![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। পরমত-সহিষ্ণু, শালীন ও ধর্ম-পরায়ণ।
মহাভারতের ক্ষুরুক্ষেত্রে যুদ্ধশেষে রাজ্যের প্রতি যুধিষ্ঠিরের আর মোহ রইল না। তিনি অন্য একজনকে ক্ষমতায় বসিয়ে মহা প্রস্তানের প্রস্তুতি নেন। পথিমধ্যে পাপের দায়ে চার ভাইয়ের প্রয়াণ ঘটে। তিনি স্বর্গে প্রবেশ করে অন্য ভাইদের দেখার অভিপ্রায় প্রকাশ করলে তার নরকদর্শন ঘটে! অর্থাৎ সকল ভাইদের তো নরকপ্রাপ্তি ঘটেছিল, তাদেরকে দেখানোর জন্য তাকে নরকে নিয়ে যাওয়া হয়। নরকের বিভৎসতা দেখে ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির অস্থির হয়ে পড়েন। তিনি ভেবে পান না যে, তার মতো এমন সত্যব্রতর কেন এমন হল? দেবতার পক্ষ থেকে এর উত্তর বলা হয় যে, ক্ষুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ ও ভীমের ফুসলানিতে দ্রোণকে নিরস্ত করার জন্য তিনি একটি বাক্য উচ্চারণ করেছিলেন মাত্র। বাক্যটি হল ‘অশ্বত্থামা হতঃ, ইতি গজঃ’। বাক্যটি একদিকে সত্য। কিন্তু এখানের উদ্দিষ্ট শ্রোতা দ্রোণ তা ভুল বুঝেছিলেন, প্রতারিত হয়েছিলেন। যুধিষ্ঠিরের মতো ধর্মপুত্র এমন বাক্য বলবেন কেন, যার কারণে একজন মানুষ প্রতারিত হতে পারে? শুধু এর দায়েই তার নরকদর্শন ঘটে!
এ কাহিনির অবতারণার উদ্দেশ্য এ নয় যে, নিজামী-মুজাহিদরা ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের মতো। কিন্তু এখানে ছোট্ট একটি সূত্র আছে, সে সূত্র অনুসারেই তা বর্ণিত এবং সে-ভাবেই একটি ফলাফল দাঁড় করানোর চেষ্টা। আর তা হল, একাত্তরের একটি গণযুদ্ধে কী ভূমিকা ছিল জামায়াতে ইসলামীর? কী ভূমিকা ছিল নিজামী-মুজাহিদ গংদের? তার অনুসারী ভক্তরা বলেন, ‘তারা ধুয়া তুলসি পাতা!’ ভক্তর চোখে সব সময় ভক্তির যে রঙিন চশমা থাকে, তা দিয়ে সত্য উদ্ভাসিত হয় না। তাই তারা এমন কথা বলতে পারেন। কিন্তু সত্যি কি তাই? সব বাদ দিলাম এবং জামায়াতি দাবি মেনেই নিলাম যে, তারা একাত্তরে কোরো দোষ করেন নি! কিন্তু তাহলে তারা কী করেছেন? জীবনালোচনায়, স্মৃতিকথায় তারা এ নিয়ে কী বলেছেন? এ ব্যাপারে তাদের প্রশ্ন করলে তারা এতটা অসহিষ্ণু হয়ে পড়েন কেন? তাদের দ্বারা এমন কোনো কাজ কি হয় নি, যা আমাদের একাত্তরকে বাধাগ্রস্ত করেছে, রক্তাক্ত করেছে?
জামায়াতের সাবেক নেতা, মাওলানা মওদুদির এক সময়ের ঘনিষ্টজন, অনেক গ্রন্থের অনুবাদক এবং স্বতন্ত্র লেখক মরহুম মাওলানা আব্দুর রহিম সাহেব জামায়াতকে পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ‘একাত্তর বিষয়ে একটি দফারফা করা দরকার। তা না করে এদেশের রাজনীতি করতে গেলে এর গোড়ায়-সংঘটিত জামায়াতের অপরাধ সব-সময় ছায়ার মতো লেগে থাকবে।’ সাবেক ছাত্রসংঘের সাবেক নেতা আহমদ আবদুল কাদিরও তো বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে স্বচ্ছ না হলে জামায়াতের জন্য রাজনীতি কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।’ অর্থাৎ যারাই মেধাবী ও স্বতন্ত্র মানসিকতার অধিকারী, তারা যে স্বাধীন-মুক্ত, যুক্তিযুক্ত পরামর্শ দিয়েছেন, তাদের সে পরামর্শগুলো কী নির্দেশ করে? জামায়াতের অবস্থান কি তখন ধোয়া তুলসি পাতার মতো ছিল? কিন্তু জামায়াত হল একটি ক্রিটিসিজম-প্র“ফ দল, ক্যাডারের বেষ্টনে এখানে নেতাদেরর সুরক্ষা নিশ্চিত। কিন্তু ইতিহাস তো কোনো সুরক্ষা মানে না, অপরাধের দায় তো প্র“ফফুলনেস মানে না। তাই আজকে এমন একটা ‘ফ্যাসাদে’ পড়তে হল, প্রায়শ্চিত্তের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হল। অনেকে বলেন, সাঈদী নির্দোষ! তিনি নাকি সত্তর-পরবর্তী সময়ে জামায়াতে যোগ দেন। হতে পারে। কিন্তু কোনো বিবেকবান মানুষ কি বিবেকহীন একটি পার্টির সদস্য হতে পারে? যুধিষ্ঠির অনিচ্ছাকৃত একটি বাক্য-উচ্চারণের কারণে যে-নরকদর্শনের শিকার হয়েছিলেন, সেখানে তাদের স্বেচ্ছাকৃত অপরাধের শাস্তি কি খুব লঘু হবে?
