসটা খেয়াল করলাম, এইসব এরোটিক ফোন চ্যাট করার কথা টিন এজারদের। করছে সব বুড়া ভামেরা!







৪) আগামী জনসভায় চাইলে খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর কথা নকল করে বলতে পারবেন, 'হরতাল যখন দিয়েছি, হরতাল আরও দেবো। রাজবন্দী রাজাকারদের মুক্ত করে ছাড়বো। এনশাল্লাহ।'







৫) 'আই হেট পলিটিক্স', 'পলিটিক্স? ওয়্যাট?', 'পলিটিক্স মাই ফুট', 'রাজনীতি খায় না মাথায় দেয়?' ব্লা ব্লা ব্লা! এবং ইহা একটি অরাজনৈতিক স্ট্যাটাস!



৫ নভেম্বর, ২০১৩:



# ১) ছোটভাই ক'দিন আগে গ্যালাক্সি নোট থ্রি কিনেছে ৬৯ হাজার টাকা দিয়ে। কয়েকদিন ব্যবহার করার পর এখন আর ওর ফোনটা ভালো লাগতেছে না। মা কে বলেছে চাইলে আমি ফোনটা নিয়ে নিতে পারি। মা ক'দিন আগে ফোনে বললো, 'ওর আর এই ফোন ভালো লাগতেছে না। বলেছি না, ওর জন্যে আমার ৪ টা মেয়ে দেখে রাখতে হবে। বিয়ের কিছুদিন পরে বলে দিতে পারে এই বউ আমার ভালো লাগছে না। পাল্টায়ে দাও। তুমি ফোনটা নিবা, বাপি?' বললাম, 'নাহ্ִ। নিজের থেকে দামী জিনিস পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর মানে নেই!'



২) একমাত্র টি-টুয়েন্টিতে ইলিয়াস সানির বদলি হিসেবে ঢুকেছে সৌম্য সরকার। সৌম্যকে নিয়ে একটা ছোট স্মৃতি আছে। সাতক্ষীরায় আমার এক কাজিনের বাড়ি। বছর তিনেক আগে একবার গেছিলাম বেড়াতে। গিয়ে শুনি এলাকাভিত্তিক এক ক্রিকেট ম্যাচ হবে সেটার মাইকিং চলছে। ভাইটাকে নিয়ে গেলাম খেলা দেখতে। ওদের এলাকার হয়ে একটা বাহাতি ছেলে মারতি গোল্ড বলে একটার পর একটা কাভার ড্রাইভ খেলছিলো। টেপ টেনিস বা মারতি গোল্ড বলে ক্ল্যাসিকাল অফ ড্রাইভ খেলাই কঠিন। বল উঠে যায়। অথচ ওই ছেলেটা কী দারুণ অফ ড্রাইভ খেলে। বেশি না, যদ্দুর মনে পড়ে ৩৫/৪০ করেছিলো। এরপর বোলিংও দুর্দান্ত করলো। শুকনা, পাতলা, লম্বা ছেলেটা। মোটামুটি ভালোই পেস। আমার কাজিনের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কে রে এইটা? ও নাম বলতে পারেনি। শুধু বলেছিলো হায়ারে দুটো প্লেয়ার এনেছে, তার একটা ও। পাশের একজন থেকে শুনলাম, নাম সৌম্য। ফার্স্ট ডিভিশন খেলে।







কয়েকমাস আগে খুলনা গিয়ে এলাকার এক ভাইয়ের সাথে খেলা নিয়ে কথা বলছিলাম। উনি বলেছিলেন, 'রণি, খুলনা ডিভিশনের হয়ে সৌম্যর খেলা দেখলাম কয়েকটা। শেন ওয়াটসনের সাথে মেলানো ঠিক হবে কী-না জানিনা তবে নিশ্চিত একটা অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।' বয়স মাত্র ২০। বাংলাদেশ দলে দীর্ঘদিন একজন পেস-বোলিং অলরাউন্ডারের অভাব পুরণ করতে পারবে কী-না সেটা সময় বলে দেবে। তবে নির্বাচকেরা ঘরোয়া আর যুবদলের পারফরমেন্সকে বিবেচনায় এনে এই অতি অল্প বয়সে ওকে যে সুযোগ করে দিলেন, ওর ছোট কাধে যতটুকু আস্থা রেখে দেখালেন এবং বুঝিয়ে দিলেন নির্বাচকদের দৃষ্টি ওর উপর আছে সেটাই ওর ক্যারিয়ারে বড় প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করি।



৩) যার শব্দভান্ডার শূন্য, বোধ বিবেচনা শক্তি নগন্য, গালিই তার অস্ত্র। ভালো অভিজ্ঞতা হলো। বাই দ্যা ওয়ে, আমি খুব ক্ষুদ্র মানুষ বলেই জানতাম। আমার ছোট লেখা এত মানুষ সিরিয়াসলি নেয় জেনে ভীষণ অবাক হয়েছি! লাভড ইট এনিওয়ে। আমি দেশোদ্ধারে, ত্যানা পেঁচা-পেঁচি করতে বা বাগড়া বাঁধাতে অনলাইনে আসি না। আসি কিছু লেখা পড়তে, আপডেটেড থাকতে এবং সময় সুযোগে টুকটাক লিখতে। অনলাইন বাদে যে কাজগুলো করি, সেগুলোই আমার জীবনে এই মুহূর্তে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখন বুড়ো হয়ে যাবো, আর কিছুই করার থাকবে না, তখন অনলাইনকে প্রাধান্য দেবো। তার আগে না। সো, নাথিং সিরিয়াস। জাস্ট চিল।



৪) অনেকদিন পর একটা দিন রিল্যাক্স গেলো। এক প্রিয় স্যারের বাসাতে কিছু সুন্দর সময় কাটিয়ে এই রাতে বিরাতে ফিরতে ফিরতে স্ট্যাটাস লিখছি। হেডফোনে প্রেয়ার হলের 'বুঝছো' গানটা বাজছে। পুরো লেখাটাতে একটাও স্যাটায়ার নেই আজ সুতরাং কি লিখেছি, তা কি বুঝ্ִছো? নাকি ১৫৫ টা গালি রেডি করছো?



