নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধোঁয়াশা

লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। ধার্মিক, পরমতসহিষ্ণু।

রওশন জমির

লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। পরমত-সহিষ্ণু, শালীন ও ধর্ম-পরায়ণ।

রওশন জমির › বিস্তারিত পোস্টঃ

তাবলিগঃ শক্তি ও সম্ভাবনা

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:১৯

তাবলিগ জামাত দিন দিন মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাচ্ছে। সাধারণ মানুষজন অত্যন্ত আন্তরিকতা দিয়ে তাবলিগের কাজকর্মকে মূল্যায়ন করেন। আর তাই যতই দিন যাচ্ছে, জনমানুষের সম্পৃক্তি বাড়ছেই। এটা অন্য কারো গুণে নয়। তাবলিগের অভ্যন্তরেই এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা ক্রমপ্রসারণায় ভূমিকা রাখছে। আবার এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, যতদিন এই ইতিবাচক গুণগুলো থাকবে, ততদিন এর প্রসারকে কোনোভাবে রোধ করা যাবে না।



তাবলিগ মানুষকে পার্থিব জীবনের মোহ ত্যাগ করে পরকালের কথাই বলে। অত্যন্ত স্বল্প সংখ্যক হলেও এটা মেনে চলার চেষ্টা করেন। কিন্তু একটা কথা না বললেই নয়, আর তা হল, তাবলিগের সকল কাজকর্ম শুধু পরকালীন উদ্দেশ্যে নিবেদিত ইবাদতেই সীমিত থাকে। ধর্মের একটা মূল লক্ষ্য যে পরকালীন মুক্তি, তা অস্বীকারের উপায় নেই। কিন্তু একই সঙ্গে এতে যদি ইহকালীন মুক্তির নির্দেশনাও বিদ্যমান থাকে, তাহলে সমস্যা কোথায়? তাবলিগিদেরই সেই যুক্তির মতো, ‘জানালা দিয়ে বাতাসও আসল, একই সঙ্গে আজানের ধ্বনিও শোনা গেল!’



ইমানের যে দাবি আছে, তা যে কোনো মুসিলম পূর্ণ করবেন, পালন করবেন, সে আর বিচিত্র কি? কিন্তু বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিমবিশ্বই নানা সমস্যার শিকার। তাবলিগ এ-সব সমস্যাকে দূর করে দেবে, সে আশা বা প্রস্তাব করছি না। তাবলিগের পক্ষে সেটা সম্ভবও নয়। কিন্তু তাবলিগের পক্ষে যা সম্ভব, তা হল মানুষকে ধর্মীয় জ্ঞানসহ জাগতিক জ্ঞানের ব্যাপারে সচেতন করে তোলা। অর্থাৎ অন্য কিছু নয়, যারা সরাসরি তাবলিগের সঙ্গে জড়িত বা ইস্তেমায় এসে দোয়ার জন্য জড়ো হয়, সে-সব মানুষজনকে প্রাথমিকভাবে শিক্ষার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। পৃথিবীতে মানুষের যত সমস্যা আছে, এর কারণ সম্পর্কে ধর্মীয় ব্যাখ্যাকে অস্বীকার না করেও বলা যায়, অশিক্ষা হল এর মাঝে প্রধান।



মহানবী সা. মদিনায় হিজরত করার পর প্রথম যে বৃহৎ যুদ্ধ সংঘটিত হয়, সে বদর-যুদ্ধের বন্দিদেরকে মুক্তিপণ হিসাবে মুসলিমদের প্রতি অক্ষরজ্ঞান প্রদান করার শর্তারোপ করা হয়। সেই চৌদ্দশ বছরেরও পূর্বে একজন ‘মানুষ’ কীভাবে শিক্ষার মূল্যায়ন করেছেন, আজও বিষ্ময় জাগায় এবং অনাদি কাল তা জাগাবে! কিন্তু আমরা যারা তাঁর আদর্শ প্রচার করছি, তাঁর দীনের দাওয়াত দিচ্ছি, আমাদের কাজে-কর্মে তাঁর সেই দূরদর্শিতার প্রভাব কই? না, আমাদের কোনো যুদ্ধবন্দি নেই। এখানে কাউকে যুদ্ধবন্দি হিসাবে কল্পনা করারও দরকার নেই। কিন্তু যুদ্ধপূর্ণ অবস্থায়ও মানব-উন্নয়নের যে শিক্ষা তিনি রেখে গেছেন, তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করাই আমার উদ্দেশ্য। ভুলে গেলে চলবে না, মুসলিমবিশ্বে এবং একমাত্র মুসলিম সমাজেই আনুপাতিক হারে নিরক্ষতার সংখ্যা বেশি। তাই রাসুলের কর্মানুসারেই গণশিক্ষা-কার্যক্রমে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ মানুষকে উপদেশ দেওয়া যেতে পারে।





