![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সালটা সম্ভবত ২০১০ হবে।
আমি প্রথমবার ইউরোপ যাচ্ছি। তাও একা একা। এর আগে বিদেশ যাওয়া মানে পাশের বাড়ি ভারতে গোটা ১০/১১ বার তখন পর্যন্ত যাওয়া হয়েছে। ভুটান, নেপাল, থাইল্যান্ড একবার করে যাওয়া হয়েছে। এবার জার্মানের ফ্রাংকফ্রুট যাচ্ছি ইউরোপিয়ান আর্ক নামে একটি সংস্থার এওয়ার্ড সিরেমনি অনুস্টান কাভারে। এই অনুস্টানটি হয়েছিল ফ্রাংকফ্রুট হোটেল ইন্টারকনে। বাংলাদেশ থেকে সেবার ৩ টি গ্রুপ অফ কোম্পানি পুরস্কৃত হয়েছিল। জার্মানে উচ্চ শিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সুযোগ সৃস্টিতে অবদান রাখায় সম্মাননা পেয়েছিলেন মি: সুমন তালুকদার ও তার প্রতিস্টান এসএসবিসিএল।
যাহোক আমি সেবার গালফ এয়ারে জার্মান যাবার পথে কি ভোগান্তিতে পড়েছিলাম সেই স্মৃতিটা এখনো মনে আছে। একই সাথে চিরশত্রু পাকিস্তানিদের উপর রাগটা আরো বেড়েছিল সারজাহ এয়ারপোর্টে। সে গল্পটাই বলছি।
ঢাকা থেকে সন্ধ্যা সাতটায় আমার ফ্লাইট। চারঘন্টায় বাহারাইন পৌছে যাই কোন ঝামেলা ছাড়াই। সারজাহায় আমার একঘন্টার বিরতি শেষে কানেক্টিং ফ্লাইট বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায়। সারজাহ এয়ারপোর্ট অনেক আধুনিক ও খুবই সুন্দর। আমি ট্রানজিটের এই একঘন্টা সময় কফি , ২/৩টা সিগারেট খেয়ে এবং ইমিগ্রেশন শেষ করে কাটিয়ে দেই।
ট্রানজিট এয়ারপোর্টে নেমে আমি সব সময় প্রথমেই লোকাল টাইম এডজাস্ট করে নেই। তারপর বোর্ডে খুজে নেই আমার পরবর্তী ফ্লাইট নাম্বার, ডিপারচার টাইম এবং গেইট নাম্বার । পেয়ে গেলে শান্তিমতন একটা কফি খেয়ে স্মোকিং জোন খুজে বের করি।আরাম করে সিগারেট টানার তৃপ্তিই আলাদা।
সিগারেট খেয়ে এসে ঘড়ি দেখি প্লেন ছাড়ার মাত্র ২০/২৫ মিনিট বাকি। আস্তে ধীরে ৬/ এ গেইটে গিয়ে দেখি ফ্রাংকফ্রুটগামী গালফ এয়ারে বিশাল লাইন। সবাই বোর্ডিং কার্ড ও ল্যাগেজ ট্যাগেজ নিয়ে এগুচ্ছে। আমিও আমার হ্যান্ল্যাগেজ নিয়ে দাড়িয়ে গেলাম। আমার পিছনে খেয়াল করে দেখলাম আরো ৭০/৮০ জ ন সারিবদ্ধ হয়ে দাড়িয়েছে। কিছুক্ষন অপেক্ষার পর আমি বোর্ডিং কার্ড দেখিয়ে সিকিউরিটি চ্যানেল অতিক্রম শেষে প্লেনে উঠার টার্মাকে যেতেই এক সিকিউরিটি অফিসার আমার পাসপোর্ট দেখতে চাইলেন। বুকপকেট হতে পাসপোর্ট হাতে দিতেই তিনি আমাকে হল্ট করালেন এবং সাইডে দাঁড় করিয়ে আমার পিছনের যাত্রীদের হাসিমুখে সি অফ করছেন গুড ইভেনিং স্যার, হ্যাভ এ নাইস জার্নি বলে।তার আচরনে মনে হলো আমি বাংলাদেশী হয়ে জার্মান কেন যাবো? আমি কেন মিডিল ইস্টের প্যাসেঞ্জার হলাম না?
