নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ধোঁয়াশা

লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। ধার্মিক, পরমতসহিষ্ণু।

রওশন জমির

লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। পরমত-সহিষ্ণু, শালীন ও ধর্ম-পরায়ণ।

রওশন জমির › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডা. জাকিরের নায়কপনা, ভক্ত-বিরোধীদের ভিলেনপনা

২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:১২



বেশ ক’বছর আগের কথা। আমার ক’জন ভাই-বন্ধু, যাদের অধিকাংশই কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী, দেখা হলেই উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, যেন সময় করে ডা. জাকির নায়েকের বক্তব্যগুলো শুনি। জুনিয়র ভাই-বন্ধুদেরও একই রকম আবেগমথিত উচ্ছ্বাস। তাদেরও একই রকম অনুরোধ-উপরোধ। এরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমার হাতে ডা. জাকির নায়েকের লেকচার-১, ২, ৩.. ইত্যাদি ডিভিডিগুলো তুলে দেন। কেউ কেউ তার ভাষণের লিখিত রূপ, লেকচার-সমগ্র নামের বই হাতে তুলে দিতে চেষ্টা করেন। বোঝা যায়, তারা সবাই যেভাবে কালের এই মহান ‘নায়ক’-এর স্বাক্ষী, আমাকেও এর অন্তর্ভুক্ত করতে ভীষণ সচেষ্ট। এদের কেউ কেউ নিজ বাসায়, কেউ কেউ নিজ প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের মাধ্যমে লেকচার প্রদর্শন শুরু করেন; কেউ কেউ লিখিত রূপ ছড়াতে থাকেন, উপহার বা পুরস্কারের মাধ্যমে/ অজুহাতে। আমি বরাবরের মতোই নিস্তরঙ্গ।



এ নিয়ে দু-এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর এই-সব ভাই-বন্ধুদের অনেকেই আবার উঠে-পড়ে লেগেছেন। দেখা হলেই তাগিদ দিতে থাকেন, যেন ডা. জাকির নায়েকের মহা ভুলগুলো সম্পর্কেও অবহিত হই। এদের কেউ কেউ এখন জাকির নায়েকের কঠোর সমালোচক। তাদের আলোচনায়, মুখের ভাব-ভঙ্গি ও আচরণে যা বুঝতে পারি, তাতে মনে হয়, তাকে এখন সামনে পেলে নির্ঘাত খতম করে দেবেন! ডা. জাকির এখন তাদের ‘নায়ক’ নয়, মাত্রাছাড়া ‘ভিলেনে’ পরিণত হয়েছে। হাঁটে-বাজারে, পত্র-পত্রিকায়, ইন্টারনেটে তার বিরুদ্ধে যত বক্তব্য-বিবৃতি প্রচারিত হচ্ছে, তা আমার সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। অবশ্য এদের কেউ কেউ এই ডাক্তারের ব্যাপারে এখন আগের মতো উচ্ছ্বসিত না হলেও নীরব। এখনো আদাজল খেয়ে তার বিরুদ্ধে নামেন নি। তাদের সংখ্যা অতিশয় নগণ্য; এরা তুলনামূলক জ্ঞানী এবং যুগ-সচেতন। আমি পূর্ববৎ নিরোত্তাপ।



এই সব অতিরঞ্জন-অতিশায়নের প্রবল প্রবাহে ভোগী-সুরসিক এক ছোট ভাই দেশের বিশিষ্ট বক্তা সিলেটের মাওলানা নুরুল ইসলাম ওলিপুরীর নামে প্রচারিত/ প্রকাশিত একটি বই পাঠান। বইটির শিরোনাম ডা. জাকির নায়কের আসল চেহারা/ মুখোশ উন্মোচন! সঠিক নামটি এ মুহূর্তে মনে পড়ছে না। পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে তার বিনীত অনুরোধ, যেন বইটি অবশ্যই পড়ি। এতে না-কি অনেক আনন্দের রসদ রয়েছে।



লোক মারফত বইটি আমার যখন হাতে পৌঁছয়, আমি তখন বাসার বাইরে, অন্য একজনের বাসায়। এটিকে বই না বলে বলা দরকার পুস্তিকা বা চটি রকমের বই। ঐ বাসায় বসে বসেই নেড়ে-চেড়ে দেখতে দেখতে পড়তে শুরু করি। যতই এগিয়ে যাই, ততই কৌতূহল বাড়তে থাকে। কারণ, বইয়ের শুরুতেই বলা আছে, ডা. জাকির নায়েকের কোনো বক্তব্য (লেখক) নিজ কানে কখনো শুনেন নি, তার কোনো লেখা স্বচক্ষে পড়েন নি। এমন কি শোনার বা পড়ার কোনো আগ্রহও তার নেই। কারণ... তবে লোক মুখে ডা. জাকিরের নানা কীর্তির কথা শুনতে শুনতে তিনি ইমান রক্ষার তাগিদে কলম হাতে ধরেছেন!