৬ নভেম্বর, ২০১৩:



# ১) বাংলাদেশ ক্রিকেট বলতে এখন দুইটা জিনিস বুঝি। জয় আর পরাজয়। অন্য কিছু না। 'ভালো খেলেছি', 'ভালো ফাইট দিয়েছি', 'মাথা উঁচু করে মাঠ ছেড়েছি'র দিনগুলোর এপিটাফ অনেক আগে লিখা হয়ে গেছে। এখন সে এপিটাফে যুগ পরিবর্তনের শ্যাওলা। 'আমরা অতিথিপরায়ন্ִ, 'নিউজিল্যান্ডকে বিদায় উপহার দিলাম আর কী', 'মিনোজরা মাঝে মাঝে জিতে যায়', 'ইটস অ্যান আপসেট' বা 'খেলা স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং আন্তর্জাতিক মানের হয়নি' কথাগুলো এখন শান্তনা খোঁজাও না, স্রেফ ট্রল। উই ওয়্যার নট আপ টু দ্যা মার্ক, অ্যান্ড উই লস্ট। দ্যাটস্ִ ইট। নো এক্সকিউজ।



২) যদ্দুর বুঝি, সৌম্য সরকারকে দলে ডাকা হয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে ২০১৫'র বিশ্বকাপকে মাথায় রেখে; আন্তর্জাতিক লেভেলে একটু বাজিয়ে দেখতে। ওদের পিচ তো আর উপমহাদেশের ট্রেডিশনাল স্পিন বান্ধব উইকেট হবে না। সেটা কেউ আশাও করে না। সুতরাং ২ পেসার ৩ স্পিনার ফর্মুলা কম কাজে দেবে তা অনুমানই করেই সম্ভবত ওকে ডাকা। জিয়া যেহেতু যথেষ্ট সুযোগ পাওয়ার পরেও থিতু হতে পারেনি, মুশফিকও ওকে বোলিংয়ে আনতে খুব একটা কনফিডেন্স পায় না এবং যদিও এক টি-টুয়েন্টি ম্যাচ একজন প্লেয়ারকে জাস্টিফাই করতে যথেষ্ট না তবুও সৌম্যকে বাজিয়ে দেখতে পারতো।



৩) প্রতিষ্ঠিত দলগুলোতে কিছু বিশেষ প্লেয়ার থাকে যাদের শুধুমাত্র বিশেষ সময়ে বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। ভিভিএস লক্ষণ বা বর্তমান চেতস্মর পূজারার কথা চিন্তা করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ন চন্দরপল, দক্ষিন আফ্রিকার অ্যালেভারো পিটারসেন, অ্যাশওয়েল প্রিন্স, শ্রীলংকার থিলান সামারাবীরা বা এই নিউজিল্যান্ডেরই বিজে ওয়াটলিং। কমবেশি ওয়ানডে খেললেও প্রত্যেককে মূলত শুরুর দিক থেকে গ্রুম করা হয়েছে বা হচ্ছে লংঙ্গার ফরম্যাটের জন্যে। শুধুমাত্র ওই সময়েই তাদের ডাকা হয়। খেলা কম থাকাতে এই প্লেয়াররা বেশি বিশ্রাম পায় এবং শুধুমাত্র এক ধরণের ক্রিকেটে মনোযোগের কারণে সফলতার সম্ভাবনাও বেশ বেশি থাকে। এবং স্ট্যাটিস্টিকস্ִ বলে তারা বেশ সফল। হাশিম আমলা-রাহুল দ্রাবিড় তো শেষ সময়ে এসে টি-টুয়েন্টি খেললো। কিছু প্লেয়ারকে এভাবেই গড়ে তুলতে হয়। অন্তত সফল দলগুলো বেশ আগে থেকে এই কাজটা করে আসতেছে। অথচ বাংলাদেশকে এদিকে নজর দিতে দেখি না। মমিনুলের লঙ্গার ভার্সনে এরকম দুর্দান্ত পারফরমেন্সের পরে ওকে হুট হাট শর্টার ফরম্যাটে না ডেকে লঙ্গার ভার্সন দু'টোর জন্যে বিবেচনা করা যেতে পারে। কালে কালে পানি অনেক গড়িয়েছে। দিনও অনেক বদলে গেছে। একটু ভিন্নধর্মী চিন্তা করার অবকাশ নিশ্চয়ই এখন নির্বাচকদের আছে।



৪) ক্রিকেটারদের নিয়ে বিজ্ঞাপন হচ্ছে এটা বেশ আশাব্যাঞ্জক। আবার যেসব থিম নিয়ে বিজ্ঞাপনগুলো হচ্ছে, যেমন, এতো বছর ধরে ডানো খেয়ে তামিম ছক্কা হাঁকায় বা ফেয়ার অ্যান্ড হ্যান্ডসামে আম্পায়ার-বোলার পটে যায়, টিফিন বিস্কুট খেলে সাকিবের মত ছক্কা হাকানো যায়, গ্লুকোজ খেয়ে সুপারম্যানের মত উড়ে অ্যাকুয়ারিয়াম ক্যাচ ধরা যায়; এগুলো ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে হতাশার। দেশের সেরা সন্তানেরা আরেকটু কৌশলী নির্মাতা বা আরেকটু লজিক্যাল বিজ্ঞাপনে কাজ করাটা ডিজার্ভ করে।