প্রতিটি সরকারই গণশিক্ষার ক্ষেত্রে ব্যাপকহারে অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে। এর কাক্সিক্ষত ফল লাভ হচ্ছে না। অন্য সব উন্নয়নের গতি সন্তোষজনক হলেও শিক্ষাক্ষেত্রে জাতীয় গতি অত্যন্ত শ্লথ। তাই সরকারেরও উচিত, তা যে সরকারই হোন; অন্য কিছুতে নয়, শুধুমাত্র শিক্ষা-সচেতনতার ক্ষেত্রে তাবলিগিদের কাজে লাগানো। এখানে তাবলিগের দাওয়াতি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবার কথা নয়, আর তাছাড়া এখানে তাদের কোনো আপত্তি থাকারও কথা নয়। তবে তা তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নয়, বরং তাদের সন্তোষ অর্জন করে।



যারা তাবলিগের সমর্থক, তাবলিগের সঙ্গে নানাভাবে জড়িত, তাদের উচিত তাবলিগকে সমাজের ইতিবাচক কাজের উন্নয়নে একে দিক নির্দেশনা দেওয়া। সেভাবেই এর কর্মচালনার ক্ষেত্রে তাবলিগের কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেওয়া। তবে তাবলিগের যে রাজনীনিরপেক্ষ চরিত্র আছে, তাকে কোনোভবেই ক্ষুণœ করা চলবে না।



যারা তাবলিগের সমালোচক, তারাও তাবলিগকে সামাজিক কাজে ব্যবহারের ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে পারেন। যদি তাবলিগের মাধ্যমে সাধারণ জনতার জাগরণ ঘটে, তখনই তো সত্য অনুধাবনের পথ উন্মোচিত হবে, সঠিক পথের মূল্যায়নের দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। তাই তাদের নিজ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যও এই তাবলিগের কাছে এসে একে সাহায্য করতে পারেন। দূরে থেকে সমালোচনা করা সহজ, কিন্তু কোনো শক্তিকে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করা অত্যন্ত কঠিন।



তাবলিগের প্রসরতায় আমাদের কোনো আপত্তি নেই, থাকার কথাও নেই। যেহেতু এটা মানুষকে ধর্মের দিকে অহ্বান করে, সে হিসাবে এর পথ কখনো রুদ্ধ হবে না। কারণ, ধর্মের প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। এ চিরন্তন আকর্ষণ ও চাহিদা পূরণে যারা শ্রম নিয়োগ করবেন এবং নজিরহীনভাবে পার্থিব কোনো বিনিময়-প্রত্যাশী না হয়ে, তাদের সাহায্য করাই বাঞ্ছনীয়। কিন্তু একই সঙ্গে এর মাধ্যমে যদি সাধারণ মানুষের পার্থিব উপকার হয়, উপকারের পথ খুলে যায়, তাহলে তো তা সোনায় সোহাগার মতো অবস্থা। আর তখন হাত গুটিয়ে বসে থাকা বোধহয় খুব বুদ্ধিমানের কাজ নয়।

আল্লাহ আমাদের মঙ্গল করুন। আমিন।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:২৭

টাইটান ১ বলেছেন: আমরা মুসলমানেরা আজীবন চায় একজন খাঁটি মুসলিম হতে। পারি না। জীবনের ট্রাজেডী এখানে। যখন দেখি পাপ একটু বেশি হয়ে গেছে, তখন আল্লাহর কাছে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। প্রয়োজন অনুভব করে। মানুষকে দাওয়াত দেওয়া ইসলামের সংস্কৃতি যদি হয় তাহলে আমি তাবলীগকে পছন্দ করি। কারণ সেখানে পাপী মানুষগুলো তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্য করতে যাওয়ার সুযোগ পায়।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩০

রওশন জমির বলেছেন: দুনিয়ায় মানুষ ভুল করার পর শুধু তওবা করবে, অনুতপ্ত হবে এবং আর সেই পাপ কাজে নিবিষ্ট হবে না, এটাই হল খাঁটি মুসলিম হওয়ার উপায়। তাবলিগ এর জন্য চেষ্টা করে। আর আসল প্রায়শ্চিত্ত তো হবে পরকালে, আখেরাতে।
ধন্যবাদ।