উপভোগ্য বটে! কারো বক্তব্য স্বকর্ণে না শোনে, স্বচক্ষে না দেখেও এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা যায়, তা না দেখলে, না পড়লে বিশ্বাস হবার নয়। অনেক চিন্তার পর মনে প্রশ্ন জাগে, যতদূর জানি, মাওলানা ওলিপুরী একজন সত্যসন্ধ্যানী পড়–য়া মানুষ। সময়ের আলোচিত/ সমালেচিত/ বিতর্কিত ব্যক্তি একজন সম্পর্কে না-জেনে-শুনে তিনি এমনভাবে বই লেখে ফেলবেন, কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করবেন, তাও কি সম্ভব!



এর আরো কিছুদিন পর রমজানের রোজায় এক মাওলানার বাসায় ইফতার করার সুযোগ আসে। ইফতারির সময় মাওলানা সাহেব ডা. জাকির নায়েকের অপকীর্তির স্বাক্ষ্য দিতে গিয়ে মাসিক আদর্শনারী টেনে আনেন। তিনি বলেন, পিস প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ডা. জাকির নায়েকের লেকচার সমগ্রের পৃষ্ঠা মিলিয়ে দেখেছেন। আদর্শনারীতে উদ্ধৃত বাক্য হুবহু সেখানে বিদ্যমান! সুতরাং জাকির নায়েককে আর সময় দেওয়া যায় না। পূর্বেই বলেছি, এ বিষয়গুলোর সঙ্গে আমার রুচি খুব একটা যায় না। তবুও মাওলানা সাহেবের বাসায় ইফতাররত অবস্থায় তার আবেগকে, কথাকে সৌজন্যবশত মূল্যায়ন করার মানসিকতায় সেই আদর্শনারী ও লেকচার সমগ্র-এর পৃষ্ঠা উল্টাতে থাকি। কিন্তু লেকচার-সমগ্র-এর কয়েক পৃষ্ঠা পেছন বা বিষয়ের সূচনা থেকে পড়তে শুরু করি আমি। দেখি, পূর্বাপর মিলিয়ে উদ্ধৃত সেই বাক্যের একটি সদর্থক অর্থও ফুটে ওঠে। যখন নিরাগেবভাবে মেজবানকে এটি বলতে শুরু করি, তিনি এগিয়ে এসে হাতে নেন। পৃষ্ঠা উল্টিয়ে পেছন দিক থেকে পড়ার পর মনে হল উত্তেজনার গরম ডেকচিতে অতিশয় ঠান্ডা পানি পড়েছে! এর পরে এ বিষয় নিয়ে তাকে কিছু বলতে শুনি নি।

এদেশে আদর্শ নারী, আদর্শ পুরুষ; আদর্শ ধার্মিক, আদর্শ অ-ধার্মিক; আদর্শ আস্তিক, আদর্শ নাস্তিক; আদর্শ জ্ঞানী এবং আদর্শ মূর্খ ইত্যকার নানা বিষয় ও ব্যক্তি সম্পর্কে যে অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে, তাতে বুঝতে পারি, নিজের সচেতনতার দ- খাড়া না রাখলে যে-কোনো সময়ে প্রতারিত-প্ররোচিত হওয়ার আশঙ্কা ষোল-আনাই বিদ্যমান। হ্যাঁ, এই সচেতনতার দ- সামান্য হেলে পড়লেই যত সমস্যা তৈরি হয়।

সে যা-ই হোক ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে চমৎকার একটি গোষ্ঠী দাঁড়িয়ে গেছে। এই বিরুদ্ধতাকে সর্বার্থে নেতিবাচকভাবে নেওয়ারও উপায় নেই। ডা. জাকির নায়েক একজন সাধারণ মানুষ। তিনি যত বড় বক্তা আর ডাক্তারই হন না কেন, মানবিকতার ঊর্ধ্বে তো উঠতে পারবেন না। তাই তার ভুলগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা অবশ্যই দরকারি। সেই দরকার যেমন নিজেদের সতর্কতার জন্য, তেমনি অন্যদের সচেতন করার জন্যও। কিন্তু সেই আদর্শিক আলোচনা ও সমালোচনার পথ ও উপায় কী হবে?