জামায়াতে ইসলামীসহ অপরাপর ইসলামী দলগুলো তখন যে ভুমিকা পালন করেছে, তাকে ইসলামের দৃষ্টিতে, ন্যায়ের নিরিখে কী বলা যায়? সামগ্রিক ইসলামের আলোকে কেউ বলুক না! ধর্মের নামে রাজনীতি করা মানেই কি বিশুদ্ধতা, নিষ্কলুষতা ও নির্ভুলতা? হ্যাঁ, এ-সব ঘুণেধরা আলেমের বাইরেও বিবেকবান, দূরদর্শী আলেম তখন ছিলেন। কিন্তু সেই মুফতি মাহমুদ হাসান যখন আলেম-ওলামাকে ‘হয়ত মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নেওয়া, নয়তো নীরবতা পালন করা’র আবেদন জানালেন, তখন কী হয়েছিল তার পরিণতি? এ পরিণতির জন্য কি এ-সব তথাকথিত মোল্লা-মাওলানার, ইসলামী পার্টিগুলোর সামান্যতম দায় নেই? মুফতি মাহমুদ হাসান আর এদেশে আসেন নি। কিন্তু যারা এর স্বাধীনতার বিরোধিতা করল, তারা কোন যুক্তিতে এখানে রয়ে গেল? শুধু তাই নয়, আবারও সেই পুরনো ধারার কলুষিত রাজনীতি করার দুঃসাহস দেখায়!
আর হ্যাঁ, এ জন্যই বলি, একাত্তরের অপরাধের ব্যাপারে জামায়াত কোনোভাবেই দায়মুক্ত নয়। তাই বিচারের মুখোমুখি নেতাদের মুক্তির দাবি, একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বন্ধ করার চেষ্টা-তদ্বির কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়; ইতিহাসানুগ নয়, ন্যায়ানুগ নয়। ইসলামের স্বার্থে, দেশের স্বার্থে, জনতার স্বার্থে, সর্বোপারি জামায়াতেরও স্বার্থে তাদের এ মুহূর্তের প্রায়শ্চিত্ত অত্যন্ত জরুরি। এটা জামায়াত-শিবির ও তাদের অনুরাগী সবাইকেই নির্মোহভাবে অনুধাবন করতে হবে।
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৫
রওশন জমির বলেছেন: আপনার যুক্তিটা বা পরামর্শটা বেশ ভাল। কিন্তু জামায়াত-শিবির তো এভাবে বলছে না। আপনার কথা-ই যদি ঠিক হয়, তাহলে বুঝতে হবে সাধারণ সদস্যদের কথা ও দাবিকে জামায়াত-শিবির প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। ধন্যবাদ।
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২২
সংকেত মাহমুদ বলেছেন: গো আজম নিজামী-মুজাহিদ গং রাজাকার আলবদর বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছে এবং এই খুনী আলবদর বাহিনী আমাদের একাত্তরকে বাধাগ্রস্ত করেছে, লাখ লাখ মুক্তিকামী বাঙ্গালীকে রক্তাক্ত করে হত্যা করেছে ।বাংলার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অধিনস্ত রাজাকারদের অস্ত্র হাতে নিতে মুজাহিদের নির্দেশঃ
সঙ্গে
১৯৭১ এর গনহত্যাকারী আলবদর বাহিনীকে একশনে উৎসাহিত করতে আলবদরের নেতা নিজামীর প্রচেষ্টার নমুনাঃ
[sbরাজাকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য পাক সরকারের কাছে গোলাম আজমের অনুরোধঃ
০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৬
রওশন জমির বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৮:৪১
মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেছেন: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার যে জামায়াত বা শিবির চায়, সেটা তাদের সাথে কথা বলে জেনেছি (আমার সামর্থের মধ্যে যাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়েছে)। কিন্তু এখানে সমস্য হয়েছে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে নিয়ে। তিনি এ ধরনের একটি অপরাধ করতে পারেন এটা শিবির মানতে পারছে না।
আমার একান্তই ব্যক্তিগত উপলব্ধি হচ্ছে, সাঈদীকে বিচারের মুখোমুখি করার আগে ইসলাম প্রিয় তরুন সমাজকে (বিশেষ করে শিবিরকে) আস্থায় নেয়া উচিত ছিলো।
ধন্যবাদ।