![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখার চেয়ে পড়ায় আগ্রহী। পরমত-সহিষ্ণু, শালীন ও ধর্ম-পরায়ণ।
بلغ العلي بكماله كشف الدجي بجماله
حسنت جميع خصاله صلوا عليه و آله
শুরু করলাম পারস্য কবি শেখ সাদির চরণ দিয়েই, যে-সাদিকে নিয়ে খোদ ‘আলি দাশতি’ ঢাউস একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এ গ্রন্থটিও নজরে আসতো না, যদি ‘নবি মুহাম্মদের ২৩ বছর’ নিয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাটি না ঘটত। আলি দাশতির এ গ্রন্থটির অনুবাদ প্রকাশের দায়ে রোদেলা আর রোদেলা নেই, একেবারে মেঘলা। শুধু মেঘলা নয়, মেঘের ঘনঘটা! সত্যি বটে, বাঙালি পাঠকের হাতে পৌঁছার আগেই যে তুমুল কাণ্ড ঘটে গেল, তা অসহিষ্ণুতা ও উগ্রতার বড় একটি প্রমাণ হয়ে থাকবে।
তবে ঐতিহাসিক ব্যক্তি (রাজনৈতিক, সামাজিক, দার্শনিক, ধার্মিক) যে-ই হোন না কেন, তার সম্পর্কিত আলোচনায় সম্মানের জায়গাটুকু স্পষ্ট থাকতে হবে, অন্তত গোস্তাখি ও নেতিকবাচকতার স্পর্শ থাকলে চলবে না। একজনের আদর্শ অন্যজন পছন্দ না-ই করতে পারেন। তাই বলে তাকে অশালীনভাবে, আপত্তিকরভাবে উপস্থাপন, অসম্মানজনকভাবে তার জীবনালোচনা অবশ্যই অপরাধ এবং গর্হিত অপরাধ।
তাহলে কি মহানবির জীবনী নিয়ে গবেষণার, নিরীক্ষার, লেখালেখি ও বিশ্লেষণের অধিকার কোনো বিধর্মীর নেই? আছে, আলবৎ আছে। অতীতে এবং বর্তমানে প্রাচ্যে-প্রতীচ্যে অসংখ্য গবেষক মিলবে, যারা নবি-জীবনের নানা দিক নিয়ে গবেষণা করেছেন। তাদের সবার লেখাই যে ইতিবাচকতায় ভরপুর, তা না। এগুলোতে সমালোচনামূলক ভাবনার প্রকাশও আছে। এ সব বিষয়ই ওরিয়েন্টালিজম-এর অন্তর্ভুক্ত। যদিও ওরিয়েন্টালিজম মানেই কিন্তু নবি মুহাম্মদ ও তার আনিত ইসলাম নয়; এর পরিধি অনেক বড়, বেশ বিস্তৃত, প্রতীচ্যের সকল বিষয়ই এর আওতাভুক্ত। কিন্তু বর্তমানে আমাদের চোখের সামনে শুধু ইসলাম ও নবি মুহাম্মদের প্রতি অসৌজন্যমূলক বিষয়গুলোই ভাসে। এর কারণ একাধিক। প্রথমত, মুসলিম প্রধান দেশে আমাদের বসবাস। দ্বিতীয়ত, মুসলিমদের মাঝে আবেগী লোকের সংখ্যা বেশি। তৃতীয়ত, তাদের মাঝে জ্ঞানগত সহিষ্ণুতা নেই। চতুর্থত, মুসলিম সমাজ নানাভাবে অশক্ত বলে অ-ইসলামি এবং অ-মুসলিম গোষ্ঠী সময়ে-অসময়ে খোঁচা দেয়। এই খোঁচার ভার সহ্য করতে না পেরে মুসলিম সমাজ এমন সব আচরণ করে, যাতে তার অপরিপক্বতাই প্রকাশ পায় বেশি।
রাসুলের সিরাত ও ইতিহাস আলোচনায় প্রাচ্যবিদদের সিংহভাগই সমালোচনা মুখর। মুসলিম ওলামা ও বুদ্ধিজীবীগণ এই সব সমালোচনার জবাব উগ্রভাবে নয়, বিনম্র ও গঠনমূলকভাবে দিয়েছেন। কারণ, জ্ঞানতাত্ত্বিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় রাসুলের উপস্থিতি থাকবে না, এমন বিধান ইসলামে নেই। উদাহরণ হিসাবে উইলিয়াম ম্যুর ও দয়ানন্দ সরস্বতীর কথা বলা যায়। এদের জবাবদানের ক্ষেত্রে তখন দেওবন্দি-সালাফি-বেরেলি এবং জাফরি সমানভাবে মাঠে নেমেছেন, কলম ধরেছেন। এর বাইরে বিশৃঙ্খলা তৈরির কোনো রকমের উদ্যোগ তারা নেন নি। অন্যদিকে ‘রঙ্গিলা রাসুল’ ও ‘স্যাটানিক ভার্সেস’-এর বিরুদ্ধে মুসলিমবিশ্ব ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এখন প্রশ্ন হল প্রথাগত চিন্তার বাইরে মুসলিম-অমুসলিম কারো লেখায় কখন বাধহীন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা যাবে? এর কি কোনো নিয়মনীতি আছে? আর তাছাড়া যারা ইসলামি দর্শনে অবিশ্বাসী, রাসুল, সিরাত ও ইসলামি ইতিহাসের সঙ্গে তাদের বোঝাপড়াটা কীভাবে হবে?
আলি দাশতির আলোচ্য এই গ্রন্থটিতে কী আছে, সাধারণ পাঠক এখনো জানতে পারেন নি। উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে এটি কি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে, না দ্বিতীয় শ্রেণিতে? এ গ্রন্থটি নিয়ে বাংলাদেশে যারা প্রথম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, প্রতিবাদ করেছেন, তারা অবশ্যই শিক্ষিত। তারাই প্রতিবাদ স্বরূপ প্রথমে রোদেলার ওয়েবসাইট হ্যাক করেছেন। তারা এ গ্রন্থটি সম্পর্কে নিশ্চয়ই ভাল জানেন। তাদের উচিত হবে, তা জানিয়ে তাদের আচরণের যৌক্তিকতা প্রমাণ করা। আর তা না হলে, যে-ভাবে তাদের ওয়েবসাইটে, বাংলাবাজার অফিসে আক্রমণ হল, বইমেলা থেকে রোদেলাকে মেঘের আড়ালে পাঠিয়ে দেওয়া হল, প্রকাশকের ভুল স্বীকারসহ ক্ষমা প্রার্থনা ও বই-প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়ার পরও লেখক-প্রকাশকের বিচার দাবি করা হচ্ছে, তাতে ইসলামি দাওয়াতি আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠাটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু কী হবে তখন উত্তর?
০২ রা মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:০১
রওশন জমির বলেছেন:
ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪০
রাজীব নুর বলেছেন: রোদেলা প্রকাশনী অবিলম্বে খুলে দেয়া হোক।
মুক্তচিন্তার জয় হোক। মানুষের জয় হোক।