ডা. জাকির নায়েক যেভাবে বিতর্ক-প্রবণতায় নিজের বোধ-বিশ্বাস ও ধর্মকে তুলে ধরছেন, তা সময়ের বিবেচনায় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। ইসলামের সূচনায় বা এর পরেও বক্তব্য-বাগ্মীতার আশ্রয় নিয়ে ধর্মপ্রচারের প্রক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। ডা. জাকির নায়েক যুগের চাহিদা অনুসারে নিজে মিডিয়ার কর্ণধার হয়ে একটু সাহসী বা উদ্যোগী ভূমিকা পালন করলেন মাত্র।



ডা. জাকির নায়েক নিজে চিকিৎসক বিধায় শরীর-বিজ্ঞানের অনেক কিছুই হয়ত তার নখদর্পণে। নিজ চেষ্টায় বা কৌতূহলের কারণে তিনি হয়ত বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায়ও গতায়াত করেছেন। বর্তমান বিজ্ঞানের যে বৈশ্বিক ভাষা, তাও তার আয়ত্ত। অপরদিকে কুরআন যেহেতু তার বিশ্বাস মতে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থ, সেই গ্রন্থের নানা বাঁকে বিজ্ঞানের নানা বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত আছে। উপরন্তু কখনো কখনো প্রচলিত/ প্রথাগত বিজ্ঞান ধর্মের নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলে বসেছে। তাই কুরআন ও বিজ্ঞান পাঠের সময় তিনি হয়ত তুলনা করেছেন; বিশ্বাসের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এভাবে তিনি যে বিশ্বাসে-সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, তা এখন জনতার সামনে উপস্থাপন করছেন। এক্ষণে তিনি একটি অডিয়েন্স তৈরি করতেও সক্ষম হয়েছেন।



অডিয়েন্সের সবার জ্ঞানতাত্ত্বিক দৌড় যে সমান, তা কিন্তু নয়। বৃহৎ অডিয়েন্সের সবার রুচি ও আদর্শও ভিন্ন ভিন্ন হতে বাধ্য। এর ভিতর থেকে তার একান্ত ভক্ত-পরিম-ল তৈরি হওয়া অসাধারণ কিছু নয়। বিজ্ঞানের এ চরম সময়েও জীর্ণ পোশাক, শীর্ণ শরীরের ধুলোকাদা-মাখা মূর্খ মূক বা স্বল্পবাক মানুষও যেখানে ভক্ত পরিবেষ্টিত হতে পারেন, সেখানে সর্বজন মান্য বিজ্ঞানের একটি শাখায় পারদর্শী বিতার্কিক, বাগ্মী একজন লোক ভক্ত অনুরক্ত তৈরি করতে পারেন না? আবার তা যদি হয় ধর্মের আবরণে, তাহলে তো ভক্তিযোগ-ভক্তযোগ একেবারে নস্যি!



তার ভক্ত-অনুরক্তের সংখ্যা যাই হোক, তিনি একটি সময় ও কালের সন্তান। তার মাঝে পরিবেশ-প্রতিবেশের প্রভাব অস্বীকার করার উপায় নেই। কালিক-স্থানিক সীমাবদ্ধতার প্রভার তার মাঝে থাকতেই পারে। তিনিও ভুল করেন, করতে পারেন। আবার ভিন্ন রকম প্রতিবেশ-পরিবেশে বেড়ে মানুষের কাছে তার বক্তব্য-বয়ান (ভুল ও কলুষতার দিক থেকে) অস্বাভাবিক মনে হতে পারে; চরমও মনে হতে পারে। এ নিয়ে ভিন্ন পরিবেশের কেউ ক্ষুণœ হতেই পারেন। তখন এর রেশ ধরে সচেতন ও যৌক্তিক আচরণ ও প্রতিক্রিয়ার প্রকাশই আলোর পথ খুলে দিতে পারে। সেই আলোকদীপ্ত সরল পথ এড়িয়ে জ্ঞানগত, বুদ্ধিগত, কাল-পরিবেশগত প্রভাবে আবেগমথিত, ক্ষুব্ধ ও অতিরঞ্জন বক্তব্য-বিবৃতি এবং প্রতিক্রিয়ার প্রকাশ হিতে বিপরীত ফল দিতে পারে। অন্ধভাবে কারো অনুসরণ করা, কারো ভুল আঁকড়ে ধরে নর্তন-কুর্দন করা যেমন নিন্দনীয়, তেমনই অন্যের ভুল নিয়ে নিজের পসার বাড়ানোর ধান্ধাও রংবাজির পর্যায়ে পড়ে।