৫) জিম্বাবুয়ের সাথে একটা সিরিজ প্রস্তাবিত আছে। সেটা না হলে বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কার সাথে পরবর্তী সিরিজের জন্যে আরও প্রায় মাস তিনেকের অপেক্ষা। বাংলাদেশের খেলা ঈদ-পূজার মত। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আসে। আবার ক্যামনে জানি হুট করেই চলে যায়। যাওয়ার আগে চরম রাজনৈতিক অস্থির পরিস্থিতি বা দূর্যোগের মাঝেও ১৬ কোটি মানুষ কয়েকবার প্রাণ খুলে হাসতে পারে। অল হেইল টু আওয়ার টাইগারস্ִ। <3



# ক্রিকেটে একটা প্রচলিত কথাই আছে, ফরম্যাট যত সংক্ষিপ্ত, 'ছোট' দলগুলোর ভালো করার, বিশেষত অঘটন ঘটানোর সম্ভাবনা ঠিক ততটাই বেশি। দ্যাট ইজ হোয়্যাট গনা হ্যাপেনিং!



৮ নভেম্বর, ২০১৩:



# ১) এসএসসি পর্যন্ত এতটাই গোবেচারা ছিলাম যে, একটু বাইরে বের হলেই শার্ট ইন করে বের হতাম। বাপির সাথে বের হতে হলে আবার সদ্য গজানো গোঁফ-দাঁড়িটাও কেটে বের হতে হতো। মা চুল আঁচড়ে দিতো বা দিকে সিঁথি করে। ইন্টারে ক্যান্টনমেন্ট কলেজে ঘটে গেলো জীবনের অন্যতম এক 'প্যাথেটিক' ঘটনা। একবার চুল একটু বড় হয়েছিলো 'সম্ভবত'। সম্ভবত কথাটা একারণে বললাম কারণ আমার কাছে তেমনটা মনেই হয়নি। অ্যাসেম্বলির সময়ে কাঁইচি মিজান (বায়োলজির মিজান স্যার। কাঁইচি দিয়ে চুল কেটে দেওয়ার প্রসিদ্ধির জন্যে কাঁইচি মিজান নামে সুপরিচিত) কী ভেবে আরও ১০-১৫ জনের সাথে আমাকে পাকড়াও করলো। তারপর এক এক করে সবার চুলে নিজের নামের সদ্ব্যবহার করার পর আমার সামনে এসে কনফিউজড হয়ে বললো, 'নাহ্ִ, তোর চুল তো সামনে বেশি বড় হয়নি। তোরে ধরলাম ক্যান? পিছনে দেখি। এইতো, পিছনে বড়' বলেই পিছনে মিজানের বিখ্যাত কাঁইচিটা চালিয়ে দিলো। কাটার পর অবস্থা এমন হলো পিছনে অর্ধেক লম্বা চুল, অর্ধেক খাটো। দিনটা ছিলো মঙ্গলবার। পরের দুই দিন রাগে ওই চুল নিয়ে ওই বিদিখিস্তি দর্শনে ক্লাস করেছিলাম। কাটি নি; ইচ্ছে করে।



ওই শুরু হলো আমার চুলের উপর খেয়াল। মাথার মাঝখান দিয়ে সিঁথি করা শুরু করলাম। পিছনের চুল সামনের চুলের থেকে বড় রাখা শুরু করলাম। স্পাইক করাও। অথচ এর আগ পর্যন্ত এসব আমার মাথাতেও আসেনি। বয়সের 'দোষ'। বয়সের দোষ কথাটা মনে এলে অঞ্জনের 'ম্যারি অ্যান' গানটার একটা লাইন মনে আসে, 'বয়স তখন ছিলো পনেরো তাই ছিলো স্বপ্ন দেখার ব্যারাম। মাথার ভিতর ছিলো এলভিস প্রিসলি, খাতার ভিতর তোমার নাম'। একটা সময়ে এসে অবশ্য মাথার মাঝখান দিয়ে সিঁথি করা বন্ধ করে দিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত সেলুনে গেলে নাপিতকে প্রথম যে কথাটা বলি তা হলো, 'পিছনের চুল যেন সামনের থেকে বড় থাকে'।



২) মাত্র দু'-এক বছর আগের কথা। টিভি কার্ড এসে টিভিটাও দখল করে নিয়েছিলো কম্পিউটার-ল্যাপটপ। আর মাত্র খানেকটা দিন বেলা বোস, কম্পিউটারের যাবতীয় সব দখল করে নেবে স্মার্ট ফোন। ফেব্রুয়ারিতে অ্যাপেলের ম্যাকবুক কিনবো ভেবে রেখেছিলাম। সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে।



৩) শচীনের টেস্টে ১৬ হাজার রান হতে ১৫৩ রান বাকি। এমন সময়ে বিসিসিআই আমন্ত্রন জানিয়েছে কী-না ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যাদের সাথে দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করার সম্ভাবনাও খুব কম। এর থেকে বাংলাদেশকে আমন্ত্রন জানাতো। তাতে রানগুলো করার সম্ভাবনা বাড়তো বৈ কমতো না। ক্রিকেটের সর্বকালের সেরাকে একবারই সামনে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছিলো। এশিয়া কাপে। ওই ম্যাচটাতেই শততম এবং শেষ সেঞ্চুরীটা করেছিলো শচীন। এবং ম্যাচটা জিতেছিলো বাংলাদেশ।



৪) গতকাল অনুপ ফোন করে জানালো অগ্রনী ব্যাংকে ওর চাকরি হয়ে গেছে। ভোলাতে পোষ্টিং। আর মাত্র কয়েকটা মাস বেঁচে থাকলে নিজের মা কে বেতনের টাকাটা তুলে দিতে পারতো। সম্ভবত প্রতিটা ছেলেরই একটা অলিখিত, অব্যক্ত স্বপ্ন থাকে প্রথম বেতনের টাকাটা মায়ের হাতে তুলে দেওয়ার। ওর হলো না। লাইফ হার্টস্ִ।



৫) মা'র একটা অদ্ভুত গুন আছে। আমার পরীক্ষার সময়টাতে যেখানে যা ঘটে কিছুই বলে না যাতে আমার মাথায় অহেতুক টেনশন না কাজ করে। সব মনে করে বসে থাকে। যেদিন পরীক্ষা শেষ হয় ওইদিন সব একে একে বলে। গতকাল গত ১৫ দিনের কাহিনী শুনলাম। কিছু বলবে বলে মা তার কথাগুলো চেপে বসে আছে আর তারপর ঘন্টার পর ঘন্টা ৬০০ মাইল দূরে থেকে মা-ছেলে ফোনালাপ করছে। কী স্বর্গীয় অনুভূতি!



