নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা মনে আসে তাই লিখি।

স্বর্ণবন্ধন

একজন শখের লেখক। তাই সাহিত্যগত কোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

স্বর্ণবন্ধন › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রাত্যাহিক কড়চা

০৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:০৩


চশমার সাথে আমার সম্পর্ক অনেকটা টম ও জেরির মতো। সে কখনো স্থির থাকেনা, আমিও প্রয়োজনের সময় তাকে খুঁজে পাইনা। নিজের অজান্তে চশমা হারিয়ে ফেলার অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। বন্ধুরা প্রায়ই জিজ্ঞাসা করত- 'কি রে চোখের চশমা হাতে কেন!' চশমার দোকানের দোকানি যার চেহারা অনেকটা পিথাগোরাসের মতো সেও প্রথম প্রথম খুব অবাক হতো। বিস্ময়ে বলত- 'আরে সেদিন ই তো একটা চশমা বানিয়ে দিলাম!' এখন সেও আর অবাক হয়না। ব্যাপারটাকে আমার একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ধরে নিয়েছে। এমনকি ফ্রেম ও দুই একটার বেশি দেখায় না। দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় সে জানে কোন ধরনের ফ্রেম আমি কিনব। দাম না বলেই খসখস করে লিখতে থাকে রশিদ। এবারো তার ব্যতিক্রম ছিলোনা। অভ্যস্ততা যেমন একদিকে স্বস্তি দেয় তেমনি বিরক্তিও আনে। আমি আমার পরিচিত স্বভাবের বাইরে গিয়ে সবকিছুর দামদর করতে থাকলাম। দোকানির মুখের পিথাগোরিয়ান বলিরেখা মুছে গিয়ে প্রথমে হতচকিত ভাব দেখা দিল, এরপর 'The Death of Socrates' তৈলচিত্রের শিষ্যদের মুখের মতো বিপন্ন হতাশা চেহারায় নিয়ে বলল- 'এতোদিন ধরে আপনার চশমা বানাচ্ছি, কখনো কি দাম বেশি চেয়েছি বলেন?' আমিও আমার চিরাচরিত ভংগির বাইরে গিয়ে বললাম- 'দাম একটু বেশি চাইলেই তো পারেন, দাম-দর করে না কমাতে পারলে কি কিনে শান্তি পাওয়া যায় বলেন?'
দোকানির চেহারায় বার্ধক্যের ছাপ চলে এসেছে। প্রথম যখন দেখেছিলাম বেশ শক্ত পোক্ত ছিলেন। সময় দ্রুত উইপোকার মতো চেহারায় একটা ঝুরঝুরে ভাব এনে দিয়েছে তার। কিছুটা থমকে থেকে তারপর নির্বিকার স্বরে যেন স্বগোতক্তি করলেন- 'কোন কিছুতেই কি শান্তি পাওয়া যায়! যায়না!' হুট করে মনে হলো জাঁ-পল সার্ত্রে যেন দোকানির পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন- “Everything has been figured out, except how to live.” সত্যিই তো কি করলে শান্তি পাওয়া যায় মানুষ সেটাই খুঁজে পেলোনা আজো। কাকতালীয় ভাবে পাশের একটা গানের অডিও সিডির দোকানে বেজে উঠল- 'এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলেনা, শুধু সুখ চলে যায়।' গানটা বহুবার শুনেছি কিন্তু কেন যেন এতো গভীরভাবে চেতনায় দাগ কাটেনি। হুট করে মনে হলো এটাতো মানুষের বহু পুরাতন প্রশ্নের সুস্পষ্ট উত্তর। হয়ত জীবন এক মায়ার ছলনা। আমরা চাই বা না চাই তবুও মায়ায় পড়ে যাই। দিন শেষে হিসাবের খাতা নিয়ে বসলে মানুষের মনে হয় জীবনের মোড় ঘুরানো কোন ঘটনাতেই তার হাত নেই। বরং Free Will কে যেন মনে হয় ছেলে ভুলানো এক খেলনা। মনে প্রশ্ন জাগে জীবন কি শুধুই cosmic coincidence নাকি ম্যাট্রিক্স মুভির মতো সুগঠিত এক প্রোগ্রাম!
ছবি: ইন্টারনেট

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৩০

কামাল১৮ বলেছেন: উপমাগুলো খুবই সুন্দর হয়েছে।জাঁ-পল সার্ত্রে তার লেখনির মাধ্যমে অস্তিত্ববাদী দর্শনকে তুলে ধরেছেন।জীবন এক সংগ্রামের নাম।

২| ০৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৮:৫৬

ঢাকার লোক বলেছেন: গতকালই বিক্ষিপ্ত সময় এ সহব্লগার সামিয়া লিখেছেন "জীবন একটা অপূর্ণ খেলা" ! সহজ বাংলায় শেষ হওয়ার আগেই খেল খতম, যে কোনো সময় রেফারীর শেষ বাঁশি বেজে উঠবে ! কাজেই আমাদের কাজ যতক্ষন সময় আছে খেলার নিয়ম মেনে যথাসাধ্য খেলে যাওয়া, পরিনাম বা স্কোর কি হবে ভেবে কাজ নেই, সে দেখবে রেফারী !

৩| ০৬ ই জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:৩৪

শাওন আহমাদ বলেছেন: চশমা নিয়ে একটা সময় আমারও সেইম অবস্থা ছিল; কিন্তু লাস্ট ৩ বছর ধরে একটি চশমার ফ্রেম ব্যবহার করছি আলহামদুলিল্লাহ্‌। ইন্ডিং লেখায় অন্য মাত্রা যুক্ত করেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.