আবার শিশু-যুক্তির কাছে যা দুর্বল ও হাস্যকর, তা একজন কিশোরের কাছে নাও হতে পারে। অন্যদিকে কিশোরের অপরিণত বুদ্ধির কাছে যা ভুল ও অসিদ্ধ, পরিণত মস্তিষ্কের লোকের কাছে তা না-ও হতে পারে। অবশ্য ভুলশুদ্ধের পরিমাপ বয়স দিয়ে হয় না, হয় জ্ঞান দিয়ে। হাঁটুজল পেরোনোর অভিজ্ঞতা নিয়ে গভীর জলকে ঠাট্টা করা সুবুদ্ধির পরিচায়ক নয়। এনিয়ে কোনো রকমের অতিরঞ্জন বা সীমালঙ্ঘন নিজের দেওলিয়াত্ব প্রকাশ করে মাত্র।



মনে রাখা দরকার, ‘নায়ক’ হতে চাইলেই কেউ নায়ক হতে পারে না। এর জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা লাগে। আবার সকল সমাজে ‘নায়ক’-এর যোগ্যতার একই রকম মাপকাঠি নেই। নিরেট নিরীহ কেউ ‘ভিলেন’ হতে পারে না। এ কথা তো বলাই বাহুল্য যে, ভিলেনের ভিলেনপনাতেই মূলত নায়কের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। কিন্তু ‘নায়ক’-এর পতনের জন্য, মানুষের চোখ থেকে ‘নায়ক’কে আড়াল করার জন্য ভিলেনপনা নয়, প্রতিনায়ক হওয়া বা তৈরি করাটাই হল সময়ের দাবি। সে যোগ্যতা না থাকলে ভিলেনপনার কোনো মানে নেই। কারণ তখন ভিলেনপনার সুবাদেই ‘নায়ক’ নিজ নায়কোচিত আচরণ দিয়ে স্মরণীয় হয়ে যায়।

العاقل تكفيه الإشارة



আল্লাহ তায়ালা আমাদের সহায় হোন। আমিন।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:০৪