৬) মনিরকে আগুনে জ্বলেই মরতে হলো। বিবেক নেতা-নেত্রীদের যে একটুও নাড়া দেয়না তার চাক্ষুষ প্রমান আবার তিনদিনের হরতাল। মানুষের জীবন দলীয় স্বার্থের কাছে স্রেফ নস্যি। সে যাই হোক, কিছুদিন হলো ইচ্ছাকৃত সব রাজনীতি রিলেটেড খবর অ্যাভয়েড করে যাই। শিরোনামটুকু পড়েই টপিক পাল্টাই। সরকারের অধীনে নির্বাচন না তত্ত্বাবধায়ক- কদ্দূর কী, সিপিবি-বাসদ সোহরাওয়ার্দীতে আজ কী বলেছে; এসব জানতে বা পড়তে একটুও ইচ্ছে করে না। এই যে সাঁথিয়ায় সংখালঘু নির্যাতন হলো, হরতালে বেশ কয়েকটা প্রাণ গেলো- এগুলো শুধু শিরোনাম পর্যন্তই জানি। এসবের খোঁজ খবর না রাখলেই বরং ভালো থাকা যায়। এর থেকে বরং প্রিমিয়ার লীগ-চ্যাম্পিয়নস্ִ লীগ, ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা পাকিস্তান-সাউথ আফ্রিকার খোঁজখবর রাখছি। এতে এই বেশ ভালো আছি এই ভালো না থাকার দেশে। অ্যালবামের নাম মনে নেই, @[744865412:Bappa]দা'র 'এইতো বেশ' শিরোনামে একটা গানের লিরিক আছে,







'এইতো বেশ আমার জীবন



ওলট-পালট ইচ্ছেমতন



গড়ো যখন, ভাঙো তখন



কেউ জানেনা কোথায় কখন



এইতো বেশ, আমার জীবন।'



১১ নভেম্বর, ২০১৩:



১) 'I'm saying this with certainity if Bangladeshi batsmen had been playing this series they would have won it 5-0.' -Shoaib Akhter

এইট পাশের উপরে হলে আপনার কটাক্ষটা বোঝার কথা। কী সূক্ষভাবেই না শোয়েব বাংলাদেশের ক্রিকেটকে হেয় করলো! ওর কথার অন্য ব্যাখ্যা দেওয়ার লোকের অভাব নাও হতে পারে কিন্তু আমি জানি, আমি ইংলিশটা টুকটাক জানি এবং এই লাইন বোঝার ক্ষমতাটা আমার আছে। হুকস্ִ-বয়কট-সিঁধু-ইউনুস*-শেওয়াগদের দলে যোগ হলো শোয়েবের নাম।



২) সবকিছুই লেটে হচ্ছে। ব্রুনাই ওপেনের পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শিরোপা জিতলেন সিদ্দিকুর- সে খবরটাও পেয়েছি গতকাল মাঝরাতে! সিদ্দিকুরকে দেখলে আমার এমন মনে হয়, আগামী ৫০ বছরেও 'হয়তো' সিদ্দিকুর বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক গলফার হয়েই থাকবেন। পরের প্রজন্ম হয়তো আর কোনো আন্তর্জাতিক বাঙালি গলফারকে দেখতেই পাবে না। গলফের মাঠে আর হয়তো কেউ লাল-সবুজ ওড়াতে পারবে না। সামনেই অস্ট্রেলিয়ায় গলফ বিশ্বকাপ। আর কে কবে লাল-সবুজ হাতে নিয়ে গলফ বিশ্বকাপে যাবে- কে জানে! সিদ্দিকুর অনন্য। ভারতীয়রা যদি 'আমি টেন্ডুলকারকে খেলতে দেখেছি, আমি গর্বিত' প্লাকার্ড নিয়ে মাঠে আসতে পারে, আমি রণিও বলতে পারি আমি সিদ্দিকুরকে খেলতে দেখেছি। আমার আগের প্রজন্ম তাঁকে দেখেনি, পরের প্রজন্ম দেখতে পাবে না। আমি গর্বিত।



৩) নূর হোসেন দিবসের তাৎপর্য খুঁজে পাই না। ধরে নিলাম, আমি বা আপনি লীগ অথবা বিএনপিকে ভোট দেই বা দেন (ইয়ে, জামাতকে গোনায় ধরি না)। ম্যাডাম-আপা দু'জনই যখন এরশাদকে নিয়ে টানা-হেঁচড়া করেন ভোটের স্বার্থে, তাতে এরশাদ দোলনায় বসে একবার এদিকে আরেকবার ওদিকে দোলে আর আমি আপনি হায় নূর, হায় হোসেন, ওহে রতন করি; না জানি তাঁরা অলক্ষ্যে কী অট্টহাসিটাই না হাসে!



