![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"দশের মধ্যে নয় পাইলি কিভাবে হবি, দশের মধ্যে দশই পাওয়া লাগবি বুইঝছ। দশের মধ্যে দশ না পাইলে, এক থেকে দশের মধ্যে ঢুকবা কিভাবে?"
একটি বালিকা মেয়ে, দুপাশে বেণি-চুল, চোখে অমিত প্রগলভতা, হয়ত নার্সারি স্কুলে পড়ে, মায়ের সাথে হেঁটে পার হয়ে গেল শহরের ভাংগাচোড়া কালভার্ট। হেঁটে না বলে বলা ভালো ঘাসফড়িং এর মতো লাফিয়ে গেল। এক চিলতে মুভির ক্লিপ যেন। শুধু বাতাসে অনুরণন রেখে গেলো মায়ের মুখের কথাগুলো। একবার নয় মা বারবার কথাগুলো আওড়াচ্ছিলেন। ছবিটা হারিয়ে গেলো কিন্তু শব্দটা আমার মাথায় ঢুকে গেলো। দশ, দশ.... শুধু দশের প্রতিধ্বনি! দশের মধ্যে দশ না হলে হবিনা!
একটা সময় দশে নয় পাওয়া কতো আনন্দের ব্যাপার ছিল। মফ:স্বলে যারা বড় হয়েছি তাদের কাছে দশে নয় পাওয়া তো সর্বোচ্চ অর্জন ছিল। এখন হয়ত সব পালটে গিয়েছে। পৃথিবী বদলেছে। যে বালিকাটি প্রজাপতির মতো আনন্দে উড়ে এসে মাকে জানালো সে দশে নয় পেয়েছে, মায়ের হা-হুতাশ তার মনোজগতে কি প্রভাব ফেলল? মা কি সন্তানের এটুকু অর্জনকে প্রশংসা করতে পারতেন? হয়ত পারতেন। কিন্তু এই যে সন্তানের অর্জনের আনন্দের সামনে প্রত্যাশার নতুন বাঁধ দেওয়া যাতে সন্তান দমে না যায় তা কি সবসময় প্রয়োজনীয়? নাকি বিশ্বায়ন যে 'নিড ফর স্পিড' টাইপের রেস বাজারে এনেছে, নিউইয়র্কের এভিনিউ থেকে বাংলার শহর সবখানে যে ঘোড়াদৌড়, তার বৈশিষ্ট্যই এটা! এই অগ্রযাত্রায় আবেগ, অনুভূতিকে লালন করে সময়ের অপব্যয় হয়ত আর করতে চায়না মানুষ। সন্তানকে আবেগশূন্য কিন্তু তীব্র সাহসী যোদ্ধা হিসেবে গড়তে চায় সবাই, যে দশে দশ পাবে, এক থেকে দশেই থাকবে। কিন্তু মন ও আবেগের এই যে পরিচর্যার অভাব তা হয়ত এক সময় সন্তানকে সফল করলেও ঠেলে দিবে আমৃত্যু আবেগীয় সংকটে। নিজের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা খারাপ লাগাকে সে নিজেও বুঝতে পারবেনা, ভাববে জীবনে দশে তো দশই পেলাম, তবু সব শূন্য কেন লাগে! না বুঝেই অনেকে আনমনে সোস্যাল মিডিয়ায় পশ্চিমি শব্দ ধার করে লিখবে- 'I am in Existential Crisis'!
এই যে ক্রমশ তাগাদা। আরো এগিয়ে যাও। আরো এগিয়ে যাও এর শেষই বা কোথায়! আমরা এখনো প্রচন্ড চাপে পড়লে সিম্বলিক স্বপ্ন দেখি- পরীক্ষায় বসেছি, অংকের খাতায় কোন অংক মিলছেনা! বাংলা পরীক্ষায় সময় শেষ কিন্তু রচনা লিখা শেষ হচ্ছেনা! ইংরাজির উত্তর লিখছি কিন্তু শব্দ খুঁজে পাচ্ছিনা, ভোকাবুলারি নাই! কি গভীর ছাপ রেখে যেই এই শৈশবের চাপ আমাদের মননের গভীরে! এর থেকে হয়ত মুক্তি নেই। হয়ত জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কিছুটা চাপ দরকার। না হলে ব্যক্তিত্বে ঘাতসহতা আসেনা। কিন্তু কিছুটা প্রশংসা, স্বস্তি, অর্জনের স্বীকৃতি তো মানুষ পেতেই পারে। সেতো এটা শুনতে চাইতেই পারে- 'দশে নয় তো অনেক ভালো নম্বর, তুমি তো রুপকথার রাজকুমারীদের মতো ভালো করেছ!'
২| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: শুধু পড়লাম।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:৫২
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এগিয়ে যাও এগিয়ে যাও এগিয়ে যাও এই তাগাদা বাচ্চাদের জন্য কতটা মঙ্গল?
ধন্যবাদ ভালো থাকুন অনিঃশেষ।