jahidbd বলেছেন: ডঃ জাকির নায়েকের অবস্থান
সম্পর্কে আমাদের মতামত
:
ﺑﺴﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺍﻟﺮﺣﻴﻢ
জাকির নায়েকের ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান হল- তুলনামুলক ধর্ম বিশ্লেষণের মাধ্যমে তিনি যে দ্বীন প্রচারের কাজ করছেন এটা খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। তিনি এর মাধ্যমে অনেক বড় দ্বীনী খিদমাত করছেন। সেই সাথে সুন্নাতের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে তার লেকচারগুলিও বেশ উপকারী ও বড় দ্বীনী খিদমাত।
তিনি যেই বিষয়ে অভিজ্ঞ সেই বিষয় অনুযায়ী তার বিশ্লেষণ চমৎকার। কিন্তু মাসআলা মাসায়েলের ক্ষেত্রে তার ব্যাখ্যা ও সমাধান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সহীহ নয়। কারণ তিনিতো ইসলামী ফিক্বহ ও তার মূলনীতি সম্পর্কে একাডেমিক বা কোন বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত নন, তাই তার এই ক্ষেত্রে ব্যাখ্যাগুলি শরয়ী মূলনীতি অনুযায়ী সঠিকতার মানদন্ডে উত্তীর্ণ হতে পারছে না।
আমাদেরই মূলত ভুল। আমরা কেন তার কাছে শরয়ী মাসায়েল জানতে চাই।
শরয়ী মাসআলাতো বলবে বিজ্ঞ মুফতীয়ানে কিরাম। আমরা তার কাছে জানতে চাইব যে, বাইবেলে কি কি ভুল আছে, গীতা কেন ধর্মীয় গ্রন্থ নয় ইত্যাদী। কিন্তু আমরা কেন যাই তার কাছে রুকুতে কী পড়বে, হাত কোথায় বাঁধবে ইত্যাদী জিজ্ঞেস করতে?
এগুলোতো তার বিষয় নয়! তিনিতো একজন ডাক্তার। ডাক্তারী অনুযায়ী নবীজি সাঃ এর কোন সুন্নাতটি বিজ্ঞানসম্মত?
এসব তার কাছে জিজ্ঞেস করার বিষয়। ভুলতো করছি আমরা। এক বিষয়ের অভিজ্ঞের কাছে অন্য বিষয়
সম্পর্কে জানতে চাওয়াটাইতো বোকামী।
ডাক্তারের কাছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া কি বোকামি নয়?
তেমনি ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আইনের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়াটা কি বোকামী নয়?
তেমনি ডাক্তার জাকির নায়েকের কাছে শরয়ী বিধান জানতে চাওয়াটা চূড়ান্ত পর্যায়ের বোকামী।
আশা করি বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে।
বিঃদ্রঃ ডাঃ জাকির নায়েক মূলত মাসআলা মাসায়েলের ক্ষেত্রে বর্তমান জমানার বড় ফিতনা এই উম্মতের
৭২টি বাতিল ফিরক্বার একটি ফিরক্বা কথিত আহলে হাদীসদের প্রচারক। বনী ইসরাঈলে ছিল ৭১টি বাতিল ফিরক্বা। আর এই উম্মতে একটি বাতিল ফিরক্বা বাড়বে। তথা বাতিল ফিরক্বা হবে ৭২টি। সেই অতিরিক্ত বাতিল ফিরক্বাটি হল, যারা হল ইজতিহাদ ও মুজতাহিদ তথা ফিক্বহ ও ফুক্বাহাদের দুশমন হবে। আর সেই
ফিরক্বাটি হল বর্তমান আহলে হাদীস ফিরক্বা।
সুতরাং জাকির নায়েকের মাসআলা মাসায়িলের নির্দেশনা অনুযায়ী চলাটা হবে গোমরাহীর শামিল।
ﻭﺍﻟﻠﻪ ﺍﻋﻠﻢ ﺑﺎﻟﺼﻮﺍﺏ
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:১০

রওশন জমির বলেছেন:
১- আমাদের- বলতে আপনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, জানি না। আরো খুলে বললে ভাল হতো।

২- ব্যাপারটা খুব হাস্যকর হয়ে গেল না যে, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে আমরা তাকে মান্য করবো, কিন্তু আন্তঃধর্ম বিষয়ে মানতে পারবো না? ধর্মের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কারো পুরোপুরি জ্ঞান না থাকলে তিনি অন্য ধর্মের সঙ্গে এর তুলনা করবেন কীভাবে?

৩- চিকিৎসা-বিজ্ঞানে কারা নোবেল পুরস্কার পানঃ প্রথাগত ডাক্তারি বিদ্যার লোকজন, নাকি অপ্রথাগত (ডাক্তারি বিদ্বান) তাত্ত্বিক জগতের লোকজন? কিন্তু কেন? জাকির নায়েক কি তাত্ত্বিকভাবে অন্যদের তুলনায় এগিয়ে নন?

৪- ৭২ ফেরকা-নির্ধারণে এ পর্যন্ত কম জল ঘোলা হয় নি। প্রতিটি ফেরকা অন্যদের দিকে আঙুল তুলতে সবাচ্ছন্দ বোধ করে। মোটা দাগে বললে, ভারতীয় বেরেলি ঘরানার লোকজনও তো দেওবন্দি ঘরানাদের লোকদেরকে ৭২ ফেরকার আওতাভুক্ত মনে করেন। আপনি কি তা মেনে নেবেন? তাহলে? উপরন্তু ডা- জাকির নায়েকের কথা কথিত সালাফিদের সঙ্গে মিললেই কি তার দোষ হয়ে গেল? নির্দিষট মাসয়ালায় তার ব্যাখ্যাটি/ বক্তব্যটি পূর্বের অ-সালাফি কোনো ফকিহ কি দেন নি? এখন পেছনের সেই ফকিহকে গোমরাহ বলার উপায় আছে কি? তা না হলে তিনিই শুধু এর দায়ভার নেবেন কেন?