৪) বাপ-মায়ের বড় পোলা- খেয়াল হলো, এর একটা ইন্টারেস্টিং দিক আছে। আমার মা কে কেউ 'রূপলের মা' বলেনি কোনোদিন। অনেক বয়ষ্ক মহিলা এখনও মা'কে 'রণি'র মা' বলেই ডাকে। সারাজীবনই ডাকবে। মা নিজের নাম বাদ দিয়ে পরিচিত হয় বড় সন্তানের নামে; আমার নামে। ইন্টারেস্টিংই তো।



৫) গত ৫ বছরে ময়মনসিংহের একটা লোকাল মানুষকেও 'ময়মনসিংহ' শব্দটা বলতে শুনিনি। বলে 'মাইমেনসিং' অথবা 'মমিশিং'।



১৩ নভেম্বর, ২০১৩:



# ১) আরও একবার ভেনিজুয়েলা থেকে মিস ইউনিভার্স নির্বাচিত হলো; ৭ম বারের মত। আরও একবার মিস ইউনিভার্স-২০১৩, মারিয়া গ্যাব্রিয়েলা আইলারকে একদমই ভাল্লাগলো না! এই প্রতিযোগীতায় নাকি বাচনভঙ্গী, উচ্চারণ, র্যাম্পিং, উপস্থিত সাক্ষাৎকার দেওয়া লাগে! সুন্দরী প্রতিযোগীতা কোনো পছন্দের বিষয় না, কিন্তু যদি হতেই হয় আমার মনে হয় সুন্দরী হতে হবে সৌন্দর্য্য দিয়ে, শুধু সৌন্দর্য্য দিয়ে। এইসব চাপা ভাঙা, পাতকাঠির মত হাত-পা'র বদলে সুন্দর একটা মুখ দিয়ে। হাসি দিয়ে। আর কিচ্ছু না। সুইম শ্যুট, ইভিনিং গাউন, বিকিনিতে কী সৌন্দর্য্য বোঝা যায় রে বানিয়া? বাই দ্যা ওয়ে, এতো অস্পরীর মত বাঙালি মেয়ে থাকতে এইসব খ্যাত মেয়েরা ক্যামনে মিস ইউনিভার্স হয়! ক্যামনে জামদানী-বেনারসী থেকে ইভিনিং গাউন সুন্দর? সব মাথার উপর দিয়ে যায়!



২) হঠাৎ জ্বর এসেছে। সাথে হাঁচি-কাশি-মাথা ব্যথা-নাক দিয়ে পানি; কিচ্ছু বাদ নেই আর কী! শয্যাশায়ী হয়ে অনেক্ষণ ফোন টিপছি দেখে জুনিয়র রুমমেটটা বললো, ভাই poriborton.com -এ একটু ঢু মেরে আসেন। একটা নিউজ আছে। নিশ্চিৎ আপনার মন ভালো হয়ে যাবে। গেলাম। গিয়ে দেখি 'রোবটের আত্মহত্যা' শিরোনামে একটা নিউজ। পড়ে মোটামুটি বোঝা গেলো মানুষের চাপানো অমানুষিক কাজের চাপ আর সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে রোবট। বললাম, 'তাও ভালো, লেখেনি মেহজাবীনের প্রেমে ছ্যাকা খেয়ে আত্মহত্যা করেছে এত্তগুলো অস্ট্রিয়ান রোবট!'



৩) @[100000957251122:Dipta] ছেলেটার সাথে আমার দেখা গণজাগরণ মঞ্চে। শুকনা একটা ছেলে শ্লোগানের তালে তালে ঢোল বাজাচ্ছে আর গলা ভাঙা চিৎকার দিয়ে বলছে, 'ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই'। পরিচয় হওয়ার পরে জানলাম ও আমার ছোট ভাইয়ের সাথের। একই বয়সী। ইন্টার দেবে। এরপর শুধু আমরা আর ভাইয়ের সম্পর্কে আটকে থাকিনি। বন্ধুর মত ঘুরে বেড়িয়েছি বেশ কিছুদিন। নিজে উপদেশ অপছন্দ করি বলে খুব কাছের মানুষ ছাড়া সহসা কেউকে উপদেশ দেই না। দীপ্তকে দিয়েছিলাম। একবার না, দু'বার। এইচএসসির আগে বলেছিলাম সেলফোনটা বন্ধ করে রাখো। পরীক্ষার পরে কোচিংয়ের সময়ও আগে বলা কথাটার পুনরাবৃত্তি করেছিলাম। বিলিভ মি, হি হ্যাজ টেকেন ইট কুয়াইট সিরিয়াসলি। আজ সকালে একটা আননোন নাম্বার থেকে দীপ্ত ফোন করে জানালো বুয়েটে ৪৭১ তম হয়েছে। কয়েক দিনের ব্যাবধানে এক ভাই খুলনা মেডিকেলে, আরেক ভাই বুয়েটে। সুখী হতে জীবনে খুব বেশি কিছু লাগে না। দীপ্ত, জানো নিশ্চয়ই, খুব সম্ভবত নিজামীর রায় আগামী সপ্তাহেই। অনেকগুলো কাচ্চি বিরিয়ানি জমা হয়ে আছে!



৪) সকাল থেকে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে কয়েকশ' আবেগতাড়িত স্ট্যাটাস পড়লাম। তার প্রায় এক চতুর্থাংশে হুমায়ূন বানানটা 'হুমায়ুন' লেখা। পুরাই আবেগে কাইন্দালচি! বাই দ্যা ওয়ে, আমার বুকসেল্ফ থেকে যত বই খোয়া গেছে তার প্রায় সব এই হুমায়ূন আহমেদের। আপনার বই চোরে নেয় ক্যান? আমার ট্যাকা গুলার কী হবে? আজ আর মুহম্মদ জাফর ইকবাল না, আজকে হুমায়ূন আহমেদ, আপনে এই প্রশ্নের উত্তর দ্যান!