আমি টার্মাক প্যাসেজের এক সাইডে দাড়িয়ে রীতিমতন ঘামছি। আমার পাসপোর্ট তখনো ছয় ফুট লম্বা চাপদাড়িওলা পাকিস্তানি সিকিউরিটি অফিসারের হাতে। বিপদে পড়েছি কিনা বুঝতে পারছি না। এরকম সময় আমার গলা দিয়ে কথা বের হয় না। কেমন ফ্যাসফ্যাসে কন্ঠে একবার তাকে বললাম, হোয়াট হ্যাপেন্ড? হোয়াই ডিড ইউ স্টপ মি?
সেই পাকিস্তানি আমার কথায় কান দেয় না। সে অন্য যাত্রীদের সাথে গুড ইভেনিং স্যার বা ম্যাডাম বলতে ব্যস্ত। আমি ১৫/২০ মিনিট অসহায়ের মতন দাড়িয় থাকতে থাকতে চরম বিরক্ত।মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি খ্যাতাপুরি বিদেশের। জার্মান যামুই না। ফিরতি প্লেন ধরে ঢাকায় চলে আসব।
এরকম যখন ভাবছি তখন সেই লম্বা লোকটি আমার সামনে এসে দাড়ালো। রাগে ক্ষোভে আমি তার চেহারার দিকে না তাকিয়ে লক্ষ্য করি আমাকে ছাড়া সব যাত্রী প্লেনে উঠে গেছে। প্লেনের দরজায় দুজন অপরুপ সুন্দরী এয়ার হোস্টেস আমার জন্যই অপেক্ষা করছে।
পাকিস্তানি সেই গর্দভ আমাকে একবার খুটিয়ে খুটিয়ে দেখে। একবার আমার পাসপোর্টের ছবি খুটিয়ে দেখে। একবার নাক দিয়ে পাসপোর্টের গন্ধ শুকে। আবার পকেট হতে ম্যাগনিফাইংগ্লাস দিয়ে ভিসা আসল নাকি নকল খতিয়ে দেখে। আমার সবুজ পাসপোর্ট বলেই কি না এরকম অপমান?
লজ্জা,অপমানে আমার মেজাজ তখন চরম। এটা যদি ঢাকা এয়ারপোর্ট হতো এতোক্ষনে তার নাক বরাবর দু' চারটা ঘুষি বসিয়ে দিতাম। রক্তারক্তি কান্ড ঘটে যেত। এদিকে প্লেনের দরজা বন্ধ করার সময় হয়ে গেছে। আমি যাব না সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। এ সময় লোকটি ব্যর্থ মনোরথে পাসপোর্ট ফেরত দেয়।
- এক্সট্রিমলি স্যরি স্যার। ইটস মাই ডিউটি। স্যরি স্যার এগেইন।হ্যাভ এ নাইস জার্নি স্যার।
পাকি কুত্তার মুখে স্যরি টরি শুনে আমার মাথায় খুন চেপে গেল।
ইউ ব্লাডি হোয়াই ডিড ইউ হ্যারেসড মি? এজ এ বাংলাদেশী? সান অফ বিচ, ফাকিং ইউ...
আরো কি যেন বলেছি মনেও নেই। লোকটির ভাগ্য ভালো আমার রাগান্বিত চেহারা দেখে এয়ার হোস্টেসদের একজন দ্রুত আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। কুল মি: হাসান, গো হারি উইথ মি। উই আর ওয়েটিং ফর ইউ
.সেই যাত্রায় এই এয়ার হোস্টেসের মিস্টি হাসি আমার সমস্ত রাগকে পানি করে দিয়েছিল।
২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৪
রাশেদ রাহাত বলেছেন: আপনার আগামীর জন্য শুভকামনা রইলো, সম্ভব হলে আমাদের স্বপ্নের পথকে সুগম করতে একটু সহায়তা করুন।
মেইলঃ [email protected]
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৫
এমএইচ রনি১৯৭১ বলেছেন: মেইলঃ [email protected]
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫
তানভীরএফওয়ান বলেছেন: oh ho!
u r engry person like me. i also suffered in jedda airport.