২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:২৯

শুভ্র৯৫রকস বলেছেন: ১) জাকির নায়েককে এদেশের কওমী আলেমগনও স্বাদরে গ্রহন করতেছিল। তাই উনার উচিত ছিল মাসয়ালা প্রদান করার দিকে না যাওয়া সতর্কতা অবলম্বন করা।

২) জাকির নায়েকের পিচ টিভিতে লেকচার দেন মতিউর রহমান মাদানী নামের একজন। এই মতিউর রহমান মাদানীর ইউটিউব ভিডিওতে অকথ্য ভাষায় কওমী আলেদের সমালোচনা করতে দেখা গেছে। সম্ভবত একারনেও কওমীদের কেউ কেউ জাকির নায়েকের উপর ক্ষেপা।

৩) কোন পক্ষেরই উচিত না অন্য পক্ষের কারো বেহুদা অযৌক্তিক সমালোচনা করা।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:০৯

রওশন জমির বলেছেন:
১- 'কোন পক্ষেরই উচিত না অন্য পক্ষের কারো বেহুদা অযৌক্তিক সমালোচনা করা।' এটিই হল মূল কথা। কারণঃ

২- গাজালি থেকে শুরু করে ইয়াহয়া মুনাইরি, শিবলি নোমানি কেউ ফতোয়া থেকে রেহাই পান নি। যেনতেন ফতোয়া? একেবারে কুফরির ফতোয়া। জাকির নায়েক তো তাদের কাছে নস্যি! তারা কি অসতর্ক ছিলেন? মনে হয় না।

৩- মতিউর রহমান মাদানি সম্পর্কে আমিও শুনছি, এখনো ঘেটে দেখা হয় নি। কারো মোবাইলে তার একটি বক্তব্য শোনার পর মনে হলঃ তিনি দাওয়াতি আচরণ রপ্ত করেন পারেন নি। এক মন এলেমের জন্য দশ মন বুদ্ধির দরকার। মনে হয় এই দরকারি জিনিশটার মূল্য তার কাছে কম। আর হ্যাঁ, তিনি পিস টিভিতে আসতে পারেন, তিনি খারাপ হতে পারেন, কিন্তু এর জন্য জাকির নায়েকের কৃতিত্ব ম্লান হবার নয়।

আপনাকে ধন্যবান মূল্যবান মতামতের জন্য।

৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৮:৫০

ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: আমাকে একজন বলেছেন গুছিয়ে কথা বলা নাকি মিথ্যার সমপর্যায়ে পড়ে,সেই থেকে আমি কথা সাহিত্যিকদের সন্দেহের চোখে দেখি,সে যাইহোক এটা আমার অভিজ্ঞতা।

আপনাকে যেটা বলতে আসছি সেটা হলো খুব সুন্দর ভাবে নিজেকে মাঝখানে রেখে শব্দের মাদক দিয়ে মানুষের মনে নায়কের যেই মন্দ তুলে ধরেছেন তার নিন্দা করলাম।

পরের কথা হলো ডাঃ জাকির নায়েক লাল টুপি, চুক্কা টুপি, সবুজ পাগড়ী,মাসায়েলের মসলা এসব নিয়ে ভাবছেননা,এসবের জন্য আমাদের দেশে মাওলানা মৌলভীর অভাব নেই,কাত হয়ে শোয়া জায়েজ নাকি চিৎ হয়ে শোয়া এসব তাদের জন্য যারা দিনের সিংহ ভাগ ঘুমিয়ে কাটাতে পছন্দ করে।ডাঃ জাকির নায়েক এসব নিয়ে বিচলিততো ননই বরং এসব নিয়ে ভাবেননা,আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান যা বলে এসব মাযাহাব মাসায়েল বিষয় গুলো ধর্মকে যেমন উঠায়না তেমনি নামানোর কোন সুযোগ নেই।ধর্মের মত এত বিশাল বিষয়টা এমন সব কারণ গুলো কখনো ক্ষত সৃষ্টি করতে পারেনা,কারণ ধর্মের শরীর মানুষের শরীর মত এত কোমলীয় যেমন নয় তেমনি খস খসেও নয় যে প্রতিটা জিনিসের গায়ে আচড় কাটবে।

আপনার শব্দ জ্ঞানের প্রশংসা না করলেই নয়,এই শিল্প দিয়ে যে কোন কিছু খাইয়ে দেয়া সহজ,কারন আমরা শিল্পে বুদ হয়ে থাকি।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:২০