৫) জ্বরের একটা সুবিধা হলো, দু'-একদিন বেশ টেনশন মুক্ত থাকা যায়। নৈমিত্তিক রুটিনটার সাথে একটু আধটু আঁড়ি-উঁড়ি খেলা যায়। আর সবচেয়ে খারাপ দিক, একটানা মা'র কথা মনে পড়তে থাকে। মা কে ছাড়া থাকার এই এক দু:সহ যন্ত্রণা! অত:পর মা কে নিয়ে একটা প্রিয় গান বের করে শুনছি তো শুনছিই। দুধের স্বাদ ঘোলেও না, গরুর ডাকে মেটাবার চেষ্টা আর কী! আজকেই গোটা বিশ-ত্রিশবার শোনা হয়ে গেছে গানটা:



'পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব



মাগো বলো কবে শীতল হবো?



কতদূর আর কতদূর, বলো মা।







আঁধারের ভ্রুকুটিতে ভয় নাই



মাগো, তোমার চরনে জানি পাবো ঠাঁই



যদি এ পথ চলিতে কাঁটা বাঁধে পায়ে



হাসিমুখে সে বেদনা সবো



কতদূর আর কতদূর, বলো মা।







চিরদিনি মাগো তব করুনায়



ঘর ছাড়া প্রেম দিশা খুঁজে পায়



ওই আকাশে যদি মা কভু ওঠে ঝড়



সে আঘাত বুকে পেতে লবো।



কতদূর আর কতদূর, বলো মা।







যতই দু:খ তুমি দেবে দাও



তবু জানি কোলে শেষে তুমি টেনে নাও



মাগো, তুমি ছাড়া এ আঁধারে গতি নাই



তোমাকে কেমনে ভুলে রবো



কতদূর আর কতদূর, বলো মা।'



১৬ নভেম্বর, ২০১৩:



# শচীনের ফেয়ারওয়েল স্পীচটা এতই ইমোশনাল করে দিয়েছিলো, 'বিদায় শচীন' কথাটাও লিখতে পারিনি। এখন ভাবলাম, না লিখে ভালোই করেছি। 'শচীন' ইজ অ্যান অ্যাডজেক্টিভ। আই ক্যান অনলি মেনশন অ্যা নেম অর নাউন, নট অ্যান অ্যাডজেক্টিভ!







অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার বলেছিলো, 'There are two kinds of batsman in the world. One, Sachin Tendulkar and two, all others'. আমি একটু অন্যভাবে লিখি। জন্ম থেকে এ অবধি দু'টো ক্রিকেট 'এরা'র সাক্ষী হলাম। এক, শচীন যতদিন ক্রিকেট খেলেছে আর দুই, দ্বিতীয়টা শচীন রিটায়ার করার পর আজকের শ্রীলংকা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে শুরু হলো।



১৭ নভেম্বর, ২০১৩:



# ১) অদ্ভুত্ִ এক আবহাওয়া। এই গরম লাগে, এই ঠান্ডা। ফ্যান বন্ধ রাখলে গরম লাগে, চালালে শীত। রাতে কাঁথা গায়ে দিলেও ঘেমে যাই, ভোরে কম্বলেও শীত মানায় না। বছরান্তে এই সময়টা দু'বার আসে; এক, শীতকালের শুরুতে আর দুই, শীতকালের শেষ নাগাদ। সর্দি-কাঁশিতে আক্রান্ত হওয়াটা বাদে শীতকালটা বেশ প্রিয়। এসময়টাতে কুয়াশা বা পলাশ ফুল থেকে প্রিয় গাড় রঙের চাদর বা হাতের কাজ করা শাল জড়ানো তরুণী। পিঠা থেকেও প্রিয় গরম চটপটি, হালিম আর আদা চা।



২) গত বিশ্বকাপের টিকিট কাটার স্মৃতি মনে পড়ে। এরকম এক সময়ে, সম্ভবত: আরেকটু বেশি শীতে দেড় দিন; আগেরদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে পরের দিন বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটেছিলাম। সারা রাত রাস্তায় দাঁড়িয়ে! পায়খানা চেপে রেখে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে ড্রেনে প্রস্রাব করে! চিপস-বিস্কুট-চা খেয়ে দেড় দিন! সে এক দুর্ধর্ষ অভিজ্ঞতা। কয়েকশ' মানুষ সিটি ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে গল্প করে রাত পার করলাম। সাধারণ মানুষের ক্রিকেট আবেগ কতখানি সেদিনই প্রচন্ডভাবে প্রত্যক্ষ করলাম। অল্প অল্প শীতে যে রোদটা ওঠে, সেটাও শরীর পুড়িয়ে দেয়। বিকেল পর্যন্ত সেই রোদে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যতক্ষণে টিকেটের কাছে পৌছালাম, ততক্ষণে বাংলাদেশের ম্যাচের টিকেট শেষ! কোয়ার্টার-সেমি আর অন্য ম্যাচের টিকেট অ্যাভেইলেবল। হিশেব মিলিয়ে, যাতে বাংলাদেশ কোয়ার্টারে গেলে ওই ম্যাচে আসার সম্ভাবনা থাকে, এরকম মিলিয়ে দু'টো টিকেট কিনলাম। বাংলাদেশ পারলো না। ওই ম্যাচে পড়লো পাকিস্তান! গেলামই না বিশ্বকাপে। বেঁচে দিলাম এতো সাধের বিশ্বকাপের টিকেট। পাকিস্তানের ফ্যান বেজ এতো বেশি যে আমার টিকেট দু'টোর জন্যে কাড়াকাড়িও হলো! টিকেট ছেড়েছে বিশ্বকাপের। এখন যারা এই কষ্ট সহ্য করে সোনার হরিণের মত একখান টিকেটের জন্যে লাইনে দাঁড়িয়ে, তাদের জন্যে সত্যিই গর্ব হয়। এই মানুষেরাই গ্যালারির প্রাণ। বাংলাদেশ দলের 'হোম অ্যাডভান্টেজ'। আরেকটা কারণে এই লেখাটুকু। আজকে শচীন টেন্ডুলকার যে দর্শকদের জন্যে 'শচীন' হয়েছেন, দিনের পর দিন যারা শচীন-শচীন করে গ্যালারিতে সুর তুলেছেন, সেই শচীনের ফেয়ারওয়েল ম্যাচে মাত্র ৫০০০ সাধারণ দর্শককের জন্যে টিকেটের বরাদ্দ ছিলো। ওয়াংখেড়ের বাকি সবগুলো সিট ছিলো 'অসাধারণ' দর্শকদের জন্যে!