২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:০৬

অলিভার বলেছেন: অত্যন্ত সুন্দর লেখা হইসে। আমি একটু যোগ করিঃ
এই যে তাব্লিগি জামাত, এটা কোন দল নয়, এটা কোন সেপারেট বিশ্বাস নয়, এটা সম্পুর্ন ইস্লামের মধ্যে দাখিল হওয়ার একটা আন্দোলন মাত্র। কোন মানুষ আসলে ইসলামের কথা বলছে কিনা তা বোঝার সবচে ভাল উপায় হচ্ছে এটা দেখা যে সে কোন বিনিময় চায় কিনা। ইসলামের তাবলীগ করার মাধ্যমে তারা কোন বিনিময় চায় না। এদের একটাই চাওয়া, মানুষ কিভাবে মসজিদ মুখি হয়ে যায়। আমরাও এতে শরীক হব ইনশাল্লাহ !

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৭

রওশন জমির বলেছেন: পৃথিবীতে বিনিময়হীন আরো অনেক কাজ আছে, এসবই সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে থাকে। কোনো কোনো কাজ হয়ত ব্যক্তিক ঝোঁক বা প্রবণতার প্রকাশ এবং তা ব্যক্তির জন্যও ভাল। এতে যদি এমন কতিপয় উপাদানের সংযুক্তি ঘটে বা ঘটানো যায়, যা সমাজকে দ্রুত আরো ভাল পথে নিয়ে যায়, তাহলে আরো ভাল হয়। আমার উদ্দেশ্য সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আপনাকে ধন্যবাদ।

৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৬

মোমের মানুষ বলেছেন: তাবলীগের অন্যতম একটি লক্ষ হল মানুষ তাবলীগে এসে যা শিখল যা জানতে পারল, তা সে প্রয়োগ করবে তার বাস্তব জীবনে, কর্ম জীবনে। একজন রাজনীতিবীদ, একজন সরকারী কর্মকর্তা , পুলিশ তাবলিগে এসে যা জানতে পারল, শিখতে পারল তা তাদের বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করবে।

এবার আমার দেখা পল্লী বিদ্যুতের প্রথম সারীরএকজন সরকারী কর্মকর্তার কথা বলি। তিনি দীর্ঘ দিন যাবত তাবলীগের সাথে জড়িত। তিনি থাকেন উত্তরাতে। সরকার থেকে পাওয়া পাজারো গাড়ি তিনি কখনও ব্যাক্তিগত কাজে এমন কি নিজের ছেলে মেয়েদেরও ব্যবহার করতে দেন না। উপরি ইনকাম না থাকার কারনে টানাপোড়া সবসময় লেগে থাকে। গাড়ীর জন্য নির্দীষ্ট পরিমান তেল পাবার পর টাকার অভাবে তেল কিনতে পারেন না।
ছেলেরা মাদরাসায় পড়াশোনা করে। ঘুষ অবৈধ লেনদেনের ব্যাপারে খুবই কঠোর। মানুষের প্রাপ্য সার্ভীসটুকু দেওয়াকে তিনি সরকারের আমানত মনে করতেন।
তাবলীগ আলাদা কোন সংগঠন নয়, বরং এখানে সকলেই আসবে তার শিক্ষাটুকু প্রয়োগ করবে সর্বস্থানে

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:৪১

রওশন জমির বলেছেন: আপনি যে কাহিনি বলেছেন তার বিপরীত কাহিনিও আছে। কাহিনিই শেষ কথা নয়। কেউ যদি কোনো ভাল কাজের সঙ্গে জড়িত হয়েও ভাল হতে না পারে, এর দায়ভার তো সেই কাজের নয়। এটা বর্তাবে ব্যক্তিক প্রবণতার ওপরই।

'তাবলীগ আলাদা কোন সংগঠন নয়, বরং এখানে সকলেই আসবে তার শিক্ষাটুকু প্রয়োগ করবে সর্বস্থানে'
ধন্যবাদ।

৪| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭

শান্ত কুটির বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৭

রওশন জমির বলেছেন: ধন্যবাদ।

৫| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

নিলা১৯ বলেছেন: লাইন ধরে রাস্তায় হাটতে দেখেছি

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:০৬

রওশন জমির বলেছেন: তাদের সম্পর্কে জানুন, অংশ নিন, সাহায্য করুন।
ধন্যবাদ

৬| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:২৯

মো: মুয়াজ বলেছেন: go ahead..

১০ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:২৯

রওশন জমির বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.