রওশন জমির বলেছেন:
আপনার কমনীয় কথার কাছে আমার লেখা নমনীয় হল।
আমিও বুঁদ।
ধন্যবাদ।

৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩

jahidbd বলেছেন: Click This Link

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৬:৫২

রওশন জমির বলেছেন: ১- Click This Link
২- Click This Link

৫| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫

jahidbd বলেছেন: আগে নিচের হাদিসটি ভাল করে পড়ুন-

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন তোমরা কাউকে অধিক পরিমাণে মসজিদে আসতে অভ্যস্ত দেখ তাহলে তার ঈমানদার হওয়ার সাক্ষ্যি দাও। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ “মসজিদসমূহকে ঐ সমস্ত লোকেরাই আবাদ করে, যারা আল্লাহ তাআলা ও আখেরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৯৩,
সুনানে দারেমী, হাদীস
নং-১২২৩, সহীহ
ইবনে হিব্বান, হাদীস
নং-১৭২১, সহীহ
ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-
১৫০২, মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস নং-১১৬৫১,}

এইবার নিজের বিবেক কে কয়েকটা প্রশ্ন করুন তো ???

১. জাকির নায়েক যে টিভিতে লেকচার শুনাচ্ছে এতে কি মসজিদের আবাদ হচ্ছে নাকি টিভির ???
তার লেকচার শুনতে কি মানুষ মুসজিদের দিকে ছুটে নাকি টিভির দিকে ???

২.কথিত আহলে হাদিসদের গুরু মতিউর রহমান মাদানী সাড়া দিন টিভিতে লেকচার দেয় এতে কি মানুষ মসজিদের দিকে ছুটে নাকি টিভির দিকে ছুটে ???

কিসের আবাদ করছে বুজছেন নিশ্চই?
মানুষ তাদের লেকচার শুনতে টিভির কাছেই পরে থাকে মসজিদে নয় !

তাহলে এইবার নিজেই বিশ্লেশন করে দেখেন ?
সুস্থ বিবেক বান লোক হলে অবশ্যই বুঝবেন ???

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:৪৭

রওশন জমির বলেছেন:
ভাইজান, এখন বোধহয় অন্য এঙ্গেল থেকে সমালোচনা/ আক্রমণ করলেন। এগুলোর জবাবদান আমার দায়িত্ব নয়; ইচ্ছেও নেই, সুযোগও নেই। তবে আপনার এই কমেন্টেসের আলোকে একটি কথা না বললেই নয়। তা হলঃ সারা দেশে নির্ধারিত মৌসুমে বা বছরব্যাপীই ওয়াজ-মাহফিল হয়। কোথাও কোথাও তা ফজর পর্যন্ত চলে। সেই সব ওয়াজের শ্রোতার কতজন মসজিদমুখি হন? ওই রাতের ফজর নামাজ কতজন শ্রোতা পড়েন? কখনো জরিপ করেছেন? যারা ওয়াজের উদ্যোক্তা, তারা নিজেরাও কি নামাজ পড়েন? এর বিপক্ষে তো কাউকে বলতে শুনি নি! কিন্তু কেন? খালুই-সুঁইয়ের ছিদ্রান্বেষণ নিয়ে একটি উপহাসবাক্য প্রচলিত আছে, ধর্মীয় মহলের চাপাত-উতোর দেখলে তাই মনে পড়ে।
ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:০৮

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আসলেই উনাকে নায়ক বানানোরো কিছু নাই ভিলেন বানানোরো কিছু নাই। আমার কাছে মনে হয় উনি মাঝে মাঝে রূড হয়ে যান, আবার মাঝে মাঝে অহংকার করেন। এই দুইটা ছাড়া তেমন কিছুই দেখি না, যার সমালচনা করা যায় ।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:১২

রওশন জমির বলেছেন:
ধন্যবাদ

৭| ২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:১৩

মুদ্‌দাকির বলেছেন:

আসলেই উনাকে নায়ক বানানোরো কিছু নাই ভিলেন বানানোরো কিছু নাই। আমার কাছে মনে হয় উনি মাঝে মাঝে রূড হয়ে যান, আবার মাঝে মাঝে অহংকার করেন। এই দুইটা ছাড়া তেমন কিছুই দেখি না, যার সমালচনা করা যায় ।

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৭:১১

রওশন জমির বলেছেন:
ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.