৩) আজ এক শুভাকাঙ্খী বললো, 'হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন, জনপ্রিয়তা নিচে নামার মাপকাঠি। বুঝলি, বেশি লাইক কমেন্টও নিচে নামার মাপকাঠি। আগে দশটা লাইক দুইটা কমেন্ট পাইতি, ছাগলামি করতি না। তোর লাস্ট স্ট্যাটাসে এক ছাগলের সাথে ওর লেভেলে নাইমা যে যুক্তিবাদিতা দেখাইলি, তাতে যা বোঝার বুইঝা গেছি! তুই হেতের কমেন্ট পইড়াও হেতের উদ্দেশ্য বুঝস নাই? এতো গাধা হইলি কবে?' আগের স্ট্যাটাসটাতেই এক 'বিজ্ঞ'-এর সাথে যুক্তি প্রদান করতে গিয়ে অযথা সময়ের কী নিদারুণ অপচয়ই না করেছি, এটা ইনসাল্ট হওয়ার পরে এখন বুঝতেছি!



৪) প্রসঙ্গ এক, বাইরে থেকে কবে কবে যেন পাচারকৃত টাকা দেশে আসলো। তাও নাকি তারেক জিয়া নিরাপরাধী! হতেই পারে। প্রসঙ্গ দুই, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আওয়ামীলীগের সাথে আলোচনায় রাজি বিএনপি। এই দু'টো প্রসঙ্গের মাথে কোনো যোগসদৃশ পাচ্ছেন? থাক, বলতে হবে না। প্রসঙ্গ তিন, এরশাদ মহাজোট ছেড়ে তের দফা বাস্তবায়নে নেমেছেন। না, এবার আর আগের দু'টো প্রসঙ্গের সাথে তৃতীয় প্রসঙ্গের যোগসাদৃশ খোঁজার দরকার নেই! শুধু রাজনীতি বিষয়ে 'স্পিকটি নট' থাকি।



১৯ নভেম্বর, ২০১৩:



# পড়ালেখার হাতেখড়ি হয় বর্ণমালা আর ধারাপাতের বইয়ের মাধ্যমে। কিন্তু বড় হলে কেউকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার প্রিয় বইয়ের নাম কী; তখন উত্তর আসে 'শেষের কবিতা', 'সূর্যদীঘল বাড়ি' বা 'পুতুল নাচের ইতিকথা'। অনেক গুনী শিল্পীর অনেক গান শুনে বড় হয়েছি কিন্তু যখন আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয় আমার প্রিয় গান কোনটা, তখন কিভাবে কিভাবে যেন 'গাড়ি চলে না', 'তোমাকেই বলে দেবো', 'বায়োস্কোপ', 'আমাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো চাঁদ', 'সাদা ময়লা', 'বয়স হলো সাতাশ', 'তোমার ভাঁজ খোল', 'চোখটা এতো পোড়ায় কেন' চলে আসে। একজন সঞ্জীব চৌধুরী আমার কাছে এতখানিই।







আজ সঞ্জীব চৌধুরীর ষষ্ঠ মৃত্যবার্ষিকী। দাদা'র জন্ম আর মৃত্যুদিনগুলো একখন্ড অতৃপ্তি নিয়ে আসে; শেষপর্যন্ত দলছুট্ִ হওয়াই লাগলো? আর কিছুদিন বেশি বাঁচলে হতো না সঞ্জীব দা'? কেন শুধু আপনাকেই চলে যেতে হলো?



২২ নভেম্বর, ২০১৩:



# কেভিন পিটারসেন আজ ব্রিসবেনে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে যখন ব্যাটিংয়ে নামলেন তখন তার নামের পাশে ১০০ টেস্ট! পিটারসেনের অভিষেক ২০০৫ এর ২১শে জুলাই। ইনজুরি, উত্থান-পতন বাদ দেওয়ার পরেও মাত্র ৮ বছরে নামের পাশে ১০০ টেস্টের মাইলফলক! তার মানে হলো ইংল্যান্ড প্রতি বছর ১৩টা বা তারও বেশি টেস্ট খেলে। সম্প্রতি অবসরে যাওয়া শচীন টেন্ডুলকার ২৪ বছরে খেলেছেন ২০০ টেস্ট। আর সেই ২০০০ সালে টেস্টে অভিষেকের পর গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ সাকুল্যে খেলেছে মাত্র ৮১ টা টেস্ট!



২৩ নভেম্বর, ২০১৩:



# : বাবুল, শুনলাম, আজকে নাকি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জানমাল এবং উপাসনালয়ের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবীতে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ?



: স্যার, আমিতো শুনলাম আজকে নাকি শিয়ালদের পক্ষ থেকেও বিক্ষোভ; মুরগীদের জানমাল এবং পূর্ণ স্বাধীনতায় বনে-বাদারে ঘুরে বেড়ানোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবীতে। কী কো-ইনসিডেন্ট মাইরি!



২৫ নভেম্বর, ২০১৩:



# প্রেয়সী, সামনে পরীক্ষা। তুমি হরতাল মানো না। তাই এবার অবরোধ দিলাম। শুধু রাজপথ, নৌপথ, রেলপথ নয়; হৃদয়পথেও। পিকেটিং করলে করো কিন্তু ফোনেটিং না!



২৮ নভেম্বর, ২০১৩:



# তারিখের হিসেব রাখি আজকাল। বারের হিসেব রাখা হয়না। শিরোনামহীনের 'বন্ধ জানালা' ইদানিং স্পিকারে না বাজালেও সন্ধ্যা থেকে সকাল জানালাটা বন্ধ করেই রাখি। হরতাল-অবরোধ আর বাসি রাজনৈতিক কপচানিতে ভুগি না আর আজকাল, ভুগি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস আর কমন কোল্ডে। সবকিছু থেকে কিছুটা গুটিয়ে যাচ্ছি। ব্যাঙ হতে ইচ্ছে হয়েছে। শীতনিদ্রা টাইপ কিছু উপভোগ্যই হবে হয়তো। একটা সিনেমা দেখেছি শেষ কবে বা শেষ উপন্যাসটা কবে পড়েছি সেটা বের করতে হলেও নিরীহ অত্যাচারিত মস্তিষ্ককে উপর্যুপরি কয়েকটা ককটেল মারতে হবে। সে পথে না যাই। ব্লগ আর অনলাইন পোর্টাল পড়াও নৈমিত্তিক অভ্যাস। অল্প-স্বল্পে সেটাও না থাকার মত টিকে আছে। টিকে গেছে শুধু অঞ্জন। ওকে না শুনলে কেমন দম বন্ধ লাগে। 'সুদিন আসবে বলে ওরা আগুন জ্বালায় আর হাজার হাজার মানুষ মরে যায়' শুনতে শুনতে ফেসবুকে লগ-ইন করে চোখে পড়ে পেট্রোল বোমাতে ১৯ জন দগ্ধ। না, খুব বেশি আলোড়িত হইনা আর। মাছের ব্যাবসায় লাভের জন্যে ফরমালিনের যেমন দরকার হয়, ঠিক জানিনা, ভোটের ব্যাবসায় নিশ্চয়ই সেরকম রক্তের প্রয়োজন পড়ে। আমি ঠিক বুঝি না। আগে বুঝতে চাইতাম, এখন সেটাও কাজ করে না। ধারণা করি, পর্যাপ্ত লাশ পাওয়া না পাওয়ায় হরতাল-অবরোধের মেয়াদ বাড়ে। শুধু ধারণাতেই সীমাবদ্ধ থাকি, হিসাব-নিকাশ মেলাতে যাই না।



দু'-একবার জানালা বন্ধ ঘরে সমকালীন রাজনীতির আলোচনা আসর বসে। আমি প্রসঙ্গ পাল্টে জাফর ইকবাল স্যারে ফিরি। স্যার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় যখন সবাই স্যারের নৈতিক জয় নিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়, তখন আমার অজানা ভয় জমা হতে থাকে। বলি, স্যার তাঁর আদর্শে জিতে গেছেন, এখন সিলেট ছেড়ে চলে আসুক। জামাত-শিবিরের শত্রুতা ছিলোই, এখন লীগ-বিএনপি এক হয়ে স্যারের বিরুদ্ধে। যে বামদের যথেষ্ট শিক্ষিত ভেবে অন্যদের মত অন্তত অপছন্দ করতাম না, দোষ বলতে শুধু বুঝতাম মধ্যযুগীয় ধ্যান-ধারণা থেকে বের হতে না পারা, তারাও দেখি স্যারের বিপক্ষে; তখন স্যারের শাবিপ্রবি ছাড়াই ভালো মনে হতে থাকে আমার কাছে। বলে ফেলি। বলি, সিলেট থাকা মানে আমার চিন্তা চেতনায় এখন থেকে হুমায়ুন আজাদ ভর করে থাকবে। সবাই বলে, ধ্যার, কী হবে? ভার্সিটির মধ্যে গিয়ে হামলা করা সোজা না। এতদিন ধরে আছেন না? আমার কাছে এতদিন আর এখন কেন জানি আলাদা লাগে। মেলে না। মেলাতে পারি না। কথায় কথা বাড়ে। বলা হয় ছোট্ট এক স্বেচ্ছায় পদত্যাগের ঘটনা যেভাবে পুরো দেশকে নাড়িয়ে দিলো, এটা শুধু জাফর ইকবাল স্যার বলেই সম্ভব হয়েছে। আনিসুল হকদের মত সব প্লেটে চেটে দেওয়া লোক না বলেই হয়েছে। আমি মাথা নাড়ি।



আলোচনা থামে এক সময়ে। দিন শেষে রাতের খাবার খেয়ে তাকিবকে খেলার নিউজ জিজ্ঞাসা করি। জিয়া আরেফিন আজাদের ওয়্যালে গিয়ে দেখি ভাইয়া জিমিকে নিয়ে ভালোই আছেন। বোহেমিয়ান টিউন-এ আরেক অঞ্জন প্রেমিক পাই। অঞ্জন সম্পর্কে লেখা পাই, 'অঞ্জন বন্ধু। গলায় অসাধারণ কোনো সুর নেই। আহামরি কোনো গান নেই। কিন্তু বন্ধুতো বন্ধুই। খুব টানে।' উপমাটা মনে ধরে আমার। তাকে আমার ভালো লাগতে থাকে। রাবীন্দ্রিক প্রেমিকার মত অঞ্জনীক প্রেমিকা বলে কিছু একটা হয় কী-না সে চিন্তাটা কালক্ষেপন করে। তারপর দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘুমানোর আগে আবার অঞ্জনকে নিয়েই বসি,







'একটু ভালো করে বাঁচবো বলে আর একটু বেশি রোজগার



ছাড়লাম ঘর আমি, ছাড়লাম ভালোবাসা, আমার নীলচে পাহাড়'







রাত্তির নেমে এলে তিনশো' বছরের এই সিমেন্টের জঙ্গলে সব ভুলে এই বেশ ভালো আছি।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৬

মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: পোস্টে প্লাস জানিয়ে গেলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.